উত্তর : মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার সময় চিত করে শোয়ানো এবং বুকের উপর হাত জোড় করে রাখার যে রেওয়াজ প্রচলিত আছে, তার শারঈ কোন ভিত্তি নেই। বরং তাকে ডান কাতে রাখতে হবে এবং হাত স্বাভাবিকভাবে থাকবে। সাময়িক মৃত্যু বা ঘুমানোর সময় ডান কাতে ঘুমাতে হয় (ছহীহ বুখারী, হা/২৪৭, ১/৩৮ পৃঃ, হা/৬৩১১, ৬৩১৫; ছহীহ মুসলিম, হা/২৭১৩-২৭১৪; মিশকাত, হা/২৩৮৪, ২৩৮৫)। চিত হয়ে ঘুমানোর কোন বিধান নেই। অথচ চিরদিনের জন্য কবরে শোয়ানোর সময় মৃত ব্যক্তিকে কেন চিত করে শোয়ানো হয়? জাবের বলেন,
سَأَلْتُ الشَّعْبِيَّ عَنِ الْمَيِّتِ يُوَجَّهُ لِلْقِبْلَةِ قَالَ إِنْ شِئْتَ فَوَجِّهْ وَإِنْ شِئْتَ فَلَا تُوَجِّهْ لَكِنِ اجْعَلِ الْقَبْرَ إِلَى الْقِبْلَةِ قَبْرُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَبْرُ عُمَرَ وَقَبْرُ أَبِيْ بَكْرٍ إِلَى الْقِبْلَةِ.
‘আমি শা‘বী (রাহিমাহুল্লাহ)-কে মৃত ব্যক্তিকে ক্বিবলামুখী করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম? তিনি বললেন, চাইলে ক্বিবলামুখী কর, না হয় না কর। তবে কবরে ক্বিবলামুখী করে রাখো। কারণ রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবুবকর, ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-কে কবরে ক্বিবলামুখী করে রাখা হয়েছে (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/৬০৬১)। ইবনু হাযম আন্দালুসী (৩৮৪-৪৫৬ হি.) বলেন,
وَيُجْعَلُ الْمَيِّتُ فِىْ قَبْرِهِ عَلَى جَنْبِهِ الْيَمِيْنِ وَوَجْهُهُ قُبَالَةَ الْقِبْلَةِ ... عَلَى هَذَا جَرَى عَمَلُ أَهْلِ الْإِسْلَامِ مِنْ عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى يَوْمِنَا هَذَا وَهَكَذَا كُلُّ مَقْبَرَةٍ عَلَى ظَهْرِ الْأَرْضِ.
‘মৃত ব্যক্তিকে কবরে ডান পাশে রাখবে। আর মুখটাকে ক্বিবলার দিকে করে রাখবে। ... রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগ থেকে আমাদের এই যুগ পর্যন্ত মুসলিমদের এই আমল জারি আছে। পৃথিবীর বুকে প্রত্যেক কবর এমনই হয়’ (ইবনু হাযম আন্দালুসী, আল-মুহাল্লা ৫/১৭৩ পৃ.; আলবানী, আহকামুল জানাইয, পৃ. ১৫১)। শায়খ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘মাইয়েতকে কবরের দুই পায়ের দিক থেকে রাখবে। অতঃপর ক্বিবলামুখী করে ডান পাশে রাখবে। এটাই উত্তম এবং সুন্নাত (মাজমূউ ফাতাওয়া, ১৩তম খ-, পৃ. ১৯০; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ, ৮ম খ-, পৃ. ৪২৬; তালখীছুল হাবীর, ২য় খ-, পৃ. ৩০১)। কবরে মৃত ব্যক্তির হাত কোথায় থাকবে মর্মে ইসহাক্ব ইবনু রাহওয়াইহ (রাহিমাহুল্লাহ) -কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, পার্শ্বে থাকবে (মাসাইলে ইমাম আহমাদ ও ইসহাক্ব ইবনু রাহওয়াইহ, ফাতাওয়া নং ৩৪০৩)।
প্রশ্নকারী : আব্দুর রহীম, নওদাপাড়া, রাজশাহী।