উত্তর : সালাম ফেরানোর পর ইমাম ছাহেব মুছল্লীদের দিকে ঘুরে বসে দীর্ঘ সময় ধরে ছালাতের পর পঠিতব্য দু‘আগুলো পড়তে পারবেন। এ বিষয়ে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে (ছহীহ বুখারী, হা/৮৪৪, ১৪৭৭, ২৪০৮, ৫৯৭৫, ৬৩৩০, ৬৪৭৩, ৬৬১৫, ৭২৯২, ছহীহ মুসলিম, হা/৫৯৩, নাসাঈ, হা/১৩৪১-১৩৪৩; ছহীহ বুখারী, হা/৮৪২)।
যারা বলে যে, সালাম ফিরানোর পর ইমাম ছাহেব বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারবেন না তারা আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর নিম্নের হাদীছটি দলীল হিসাবে গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, ‘ছালাতে সালাম ফিরানোর পর নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ততটুকু সময় বসতেন, যতটুকু সময় লাগে এ দু‘আটি পড়তে- ‘আল্লা-হুম্মা আন্তাস সালাম-মু ওয়া মিনকাস্ সালা-মু তাবা-রক্তা যাল জালা-লি ওয়াল ইকর-ম’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১২২২)।
অথচ উক্ত হাদীছে কিবলামুখী হয়ে বসে থাকাকে নিষেধ করা হয়েছে। ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাম ফিরিয়ে তিনবার استغفر الله বলতেন। অতঃপর উক্ত দু‘আটি পড়তে যতটুকু সময় লাগে, ততটুকু সময় তিনি ক্বিবলামুখী হয়ে থাকতেন। অতঃপর মুছল্লীদের দিকে ফিরে বসতেন (যাদুল মা‘আদ, ১ম খ-, পৃ. ২৯৫)। ইবনু হাজার (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, উল্লেখিত নিষেধাজ্ঞার দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, সালামের পূর্বে যেভাবে বসে থাকা হয়, সেভাবে বসে থাকা। তবে উক্ত দু‘আটি পড়তে যতটুকু সময় লাগে, ততটুকু সময় ইমাম বসে থাকতে পারবে (ফাৎহুল বারী, ১১তম খণ্ড, পৃ. ১১২)।
উল্লেখ্য যে, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক ছালাতের সালাম ফিরানোর পর মুক্তাদীদের দিকে ঘুরে বসতেন (ছহীহ বুখারী, হা/৮৪৫, ৮৪৭, ১/১১৭ পৃঃ)। তাই শুধু ফজর ও আছর ছালাতের পর ঘুরে বসা আর অন্য ওয়াক্তগুলো ক্বিবলামুখী হয়ে বসে থাকা বিদ‘আত। কারণ রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং ছাহাবায়ে কেরাম এমনটি কখনো করেননি।
প্রশ্নকারী : মনীর, সিলেট।