মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর পারিবারিক জীবন
- অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ*


(৩য় কিস্তি)

স্ত্রীদের কেউ নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখতে গেলে তিনি তাদেরকে এগিয়ে গিয়ে কৃতজ্ঞতা জানাতেন, যদিও তিনি ই‘তিকাফ অবস্থায় থাকতেন:

عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ حُيَيٍّ قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُعْتَكِفًا فَأَتَيْتُهُ أَزُوْرُهُ لَيْلًا فَحَدَّثْتُهُ ثُمَّ قُمْتُ فَانْقَلَبْتُ فَقَامَ مَعِيْ لِيَقْلِبَنِيْ وَكَانَ مَسْكَنُهَا فِيْ دَارِ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ فَمَرَّ رَجُلَانِ مِنَ الْأَنْصَارِ فَلَمَّا رَأَيَا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَسْرَعَا فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى رِسْلِكُمَا إِنَّهَا صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَيٍّ فَقَالَا سُبْحَانَ اللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ إِنَّ الشَّيْطَانَ يَجْرِيْ مِنَ الْإِنْسَانِ مَجْرَى الدَّمِ وَإِنِّيْ خَشِيْتُ أَنْ يَقْذِفَ فِيْ قُلُوْبِكُمَا سُوْءًا.

ছাফিয়্যাহ বিনতে হুয়াই (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ই‘তিকাফ অবস্থায় ছিলেন। আমি রাতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসলাম এবং তাঁর সঙ্গে কিছু কথা বললাম। অতঃপর আমি ফিরে আসার জন্য দাঁড়ালাম। তখন আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও আমাকে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমার সঙ্গে উঠে দাঁড়ালেন। আর তাঁর বাসস্থান ছিল উসামাহ ইবনু যায়দের বাড়িতে। এ সময় দু’জন আনছারী ছাহাবী সে স্থান দিয়ে অতিক্রম করল। তারা যখন নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখল, তখন তারা শীঘ্রই চলে যেতে লাগল। তখন নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা একটু থাম। এ হল ছাফিয়্যাহ বিনতে হুয়াই। তারা বললেন, সুবহানাল্লাহ! হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! (আমরা কি আপনার বিষয়ে খারাপ ধারণা করতে পারি?) তিনি বললেন, মানুষের রক্তধারায় শয়তান প্রবহমান থাকে। আমি শঙ্কাবোধ করছিলাম, সে তোমাদের মনে কোন খারাপ ধারণা সৃষ্টি করে কি-না’।[১]

একটু ভাবুন তো! স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ই‘তিকাফ অবস্থায় তাঁর স্ত্রীকে এগিয়ে দিচ্ছেন, যাতে সে নিরাপদে বাড়িতে ফিরতে পারে। অথচ ই‘তিকাফ অবস্থায় বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মসজিদ থেকে বের হওয়া যায় না। জনৈক আরবী কবি বলেন,

أبياتنا بالحبِّ نبنيها .. زوجاتنا قد نورت فيها

بالبرِّ والتقوى نعمرها .. وبسنّةِ المختار نحييها

هذا رسول الله قدوتنا .. تكفيك سنته وتكفيها

يُبدي محبته لزوجتهِ .. وسواهُ يستعلي فيخفيها

بدعابةٍ منه يضاحكها .. وبأجملِ الأسما يناديها

قبل الخروج دنا يقبلها .. ذكري لها فمه علي فيها

مامدّ يوماً كفه بأذى .. بل تلك نبع الخير يجريها

‘আমরা আমাদের বাড়ীগুলোকে ভালবাসার আদলে গড়ে তুলতে চাই, সেখানে আমাদের স্ত্রীরা বাড়িকে সুসজ্জিত করবে’।

‘সততা ও তাক্বওয়ার ধাঁচে তাদের গড়তে চাই, উত্তম সুন্নাহর আদলে তাদের গড়তে চাই’।

‘একমাত্র নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই আমাদের আদর্শ, তোমার এবং তোমার স্ত্রীর জন্য একমাত্র তাঁর আদর্শই যথেষ্ট’।

‘স্ত্রীদের জন্য তাঁর ভালবাসা প্রকাশ পেত, আর অপসন্দনীয় বিষয়গুলোকে গোপন করে রাখতেন’।

‘তিনি রসিকতাপূর্ণ আচরণ দ্বারা স্ত্রীকে হাসাতেন এবং সুন্দর সুন্দর নামে তাদেরকে সম্বোধন করতেন’।

