সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন

اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ وَحْدَهُ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى مَنْ لَا نَبِيَّ بَعْدَهُ

তাওহীদ সম্পর্কে জানা আবশ্যক কেন?


‘তাওহীদ’ অর্থ একক বা একত্ব, কোন কিছুকে একক করা। ‘ইবাদতের জন্য একমাত্র আল্লাহ্কে একক গণ্য করাই হল ‘তাওহীদ’ (আল-উছায়মীন, শারহু ছালাছাতিল উছূল, পৃঃ ৩৯)। বান্দা হিসাবে তার আক্বীদা ও আমলগত প্রত্যেকটি বিষয় একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নির্দিষ্ট করা হল ‘তাওহীদ’। এজন্য ‘তাওহীদ’ হল ইসলামের মূল রূহ ও প্রথম শিক্ষা।

তাওহীদ তিন শ্রেণীতে বিভক্ত। (ক) তাওহীদে রুবূবিয়াহ (খ) তাওহীদে উলূহিয়াহ এবং (গ) তাওহীদে আসমা ওয়া ছিফাত, যা সূরা ফাতেহার শুরুতেই আল্লাহ বর্ণনা করেছেন (১-৫ আয়াত)। কেউ উক্ত তিন প্রকার তাওহীদকে খালেছ অন্তরে গ্রহণ না করলে আল্লাহ্কে একমাত্র মা‘বূদ হিসাবে স্বীকার করতে পারে না। আর ঐ ব্যক্তি কখনোই আল্লাহর হেদায়াতও লাভ করতে পারে না (বাক্বারাহ ২৫৬)। ফলে তার কোন ইবাদতও আল্লাহর নিকট কবুল হয় না। তাই প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ফরয দায়িত্ব হল তাওহীদের শিক্ষা অর্জন করা, তাওহীদকে বুঝা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আপনি জেনে নিন যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা‘বূদ নেই’ (মুহাম্মাদ ১৯)। আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রথম নাযিল হয়েছে, ‘আপনি পাঠ করুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন’ (সূরা আলাক্ব ১)। তাছাড়া এই তাওহীদের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্যই আল্লাহ প্রত্যেক জাতির মাঝে রাসূল প্রেরণ করেছেন (নাহল ৩৬)। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাধারণ মানুষকেও সর্বপ্রথম তাওহীদের দাওয়াত দিয়েছেন (বুখারী হা/১৩৯৭, ৭৩৭২)।

দুঃখজনক হল, আমরা অনেক কিছুই জানি, পড়ি, অনেক বিষয়ে চূড়ান্ত গবেষণা করি, সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জনের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করি, কিন্তু যে বিষয়ে সর্বপ্রথম জানতে হবে, যা জানা ফরয, সেই সম্পর্কেই জানি না, জানার চেষ্টাও করি না। আর সেটা হল তাওহীদ। এর প্রতিদান সরাসরি জান্নাত এবং যাবতীয় সাফল্যের মূলসূত্র (মুসলিম হা/৩১; সূরা আ‘রাফ ৯৬)। আসলে মানুষ ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করার মৌলিক উদ্দেশ্যই হল, তারা যেন তাদের সার্বিক জীবনে একমাত্র আল্লাহর তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করে (যারিয়াত ৫৬)। তাহলে তার মাঝে ত্বাগূত ও শিরক কোন কিছুই আশ্রয় পাবে না। এটাই কালেমায়ে শাহাদাতের আসল তাৎপর্য। তিন প্রকার তাওহীদ হল-

(ক) তাওহীদে রুবূবিয়াহ : প্রতিপালনে ও পরিচালনায় আল্লাহ যে একক, সে বিষয়ে মনেপ্রাণে স্বীকারোক্তি প্রদান করা। অর্থাৎ সবকিছুর পালনকর্তা, সৃষ্টিকর্তা, রূযীদাতা, জীবনদাতা, মরণদাতা, আইনদাতা ও সবকিছুর মালিক হিসাবে একমাত্র আল্লাহকে বিশ্বাস করাই হল ‘তাওহীদে রুবূবিয়াহ’ (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূঊল ফাতাওয়া ৩/১০৩)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘যাবতীয় প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য’ (ফাতিহা ২; মুমিনূন ৮৬-৮৭)। ‘আল্লাহই সবকিছুর স্রষ্টা’ (যুমার ৬২)। তিনি আরো বলেন, ‘আর ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নেই যে, তার রিযিক আল্লাহ্র যিম্মায় নেই’ (হূদ ৬; মুলক ২১; ফাতির ৩; যারিয়াত ৫৮)। অনুরূপ তিনি সবকিছুর মালিক, পরিচালক, জীবনদাতা ও মরণদাতা। তিনি বলেন, ‘তিনি আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত সবকিছু পরিচালনা করেন’ (আস-সাজদাহ ৫; সাবা ২২)। অনেকে আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা, রূযীদাতা, জীবনদাতা, মরণদাতা বলে বিশ্বাস করলেও আইন ও বিধান দাতাও যে একমাত্র আল্লাহ এবং তাঁর প্রদত্ত আইন ছাড়া অন্য সব আইন ও বিধান যে বাতিল, তা তারা পরিচ্ছন্ন হৃদয়ে স্বীকার করতে চায় না। এখানেই মানুষ আল্লাহর সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পণ্ডিতকে বিধানদাতা হিসাবে শরীক করে থাকে, যা এই তাওহীদকে বাতিল করে দেয়। এদের জন্য কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছে (শূরা ২১)। কারণ আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ আইন, বিধান ও ইবাদত তৈরি করার অধিকার রাখে না। আল্লাহই একমাত্র সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী।

