উত্তর: যে ব্যক্তি মাসিক বেতন পায় এবং যা পায় সেটা সে খরচ করে ফেলে, কোন কিছু সঞ্চয় করতে পারে না। ফলে মাস শেষে তার অর্থ ফুরিয়ে যায়। তার উপর যাকাত আবশ্যক হবে না। কারণ যাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য এক বছর পূর্ণ হওয়া আবশ্যক। (অর্থাৎ নেছাব পরিমাণ সম্পদ অর্জনের পর পূর্ণ এক বছর পেরিয়ে যাওয়া)। সুতরাং আপনার উপর যাকাত আবশ্যক হবে না। তবে আপনি যদি আপনার সম্পদ থেকে কিছু সঞ্চয় করেন, সে সঞ্চয় যদি নেছাব পরিমাণে পৌঁছে এবং তার বছর পূর্ণ হয় তাহলে যাকাত আবশ্যক হবে। আর যে ব্যক্তি আপনাকে বলেছে চাকুরিজীবীর বেতনের যাকাত কৃষকের ফসলের যাকাতের মত, যেখানে বছর পূর্ণ হওয়ার শর্ত নেই; তার কথা সঠিক নয়।
চাকুরিজীবীর বেতনের দুই অবস্থা। যথা: প্রথম অবস্থা: সে পুরো অর্থ ব্যয় করে। কোন কিছুই সঞ্চয় করে না। তার উপরে কোন যাকাত নেই। দ্বিতীয় অবস্থা: সে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করে। এটি কখনো বাড়ে আবার কখনো কমে। এমন অবস্থায় সে কীভাবে যাকাতের হিসাব করবে? উত্তর হলো: ‘যদি সে নিজের অধিকার পরিপূর্ণরূপে উপভোগ করতে সচেষ্ট হয় এবং যাকাতগ্রহীতাদেরকে তার সম্পদ থেকে যতটুকু দেয়া ওয়াজিব ততটুকুর বেশি না দিতে সচেষ্ট হয়; তাহলে তার কর্তব্য নিজের উপার্জনের একটি ছক তৈরি করা । ঐ ছকে যে কোন এমাউন্ট তার মালিকানায় আসার দিন থেকে বর্ষ গণনা শুরু করবে এবং প্রত্যেক এমাউন্টের যাকাত আলাদা আলাদাভাবে আদায় করবে, যে এমাউন্টের যে দিন বর্ষপূর্তি হবে ঐ এমাউন্টের যাকাত সেই দিন পরিশোধ করবে।
আর যদি ব্যক্তি সহজতা চায় ও উদারতার পথ বেছে নেয়, নিজের অধিকারের উপর দরিদ্র ও অন্যান্য যাকাত গ্রহীতাদের যাকাত প্রাপ্তির দিকটিকে প্রাধান্য দেয়, তাহলে তার মালিকানায় থাকা সম্পদের সর্বপ্রথম নেছাব পূর্ণ হওয়ার এক বছর পূরণ হলে সে তার কাছে থাকা সমস্ত সম্পদের যাকাত প্রদান করবে। এই কাজে তার নেকী বেশি হবে এবং মর্যাদা বুলন্দ হবে। এটি তার জন্য প্রশান্তিদায়ক এবং দরিদ্র-নিঃস্বসহ যাকাতের অন্যান্য খাতের ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষায় অধিক সহায়ক। তার যে সম্পদের বর্ষপূর্তি হয়েছে সে সম্পদের সাথে অতিরিক্তি যে সম্পদের বর্ষপূর্তি হয়নি সে সম্পদেরও যাকাত দিয়ে দেয়া এটি ‘অগ্রিম প্রদত্ত যাকাত’ বলে গণ্য হবে’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দাইমাহ, ৯/২৮০ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-২৬১১৩)।
প্রশ্নকারী : আশিকুর রহমান, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা।