উত্তর : ব্রাক ব্যাংক একটি সূদী ব্যাংক। সুতরাং তার অধীনে পরিচালিত বিকাশে সূদ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। বিকাশে সূদ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘আপনি বিকাশ একাউন্টে টাকা জমিয়ে বছরে ৪% পর্যন্ত ইন্টারেস্ট পেতে পারেন’ (বিকাশের অফিসিয়াল ওয়েব সাইট)। আর এ কথা অজানা নয় যে, ইসলামের দৃষ্টিতে সূদ ভয়ানক হারাম, ধ্বংসাত্মক কাবীরা গুনাহ এবং অভিশাপ যোগ্য অপরাধ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ২৭৫-২৭৯)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা বহুগুণ বৃদ্ধি করে চক্রবৃদ্ধি হারে সূদ খাবে না। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও’ (সূরা আলে ইমরান: ১৩০)। নবী (ﷺ) সূদখোর, সূদদাতা, তার সাক্ষীদাতা ও তার লেখককে অভিসাম্পত করেছেন এবং বলেছেন, ওরা সবাই সমান’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৯৭-১৫৯৮)।
সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটি বলেন, ‘গীর্জাঘর, মদের কারখানা বা দোকান, সিনেমা হল, সূদী ব্যাংক বা এই ধরণের অন্য কোন অবৈধ জায়গায় চাকুরী করা বৈধ নয়’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১৪/৪৮১ পৃ.)। সুতরাং ব্র্যাকের বিকাশ শাখায় এজেন্ট হিসাবে কাজ করা বা কাস্টমার কেয়ারে চাকুরী করা বা অফিসের আইটি সেক্টরে চাকরি করা সূদী ব্যাংকের অধীনে চাকুরী করারই নামান্তর। কেননা এটা ঐ সংস্থাকে এক প্রকারের সাহায্য করা হচ্ছে। এটা যেমন হারাম তেমনি তা প্রচার-প্রসার করা, বিজ্ঞাপন দেওয়া, এ জন্য ঘর ভাড়া দেয়া, বিকাশ অ্যাপ রেফার করে বা বিকাশ অ্যাপে বার্ড নামক গেইম খেলে টাকা কামানো ইত্যাদি সবই হারাম। আল্লাহ আমাদেরকে পাপ ও সীমালঙ্ঘনের কাজে সহায়তা করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেন, ‘তোমরা নেককাজ ও তাক্বওয়ায় পরস্পরকে সাহায্য কর এবং পাপ ও সীমালংঘনে একে অন্যের সাহায্য করবে না। আর আল্লাহর তাক্বওয়া অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে অত্যধিক কঠোর’ (সূরা আল-মায়িদাহ: ২)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যাতে ইমাম ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) ও কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এখানে আল্লাহ তা‘আলা মুমিন ব্যক্তিদেরকে ভালো কাজে সহযোগিতা করতে আদেশ করেছেন এবং অন্যায়, অসৎ ও হারাম কাজে সাহায্য, সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন’ (তাফসীর ইবনু কাছীর, ২/১২; তাফসীরে কুরতুবী, ৬/৪৬-৪৭ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : সাব্বির, ঢাকা।