রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পারিবারিক জীবন
-মূল : শায়খ মুহাম্মাদ ছালেহ আল-মুনাজ্জিদ
-অনুবাদক : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ*
(২য় কিস্তি)
গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিক্ষা :
(ক). রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে আগমনকারী খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর বান্ধবী অতি বৃদ্ধা হওয়া সত্ত্বেও তিনি তার নাম পরিবর্তন করে আরো সুন্দর ও মুনোমুগ্ধকর নাম রাখলেন। কেননা ‘জাছ্ছামাহ’ নামের অর্থ হল, ‘অতি অলস, যে কোন কাজ-কর্ম করতে চায় না’। অথচ রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাখা পরিবর্তিত নাম ‘হাস্সানাহ’ এর অর্থ হল, ‘অত্যন্ত সুন্দরী’। এটি চমৎকার একটি নাম, আজকের যামানায় যে নামগুলোর দ্বারা খুব কমই মহিলাদের নামকরণ করা হয়ে থাকে।[১]
(খ). সৌহার্দপূর্ণ উত্তম আচরণ ও অঙ্গীকার পূরণ ঈমানদারদের আখলাকের অন্তর্ভুক্ত। আর খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর বান্ধবীকে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উত্তমভাবে সম্ভাষণ জানানো, তার সাথে সুন্দর আচরণ করা, তার প্রতি গভীর মমত্ববোধ দেখানো এসব কিছুই খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর প্রতি তাঁর গভীর ভালাবাসা থাকার কারণেই, যিনি তাঁর হাতকে শক্তিশালী করেছিল, তার কষ্ট লাঘব করেছিলেন এবং বিপদে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন।
বর্তমান সময়ে অনেক স্বামীই তার স্ত্রীকে অবজ্ঞা করে চলে, অথচ এই স্ত্রীই বিবাহের প্রথম দিকে তার বাড়ি নির্মাণ ও গোছানোর কাজে সহযোগিতা করেছিল, তার হাতে হাত রেখে তাকে সাহায্য করেছিল এবং যাবতীয় কষ্ট সহ্য করেছিল। নিঃসন্দেহে অবজ্ঞা করা সৌহার্দপূর্ণ উত্তম আচরণের মধ্যে পড়ে না।
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্ত্রীকে ভালবাসার ক্ষেত্রে কোন ত্রুটি করতেন না। যেমন তিনি খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) সম্পর্কে বলেন, إِنِّيْ قَدْ رُزِقْتُ حُبَّهَا ‘তার ভালবাসা আমার মনে জায়গা করে নিয়েছে’।[২] উক্ত হাদীছ ইঙ্গিত বহন করে যে, খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর প্রতি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অগাধ ভালবাসা ছিল।[৩]
আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর প্রতি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অগাধ ভালবাসা ছিল। তিনি একমাত্র তাকেই অল্প বয়স্কা নারী হিসাবে বিবাহ করেছিলেন এবং তার মত আর কাউকে ভালবাসেননি। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর প্রতি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই ভালবাসা প্রকাশ্যে ছিল, তিনি তা গোপন করতেন না। একদা ‘আমর ইবনুল ‘আছ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার নিকটে সবচেয়ে প্রিয় কে? তিনি বললেন, আয়েশা। আমি বললাম, পুরুষদের মধ্য হতে কে? তিনি বললেন, তার বাবা আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ।[৪]
বর্তমানকালে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, অনেক স্বামী দীর্ঘ সময় যাবৎ তার স্ত্রীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্কে জড়িত থাকার পরও একদিনের জন্যেও তার কাছে ভালবাসার কথা প্রকাশ্যে নিবেদন করে না। অনেকেই আবার এটাকে ব্যক্তিত্বের খেলাফ বলে মনে করে। আবার অনেকে লজ্জার কারণে এই কাজ থেকে বিরত থাকে। অনেক মানুষ তো এটা জানেই না যে, স্ত্রীর সামনে প্রকাশ্যে ভালবাসার কথা নিবেদন করা বৈবাহিক সম্পর্ককে দীর্ঘস্থায়ীভাবে মধুর ও সুখময় করে। এছাড়া এটি পরস্পর বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি করে। প্রতিটি স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে প্রকাশ্যে ভালবাসা পেতে চায় এবং তা অফুরন্ত পেতে চায়। অনেক স্ত্রীর ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত খারাপ কাজ সংঘটিত হতে দেখা যায়, যখন তারা অন্যের কাছ থেকে এমন সুন্দর আচরণ পায়, যা স্বামীর কাছ থেকে পায় না।