(খ) তাওহীদে উলূহিয়াহ : ইবাদতের যোগ্য হিসাবে একমাত্র আল্লাহকে গ্রহণ করাই হল- ‘তাওহীদে উলূহিয়াহ’। বান্দা হিসাবে সকল কর্মে আল্লাহর একত্ব প্রমাণ করা। যাবতীয় ইবাদত, দু‘আ, প্রত্যাশা, ভয়-ভীতি, আগ্রহ, ভরসা, প্রত্যাবর্তন, যবহ, মানত, কুরবানী সবই পেশ করার জন্য আল্লাহকে একক গণ্য করা (আক্বীদাতুত তাওহীদ, পৃঃ ৪২)। অন্য কারো জন্য এগুলো না করা বা কাউকে এগুলোতে শরীক না করা। আর এই আদেশ দেয়ার জন্যই আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীতে সমস্ত নবী-রাসূলকে প্রেরণ করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনার পূর্বে রাসূল হিসাবে যাকেই প্রেরণ করেছি, তাঁর কাছেই অহী করেছি যে, আমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। সুতরাং তোমরা একমাত্র আমারই ইবাদত কর’ (আম্বিয়া ২৫)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘তাদেরকে কেবল আদেশ দেয়া হয়েছে যে, তারা যেন বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে শুধু আল্লাহরই ইবাদত করে’ (সূরা বাইয়েনাহ ৫)। মুসলিম ব্যক্তি তার জীবনের সকল কর্ম আল্লাহর শানে পেশ করবে তাঁর সন্তুষ্টির জন্য। এটাই তাওহীদে ইবাদাহ বা উলূহিয়াহ। শুধু ছালাত, ছিয়াম, হজ্জ, যাকাত, ছাদাক্বার ক্ষেত্রে নয়; বরং সমাজনীতি, অর্থনীতি, রাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি সকল ক্ষেত্রে আল্লাহ যে বিধি-বিধান দিয়েছেন, তা নিঃসঙ্কোচে মেনে নিবে এবং পূর্ণভাবে অনুসরণ করবে (বাক্বারাহ ২০৮)। কারণ ইসলামই একমাত্র আল্লাহ প্রেরিত পূর্ণাঙ্গ দ্বীন। এছাড়া অন্য ধর্ম, দর্শন, তরীকা, মাযহাব, ইজম গ্রহণযোগ্য নয় (আলে ইমরান ১৯, ৮৫, মায়েদাহ ৩)।

তাই যারা ছালাত, ছিয়াম, হজ্জের ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান অনুসরণ করে, কিন্তু রাজনীতি, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ত্বাগূত বা মানব রচিত আইনের অনুসরণ করে, তারা ভয়াবহ শিরকের মধ্যে নিমজ্জিত। তারা তাদের ইবাদতকে কিছু আল্লাহর জন্য, আর কিছু জাহেলী মতবাদের স্রষ্টা ও ধর্মীয় গুরুর জন্য নির্ধারণ করেছে। যেমন ছালাত আদায়ের জন্য মসজিদে যাচ্ছে, কিন্তু কোন কিছু চাওয়ার জন্য মাযার, খানকা, কবর, মৃত পীর-ফকীর-ওলী, মূর্তি, ভাস্কর্য ও তীর্থস্থানেও যাচ্ছে, সেখানে কোটি কোটি টাকা দান করছে, গরু, ছাগল ইত্যাদি মানত করছে। সেগুলোকে মাধ্যম ধরে আল্লাহকে পাওয়ার চেষ্টা করছে। অনুরূপ রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও বিভিন্ন কাজের সূচনার জন্য মাযার, খানকা, দর্গা, প্রতিকৃতি, স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, শিখা চিরন্তন, শিখা অনির্বাণ ইত্যাদি শিরকের আস্তানায় গিয়ে নীরবতা পালন করছে এবং ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করছে। বরং আল্লাহর চেয়ে এগুলোকেই বেশী ভক্তি করছে (বাক্বারাহ ১৬৫)। এভাবে মসজিদেও যাচ্ছে, মাযারেও যাচ্ছে, মক্কাতেও যাচ্ছে, মন্দিরেও যাচ্ছে। জাহেলী যুগের মূর্তিপূজারী মুশরিক আর তথাকথিত নামধারী এ সমস্ত মুসলিমের মাঝে কোন পার্থক্য দেখা যায় কি (যুমার ৩)? এভাবে তাওহীদ আর শিরক কি এক সঙ্গে থাকতে পারে? কারণ এগুলো সবই তাওহীদ বিরোধী ত্বাগূত, যা ‘শিরকে আকবার’ বা বড় শিরকের অন্তর্ভুক্ত, যার পরিণাম ইসলাম থেকে বহিষ্কার এবং তওবার পূর্বে মারা গেলে চিরস্থায়ী জাহান্নাম (তওবা ১৭)। তার জন্য দু‘আ ও দান-ছাদাক্বাহ করলেও কবুল হবে না (সূরা হাশর ১০; তওবা ১১৩; মুসলিম হা/৯৭৬; আবুদাঊদ হা/২৮৮৩, সনদ হাসান)।

