শী‘আদের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের করণীয়
মূর্খতা ও অজ্ঞতা শী‘আদের মূলভিত্তি ও প্রাচীন স্বভাব। তারা ইহুদী-খ্রিষ্টান, কাফের-মুশরিক ও মুনাফিকদের দোসর। ‘তাক্বীয়া’ তথা কপট নীতি তাদের ধর্মীয় ভিত্তি। তারা কয়েকজন ছাহাবী ছাড়া বাকী ছাহাবীকে কাফের মনে করে থাকে। বরং ছাহাবায়ে কেরামকে তারা ‘ইবলীস’-এর চেয়ে নিকৃষ্ট মনে করে থাকে (মিনহাজুস সুন্নাহ, ৪/৫১৬ পৃ.)। তাদের কিছু ফের্কা আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে তাদের ইমামকে রব হিসাবে গ্রহণ করে। শী‘আরা মূর্তি পূজারীদের অন্তর্ভুক্ত (মিনহাজুস সুন্নাহ, ১/৪৭৪, ৪৭৬ পৃ.)। ইমাম শাফেঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আমি রাফেযী (শী‘আ) সম্প্রদায়ের চেয়ে বেশি মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকারী কোন সম্প্রদায়কে দেখিনি’ (ঐ, ৩/৫০২ পৃ.)। তারা দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা ও লোভ-লালসায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত। তাদের দেশ, অঞ্চল ও বাড়িঘরগুলো অশ্লীলতা-বেহায়াপনায় ডুবে আছে (ঐ, ৩/৩৭৬ পৃ.)।
তারা আল্লাহর কালাম কুরআনে কারীমকে বিকৃত করেছে এবং অসংখ্য মিথ্যা সূরা ও আয়াত রচনা করে নিজেরা পৃথক জাল কুরআন তৈরি করেছে। তারা হাজার হাজার সালাফী আলেমকে হত্যা করেছে, ইয়ামন, সিরিয়া, ইরাক, ইরানে লক্ষ লক্ষ সুন্নী মুসলিমকে খুন করেছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে, সম্পদ লুট করেছে, গভীর ষড়যন্ত্র করে বহু দেশে ইসলামী শাসন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। ১৯৮৫ সালে ফিলিস্তীনের শী‘আপন্থী ‘আমাল’ ও ‘হিজবুল্লাহ’ গ্রুপ এক মাসের ব্যবধানে শত শত ফিলিস্তীনের সুন্নী মুসলিমদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। তাদেরকে বিড়াল ও কুকুর খেতে বাধ্য করেছিল। ইহুদীরা যা করেনি তারা তাই করেছিল। আফগানিস্তান ও ইরাককে ধ্বংস করতে শী‘আ সৈন্যবাহিনী আমেরিকাকে একান্তভাবে সহযোগিতা করেছিল। ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যখন ইহুদীরা ইরাক দখল করেছিল তখন রাফেযী শী‘আরা তাদের অন্যতম সহযোগী ছিল। তারা সর্বদা ইহুদী, খ্রিস্টান, কাফের ও মুশরিকদের সহযোগিতা করে এবং মুসলিম নিধন ও তাদের সাথে শত্রুতা পোষণে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করে থাকে’ (মিনহাজুস সুন্নাহ, ৩/৩৭৮ পৃ.)।
শী‘আদের ব্যাপারে চূড়ান্ত ধারণা রাখতে হবে যে, তারা বাতিল ফের্কা, মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত নয়। তারা রাসূল (ﷺ)-এর পরিবার নিয়েই বিভ্রান্তির সূচনা করবে মর্মে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন (আহমাদ হা/৬৩০২; বুখারী হা/৩৭৫৩; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৪৯৪-এর ব্যাখ্যা)। আর তাদের দ্বারাই এই বাণী বাস্তবায়িত হয়ে আসছে। তারা আয়েশা, হাফছা, হিন্দা ও উম্মুল হেকামদেরকে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ মনে করে (হাক্কুল ইয়াক্বীন, পৃ. ৫১৯)। তারা মা আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-কে যেনাকারীণি মহিলা মনে করে। তারা আরো দাবী করে যে, অতিসত্বর তাদের এক ইমাম আত্মপ্রকাশ করবে এবং আয়েশাকে জীবিত করে তার উপর যেনার শাস্তি কার্যকর করবে’ (হাক্কুল ইয়াক্বীন, পৃ. ৩৭৮) (নাঊযুবিল্লাহ)।