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাড়ি থেকে বের হওয়ার পূর্বে স্ত্রীকে চুম্বন করতেন
আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত,
أَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَبَّلَ بَعْضَ نِسَائِهِ ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الصَّلَاةِ وَلَمْ يَتَوَضَّأْ قَالَ قُلْتُ مَنْ هِىَ إِلَّا أَنْتِ قَالَ فَضَحِكَتْ
‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর জনৈকা স্ত্রীকে চুম্বন করলেন এবং ছালাতের জন্য বের হয়ে গেলেন; কিন্তু ওযূ করলেন না। রাবী ‘উরওয়া বলেন, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঐ স্ত্রী আপনি ছাড়া আর কেউ হবেন না। এই কথা শুনে আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হাসলেন’।[৫] এমনকি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিয়ামাবস্থায়ও তাঁর স্ত্রীদের চুম্বন করতেন। যেমন আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে একটি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে যে,
كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَبِّلُ وَيُبَاشِرُ وَهُوَ صَائِمٌ وَكَانَ أَمْلَكَكُمْ لِإِرْبِهِ
‘নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিয়াম অবস্থায় চুমু খেতেন এবং গায়ে গা লাগাতেন। তবে তিনি তাঁর প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে তোমাদের চেয়ে অধিক সক্ষম ছিলেন’।[৬]
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী যেখান থেকে পানি পান করতেন, তিনিও সেখান থেকে পানি পান করতেন
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كُنْتُ أَشْرَبُ وَأَنَا حَائِضٌ ثُمَّ أُنَاوِلُهُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَضَعُ فَاهُ عَلَى مَوْضِعِ فِيَّ فَيَشْرَبُ وَأَتَعَرَّقُ الْعَرْقَ وَأَنَا حَائِضٌ ثُمَّ أُنَاوِلُهُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَضَعُ فَاهُ عَلَى مَوْضِعِ فِيَّ
আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ঋতুবতী অবস্থায় পানি পান করতাম এবং পরে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অবশিষ্টটুকু প্রদান করলে আমি যেখানে মুখ লাগিয়ে পান করতাম তিনিও পাত্রের সে স্থানে মুখ লাগিয়ে পান করতেন। আবার আমি ঋতুবতী অবস্থায় হাড় খেয়ে তা নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দিলে আমি যেখানে মুখ লাগিয়েছিলাম তিনি সেখানে মুখ লাগিয়ে খেতেন’।[৭] অন্য বর্ণনায় এসেছে, আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَضَعُ فَاهُ عَلَى الْمَوْضِعِ الَّذِيْ أَشْرَبُ مِنْهُ وَيَشْرَبُ مِنْ فَضْلِ شَرَابِي وَأَنَا حَائِضٌ
‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মুখ ঐ স্থানে রাখতেন, যে স্থান থেকে আমি পান করতাম আর তিনি আমার পান করার পর উদ্বৃত্ত পানি পান করতেন অথচ তখন আমি ছিলাম ঋতুবতী’।[৮]
এটাই ছিল স্ত্রীর প্রতি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চূড়ান্ত ভালবাসার নমুনা।[৯] একাজের জন্য স্ত্রীর উপর স্বামীর কত উত্তম প্রভাবই না পড়তে পারে! খানাপিনার ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সৌহার্দ ও ভালবাসা প্রকাশের জন্য আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর মুখ দেয়া পাত্রের জায়গাতেই মুখ দিতেন, অথচ তখন তিনি ঋতুবতী থাকতেন।
