উত্তর : স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাইরে যাওয়া ঠিক নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘পুরুষরা নারীদের কর্তা, কারণ আল্লাহ তাদের এককে অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং এজন্য যে, পুরুষ তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, কাজেই পূণ্যশীলা স্ত্রীরা অনুগতা এবং লোকচক্ষুর আড়ালে আল্লাহর হেফাযতে তারা হেফাযত করে। আর স্ত্রীদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার আশংকা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের শয্যা বর্জন কর এবং তাদেরকে প্রহার কর। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অন্বেষণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, মহান’ (সূরা আন-নিসা: ৩৪)। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
الْمَرْأَةُ إِذَا صَلَّتْ خَمْسَهَا وَصَامَتْ شَهْرَهَا وَأَحْصَنَتْ فَرْجَهَا وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا فَلْتَدْخُلْ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ
‘কোন মহিলা যদি পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করে, রামাযানের ছিয়াম পালন করে, গুপ্তাঙ্গের হিফাযত করে, স্বামীর একান্ত অনুগত হয়। তার জন্য জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশের সুযোগ থাকবে’ (হিইইয়াতুল আওলিয়া, ৬/৩০৮ পৃ.; মিশকাত, হা/৩২৫৪)।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘আল্লাহ ব্যতীত যদি অন্য কাউকে আমি সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে তার স্বামীকে সিজদা করার অনুমতি দিতাম’ (তিরমিযী হা/১১৫৯)।
উক্ত আয়াত ও হাদীছ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, নারীর স্বামীর আনুগত্য করা ওয়াজিব, অবাধ্য হওয়া হারাম। ইবনু মুফলিহ আল-হাম্বলী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনম, ‘একজন মহিলার জন্য তার স্বামীর ঘর থেকে তার অনুমতি ছাড়া বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ, প্রয়োজন বা শরঈ বাধ্যবাধকতা ছাড়া’ (আল-আদাব আশ-শাঈয়াহ, ৩/৩৭৫)।
সেসব স্ত্রীলোক, যারা স্বামীদের আনুগত্য করে না কিংবা যারা এ ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শন করে আল্লাহ তা‘আলা সংশোধনের জন্য পুরুষদেরকে যথাক্রমে তিনটি উপায় বাতলে দিয়েছেন। অর্থাৎ স্ত্রীদের পক্ষ থেকে যদি নাফরমানী সংঘটিত হয় কিংবা এমন আশংকা দেখা দেয়, তবে প্রথম পর্যায়ে তাদের সংশোধন হল যে, (ক) নরমভাবে তাদের বোঝাবে। যদি তাতেও বিরত না হয়, (খ) দ্বিতীয় পর্যায়ে তাদের বিছানা নিজের থেকে পৃথক করে দেবে। যাতে এই পৃথকতার দরুন সে স্বামীর অসন্তুষ্টি উপলব্ধি করে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে পারে। তারপর যদি তাতেও সংশোধন না হয়। (গ) তবে মৃদুভাবে মারবে, তিরস্কার করবে। আর তার সীমা হল এই যে, শরীরে যেন সে মারধরের প্রতিক্রিয়া কিংবা যখম না হয়। কিন্তু এই পর্যায়ের শাস্তি দানকেও রাসূল (ﷺ) পসন্দ করেননি, বরং তিনি বলেছেন, ‘ভাল লোক এমন করে না’ (ইবনু হিব্বান, হা/৪১৮৯; আবূ দাঊদ, হা/২১৪৬; ইবনু মাজাহ, হা/১৯৮৫)।
প্রশ্নকারী : মীযান, টাঙ্গাইল।