উত্তর : আবাসন, বিবাহ, বাড়ি নির্মাণ বা অন্য কোনো কাজের উদ্দেশ্যে সঞ্চিত সম্পদে যাকাত আবশ্যক হবে, যদি সেটা নিছাব পরিমাণ হয় এবং তার উপর এক বছর অতিবাহিত হয়। সঞ্চিত সম্পদ স্বর্ণ হোক কিংবা রৌপ্য বা কাগজের মুদ্রা। অনুরূপভাবে কেউ যদি ঋণ পরিশোধ, জমি কিনে ওয়াক্বফ্ করা কিংবা দাস কিনে মুক্ত করার লক্ষ্যে সম্পদ সঞ্চয় করে, তার ক্ষেত্রেও একই হুকুম প্রযোজ্য হবে। বরং সবার উপরই যাকাত আদায় করা আবশ্যক যদি সঞ্চিত সম্পদের বছর পূর্ণ হয় (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৯/৩৮১; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ১৪/১২৬-১৩০; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে উছাইমীন, ১৮/১৭৭ পৃ.; ফাতাওয়ায যাকাত, পৃ. ১৭৪; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৯৩২৫১)। মোদ্দাকথা হল, এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর নিছাব পরিমাণ টাকা অবশিষ্ট থাকলে যাকাত লাগবে। কেননা যাকাত ওয়াজিব হওয়ার কয়েকটি অন্যতম শর্ত হল:
(১) পূর্ণ এক চন্দ্র বছর অতিবাহিত হওয়া। (২) নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া। ইসলামী শরী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত নিছাব পরিমাণ সম্পদ হলেই কেবল যাকাত ওয়াজিব। এর চেয়ে কম হলে যাকাত ওয়াজিব নয় (ছহীহ বুখারী, হা/১৪৮৪; ছহীহ মুসলিম, হা/৯৭৯; মিশকাত, হা/১৭৯৪)। (৩) সম্পদের পূর্ণ মালিক হওয়া। যাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য ব্যক্তিকে সম্পদের পূর্ণ মালিক হতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তাদের সম্পদ হতে ছাদাক্বাহ গ্রহণ করবে’ (সূরা আত-তাওবাহ: ১০৩)। অতএব পূর্ণ মালিকানাধীন সম্পদের উপরই যাকাত ওয়াজিব। অর্থাৎ নিছাব পরিমাণ সম্পদ মালিকের নিকট পূর্ণ এক চন্দ্র বছর গচ্ছিত থাকলে তার উপর যাকাত ফরয। এক চন্দ্র বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই কিছু অংশ ব্যয় হয়ে নিছাবের পরিমাণ থেকে কমে গেলে তার উপর যাকাত ফরয নয়। যেমন আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, لَا زَكَاةَ فِيْ مَالٍ حَتَّى يَحُوْلَ عَلَيْهِ الْحَوْلُ ‘পূর্ণ এক বছর অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত সম্পদের যাকাত নেই’ (আবূ দাঊদ, হা/১৫৭৩; তিরমিযী, হা/৬৩১-৬৩২; ইবনু মাজাহ, হা/১৭৯২; মিশকাত, হা/১৭৮৭; ইরওয়াউল গালীল, হা/৭৮৭)।
প্রশ্নকারী : আসলামুদ্দীন, রংপুর।