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী যে মিসওয়াক দিয়ে মিসওয়াক করতেন, তিনিও সেই মিসওয়াক দিয়ে মিসওয়াক করতেন
আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি প্রায়ই বলতেন,
إِنَّ مِنْ نِعَمِ اللهِ عَلَىَّ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُوُفِّىَ فِىْ بَيْتِىْ وَفِىْ يَوْمِىْ وَبَيْنَ سَحْرِىْ وَنَحْرِىْ وَأَنَّ اللهَ جَمَعَ بَيْنَ رِيْقِىْ وَرِيْقِهِ عِنْدَ مَوْتِهِ دَخَلَ عَلَىَّ عَبْدُ الرَّحْمَنِ وَبِيَدِهِ السِّوَاكُ وَأَنَا مُسْنِدَةٌ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرَأَيْتُهُ يَنْظُرُ إِلَيْهِ وَعَرَفْتُ أَنَّهُ يُحِبُّ السِّوَاكَ فَقُلْتُ آخُذُهُ لَكَ فَأَشَارَ بِرَأْسِهِ أَنْ نَعَمْ فَتَنَاوَلْتُهُ فَاشْتَدَّ عَلَيْهِ وَقُلْتُ أُلَيِّنُهُ لَكَ فَأَشَارَ بِرَأْسِهِ أَنْ نَعَمْ فَلَيَّنْتُهُ وَبَيْنَ يَدَيْهِ رَكْوَةٌ أَوْ عُلْبَةٌ يَشُكُّ عُمَرُ فِيْهَا مَاءٌ فَجَعَلَ يُدْخِلُ يَدَيْهِ فِى الْمَاءِ فَيَمْسَحُ بِهِمَا وَجْهَهُ يَقُوْلُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ إِنَّ لِلْمَوْتِ سَكَرَاتٍ ثُمَّ نَصَبَ يَدَهُ فَجَعَلَ يَقُوْلُ فِى الرَّفِيْقِ الْأَعْلَى حَتَّى قُبِضَ وَمَالَتْ يَدُهُ
‘আমার প্রতি আল্লাহর এটা নে‘মত যে, আমার ঘরে, আমার পালার দিনে এবং আমার গণ্ড ও সিনার মাঝে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকাল হয় এবং আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ইন্তিকালের সময় আমার থুথু তাঁর থুথুর সঙ্গে মিশ্রিত করে দেন। এ সময় আব্দুর রহমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আমার নিকট প্রবেশ করে এবং তার হাতে মিসওয়াক ছিল। আর আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (আমার বুকে) হেলান অবস্থায় রেখেছিলাম। আমি লক্ষ্য করলাম যে, তিনি ‘আব্দুর রহমানের দিকে তাকাচ্ছেন। আমি বুঝলাম যে, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিসওয়াক চাচ্ছেন। আমি তখন জিজ্ঞেস করলাম, আমি কি আপনার জন্য মিসওয়াক নিব? তিনি মাথা নাড়িয়ে জানালেন যে, হ্যাঁ। তখন আমি মিসওয়াকটি নিলাম। কিন্তু মিসওয়াক ছিল তার জন্য শক্ত, তাই আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমি কি এটি আপনার জন্য নরম করে দিব? তখন তিনি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললেন। তখন আমি তা চিবিয়ে নরম করে দিলাম। এরপর তিনি ভালভাবে মিসওয়াক করলেন। তাঁর সম্মুখে পাত্র অথবা পেয়ালা ছিল (রাবী ওমরের সন্দেহ) তাতে পানি ছিল। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় হস্তদ্বয় পানির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে তার দ্বারা তাঁর চেহারা মুছতে লাগলেন। তিনি বলছিলেন, ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য মা‘বূদ নেই, সত্যিই মৃত্যু যন্ত্রণা কঠিন। তারপর দু’হাত উপরের দিকে উঠিয়ে বলছিলেন, আমি উচ্চে সমাসীন বন্ধুর সঙ্গে (মিলিত হতে চাই)। এ অবস্থায় তাঁর ইন্তিকাল হল আর হাত স্বাভাবিক হয়ে গেল’।[১০]
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইহজগতের শেষ দিন ও পরজগতের প্রথম দিনে আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর থুথুর সাথে তাঁর থুথু একত্রিত হয়েছিল। তাহলে একবার ভেবে দেখুন তো! আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) কতটা মর্যাদা লাভ করেছিলেন!
