শারঈ পর্দা : একটি পর্যালোচনা
-ওবাইদুল্লাহ আল-আমীন*
(৯ম কিস্তি)
(মার্চ ২০২২ সংখ্যার পর)
পর্দার উপকারিতা
আল্লাহ তা‘য়ালা যে বিধানাবলী প্রণয়ন করেন তাতে ব্যক্তি ও সমাজের উপকারিতা বিদ্যমান থাকে। কেননা শরী‘আত বান্দার উভয় জগতের কল্যাণই বয়ে আনে।[১] এই মহান মূলনীতির আলোকে পর্দার আবশ্যকতাও শামিল। যেহেতু এতে রয়েছে নানাবিধ উপকার।
১. আল্লাহর ওয়াদার বাস্তবায়ন
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অনুগত বান্দাদের জন্য জান্নাতের প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন। আল্লাহ প্রদত্ত পর্দার বিধান বাস্তবায়নের মাধ্যমে উক্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়। যা ঈমানদারগণের জন্য বিরাট সফলতা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
تِلۡکَ حُدُوۡدُ اللّٰہِ ؕ وَ مَنۡ یُّطِعِ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ یُدۡخِلۡہُ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ؕ وَ ذٰلِکَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ.
‘এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এর আনুগত্য করবে, তাকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাসমূহ প্রবাহিত থাকবে। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আর ওটাই বিরাট সফলতা’ (সূরা আন-নিসা : ১৩)।
বান্দার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হল যে, সে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে এবং তার ভালোবাসা অর্জন করবে। আর ওগুলো পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে পর্দা মেনে চলা। কেননা তিনি তা পসন্দ করেন। নবী (ﷺ) বলেন, إِنَّ اللهَ حَيِيٌّ سِتِّيْرٌ يُحِبُّ الْحَيَاءَ وَالسِّتْرَ ‘নিশ্চয় আল্লাহ লজ্জাশীল ও পর্দাশীল। তিনি লজ্জা ও পর্দাকে পসন্দ করেন’।[২]
২. পথভ্রষ্টতা ও পাপের ধ্বংসলীলা হতে মুক্তির উপায়
মহান আল্লাহ বলেন, وَ مَنۡ یَّعۡصِ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلٰلًا مُّبِیۡنًا ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের অবাধ্য হবে সে স্পষ্ট ভ্রষ্টতায় পথভ্রষ্ট হবে’ (সূরা আল-আহযাব : ৩৬)। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন, وَ مَنۡ یَّعۡصِ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ وَ یَتَعَدَّ حُدُوۡدَہٗ یُدۡخِلۡہُ نَارًا خَالِدًا فِیۡہَا ۪ وَ لَہٗ عَذَابٌ مُّہِیۡنٌ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করবে এবং তার সীমালংঘন করবে, তাকে তিনি আগুনে প্রবেশ করাবেন যেখানে সে চিরকাল থাকবে। আর তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর শাস্তি’ (সূরা আন-নিসা : ১৪)।
৩. নানাবিধ বিপদাপদ থেকে সুরক্ষা
পর্দা নারীকে সুরক্ষা দেয়া, লাঞ্ছনা ও অশ্লীলতার স্তরে আধিপত্য হওয়া থেকে এবং দুষ্টদের চোখ ও তাদের আগ্রাসন হতে রক্ষা করে থাকে। যেমনটি আমাদের রব সেদিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ذٰلِکَ اَدۡنٰۤی اَنۡ یُّعۡرَفۡنَ فَلَا یُؤۡذَیۡنَ ‘এটাই তাদের পরিচিতির দিক দিয়ে বেশি উপযোগী। সুতরাং তাদেরকে উত্তক্ত করা হবে না’ (সূরা আল-আহযাব : ৫৯)।