তারা রাসূল (ﷺ)-এর কোন স্ত্রীগণকে আহলে বায়াত মনে করে না। তারা শুধু পাকপাঞ্জাতন বা রাসূল (ﷺ), ফাতেমা, আলী, হাসান, হুসাইন (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-কে আহলে বায়াত মনে করে। আর বাকী সন্তান ও নাতী-নাতনীদেরকেও অপবিত্র মনে করে। তাদের আক্বীদা হল, আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ছিলেন রাসূল (ﷺ)-এর অছী। তাই ক্বিয়ামত পর্যন্ত তাঁর পরিবার থেকেই খলীফা নির্বাচিত হবে। সেজন্য শী‘আরা আবূ বকর, ওমর এবং ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-কে খলীফা বলে স্বীকার করে না; বরং আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে বাদ দিয়ে যে সমস্ত ছাহাবী তাঁদের হাতে বায়‘আত করেছেন তারা সকলেই কাফের বলে মনে করে (আল-ফিছাল ফিল মিলাল, ৪/১৩৭ পৃ.)। তারা দাবী করে, ‘আবূ বকর এবং ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) উভয়েই ফেরাউন ও হামান’ (হাক্কুন ইয়াক্বীন, পৃ. ৩৬৭)। তারা উভয়ে কাফির ছিল। যে ব্যক্তি তাদেরকে ভালবাসে, সেও কাফির’ (হাক্কুন ইয়াক্বীন, পৃ. ৫২২)।
শী‘আদের মূল উদ্দেশ্য হল, মুসলিম উম্মাহকে এবং ইসলামী রাষ্ট্রকে ধ্বংস করা। ইসলামের পবিত্রতা বিনষ্ট করা এবং তার মূলনীতিসমূহকে নির্মূল করা (মিনহাজুস সুন্নাহ, ৭/২১৯-২২০ পৃ.)। শী‘আরা মুসলিমদের মাঝে ভয়ঙ্কর বিপর্যয় সৃষ্টিকারী। তারা বিশ্বাসঘাতকতা করে যে কোন মুহূর্তে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে (ঐ, ৬/৪২৫ পৃ.)। তাই ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, শী‘আ গোষ্ঠী মুসলিমদের জন্য ইহুদী-খ্রিষ্টানদের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর (মাজমূঊল ফাতাওয়া ২৮/৪৭৮)। শায়খ ইহছান ইলাহী যহীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশ হিন্দুদের হাতে শী‘আ ‘কিজিলবাশ’-এর এক পুত্র ইয়াহিয়া খানের বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছিল’ (আত-তারীখুল ইসলামী, ১৯/১৫৭ পৃ.)। পৃথিবীর এমন কোন মুসলিম দেশ নেই যেখানে শী‘আরা ছোবল মারেনি। সর্বত্রই তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। কোন মুসলিম ব্যক্তি এরূপ মিথ্যুক ও কাফের গোষ্ঠীর প্রশংসা করতে পারে না। তাদের কর্মকা-কে অনুসরণ করতে পারে না।
অতএব প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির উচিত অভিশপ্ত শী‘আদের আক্বীদা, ধ্বংসাত্মক কুকর্মের ব্যাপারে সতর্ক থাকা। কোনভাবেই যেন শী‘আদের কোন অপসংস্কৃতি মুসলিম সমাজে প্রবেশ না করে। এ জন্য কুরআন-সুন্নাহর দাওয়াত ও সালাফদের মানহাজকে সাধারণ মানুষের মাঝে বেশি বেশি প্রচার করতে হবে। নিজ সন্তানদেরকে সালাফী আক্বীদার উপর সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম উম্মাহকে শী‘আদের খিয়ানত ও যাবতীয় ষড়যন্ত্র থেকে হেফাযত করুন-আমীন!!
رَبَّنَا تَقَبَّلۡ مِنَّا اِنَّکَ اَنۡتَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ
প্রসঙ্গসমূহ »:
সম্পাদকীয়