কখনো তিনি স্ত্রীর উরুতে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যেতেন
কোন এক সফরে হারিয়ে যাওয়া হার খুঁজার কারণে সওয়ারীকে বিলম্বে ফেলেছিলেন। সে সময়ে ছাহাবীদের সাথে কোন পানীয় ছিল না। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আমাকে খুব তিরস্কার করলেন, আর আল্লাহর ইচ্ছা, তিনি যা খুশি তাই বললেন। তিনি আমার কোমরে আঘাত দিতে লাগলেন। আমার উরুর উপর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাথা থাকায় আমি নড়তে পারছিলাম না।[১১] অন্য একটি বর্ণনায় আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত হয়েছে-
كَانَ يَتَّكِئُ فِي حَجْرِي وَأَنَا حَائِضٌ ثُمَّ يَقْرَأُ القُرْآنَ
‘নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কোলে হেলান দিয়ে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। আর তখন আমি হায়েয অবস্থায় ছিলাম’।[১২] এটা ছিল রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্দর বৈবাহিক জীবন ও উত্তম আদর্শের নমুনা।
মাসআলা : ঋতুবতী স্ত্রীকে অবজ্ঞা বা অপসন্দ করা যাবে না, যেমন ইহুদীরা ঋতুবতী মহিলাদের সঙ্গে একসাথে আহার সহ সকল ধরনের সংস্পর্শ বর্জন করে চলত।
তিনি ঋতুবর্তী স্ত্রীর সাথে একই কম্বলের নীচে ঘুমাতেন
উম্মে সালামাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
بَيْنَا أَنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُضْطَجِعَةٌ فِيْ خَمِيْصَةٍ إِذْ حِضْتُ فَانْسَلَلْتُ فَأَخَذْتُ ثِيَابَ حِيضَتِيْ قَالَ أَنُفِسْتِ قُلْتُ نَعَمْ فَدَعَانِيْ فَاضْطَجَعْتُ مَعَهُ فِي الخَمِيْلَةِ
‘আমি নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে একই চাদরের নীচে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ আমার হায়েয দেখা দিলে আমি চুপি চুপি বেরিয়ে গিয়ে হায়েযের কাপড় পরে নিলাম। তিনি বললেন, তোমার কি নিফাস দেখা দিয়েছে? আমি বললাম, ‘হ্যাঁ’। তখন তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি তাঁর সঙ্গে চাদরের ভিতর শুয়ে পড়লাম’।[১৩]
মাসআলা : ঋতুবতী মহিলার সাথে ঘুমানো জায়েয। এমনকি ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে একই কম্বলের নীচেও ঘুমানো বৈধ। মহান আল্লাহ বলেন, فَاعۡتَزِلُوا النِّسَآءَ فِی الۡمَحِیۡضِ ‘তোমরা ঋতুস্রাবকালে স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক’ (সূরা আল-বাক্বারাহ ; ২২২)। এখানে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা থেকে বিরত থাকা উদ্দেশ্য। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিনী মায়মূনা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত,
كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَضْطَجِعُ مَعِيْ وَأَنَا حَائِضٌ وَبَيْنِيْ وَبَيْنَهُ ثَوْبٌ
‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার সাথে শুতেন আর আমি তখন ঋতুবতী থাকতাম এবং আমার ও তাঁর মধ্যে কেবল একটি কাপড় থাকত’।[১৪]
কিছু স্বামী এমন রয়েছে, যাদের স্ত্রীরা ঋতুবতী হলে তাদের বিছানা পৃথক করে দেয়, তাদের সাথে একসাথে ঘুমায় না। এটা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পথ-নির্দেশনার সুস্পষ্ট বিরোধী এবং বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য খুবই বিপদজনক। কেননা ঋতুস্রাবকালে স্ত্রীর মধ্যে মানসিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়। এসময়ে তার মন-মেজাজটা খিটখিটে হয়ে যায়, সে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এমন সময়ে স্বামী যদি তার বিছানা পৃথক করে দেয়, সেক্ষেত্রে তার অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে।