আবূ হাইয়ান (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এটাই তাদের পরিচিতির দিক থেকে সবচেয়ে বেশি উপযোগী। যাতে করে তারা তাদের গোটা শরীরকে ঢেকে রাখে, তাহলে তাদের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করা হবে না এবং তারা যা অপসন্দ করে সেটার মুখোমুখি হবে না। কেননা মহিলা যখন পূর্ণমাত্রায় পর্দা করে এবং ঢেকে চলে, তখন তার সামনে কেউ আসে না। তবে খোলামেলা চলাচলকারিণী মহিলার কথা ভিন্ন। কেননা মানুষ তাতেই আকৃষ্ট হয়’।[৩]
৪. মারাত্মক ধ্বংস থেকে পরিবারকে সুরক্ষা প্রদান
পর্দাহীনতা এবং খোলামেলার প্রাদুর্ভাব, নির্জনতা ও অবাধে মিলামেশা বুলডোজার অপেক্ষা ক্ষতিকর। কেননা যখন কোন নারী তার সৌন্দর্য ও স্পর্শকাতর জিনিসগুলো ঢেকে না রাখে, তখন পুরুষেরা সেদিকে আকর্ষিত হয়। আর এতে করে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানদের অনেক সমস্যা হয়। সুতরাং স্বামী স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটে অথবা এক অপরের প্রতি ভালোবাসা দুর্বল হয়ে যায়। যেমন সন্তানদের প্রতি পুরুষদের গুরুত্ব কমে যায়। আর পরিবার যখন ভেঙ্গে যায়, তখন সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। মূলত এটাই সমাজের প্রথম ইট ও ভিত্তি। যখন মহিলা পর্দা করে এবং আড়াল করে তখন পরিবারও সমাজ রক্ষায় সে অবদান রাখে।
৫. মরণব্যাধি ও ধ্বংসাত্মক রোগ হতে সমাজকে রক্ষা করা
খোলামেলা ও অবাধ মেলামেশা সহ এধরনের পর্দাহীন যত বিষয় আছে সেগুলো শরী‘আত বহির্ভূত সম্পর্কের ছায়ায় নারী-পুরুষ যুক্ত হওয়ার বড় মাধ্যম। চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে, এধরনের অবৈধ সম্পর্ককারীদের মারাত্মক রোগ হয়ে থাকে। তার মধ্যে অন্যতম হল এইডস রোগ। আর এই রোগ অন্যের মধ্যে ক্ষত বা অন্যান্য মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়। এটা এমনই ক্ষতিকর যে, পুরা সমাজকে ধ্বংস করে। সুতরাং সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য মহিলাদেরকে শারঈ পর্দা রক্ষা ফরয। এটাই অবৈধ সম্পর্ক হ্রাসের অন্যতম উপায়। অবৈধ সম্পর্কের জন্য উক্ত ব্যাধিই শুধু এর একমাত্র মন্দ কারণ নয়। যারা ব্যক্তিত্বসম্পন্ন তাদের সামাজিক নিরাপত্তা, স্থীতি ও শান্তি বিনষ্ট করে। আর এমনিভাবে পর্দা অনেক গর্ভপাত রোধ, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রোধ, সম্মান বিনষ্ট হওয়া, বংশধারা এলোমেলো হওয়া এবং বিবাহবিরতী সহ ইত্যাদি সমস্যা দূরীভূত করে। অথচ এগুলো ছাড়া সমাজ ব্যবস্থা সুরক্ষিত থাকে না।
৬. পর্দা হচ্ছে নিরাপত্তা ও তাক্বওয়া
মহান আল্লাহ এ দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, وَ اَنۡ یَّسۡتَعۡفِفۡنَ خَیۡرٌ لَّہُنَّ ‘আর তাদের নিরাপদে থাকার এটা তাদের জন্য উত্তম’ (সূরা আন-নূর : ৬০)। মহান আল্লাহ আরও বলেন, وَ لِبَاسُ التَّقۡوٰی ۙ ذٰلِکَ خَیۡرٌ ؕ ذٰلِکَ مِنۡ اٰیٰتِ اللّٰہِ لَعَلَّہُمۡ یَذَّکَّرُوۡنَ ‘তাক্বওয়ার পোশাকই উত্তম। এটা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম নিদর্শন। সম্ভবত মানুষ এটা হতে উপদেশ গ্রহণ করবে’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ২৬)।
৭. পর্দা হচ্ছে পরিশুদ্ধতা : যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ذٰلِکُمۡ اَطۡہَرُ لِقُلُوۡبِکُمۡ وَ قُلُوۡبِہِنَّ ‘এটা তোমাদের ও তাদের হৃদয়ের পরিশুদ্ধতা’ (সূরা আল-আহযাব : ৫৩)।