‘বাড়ী থেকে বের হওয়ার আগে তিনি অন্তরঙ্গ হয়ে স্ত্রীকে চুম্বন করতেন, তাকে উপদেশ দানের সময় তাঁর মুখটা থাকত ঠিক তার মুখের কাছে’।

‘তাঁর হাত দিয়ে কখনো ক্ষতি সাধিত হয়নি, বরং তাঁর থেকে সদা কল্যাণকর কাজ প্রকাশ পেত’।

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পুণ্যবতী নেককার স্ত্রীদের সাথে সুন্দর, সৌভাগ্যময় ও ঈর্ষান্বিত জীবন অতিবাহিত করেছেন। তাঁদের পরস্পর কাজের মধ্যে সূক্ষ্ম সমন্বয়তা বিদ্যমান ছিল। মহান আল্লাহ বলেন, وَ عَاشِرُوۡہُنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِ  ‘আর তোমরা তাদের সাথে সৎভাবে বসবাস কর’ (সূরা আন-নিসা : ১৯)।

আরো আশ্চর্যের বিষয় হল, আমরা স্বয়ং নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে বলতে শুনি। তিনি বলেন, خَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لِأَهْلِهِ وَأَنَا خَيْرُكُمْ لِأَهْلِي ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম যে নিজের পরিবারের কাছে উত্তম। আর আমি তোমাদের চেয়ে আমার পরিবারের কাছে অধিক উত্তম’।[২] অন্যত্র তিনি বলেন, أَكْمَلُ المُؤْمِنِيْنَ إِيْمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا وَخَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لِنِسَائِهِمْ ‘মুমিনদের মধ্যে ঈমানে সেই পরিপূর্ণ, তাদের মাঝে যার চরিত্র সুন্দরতম। তোমাদের মধ্যে উত্তম হল তারা, যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম’।[৩]

নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোনদিন তাঁর কোন স্ত্রীকে আঘাত করেছেন অথবা তুচ্ছজ্ঞান করেছেন, এমন কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না। আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন,

مَا ضَرَبَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا قَطُّ بِيَدِهِ وَلَا امْرَأَةً وَلَا خَادِمًا إِلَّا أَنْ يُجَاهِدَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ.

‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নিজ হাতে কোনদিন কাউকে মারেননি, কোন স্ত্রীকেও না, খাদিমকেও না, আল্লাহর পথে জিহাদ ছাড়া। আর যে তাঁর ক্ষতি করেছে, তার থেকে প্রতিশোধও গ্রহণ করেননি। তবে মহীয়ান ও গরীয়ান আল্লাহর মর্যাদা হানিকর কোন কিছু করলে তিনি তার প্রতিশোধ নিয়েছেন’।[৪]

একটু ভাবুন তো! এ ব্যাপারে আজকের যুগের লোকদের অবস্থা কী সাংঘাতিক? তারা তাদের স্ত্রীদের মুখে, মাথায়, পিঠে সব জায়গায় আঘাত করে থাকে। এমনকি তারা কখনো কখনো খুব তুচ্ছ কারণে স্ত্রীদেরকে লাঠি বা জুতা দিয়েও প্রহার করে। একটি হাদীছে বর্ণিত হয়েছে,

عَنْ إِيَاسِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ ذُبَابٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَضْرِبُوْا إِمَاءَ اللهِ فَجَاءَ عُمَرُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ ذَئِرْنَ النِّسَاءُ عَلَى أَزْوَاجِهِنَّ فَرَخَّصَ فِيْ ضَرْبِهِنَّ فَأَطَافَ بِآلِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نِسَاءٌ كَثِيْرٌ يَشْكُوْنَ أَزْوَاجَهُنَّ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقَدْ طَافَ بِآلِ مُحَمَّدٍ نِسَاءٌ كَثِيْرٌ يَشْكُوْنَ أَزْوَاجَهُنَّ لَيْسَ أُولَئِكَ بِخِيَارِكُمْ.