(গ) তাওহীদে আসমা ওয়া ছিফাত : এর অর্থ- আল্লাহর নামসমূহ ও তাঁর গুণাবলী এককভাবে তাঁর সাথেই সম্পৃক্ত করা, অন্য কারো সাথে তুলনা না করা। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে, ঐভাবেই বিশ্বাস করা। কোন রূপক বা বিকৃত অর্থ না করা এবং কল্পিত ব্যাখ্যার আশ্রয় না নেয়া (ফাতাওয়া উছায়মীন ১/৮৩ পৃঃ)। আল্লাহ তা‘আলার আকার আছে। তিনি নিরাকার নন। তিনি শুনেন, দেখেন এবং কথা বলেন। তাঁর হাত, পা, চেহারা, চোখ আছে (নিসা ১৬৪; মায়েদাহ ৬৪; ক্বলাম ৪২; ত্ব-হা ৩৯)। তবে তাঁর সাথে সৃষ্টির কোন কিছুই তুলনীয় নয়। বরং তিনি তাঁর মতো। আল্লাহ বলেন, ‘কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা’ (শূরা ১১)। সুতরাং তাঁর আকারের সাথে কোন কিছুর তুলনা করা যাবে না। যেমন আল্লাহ নিজেই বলেছেন, ‘সুতরাং তোমরা আল্লাহর কোন সাদৃশ্য বর্ণনা করো না’ (নাহল ৭৪)। আল্লাহ আরশের উপর সমুন্নত। তিনি সর্বত্র বিরাজমান নন। আল্লাহ তাঁর পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘দয়াময় (আল্লাহ) আরশে সমুন্নত’ (ত্ব-হা ৫)। এ মর্মে কুরআন ও ছহীহ হাদীছে অনেক দলীল রয়েছে। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা মি‘রাজে নিয়ে গিয়েছিলেন সপ্তম আসমানের উপরে এবং বার বার মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর নিকট থেকে আল্লাহর কাছে যাওয়ার বিষয়টিও প্রমাণ করে আল্লাহ আসমানের উপরে আরশে সমুন্নত (বুখারী হা/৩৮৮৭)। আল্লাহ আমাদের সাথেই আছেন এর অর্থ হল, তাঁর দৃষ্টি, ইলম ও ক্ষমতা সর্বত্র পরিব্যাপ্ত (তাফসীর ইবনে কাছীর, ৭ম খণ্ড, পৃঃ ৫৬০)। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), ছাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈনে এযামসহ সালাফী বিদ্বানগণ যুগে যুগে এমনটিই বুঝেছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুন ‘ভ্রান্ত আক্বীদা বনাম সঠিক আক্বীদা’ শীর্ষক বই।