৮. পর্দা লজ্জার অংশবিশেষ : নবী করীম (ﷺ) বলেন, الْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الْإِيْمَانِ ‘লজ্জা ইমানের অঙ্গ’।[৪] তিনি আরও বলেন, الْحَيَاءُ لَا يَأْتِى إِلَّا بِخَيْرٍ ‘লজ্জা কেবল কল্যাণ বয়ে আনে’।[৫]
৯. পর্দা হৃদয়ের মাঝে আত্মমর্যাদাবোধের প্রমাণ
গায়রাত হচ্ছে এমন আধ্যাত্মিক শক্তি, যা আল্লাহ তা‘আলা বান্দার মধ্যে যুক্ত করেন এবং প্রত্যেক পাপিষ্ঠ ও বিশ্বাসঘাতক হতে মান সম্মান ও সতীত্ব রক্ষা করে। ইসলামে গায়রাত হল প্রশংসনীয় স্বভাব এবং শারঈ জেহাদ। কেননা নবী (ﷺ) বলেছেন যে, إِنَّ اللهَ يَغَارُ وَإِنَّ الْمُؤْمِنَ يَغَارُ وَغَيْرَةُ اللهِ أَنْ يَأْتِىَ الْمُؤْمِنُ مَا حَرَّمَ عَلَيْهِ ‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা গায়রাত করে আর মুমিনও গায়রাত করে। আল্লাহর গায়রাত হল আল্লাহ যা হারাম করেছেন মুমিনের উপর সেটা ঘটানো’।[৬] শারঈ পর্দা যথাযথ অনুসরণ করলে উক্ত উপকারিতাগুলো অর্জনে যথেষ্ট হবে। সুতরাং আল্লাহ তিনি কতইনা উত্তম বিচারক।
বাধা ও সংশয়
ইসলাম নির্দেশিত পর্দা নারীদের রক্ষাকবচ। যদিও এর পক্ষে বিপক্ষে অনেক বক্তব্য বর্ণিত হয়েছে। আধুনিক তথাকথিত কতিপয় শিক্ষিত ও বুদ্ধিজীবী প-িত মহল ইসলামের পর্দা প্রথার বিপক্ষে অবস্থান করে থাকে। তাদের উত্থাপিত জটিলতা ও বাধা-বিপত্তিগুলো বেশি বেশি আলোচনা হওয়া জরূরী। যেমন,
১. পর্দা কি মুমিন নারীদের জন্য খাছ
উক্ত সন্দেহ দূর করার জন্য আমরা এই আয়াত পড়তে পারি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ قُلۡ لِّاَزۡوَاجِکَ وَ بَنٰتِکَ وَ نِسَآءِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ یُدۡنِیۡنَ عَلَیۡہِنَّ مِنۡ جَلَابِیۡبِہِنَّ.
‘হে আল্লাহর নবী (ﷺ)! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়’ (সূরা আল-আহযাব : ৫৯)। এখানে আল্লাহ তা‘আলা শুধু মুমিন মায়েদের খাছ করেননি। বরং তাদের সকল নারীদের প্রতি পর্দার নির্দেশ করেছেন। মহান আল্লাহ আরো বলেন, وَ اِذَا سَاَلۡتُمُوۡہُنَّ مَتَاعًا فَسۡـَٔلُوۡہُنَّ مِنۡ وَّرَآءِ حِجَابٍ ‘তোমরা তার স্ত্রীদের নিকট কিছু চাইলে পর্দার পিছন হতে চাইবে’ (সূরা আল-আহযাব : ৫৩)। এখানে খাছ হওয়ার কোন দলীল নেই। উক্ত আয়াতে উল্লেখিত সর্বনাম দ্বারা নবী পতœীগণই উদ্দেশ্য হলেও সকল মুমিন নারীই এর অন্তর্ভুক্ত। নি¤েœর আয়াত দ্বারা সেটা বুঝা যায়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ذٰلِکُمۡ اَطۡہَرُ لِقُلُوۡبِکُمۡ وَ قُلُوۡبِہِنَّ ‘এটা তোমাদের ও তাদের হৃদয়শুদ্ধ থাকার বেশি উপযোগী’ (সূরা আল-আহযাব : ৫৩)। যেহেতু নবী পতœীদের চেয়ে মুমিন নারীদের হৃদয়ের পরিশুদ্ধতা বেশি জরুরী।
এ বিষয় আল্লামা শানক্বীত্বী (রাহিমাহুল্লাহ) ‘আল-আযওয়া’ গ্রন্থে বলেন, ‘পর্দা ওয়াজিব হওয়ার কারণ মহান আল্লাহ যেটা নির্ধারণ করেছেন, তা হচ্ছে ব্যাধি হতে নারী-পুরুষ উভয়ের হৃদয়ের শুদ্ধতা। আর এখানে এই আলামত সুস্পষ্ট যে এটা ব্যাপক বিধান। কেননা কোন মুসলিম মনীষি বলেননি যে, নবী পতœীগণ ব্যতিরেকে অন্য নারীদের উপর আত্মশুদ্ধি যরূরী নয়। আর বিধিমালায় একথা স্বীকৃত যে ইল্লাত তথা কারণটা তার মালূল এর সর্বোত্তম বিধান রাখে। আর আমরা যা আলোচনা করলাম তাতে জানা যায় যে, অত্র আয়াত স্পষ্ট প্রমাণ করে যে, সকল নারীর ক্ষেত্রে পর্দার আবশ্যকতার বিধান ব্যাপক। শুধু নবী-পতœীগণের জন্য খাছ নয়। যদিও মূল বক্তব্য তাদেরই বুঝায়। কেননা ইল্লতের কারণ ব্যাপকতা বিধানের ব্যাপকতা বুঝয়’।[৭]