ইয়াস ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু আবূ যুবাব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা আল্লাহর দাসীদেরকে মারবে না। অতঃপর ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন, মহিলারা তাদের স্বামীদের অবাধ্য হচ্ছে। এরপর তিনি তাদেরকে মৃদু আঘাত করার অনুমতি দিলেন। অতঃপর অনেক মহিলা এসে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রীদের কাছে স্বামীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করল। তখন নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, মুহাম্মাদের পরিবারের কাছে অনেক মহিলা তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এসেছে। সুতরাং যারা স্ত্রীদেরকে প্রহার করে তারা তোমাদের মধ্যে উত্তম নয়।[৫] অর্থাৎ যারা স্ত্রীদেরকে প্রহার করে তারা তোমাদের মধ্যে উত্তম লোক নয়, বরং যারা স্ত্রীদেরকে প্রহার না করে তাদেরকে সহ্য করে চলে তারাই অধিক উত্তম।[৬]

এজন্য আরবে কথিত আছে যে, ‘সম্মানিত লোকেরাই কেবল নারীদেরকে সম্মান করে। আর নীচু শ্রেণীর লোক ছাড়া কেউ তাদেরকে তুচ্ছজ্ঞান করে না। এজন্য সম্মানিত লোকদের উপর নারীরা বিজয় লাভ করে এবং ইতর লোকেরা নারীদের উপর বিজয় লাভ করে’।

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নারীদের সাথে কোমল আচরণের অছিয়ত করেছেন। তিনি এরশাদ করেন,

وَاسْتَوْصُوْا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا فَإِنَّهُنَّ خُلِقْنَ مِنْ ضِلَعٍ وَإِنَّ أَعْوَجَ شَيْءٍ فِي الضِّلَعِ أَعْلَاهُ فَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيْمُهُ كَسَرْتَهُ وَإِنْ تَرَكْتَهُ لَمْ يَزَلْ أَعْوَجَ فَاسْتَوْصُوْا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا.

‘আর তোমরা নারীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে। কেননা তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের হাড় থেকে এবং সবচেয়ে বাঁকা হচ্ছে পাঁজরের ওপরের হাড়। যদি তুমি তা সোজা করতে যাও, তাহলে ভেঙে যাবে। আর যদি তুমি তা যেভাবে আছে সে ভাবে রেখে দাও, তাহলে বাঁকাই থাকবে। অতএব তোমাদেরকে অছিয়ত করা হল নারীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করার’।[৭]

উপরের হাদীছে নারীদের সাথে কোমল আচরণ করা ও তাদেরকে সহ্য করে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন ও ইহসান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের চারিত্রিক ত্রুটির ব্যাপারে ধৈর্যধারণ ও সহ্য করে থাকতে বলা হয়েছে।[৮] অন্য একটি হাদীছে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

إِنَّ الْمَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلْعٍ وَإِنَّكَ إِنْ تُرِدْ إِقَامَةَ الضِّلْعِ تَكْسِرْهَا فَدَارِهَا تَعِشْ بِهَا.

‘নারীদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের হাড় থেকে। যদি তুমি তা সোজা করতে যাও, তাহলে ভেঙে যাবে। অতএব কোমল আচরণের সাথে সৎভাবে তার সাথে বসবাস কর’।[৯]

পুরুষের জন্য আবশ্যক হল- নারীদের ব্যাপারে ধৈর্যধারণ করা এবং তাদের ছোট-খাট ভুলত্রুটিগুলোকে সহ্য করে তাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া। একটু সুযোগ পেলেই রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই অছিয়তটি  বারবার করতেন।

বিদায় হজ্জের ঐতিহাসিক ভাষণে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বতন্ত্রভাবে এ বিষয়ে অছিয়ত করে এরশাদ করেন,

أَلَا وَاسْتَوْصُوْا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا فَإِنَّمَا هُنَّ عَوَانٌ عِنْدَكُمْ لَيْسَ تَمْلِكُوْنَ مِنْهُنَّ شَيْئًا غَيْرَ ذَلِكَ.

‘শোন! তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে। তারা তো তোমাদের কাছে বন্দী। তাছাড়া আর কোন বিষয়ে তোমরা তাদের মালিক নও’।[১০]

যখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছু স্বামীদের অবস্থা জানতে পারলেন যে, তারা রাগের সময় নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, স্ত্রীদের অবাধ্যতা তাদেরকে ত্বালাক্ব বা পৃথকীকরণের দিকে উদ্বুদ্ধ করে, এমনকি তারা সম্পর্ককে নষ্ট করে দেয় এবং পরিবার-পরিজন থেকে পৃথক হয়ে যায়। তখন নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারবার তাদেরকে স্ত্রীদের ব্যাপারে অছিয়ত করতেন। এজন্য আরেকটি হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বামী-স্ত্রীর পরস্পর সম্পর্কের উন্নতি সাধনের দিক-নির্দেশনা দিয়ে এরশাদ করেন,

لَا يَفْرَكْ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً إِنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا رَضِيَ مِنْهَا آخَرَ.