আল্লাহ তা‘আলাকে একমাত্র মা‘বূদ হিসাবে গ্রহণ করার জন্য তাওহীদের উক্ত প্রকার সম্পর্কে জ্ঞান রাখা যে আবশ্যক, তা উক্ত আলোচনায় প্রমাণিত হয়েছে। কারণ শিরক, ত্বাগূত ও কুফরের ছোঁয়া লাগলে মুহূর্তেই তাওহীদ বিনষ্ট হয়ে যায়। তাই তাওহীদের সার্বভৌম প্রতিষ্ঠার জন্য শিরকের উৎসগুলোকে অপসারণ করা ফরয। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে পৃথিবীতে পাঠানোর উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই তাঁর রাসূলকে হেদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ প্রেরণ করেছেন, যেন তিনি সকল দ্বীনের উপর তাকে বিজয়ী করতে পারেন। যদিও তা মুশরিকরা অপসন্দ করে’ (ছফ্ফ ৯)। এই আয়াতের হুকুম কার্যকর করার জন্যই রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের দিন সর্বাগ্রে কা‘বা চত্বর থেকে ৩৬০টি মূর্তি অপসারণ করেন (বুখারী হা/২৪৭৮)। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, ‘আমার রব আমাকে মূর্তি ভাঙ্গার জন্য এবং পৃথিবীতে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রেরণ করেছেন, যেন তাঁর সাথে কোনকিছুকে শরীক না করা হয়’ (মুসলিম হা/৮৩২)। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে নির্দেশ দিলেন, ছবি-মূর্তি ও সৌধ নির্মাণ করা যত উঁচু কবর আছে সবগুলো ভেঙ্গে দাও, কোথাও যেন অবশিষ্ট না থাকে (মুসলিম হা/৯৬৯)। লাত, মানাত, উযযা, দেব-দেবীর পূজা এবং জাহেলী যুগের সমস্ত আইনকে বাতিল করে ঘোষণা দিলেন, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তোমরা তার আনুগত্য কর (আ‘রাফ ৩)।

একদা ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে তাওরাত পাঠ করতে দেখে রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রেগে লাল হয়ে গিয়ে বললেন, আমি কসম করে বলছি, আজ যদি মূসা (আলাইহিস সালাম) তোমাদের মাঝে আবির্ভূত হন আর তোমরা যদি তার অনুসরণ কর এবং আমাকে পরিত্যাগ কর, তবুও তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। মূসা (আলাইহিস সালাম) যদি আজ বেঁচে থাকতেন আর আমার নবুওঅত পেতেন, তবে তিনিও আমার অনুসরণ করতেন (দারেমী হা/৪৪৩; সনদ হাসান)। উপলব্ধির বিষয় হল, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগমনের পর যদি একজন বিশিষ্ট রাসূল মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর অনুসরণ না চলে, তবে পীর-ফকীর, দরবেশ, ইমাম, দার্শনিক, পণ্ডিত, মনীষীর অন্ধ অনুসরণ চলে কিভাবে? পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের উপস্থিতিতে আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিল হওয়া তাওরাত, ইঞ্জীল, যাবূরসহ অন্যান্য কিতাব যদি বাতিল বলে গণ্য হয়, তাহলে মানুষের তৈরি করা ইসলাম বিরোধী আইন কিভাবে বৈধ হতে পারে? সেই আইনের স্বীকৃতি দিলে, অনুসরণ করলে তাওহীদ থাকবে কি? তাই সব শ্রেণীর মানুষকে তাওহীদের জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তি হৌন, প্রশাসনিক ব্যক্তি হৌন বা যেকোন পেশার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি হৌন কিংবা সাধারণ কোন ব্যক্তি হৌন (আলবানী, আত-তাওহীদ আওয়ালান, পৃ. ২৮)। আল্লাহ তা‘আলা সকল পর্যায়ের মানুষকে তাওহীদ বুঝার ও বলিষ্ঠভাবে সংরক্ষণ করার তাওফীক্ব দান করুন। সেই সাথে তাওহীদ বিরোধী যাবতীয় কার্যক্রম থেকে হেফাযত করুন-আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন!!

رَبَّنَا تَقَبَّلۡ مِنَّا اِنَّکَ اَنۡتَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ





আহলেহাদীছদের বিরুদ্ধে বিষোদগার : চরম অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ - সম্পাদকীয়
ধর্ষণ, খুন, গুম, নারী নির্যাতন : মধ্যযুগীয় বর্বরতার নব-সংস্করণ - সম্পাদকীয়
কুরআন মাজীদের হক্ব আদায় করুন! - সম্পাদকীয়
সমকামিতার ভয়ঙ্কর পরিণতি - সম্পাদকীয়
শৃঙ্খলাপূর্ণ উন্নত সমাজ কাঠামো কাম্য - সম্পাদকীয়
ত্বাগূতী রাজনীতি অভিশাপ ও করুণ পরিণতি - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
নাগরিকের রাষ্ট্রচিন্তা - সম্পাদকীয়
­­অসহায় মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসুন! - সম্পাদকীয়
নারী পোশাকের স্বাধীনতা ও প্রগতিবাদীদের ভ্রান্তি বিলাস - সম্পাদকীয়
দুর্নীতি : সমাজ বিধ্বংসী মারণাস্ত্র - সম্পাদকীয়
ইলিয়াসী তাবলীগ নিষিদ্ধের নেপথ্যে - সম্পাদকীয়
প্রতারণার পরিণাম - সম্পাদকীয়

ফেসবুক পেজ