২. পর্দা তো আরবী সভ্যতা, ইসলামের ফরয বিধান নয়
বিরোধীদের উক্ত দাবীও সঠিক নয়। এছাড়া এ কথার প্রতিবাদ করা নিষ্প্রয়োজন। যদি এমন হত যে, এই কবিতার প্রবক্তা কে? وَ لۡیَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِہِنَّ عَلٰی جُیُوۡبِہِنَّ ‘তারা যেন তাদের ওড়নাসমূহকে বক্ষদেশে রাখে’ (সূরা আন-নূর : ৩১)।
আর এই কথার প্রবক্তাও কে? یُدۡنِیۡنَ عَلَیۡہِنَّ مِنۡ جَلَابِیۡبِہِنَّ ‘তারা তাদের জিলবাবসমূহকে নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দিবে’ (সূরা আল-আহযাব : ৫৯)। আর এই কথার প্রবক্তা কে? وَ لَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَہُنَّ ‘তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে’ (সূরা আন-নূর : ৩১)।
সুধী পাঠক! আপনাদের নিকটেই প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম যে, এটা কি আরবীয় সভ্যতার বর্ণনা, না-কি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইসলামী বিধান হিসাবে তাঁর কিতাব আল-কুরআনে তা প্রথম প্রকাশ করেছেন?
৩. পর্দা ফরয নয়। কেননা এটা ইসলামের ভিত্তি নয়।
ইসলামের রুকনসমূহের প্রথমটি হচ্ছে ‘আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল’। এটা বান্দাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এর পক্ষ থেকে নির্দেশকৃত যাবতীয় কাজ আঞ্জাম দানে আবশ্যক করে। কেননা শাহাদাতের বাস্তবতা তখনই তৈরি হবে যখন হৃদয়ের বিশ্বাস মুখের বলা এবং কর্ম সম্পাদনের সমন্বয় ঘটবে। সুতরাং সাক্ষ্যর পূর্ণতা আমর ছাড়া হবে না। অতএব যে নারী আল্লাহর একত্বের সাক্ষ্য দিবে এবং নবী (ﷺ)-এর রেসালাতের সাক্ষ্য দিবে; তার উপর আবশ্যক হল আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) পর্দা ও ঢেকে রাখার এবং খোলামেলা বর্জনের যে নির্দেশ দিয়েছেন তা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে মেনে চলা। আর বুদ্ধিমান ব্যক্তি এ ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করবে না যে, আল্লাহ তা‘আলা ছালাত, ছিয়াম, হজ্জ, যাকাত ছাড়াও অনেক ফরয বিধান নির্ধারন করেছেন। কোন আলেমকে মুসলিম পাওয়া যাবে না যে, এই চারটির মধ্যে ফরযসমূহ সীমাবদ্ধ করে।
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
* সুপার, দারুস সুন্নাহ সালাফিয়া মাদরাসা, খালিশপুর, খুলনা।
[১]. মাহমূদ শাকির, আত-তারীখুল ইসলামী, ২য় খ-, পৃ. ১৭।
[২]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৭৭৮৩; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে‘, হা/১৭৫৬।
[৩]. আবূ হাইয়্যান মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ ইবনু হাইয়্যান আছীরুদ্দীন আল-আন্দালুসী, আল-বাহরুল মুহীত্ব ফিত তাফসীর (বৈরূত : দারুল ফিকর, হি.১৪২০ হি.), ৮ম খ-, পৃ. ৫০৪।
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৯; ছহীহ মুসলিম, হা/৩৫।
[৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৬১১৭; ছহীহ মুসলিম, হা/৩৭।
[৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৬১।
[৭]. মুহাম্মাদ আল-আমীন ইবনু মুহাম্মাদ আল-মুখতার আশ-শানক্বীতী, আযওয়াউল বায়ান ফী ইযাইল কুরআন বিল কুরআন (বৈরূত : দারুল ফিকর, ১৪১৫ হি./১৯৯৫ খ্রি.), ৬ষ্ঠ খ-, পৃ. ২৪২।