উত্তর : এগুলো ভিতরে পরিধেয় বস্ত্র। তাই পরিধান করা জায়েয। এখন কেউ যদি পাশ্চাত্য সভ্যতার অনুকরণে শুধু এগুলো পরেই ঘুরে বেড়ায়, তাহলে সে অপরাধী এবং অভিশপ্ত। আর যারা বোরকা বা অন্যান্য ইসলামী পোশাকের নিচে অন্তর্বাস হিসাবে পরিধান করে তবে জায়েয। আর এ রকম অসংখ্য জিনিস আছে যা হালাল এবং হারাম উভয় কাজেই ব্যবহৃত হয়। যেমন মোবাইল, কম্পিউটার, ছুরি, ব্লেড ইত্যাদি। নিঃসন্দেহে এগুলো হালাল কাজের নিয়তে ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েয।
দ্বিতীয়তঃ এ ব্যাপারে আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, এমন প্রত্যেক পোশাক যা রেশমের নয়, গেরুয়া রঙের নয়, চুরির নয়, আঁটোসাঁটো নয়, বিজাতীয়দের সাদৃশ্যে নয়, অপবিত্র নয়, তা পরিধান করা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই হালাল (মারাতিবুল ইজমা‘, পৃ. ১৫০)।
সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটি বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষের ইসলামী আদর্শ, নৈতিকতা ও চরিত্র গঠনের প্রতি আগ্রহ-উৎসাহ প্রকাশ করা দরকার এবং তাদের আনন্দ, উৎসব, পোশাক, খাওয়া, পান করা এবং সমস্ত কিছুতেই ইসলামী রীতি-নীতি মেনে চলা অপরিহার্য এবং কাফিরদের সাদৃশ্যে এমন সংকীর্ণ পোশাক পরিধান করা অবৈধ, যা তাদের দেহের গোপনীয় বিষয়গুলোকে প্রকাশ করে। অথবা এমন স্বচ্ছ ফিনফিনে পোশাক পরিধান করা বৈধ নয়, যা গোপনাঙ্গগুলো আচ্ছাদিত করার পরিবর্তে আরো উন্মুক্ত করে। অথবা এমন স্বল্পায়তন বা অল্পায়তন পোশাক পরিধান করা অবৈধ, যা বক্ষদেশ, বাহুদ্বয়, গ্রীবা, মস্তিস্ক অথবা মুখম-লকে আচ্ছাদিত করে না’ (ফাতাওয়া আল-লাজনাতুদ দায়িমাহ, ৩/৩০৬-৩০৭ পৃ.)।
এমন পোশাক যা দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও অবয়বকে আবৃত করতে সক্ষম নয় তা পরিধান করা হারাম। এগুলো জাহান্নামী মেয়েদের পোশাক (ছহীহ মুসলিম, হা/২১২৮)। ‘যারা বস্ত্র পরিহিতা হয়েও বিবস্ত্রা বা উলঙ্গ’ এই শব্দের ব্যাখ্যাতে ইমাম ইবনু আব্দিল বার্র (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, فهن كاسيات بالإسم و عاريات في الحقيقة ‘তারা কিন্তু নামমাত্র বস্ত্র পরিহিতা, বাস্তবে কিন্তু তারা বিবস্ত্রা বা উলঙ্গ’ (আত-তামহীদ, ১৩/২০৪ পৃঃ.)। শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এমন সংকীর্ণ পোশাক যে, সৃষ্টির অবয়ব প্রকাশিত হয় বা এমন ফিনফিনে পোশাক যে, চামড়া আবৃত হয় না তা পরিধান করা নিষেধ। কারণ মহিলাদেরকে এ জাতীয় পোশাক পরিধান করতে নিষেধ করা হয়েছে। অভিভাবকদের (বাবা ও স্বামীর) উচিত তাদের এধরনের পোশাক পরতে নিষেধ করা (ফাতাওয়া আল-কুবরা, ৫/৩৫৩ পৃ.)। শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) আরো বলেন,
والضيِّق لا يجوز لا عند المحارم ولا عند النساء إذا كان ضيِّقًا شديدًا يبيِّن مفاتن المرأة
‘যদি পোশাক এতটাই সংকীর্ণ বা আটোসাঁটো হয় যে, মহিলাদের আকর্ষণীয় বিষয়গুলো পরিস্ফুটিত হচ্ছে এবং তাদের রূপ-যৌবন বিকশিত হচ্ছে, তাহলে এ জাতীয় পোশাক মাহরিম ও গায়ির মাহরিম উভয়ের সামনেই পরিধান করা যাবে না’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ২/৮২৫ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : খাদিজা, ঢাকা।