সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০২:৩৬ অপরাহ্ন
উত্তর : মুসলিম নারীর বিবাহ কেবল মুসলিম পুুরুষের সাথেই হতে পারে। এটাই শরী‘আতের স্পষ্ট নির্দেশ। তাই অমুসলিম কোন পুরুষের সাথে মুসলিম কোন নারীকে বিবাহ দেয়া বৈধ নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। তিনি বলেছেন,

وَ لَا تَنۡکِحُوا الۡمُشۡرِکٰتِ حَتّٰی یُؤۡمِنَّ وَ لَاَمَۃٌ مُّؤۡمِنَۃٌ  خَیۡرٌ مِّنۡ مُّشۡرِکَۃٍ  وَّ لَوۡ اَعۡجَبَتۡکُمۡ وَ لَا تُنۡکِحُوا الۡمُشۡرِکِیۡنَ حَتّٰی یُؤۡمِنُوۡا وَ لَعَبۡدٌ مُّؤۡمِنٌ خَیۡرٌ مِّنۡ مُّشۡرِکٍ وَّ لَوۡ اَعۡجَبَکُمۡ  اُولٰٓئِکَ یَدۡعُوۡنَ  اِلَی النَّارِ وَ اللّٰہُ  یَدۡعُوۡۤا اِلَی الۡجَنَّۃِ وَ الۡمَغۡفِرَۃِ  بِاِذۡنِہٖ وَ یُبَیِّنُ  اٰیٰتِہٖ لِلنَّاسِ لَعَلَّہُمۡ  یَتَذَکَّرُوۡنَ

‘মুশরিকরা বিশ্বাস স্থাপন না করা পর্যন্ত তোমরা তাদেরকে বিবাহ করো না এবং নিশ্চয় মুমিনা দাসী মুশরিক (স্বাধীনা) মহিলা অপেক্ষা উত্তম। যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে ফেলে এবং মুশরিকরা বিশ্বাস স্থাপন না করা পর্যন্ত তাদের সাথে (মুসলমান নারীদের) বিবাহ প্রদান করো না এবং নিশ্চয় মুশরিকরা তোমাদের মনঃপুত হলেও বিশ্বাসী দাস তদপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর; এরাই জাহান্নামের দিকে আহ্বান করে এবং আল্লাহ স্বীয় ইচ্ছায় জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহ্বান করেন ও মানবম-লীর জন্যে স্বীয় নিদর্শনাবলী বিবৃত করেন, যেন তারা শিক্ষা গ্রহণ করে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২২১)। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

.یٰۤاَیُّہَا  الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا  اِذَا جَآءَکُمُ الۡمُؤۡمِنٰتُ مُہٰجِرٰتٍ فَامۡتَحِنُوۡہُنَّ اللّٰہُ  اَعۡلَمُ  بِاِیۡمَانِہِنَّ  فَاِنۡ عَلِمۡتُمُوۡہُنَّ  مُؤۡمِنٰتٍ فَلَا تَرۡجِعُوۡہُنَّ  اِلَی  الۡکُفَّارِ  لَا ہُنَّ حِلٌّ  لَّہُمۡ  وَ لَا ہُمۡ  یَحِلُّوۡنَ  لَہُنَّ

‘হে মুমিনগণ! যখন তোমাদের নিকট মুমিন নারীগণ হিজরত করে আসে, তখন তোমরা তাদেরকে পরীক্ষা করে নাও, তাদের প্রকৃত ঈমান সম্পর্কে আল্লাহই ভাল জানেন। অতঃপর যদি তাদেরকে মুমিন বলে জানতে পারো, তবে তাদেরকে কাফেরের নিকট ফিরিয়ে দিও না। মুমিন নারীরা কাফিরদের জন্য হালাল নয়। আর কাফিররাও তাদের জন্য হালাল নয়’ (সূরা আল-মুমতাহিনা : ১০)।

ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) (৭০১-৭৭৪ হি.) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলার বাণী: ‘মুমিন নারীরা কাফিরদের জন্য হালাল নয়। আর কাফিররাও তাদের জন্য হালাল নয়’। এই আয়াতের দ্বারা মুসলিম নারীদেরকে মুশরিকদের জন্য হারাম করা হয়েছে’ (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৯৩)। ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর সম্মানিত শিক্ষক ইমাম আব্দুর রাযযাক ছান‘আনী (রাহিমাহুল্লাহ) উল্লেখ করেছেন,

.عَنْ أَبِي الزُّبَيْرٍ قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنِ عَبْدِ اللهِ يَقُوْلُ نِسَاءُ أَهْلِ الْكِتَابِ لَنَا حِلٌّ وَنِسَاؤُنَا عَلَيْهِمْ حَرَامٌ

