উত্তর : ‘পিতা-মাতার দু‘আ আল্লাহ তা‘আলা ফিরিয়ে দেন না’ মর্মে বক্তব্য সঠিক (আবূ দাঊদ, হা/১৫৩৬; তিরমিযী, হা/১৯০৫, ৩৪৪৮; ইবনু মাজাহ, হা/৩৮৬২; সনদ হাসান, ছহীহুল জামে‘, হা/৩০৩১)। তবে মৃত ব্যক্তি জীবিত ব্যক্তির কোন কল্যাণ বা উপকার করতে পারে না। বরং তাঁরাই জীবিত ব্যক্তির দু‘আর মুখাপেক্ষী। তাই সন্তান হিসাবে তাঁদের জন্যই দু‘আ করতে হবে (ছহীহ মুসলিম, হা/১৬৩১; আবূ দাঊদ, হা/২৮৮০)। পিতা-মাতার মৃত্যুর পর তাদের কবুলযোগ্য দু‘আ থেকে বঞ্চিত হলেও আপন খালার সেবা এবং তার সাথে সদাচরণের মাধ্যমেও কবুলযোগ্য দুআ প্রাপ্তির অধিকারী হওয়ার আশা করা যায়। আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, الَخَالَةُ بِمَنْزِلَةِ الأُمِّ ‘খালা মায়ের ন্যায়’ (ছহীহ বুখারী, হা/২৬৯৯, ৪২৫১; আবূ দাঊদ, হা/২২৮০; মিশকাত, হা/৩৩৭৭)। অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَجُلًا أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنِّيْ أَصَبْتُ ذَنْبًا عَظِيْمًا فَهَلْ لِيْ مِنْ تَوْبَةٍ؟ قَالَ هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ؟ قَالَ لَا قَالَ لَكَ مِنْ خَالَةٍ؟ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَبِرَّهَا.
আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি একটি খুব জঘন্য পাপ করেছি, আমার জন্য তওবার কোন ব্যবস্থা আছে কি? তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মা আছে কি? লোকটি বলল, না। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কোন খালা আছে কি? লোকটি বলল, হ্যাঁ। তখন নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যাও, তাঁর খেদমত কর (তিরমিযী, হা/২০২৭; মিশকাত, হা/৪৯৩৫; সনদ ছহীহ, ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৫০৪; তুহফাতুল আহওয়াযী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ২৬)। এছাড়া বেশি বেশি ছিয়াম পালনে অভ্যস্ত হওয়া এবং ছিয়াম অবস্থায় দু‘আ করলে দু‘আ কবুল হয়। আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
ثَلَاثُ دَعَوَاتٍ لَا تُرَدُّ دَعْوَةُ الْوَالِدِ وَدَعْوَةُ الصَّائِمِ وَدَعْوَةُ الْمُسَافِرِ.
‘তিনজনের দু‘আ ফিরিয়ে দেয়া হয় না। সন্তান-সন্ততির জন্য পিতা-মাতার দু‘আ, ছিয়াম পালনকারীর দু‘আ এবং মুসাফির ব্যক্তির দু‘আ’ (বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা, হা/৬১৮৫; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৭৫৭)।
প্রশ্নকারী : হাফীযুর রহমান, সিরাজগঞ্জ।