‘কোন ঈমানদার পুরুষ যেন কোন ঈমানদার নারীকে (স্ত্রীকে) ঘৃণা না করে। যদি সে তার একটি আচরণে অসন্তুষ্ট হয়, তবে অন্য আচরণে সন্তুষ্ট হবে’।[১১] অর্থাৎ স্বামীর জন্য স্ত্রীর উপর রাগ করা সমীচীন নয়। কেননা সে যদি স্ত্রীর মধ্যে অপসন্দনীয় একটি আখলক্ব দেখতে পায়, তাহলে অবশ্যই সে তার মধ্যে সন্তুষ্টিজনক আরেকটি আখলাক্বও দেখতে পাবে। যদিও তার মধ্যে কিছু মন্দ স্বভাব বিদ্যমান থাকে, তবুও তার দ্বীন, সৌন্দর্যতা, কোমল আচরণ ইত্যাদি ভাল বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল করে তাকে ক্ষমা করে দেয়া উচিত।[১২]

এভাবে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্ত্রীদের সাথে সদা ভাল আচরণ করতেন। তাদেরকে খুশী করার জন্য প্রফুল্ল চিত্তে তাদের সাথে দেখা করতেন। তাদের সাথে বসতেন। তাদের সাথে খেতেন। তাদের সাথে গল্প করতেন। তিনি তাদের সাথে রসিকতা করতেন। তাদের সাথে পরামর্শ করতেন। তাদেরকে সহমর্মিতা দেখাতেন। তাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকতেন। আবার তাদের ভুল-ত্রুটিতে কখনো কখনো রাগান্বিতও হতেন।

নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্ত্রীদেরকে সব সময় ভাল অছিয়ত করতেন

عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّكُمْ سَتَفْتَحُوْنَ مِصْرَ وَهِيَ أَرْضٌ يُسَمَّى فِيْهَا الْقِيْرَاطُ فَإِذَا فَتَحْتُمُوْهَا فَأَحْسِنُوْا إِلَى أَهْلِهَا فَإِنَّ لَهُمْ ذِمَّةً وَرَحِمًا أَوْ قَالَ ذِمَّةً وَصِهْرًا.

আবু যার গিফারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, অচিরেই তোমরা মিশর জয় করবে। সেটা এমন একটি দেশ, যেখানে ‘ক্বীরাত’ নামের মুদ্রা প্রচলিত। যখন তোমরা সেই দেশ জয় করবে, তখন সেখানকার অধিবাসীদের সঙ্গে সদাচরণ করবে। কেননা তাদের জন্য রয়েছে দায়িত্ব ও আত্মীয়তার সম্পর্ক। অথবা তিনি বলেছেন, যিম্মাদারী ও দাম্পত্য সম্পর্কে রয়েছে।[১৩]

হাদীছের মধ্যকার (ذِمَّةً) দ্বারা ‘অধিকার ও সম্মান’ উদ্দেশ্য। আত্মীয়তার সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে ইসমাঈলের (আলাইহিস সালাম) মা হাজেরা নারীদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে। আর দাম্পত্য সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এর মাতা মারিয়্যাহ এর দিকে লক্ষ্য করে।[১৪]

নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্ত্রীদের অনুভূতিকে মূল্যায়ন করতেন

নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) কখনো সন্তুষ্টচিত্তে এবং কখনো রাগান্বিত থাকতেন তা তিনি বুঝতে পারতেন। যেমন একদা আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-কে লক্ষ্য করে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,

إِنِّيْ لَأَعْلَمُ إِذَا كُنْتِ عَنِّيْ رَاضِيَةً وَإِذَا كُنْتِ عَلَيَّ غَضْبَى قَالَتْ فَقُلْتُ مِنْ أَيْنَ تَعْرِفُ ذَلِكَ؟ فَقَالَ أَمَّا إِذَا كُنْتِ عَنِّيْ رَاضِيَةً فَإِنَّكِ تَقُوْلِيْنَ: لَا وَرَبِّ مُحَمَّدٍ وَإِذَا كُنْتِ عَلَيَّ غَضْبَى قُلْتِ لَا وَرَبِّ إِبْرَاهِيْمَ قَالَتْ قُلْتُ أَجَلْ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا أَهْجُرُ إِلَّا اسْمَكَ.