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর পর তাঁর মাথা আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর বুকের উপরে ছিল
আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বর্ণনা করেন, تُوُفِّيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيْ بَيْتِيْ وَفِيْ نَوْبَتِيْ وَبَيْنَ سَحْرِي وَنَحْرِي ‘আমার ঘরে আমার পালার দিন আমার কণ্ঠ ও বুকের মধ্যে মাথা রাখা অবস্থায় নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু হয়েছে’।[১৫] অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, قَبَضَهُ اللهُ بَيْنَ سَحْرِي وَنَحْرِي ‘আল্লাহ তাঁকে আমার কণ্ঠদেশ ও বক্ষের মাঝে (হেলান দেয়া অবস্থায়) রূহ কবয করলেন’।[১৬]
এখানে سَحْرِي অর্থ- ‘আমার বক্ষ’। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, তাঁর (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মূত্যুর সময় আয়েশা ছিদ্দীকা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর কণ্ঠ ও বক্ষদেশের মাঝামাঝিতে মাথা রাখা ছিল।[১৭]
তিনি একই পাত্রে তাঁর স্ত্রীর সাথে জুনুবির গোসল করতেন
আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন,
كُنْتُ أَغْتَسِلُ أَنَا وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ إِنَاءِ وَاحِدٍ يُبَادِرُنِيْ وَأُبَادِرُهُ حَتَّى يَقُوْلَ: دَعِيْ لِيْ وَأَقُوْلُ أَنَا دَعْ لِيْ
‘আমি এবং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই পাত্র থেকে গোসল করতাম। আমি তাঁর আগে পানি নিতে চেষ্টা করতাম আর তিনি আমার আগে নিতে চাইতেন। এমনকি তিনি বলতেন, আমার জন্য রাখ, আর আমি বলতাম, আমার জন্য রাখুন’।[১৮]
আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَيْمُونَةَ كَانَا يَغْتَسِلَانِ مِنْ إِنَاءٍ وَاحِدٍ ‘নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও মায়মূনা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) একই পাত্রের পানি দ্বারা গোসল করতেন’।[১৯] উম্মে সালামাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, كُنْتُ أَغْتَسِلُ أَنَا وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ إِنَاءٍ وَاحِدٍ مِنَ الجَنَابَةِ ‘আমি ও নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই পাত্রের পানি দিয়ে জানাবাতের গোসল করতাম’।[২০]
উপরোক্ত আলোচনায় রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উত্তম বৈবাহিক জীবনের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। অথচ আজকের যামানায়ও প্রথাগত ঐতিহ্যের কারণে অনেক স্বামী তার স্ত্রীর সাথে একই কম্বলের নীচে ঘুমাতে, পরিবারের সাথে যৌথভাবে খানাপিনা করতে অপসন্দ করে।
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীকে সোহাগ করে নাম সংক্ষেপ করে ডাকতেন
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا يَا عَائِشَ هَذَا جِبْرِيْلُ يُقْرِئُكِ السَّلَامَ فَقُلْتُ وَعَلَيْهِ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ
‘আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (একদিন) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আয়েশ (আয়েশা)!, জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তোমাকে সালাম বলেছেন। আমি উত্তরে বললাম, ‘ওয়া আলাইহিস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’।[২১] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) -কে আদর করে ‘হুমায়রা’ বলেও ডাকতেন। যেমন আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) নিজেই বর্ণনা করেন-
