উত্তর : বিভিন্ন আয়াত ও হাদীছের বক্তব্য দ্বারা বুঝা যায় যে, মানুষ শ্রেষ্ঠ জাতি। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আমি আদম সন্তানকে সম্মানিত করেছি, তাদের জন্য পানি ও স্থলে যানবাহনের ব্যবস্থা করেছি, তাদেরকে পবিত্র রিযক দিয়েছি আর আমি তাদেরকে আমার অধিকাংশ সৃষ্টির উপর মর্যাদায় শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি’ (সূরা বানী ইসরাঈল : ৭০)। উক্ত আয়াত দ্বারা বুঝা যায় যে, আল্লাহ তা‘আলা আদম-সন্তানকে বিভিন্ন দিক দিয়ে এমন সব বৈশিষ্ট্য দান করেছেন, যেগুলো অন্যান্য সৃষ্টজীবের মধ্যে নেই। উদাহরণত সুশ্রী চেহারা, সুষম দেহ, সুষম প্রকৃতি এবং অঙ্গসৌষ্ঠব। তাকে দু’পায়ে সম্পূর্ণ সোজা হয়ে দাঁড়াবার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তাকে হাতে খাওয়ার শক্তি দেয়া হয়েছে। অন্যান্য প্রাণী চারপায়ে এবং মুখ দিয়ে খায়। মানুষের মধ্যে যে চোখ, কান ও অন্তর দেয়া হয়েছে সে এসবগুলোকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে। দ্বীনী ও দুনিয়াবী বিষয়ে সে এগুলো দ্বারা ভাল-মন্দ বিচার করতে পারে (ইবনু কাছীর)।
বস্তুত এ বুদ্ধি ও চেতনায় মানুষকে বিশেষ স্বাতন্ত্র দান করা হয়েছে। এর সাহায্যে সে সমগ্র ঊর্ধ্ব-জগৎ ও অধঃজগতকে নিজের কাজে নিয়োজিত করতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা তাকে বিভিন্ন সৃষ্টবস্তুর সংমিশ্রণে বিভিন্ন শিল্পদ্রব্য প্রস্তুত করার শক্তি দিয়েছেন, সেগুলো তার বসবাস, চলাফেরা, আহার্য ও পোশাক-পরিচ্ছদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাকশক্তি ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার যে নৈপুণ্য মানুষ লাভ করেছে, তা অন্য কোন প্রাণীর মধ্যে নেই। বিবেক-বুদ্ধি ও চেতনা মানুষের সর্বপ্রধান শ্রেষ্ঠত্ব। এর মাধ্যমে সে স্বীয় সৃষ্টিকর্তা ও প্রভুর পরিচয় এবং তার পসন্দ ও অপসন্দ জেনে পসন্দের অনুগমন করে এবং অপসন্দ থেকে বিরত থাকে (ফাৎহুল কাদীর)। ইমাম দারেমী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আল্লাহ নিজ হাত দিয়ে স্পর্শ করে আদমকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি ছাড়া অন্য কোন জীবকে তাঁর হস্তদ্বয় দিয়ে সৃষ্টি করেননি। এ কারণে আদম (আলাইহিস সালাম)-কে বিশেষিত করেছেন, মর্যাদা দিয়েছেন এবং এটাকে উল্লেখ করে আদমকে সম্মানিত করেছেন (নাকযুদ দারিম আলাল মির্রিসি, পৃ. ৬৪)।
প্রশ্নকারী : রাশেদ, ঢাকা।