উত্তর : কুরআন ভুলে যাওয়ার আশঙ্কায় রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারবার পাঠ করতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্তরে কুরআন গেঁথে (মুখস্থ) রাখে তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে ঐ মালিকের ন্যায়, যে উট বেঁধে রাখে। যদি সে উট বেঁধে রাখে, তবেই উট তার নিয়ন্ত্রণে থাকে, কিন্তু যদি সে বাঁধন খুলে দেয়, তবে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়’ (ছহীহ বুখারী, হা/ ৫০৩১; ছহীহ মুসলিম, হা/৭৮৯)। অন্যত্র তিনি বলেছেন, ‘যদি কেউ এভাবে বলে যে, আমি অমুক অমুক আয়াত ভুলে গিয়েছি, তাহলে তা তার জন্য খুবই খারাপ। বরং তাকে তো ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। তোমরা কুরআনকে স্মরণ রাখ। কারণ কুরআন মানুষের হৃদয় থেকে পা বাঁধা পলায়নপর চতুষ্পদ জন্তুর চেয়েও অধিক পলায়নপর। ছাড়া পেলেই পালিয়ে যায়ে অর্থাৎ স্মরণ রাখার চেষ্টা না করলেই ভুলে যায়’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫০৩২; ছহীহ মুসলিম, হা/৭৯০; মিশকাত, হা/২১৮৮)।
এ জন্য কুরআন হিফয করার পর সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে ধরে রাখার। এ ব্যাপারে সঊদী স্থায়ী ফাতাওয়া বোর্ডের বক্তব্য হল, ‘কেউ যদি কুরআন মুখস্থ করার পর ব্যস্ততা ও উদাসীনতার কারণে ভুলে যায়, তাহলে সে গুনাহগার হবে না। কেননা কুরআন ভুলে যাওয়ার শাস্তি সম্পর্কে যে দলীল পেশ করা হয়, তা নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ছহীহসূত্রে প্রমাণিত নয়’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৯৯)।
শায়খ উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) কুরআন ভুলে যাওয়াকে দুইভাগে ভাগ করেছেন। যথা : ১. স্বভাবগত ভুলে যাওয়া। এটাতে কোন গুনাহ হবে না এবং তার জন্য কোন শাস্তিও দেয়া হবে না। মিসওয়ার ইবনু ইয়াযীদ আল-মালিকী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘একদা আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছালাত আদায় করি। ছালাতে তাঁর পঠিত আয়াতের অংশ বিশেষ ভুলবশত ছুটে গেলে ছালাত শেষে এক ব্যক্তি তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি অমুক অমুক আয়াত ছেড়ে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, তুমি আমাকে তা স্মরণ করিয়ে দাওনি কেন?’ (আবূ দাঊদ, হা/৯০৭, সনদ হাসান)। ২. আর যদি কেউ কুরআন থেকে বিমুখতা ও অনুশীলন না করার কারণে ভুলে যায়, তাহলে সে গুনাহগার হবে (কিতাবুল ইলম, পৃ. ৯৬-৯৭)।
প্রশ্নকারী : আহসান হাবীব, রংপুর।