دَخَلَ الْحَبَشَةُ الْمَسْجِدَ يَلْعَبُوْنَ فَقَالَ لِيْ يَا حُمَيْرَاءُ أَتُحِبِّيْنَ أَنْ تَنْظُرِيْ إِلَيْهِمْ فَقُلْتُ نَعَمْ
‘একদা হাবশীরা বর্শা-বল্লম নিয়ে মসজিদে খেলা করছিল। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে হুমাইরা! তুমি কি ওদের খেলা দেখতে চাও?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ’।[২২] কাযী ই‘আয (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এভাবে নামকে সংক্ষেপ করে ডাকা দয়া, অনুকম্পা ও ভালবাসার প্রকাশ।[২৩] অন্য হাদীছে এসেছে, আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
لَمَّا وُلِدَ عَبْدُ اللهِ بْنُ الزُّبَيْرِ أَتَيْتُ بِهِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَفَلَ فِيْ فِيْهِ فَكَانَ أَوَّلَ شَيْءٍ دَخَلَ جَوْفَهُ وَقَالَ هُوَ عَبْدُ اللهِ وَأَنْتِ أُمُّ عَبْدِ اللهِ فَمَا زِلْتُ أُكَنَّىْ بِهَا وَمَا وَلَدْتُ قَطُّ
‘আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর জন্মগ্রহণ করলে তাকে আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে নিয়ে গেলাম। এসময়ে তিনি তার মুখে থুথু দিলেন, এটাই ছিল তার মুখে প্রবেশ করা প্রথম কোন বস্তু। তিনি বললেন, এর নাম হচ্ছে আব্দুল্লাহ। আর তুমি হচ্ছ উম্মে আব্দুল্লাহ। এরপর থেকে এই কুনিয়াতেই আমাকে ডাকা হত, কিন্তু আমি কখনোই সন্তান জন্ম দেইনি’।[২৪]
বর্তমানকালে অনেক স্বামী ফোনে তাদের স্ত্রীদেরকে অসুন্দর নামে সম্বোধন করে থাকে। যেমন, নাশবাহ, ওয়ারতাহ, শায়তুনাহ, গালতাহ ওমরী প্রভৃতি। একই সময়ে কিছু লোক ফোনে তাদের স্ত্রীদেরকে সুন্দর নামে সম্বোধন করে থাকে। যেমন, আহাল, গালিয়্যাহ, শারীকাতুল ওমর, কামার, উম্মে ফুলান প্রভৃতি।
সেই সত্তার পবিত্রতা জ্ঞাপন করছি, যিনি রিযকের মত বৈবাহিক সুন্দর সম্পর্ককেও সুনির্ধারিত করে রেখেছেন।
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উত্তম বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ছিল, তিনি কখনো কখনো খাবার অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় স্ত্রীদেরও সাথে নিতেন
عَنْ أَنَسٍ أَنَّ جَارًا لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَارِسِيًّا كَانَ طَيِّبَ الْمَرَقِ فَصَنَعَ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ جَاءَ يَدْعُوْهُ فَقَالَ وَهَذِهِ؟ لِعَائِشَةَ فَقَالَ لَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا فَعَادَ يَدْعُوْهُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهَذِهِ؟ قَالَ لَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا ثُمَّ عَادَ يَدْعُوْهُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهَذِهِ؟ قَالَ نَعَمْ فِي الثَّالِثَةِ فَقَامَا يَتَدَافَعَانِ حَتَّى أَتَيَا مَنْزِلَهُ
আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একজন পারসিক প্রতিবেশী ভাল ঝোল (সুপ ইত্যাদি) পাকাতে পারত। একবার সে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য কিছু খাবার প্রস্তুত করে তাঁকে দাওয়াত করতে আসল। তিনি আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর প্রতি ইঙ্গিত করে বললেন, এই আয়েশাও আমার সঙ্গে যাবে। সে বলল, না। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, (তাহলে আমিও) না। এরপর সে আবার তাঁকে দাওয়াত করতে আসল। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ আয়েশাও। সে বলল, না। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, (তা হলে আমিও) না। এরপর সে আবার তাঁকে দাওয়াত করতে আসল। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ইনিও? লোকটি তৃতীয়বারে বলল, হ্যাঁ। অতঃপর তারা দু’জনেই উঠলেন এবং একজনের পিছনে আর একজন চলে তার বাড়িতে এসে পৌঁছলেন’।[২৫]
ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক স্ত্রীকে ছাড়া দাওয়াত গ্রহণ করতে অপসন্দ করার বিষয়টির দ্বারা স্ত্রীর সাথে তাঁর অন্তরঙ্গ ঘনিষ্টতা, সঙ্গীর হক্ব আদায়ে সচেতনা ও ঘনিষ্টজনের সাথে চলাফেরার আদব ফুটে উঠেছে।[২৬]
(চলবে ইনশাআল্লাহ)
* এম.ফিল. গবেষক, আরবী বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
তথ্যসূত্র :
[১]. শায়খ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাহর অনুসরণে তার কোন এক কন্যার নাম রেখেছিলেন হাছ্ছানাহ, সিলসিলা ছহীহা, ১ম খণ্ড, পৃ. ২১৫।
[২]. ছহীহ মুসিলম, হা/২৪৩৫; হাদীছটি আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত হয়েছে।
[৩]. ইমাম নববী, শরহে ছহীহ মুসলিম, ১ম খণ্ড, পৃ. ২০১।
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৬৬২; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৮৪।
[৫]. তিরমিযী, হা/৮৬; আবুদাউদ, হা/১৭৮; নাসাঈ, হা/১৭০; ইবনু মাজাহ, হা/৫০২; আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন।
[৬]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯২৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১১০৬।
[৭]. ছহীহ মুসলিম, হা/৩০০।
[৮]. সুনানে নাসাঈ, হা/৩৭৮।
[৯]. মিরকাতুল মাফাতীহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪৮৭।
[১০]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৪৪৯।
[১১]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৩৪; ছহীহ মুসলিম, হা/৫৫০।
[১২]. ছহীহ বুখারী, হা/২৯৭; ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৭।
[১৩]. ছহীহ বুখারী, হা/২৯৮; ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৬।
[১৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৫।
[১৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৩১০০; ছহীহ মুসলিম, হা/৪৪৭৪।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, হা/১৩৮৯; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৪৩।
[১৭]. ফাৎহুল বারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৩০।
[১৮]. ছহীহ বুখারী, হা/২৫০; ছহীহ মুসলিম, হা/৩২১; নাসাঈ, হা/২৩৯; হাদীছটি নাসাঈর শব্দে বর্ণিত হয়েছে।
[১৯]. ছহীহ বুখারী, হা/২৫৩; ছহীহ মুসলিম, হা/৩২২।
[২০]. ছহীহ বুখারী, হা/৩২২; ছহীহ মুসলিম, হা/৩২২।
[২১]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৭৬৮; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৪৭।
[২২]. নাসাঈ, সুনানুল কুবরা, হা/৮৯০২; আলবানী ছহীহ বলেছেন, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৩২৭৭, ইবনু হাজার বলেন, হাদীছটি ছহীহ, এটি ছাড়া অন্য কোন ছহীহ হাদীছে ‘হুমায়রা’র বর্ণনা আমি দেখতে পাইনি, ফাৎহুল বারী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪৪৪।
[২৩]. মাশারিকুল আনওয়ার, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭০২।
[২৪]. ইবনু হিব্বান, হা/৭১১৭; শুয়াইব আল-আরনাঊত্ব এই হাদীছের সনদকে শক্তিশালী বলেছেন।
[২৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০৩৭।
[২৬]. শারহে ছহীহ মুসলিম, ১৩তম খণ্ড, পৃ. ২০৯।