‘আমি জানি কখন তুমি আমার প্রতি খুশি থাক এবং কখন রাগান্বিত হও। আমি বললাম, কী করে আপনি তা বুঝতে পারেন? তিনি বললেন, তুমি প্রসন্ন থাকলে বল, না মুহাম্মদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রব-এর কসম! কিন্তু তুমি আমার প্রতি নারাজ থাকলে বল, না! ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এর রব এর কসম! শুনে আমি বললাম, আপনি ঠিকই বলেছেন। আল্লাহর কসম, ইয়া রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! সে ক্ষেত্রে শুধু আপনার নাম উচ্চারণ করা থেকেই বিরত থাকি’।[১৫]

বহু স্বামী আছে যারা তাদের স্ত্রীদের রাগ-সন্তুষ্টিকে পাত্তাই দেয় না। অথচ মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাষ্ট্র পরিচালনার গুরু দায়িত্ব, বিভিন্ন গাযওয়া ও যুদ্ধ পরিচালনা, সৈন্যদল সজ্জিতকরণ, দেশে দেশে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছান, রুম-পারস্যে পত্র প্রেরণ ইত্যাদি নানান গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোও কখনো তাঁকে স্ত্রীদের অনুভূতিকে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করত না।

অথচ আজকের দিনের স্বামীদের কী অবস্থা? তারা তাদের স্ত্রীদের অনুভূতিকে মূল্যায়নই করতে চায় না। স্ত্রী সন্তুষ্ট আছে না-কি অসন্তুষ্ট, সে চিন্তিত আছে না-কি সুখে-স্বাচ্ছন্দে আছে? এ বিষয়গুলোকে তারা পাত্তাই দিতে চায় না।

এমনিভাবে নীচের হাদীছটির দিকে একটু দৃষ্টি নিবন্ধিত করুন, সেখানে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী হাফছা তাঁর অন্য স্ত্রী ছাফিয়্যাহকে ইহুদী বলে ভর্ৎসনা করলে, তিনি কত উত্তম কথার দ্বারাই না ছাফিয়্যাহর অনুভূতির মূল্যায়ন করেছিলেন, যাতে তার অন্তর প্রশান্তি লাভ করে।

عَنْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَلَغَ صَفِيَّةَ أَنَّ حَفْصَةَ قَالَتْ بِنْتُ يَهُوْدِيٍّ فَبَكَتْ فَدَخَلَ عَلَيْهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهِيَ تَبْكِيْ فَقَالَ مَا يُبْكِيْكِ؟ فَقَالَتْ قَالَتْ لِيْ حَفْصَةُ إِنِّيْ بِنْتُ يَهُوْدِيٍّ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَإِنَّكِ لَابْنَةُ نَبِيٍّ وَإِنَّ عَمَّكِ لَنَبِيٌّ وَإِنَّكِ لَتَحْتَ نَبِيٍّ فَفِيْمَ تَفْخَرُ عَلَيْكِ؟ ثُمَّ قَالَ اتَّقِى اللهَ يَا حَفْصَةُ.

আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ছাফিয়্যাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর কানে পৌঁছে যে, হাফছাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) তাকে ইহুদীর মেয়ে বলে ঠাট্টা করেছেন। তাই তিনি কাঁদছিলেন। তার ক্রন্দনরত অবস্থায় নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার ঘরে প্রবেশ করেন। তিনি বললেন, তোমাকে কিসে কাঁদাচ্ছে? তিনি বললেন, হাফছাহ আমাকে ইহুদীর মেয়ে বলে তিরস্কার করেছেন। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, অবশ্যই তুমি একজন নবীর কন্যা, তোমার চাচা অবশ্যই একজন নবী এবং তুমি একজন নবীর সহধর্মিণী। অতএব কিভাবে হাফছাহ তোমার উপরে অহংকার করতে পারে? তারপর তিনি বললেন, হে হাফছাহ! আল্লাহকে ভয় কর’।[১৬]

এখানে (وَإِنَّكِ لَابْنَةُ نَبِيٍّ) অর্থাৎ ‘অবশ্যই তুমি একজন নবীর কন্যা’ দ্বারা হারূন ইবনু ‘ইমরান (আলাইহিস সালাম)-এর দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে এবং (وَإِنَّ عَمَّكِ لَنَبِيٌّ) ‘তোমার চাচা অবশ্যই একজন নবী’ দ্বারা মূসা ইবনু ‘ইমরান (আলাইহিস সালাম) উদ্দেশ্য।[১৭]

নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্ত্রীকে চিন্তিত বা অসুস্থ দেখলে সমবেদনা জানাতেন

হজ্জের সফরে আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ঋতুবতী হওয়ার কারণে কাঁদতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকটে গমন করে সান্ত¦না দিয়ে বললেন,

مَا لَكِ أَنُفِسْتِ؟ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ إِنَّ هَذَا أَمْرٌ كَتَبَهُ اللهُ عَلَى بَنَاتِ آدَمَ فَاقْضِيْ مَا يَقْضِي الحَاجُّ غَيْرَ أَنْ لَا تَطُوْفِيْ بِالْبَيْتِ.

‘(হে আয়েশা!) কী হল তোমার? তোমার কী হায়েয এসেছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, এ তো আল্লাহ তা‘আলাই আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং তুমি বায়তুল্লাহর ত্বাওয়াফ ছাড়া হজ্জের বাকী সব কাজ করে যাও’। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, আমি যখন হজ্জ সমাপ্ত করলাম, তখন তিনি (আমার ভাই) আব্দুর রহমানকে নির্দেশ দিলেন এবং তিনি তদনুযায়ী আমাকে তার বাহনের পেছন দিকে বসিয়ে তান‘ঈম থেকে ‘উমরা করালেন- এটা সেই ‘উমরার বদলে, (ঋতুর কারণে) আমি যা পালন থেকে বিরত ছিলাম।[১৮]

স্ত্রীদের আরো যে বিষয়গুলোর প্রতি স্বামীদের দৃষ্টি দেয়া দরকার তার মধ্যে রয়েছে, স্ত্রীদের ঋতু, নিফাস বা সন্তান প্রসবকালীন তাদের মধ্যে যে মানসিক পরিবর্তন ঘটে, এসময়ে তাদের সাথে কষ্টদায়ক কোন আচরণ না করা। বরং স্বামীদের জন্য স্ত্রীদের এসময় অবস্থা বিবেচনায় রেখে তাদের সাথে ভাল আচরণ করা যরূরী। কেননা স্ত্রী এ সময়ে স্বামীর কাছ থেকে এমন অনুগ্রহের দাবী রাখে।

নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্ত্রীকে অসুস্থ দেখলে ঝাড়ফুঁক করে দিতেন এবং মাথায় সহানুভূতির পরশ বুলিয়ে দিতেন

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُعَوِّذُ بَعْضَ أَهْلِهِ يَمْسَحُ بِيَدِهِ اليُمْنَى وَيَقُوْلُ اللّٰهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبِ البَاسَ اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِيْ لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا.

আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কোন কোন স্ত্রীকে সূরা নাস এবং সূরা ফালাক পড়ে ডান হাত দ্বারা বুলিয়ে দিতেন এবং পড়তেন, হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূর করুন এবং শিফা দান করুন, আপনিই শিফা দানকারী, আপনার শিফা ছাড়া অন্য কোন শিফা নেই। এমন শিফা দিন, যা কোন রোগ অবশিষ্ট থাকে না’।[১৯]

স্ত্রীর ব্যথার স্থানে স্বামী যদি সহানুভূতির পরশ বুলিয়ে দেয়, তাহলে ব্যথা ভাল না হলেও স্ত্রীর অন্তরে স্বামীর প্রতি বড় প্রভাব পড়ে। যদিও সেই অসুখ ভাল না হয়, তারপরেও স্ত্রীর মনে হয় স্বামী তার কষ্ট অনুভব করছে।

যেমন উম্মে যারা‘ (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর হাদীছে জনৈকা স্ত্রীকে তার স্বামী সম্পর্কে দোষারোপ করতে দেখা যায়। যেমন সেই মহিলার উক্তি,  وَلَا يُوْلِجُ الْكَفَّ لِيَعْلَمَ الْبَثَّ ‘এমনকি হাত বের করেও আমার খবর নেয় না’।[২০] অর্থাৎ সেই নারীর স্বামী একবারের জন্যও পাশ ফিরে স্ত্রীর খবর নেয় না যে, সে কোন দুশ্চিন্তার মধ্যে আছে কিনা। হাদীছের মধ্যে (الْبَثَّ) শব্দ দ্বারা ‘চিন্তা’ উদ্দেশ্য। একইভাবে শব্দটি ‘অভিযোগ’ বা ‘অসুস্থতা’ অর্থেও ব্যবহার হয়। এখানে সেই নারী তার চাহিদার প্রতি স্বামীর গুরুত্ব না দেয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে স্বামীকে তার প্রতি অল্প সহানুভূতিশীল বলে উল্লেখ করেছে।[২১]