আবু যুবাইর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে বলতে শুনেছি, কিতাবী নারীগণ আমাদের জন্য হালাল। (অর্থাৎ তাদেরকে বিবাহ করা যাবে) কিন্তু আমাদের নারীগণ তাদের জন্য হারাম’ (মুছান্নাফে আব্দুর রাযযাক, ৭ম খণ্ড, পৃ. ১৭৪, হা/১২৬৫৬)। এ ছাড়াও আরো উল্লেখ হয়েছে যে,

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَتَزَوَّجُ نِسَاءَ أَهْلِ الْكِتَابِ وَلَا يَتَزَوَّجُوْنَ نِسَاءَنَا

জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, আমরা কিতাবী নারীদেরকে বিবাহ করতে পারি। কিন্তু তারা আমাদের নারীদেরকে বিবাহ করতে পারবে না’ (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৮৩; ‘আওনুল মা‘বূদ শারহু সুনানি আবী দাঊদ, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৯)। এব্যাপারে ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর মতামত হল-

.عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ قَالَ كَتَبَ إِلَيْهِ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ أَنَّ الْمُسْلِمَ يَنْكِحُ النَّصْرَانِيَّةَ وَلاَ يَنْكِحُ النَّصْرَانِىُّ الْمُسْلِمَةَ

যায়েদ বিন ওয়াহাব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এই মর্মে পত্র লিখে পাঠান যে, মুসলিম পুরুষ খ্রিষ্টান নারীকে বিবাহ করতে পারবে। কিন্তু কোন খ্রিষ্টান পুরুষ কোন মুসলিম নারীকে বিবাহ করতে পারবে না’ (আস-সুনানুল কুবরা, ৭ম খণ্ড, পৃ. ১৭২, হা/১৪৩৬২; তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ১ম খণ্ড, পৃঃ ৫৮১)। এমনকি ইমামদের এব্যাপারে ইজমাও রয়েছে। যেমন, ইবনু কাছীর (৭০১-৭৭৪ হি.) বলেন, فالقول به لإجماع الجميع من الأمة عليه ‘এটা মুসলিম উম্মাহর সর্বসম্মত অভিমত’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৭৮, হা/১০০৫৮)। সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনায় প্রমাণিত হয় যে, ইসলামী শরী‘আতে কোন মুসলিম নারীকে কোন অমুসলিম পুরুষের কাছে বিবাহ দেয়া বৈধ নয়।


প্রশ্নকারী : আব্দুল্লাহ আল-মামুন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।




প্রশ্ন (৩০) : যেসকল তাসবীহ ১০০ বার পড়তে হয়, তা যদি একসাথে না পড়ে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পড়ি, তাহলে কি হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৮) : খানা খাওয়ার পর প্লেটে হাত ধোয়া কি নিষেধ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৭) : বর্তমানে কাউকে না জানিয়ে গোপনে বিবাহ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা কতটুকু শরী‘আত সম্মত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৪) : অনিয়মিত ছালাত আদায়কারীর জানাযার বিধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৫) : ছাদাক্বাহ ও ওছিয়তের মধ্যে পার্থক্য কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : ‘দাসী তার মুনিবকে জন্ম দিবে’ হাদীছটির ব্যাখ্যা কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩০) : মাহরাম ছাড়া নারীর সফর করা হারাম। প্রশ্ন হল- শরী‘আতের দৃষ্টিতে মাহরামের শর্তাবলী কী কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২) : জনৈক আলেম বলেন, রাতে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর যে ব্যক্তি নিম্নের দু‘আটি পাঠ করবে, তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। যদি সে দু‘আ করে, তবে তার দু‘আ কবুল হবে। আর সে যদি উঠে ওযয় করে ছালাত আদায় করে, তাহলে তার ছালাত কবুল হবে। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : কোন নবীর নামের আগে ‘হযরত’ বলা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : মাতৃভাষায় জুমু‘আর খুতবা দেয়ার বিধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৫): আমি কোন এক লোকের কাছে শুনেছি যে, কোন নারীর জন্য সারাক্ষণ তার চুল খুলে রাখা ভালো নয়; এমনকি সে যদি তার নিজের বাসায় একাকী হয় তবুও। কারণ হলো চুল বাঁধা না থাকলে শয়তান তার চুল নিয়ে তামাশা করে। এর গূঢ়রহস্য কী? এ কথা শুনার পর থেকে আমি সারাক্ষণ আমার চুল বেঁধে রাখি; এমনকি যদি আমার চুল ভেজা থাকে তবুও। - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২১) : নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘ইলমের আধিক্য আমার কাছে ইবাদতের আধিক্যের চেয়ে প্রিয়। আর তোমাদের সর্বোত্তম দ্বীন হলো পরহেযগারিতা’ (মুসনাদুল বাযযার, হা/২৯৬৯; হাকিম, হা/৩১৪)। হাদীছটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