এখানে সেই স্ত্রী তার প্রতি স্বামীর উদাসীনতার কারণে তাকে দোষারোপ করেছে। কেননা কোন বিপদাপদ বা অসুস্থতার সময়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরস্পর সমবেদনা জানানো আকাক্সিক্ষত একটি বিষয়।

অধিকাংশ স্বামী এবিষয়গুলোর দিকে ভ্রুক্ষেপ করে না। তারা মনে করে তাদের স্ত্রীরা সব সময় সুস্থ সবল থাকবে, কখনো অসুস্থ হতেই পারে না। যখন স্ত্রী অসুস্থ হয়, তখন তাকে তার পিতার বাড়িতে রেখে আসে অথবা কোন হাসপাতালে একা ছেড়ে আসে। কেননা এই অবস্থায় স্বামী তার সাথে উঠাবসা করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে না।

(চলবে ইনশাআল্লাহ)



* এম.ফিল গবেষক, আরবী বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

[১]. ছহীহ  বুখারী, হা/৩২৮১; ছহীহ মুসলিম, হা/২১৭৫।

[২]. তিরমিযী, হা/৩৮৯৫; ইবনু মাজাহ, হা/১৯৭৭; আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) ছহীহ বলেছেন, ছহীহুল জামে‘, হা/৩৩১৪।

[৩]. তিরমিযী, হা/১১৬২; আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) ছহীহ বলেছেন।

[৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩২৮; মিশকাত, হা/৫৮১৮।

[৫]. আবুদাউদ, হা/২১৪৬; ইবনে মাজাহ, হা/১৯৮৫; আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) ছহীহ বলেছেন; মিশকাত, হা/৩২৬১।

[৬]. ‘আওনুল মা‘বূদ, ৬ষ্ঠ খ-, পৃ. ১৩০।

[৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৩৩১, ৫১৮৬।

[৮]. ইমাম নববী, শরহে মুসলিম, ১০ম খ-, পৃ. ৫৭।

[৯]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২০০৯৩, আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) ছহীহ বলেছেন, ছহীহুল জামে‘, হা/১৯৪৪।

[১০]. তিরমিযী, হা/১১৬৩; ইবনে মাজাহ, হা/১৮৫১; আলবানী হাসান বলেছেন, ছহীহুল জামে‘, হা/৭৮৮০।

[১১]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৪৬৯।

[১২]. নববী, শরহে মুসলিম, ১০ম খ-, পৃ. ৫৮।

[১৩]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৪৩।

[১৪]. নববী, শরহে মুসলিম, ১৬তম খ-, পৃ. ৯৭।

[১৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৫২২৮; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৩৯।

[১৬]. তিরমিযী, হা/৩৮৯৪।

[১৭]. তুহফাতুল আহওয়াযী, ১০ম খ-, পৃ. ২৬৮।

[১৮]. ছহীহ বুখারী, হা/২৯৪; ছহীহ মুসলিম, হা/১২১১।

[১৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৭৪৩; ছহীহ মুসলিম, হা/২১৯১।

[২০]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৮১০।

[২১]. ইবনু হাজার, ফাৎহুল বারী, ৯ম খ-, পৃ. ২৬৩।




প্রসঙ্গসমূহ »: জীবন কথা নবী-রাসূল
নববী আদর্শ (১৯তম পর্ব) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
নববী আদর্শ (১৮তম পর্ব) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
নববী আদর্শ (৬ষ্ঠ পর্ব) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
নববী আদর্শ (৭ম পর্ব) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
নববী আদর্শ (১৩তম পর্ব) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
নববী আদর্শ (১২তম পর্ব) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
নববী আদর্শ (২০তম পর্ব) - আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
নববী আদর্শ - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
নববী আদর্শ (৯ম পর্ব) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
নববী আদর্শ (৩য় পর্ব) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
নববী আদর্শ (১১তম পর্ব) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
নববী আদর্শ (১৬ তম পর্ব) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ

ফেসবুক পেজ