উত্তর : সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটি, শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ), শায়খ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) ও শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘দূরবীন, টেলিস্কোপ বা অন্যান্য আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে চাঁদ দেখা জায়েয। এটি কোনভাবেই ধর্মীয় মূলনীতির বিরোধী নয়। কেননা পূর্বের লোকেরাও তাঁদের সুবিধার্থে মিনারে, বাড়ির ছাদে অথবা অন্য কোন উঁচু জায়গায় উঠে চাঁদ দেখার চেষ্টা করতেন। তবে জ্যোতিষ্কলোক বা পঞ্জিকার উপর নির্ভরশীল হওয়া বা এর মাধ্যমে অনুমান করা জায়েয নয় (ফাতাওয়া লাজনা আদ-দায়েমাহ, ৯/৯৯, প্রশ্নোত্তর নং-১২৪৫; ফাতাওয়া নূরুন আলাদ দারব লিইবনি বায, ১৬/৮১-৮৩; ফাতাওয়া উলামায়িল বালাদিল হারাম, পৃ. ১৯২-১৯৩)।
বর্তমান যুগের কিছু ভ্রান্ত মস্তিষ্কের আলিম দ্বিমত পোষণ করলেও কিন্তু অধিকাংশ আলিমের মতে, উপায় যায়ই হোক না কেন চাঁদ দেখাই হচ্ছে বড় কথা। সঊদী আরবের উচ্চ উলামা পরিষদ ‘মাজলিসু হাইআতি কিবারিল ওলামা’ও এই মত প্রদান করেছেন। ১৬/৫/১৪০৩ হিজরীতে পরিষদের সকল সদস্য নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তসমূহে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। যথা : (১) চাঁদ দেখার কাজে সহযোগী হিসাবে মিনার নির্মাণ করা যেতে পারে। এতে শারঈ কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। (২) এর মাধ্যমে চাঁদ দেখা না গেলেও, শুধু খালি চোখে চাঁদ দেখা গেলে তাই গ্রহণযোগ্য হবে। (৩) অনুরূপভাবে টেলিস্কোপের মাধ্যমে যদি সত্যি সত্যি চাঁদ দেখা সম্ভব হয়, তাহলে তাও গ্রহণযোগ্য হবে, যদিও খালি চোখে তা দেখা না যায়। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, لَا تَصُوْمُوْا حَتَّى تَرَوْا الْهِلَالَ وَلَا تُفْطِرُوْا حَتَّى تَرَوْهُ فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَاقْدُرُوْا لَهُ ‘চাঁদ না দেখে তোমরা ছিয়াম পালন করবে না এবং চাঁদ না দেখে ইফতার বন্ধ করবে না। যদি মেঘাচ্ছন্ন থাকে তাহলে তার সময় (ত্রিশ দিন) পরিমাণ পূর্ণ করবে’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৯০০-১৯০৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৮০)। অন্যত্র তিনি বলেন, صُوْمُوْا لِرُؤْيَتِهِ وَأَفْطِرُوْا لِرُؤْيَتِهِ فَإِنْ غُبِّيَ عَلَيْكُمْ فَأَكْمِلُوْا عِدَّةَ شَعْبَانَ ثَلَاثِيْنَ ‘তোমরা চাঁদ দেখে ছিয়াম আরম্ভ করবে এবং চাঁদ দেখে ইফতার করবে। আকাশ যদি মেঘাচ্ছন্ন থাকে তাহলে শা‘বানের গণনা ত্রিশদিন পূর্ণ করবে’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৯০৯; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৮১)।
উপরিউক্ত হাদীছগুলোতে চাঁদ দেখার শর্তারোপ করা হয়েছে মাত্র, সেগুলোতে খালি চোখ, টেলিস্কোপ বা অন্য কোন মাধ্যমে দেখা বা না দেখার কোন শর্তারোপ করা হয়নি। তাছাড়া হ্যাঁ-সূচক (المثبت) দলীল না-সূচক (النافي) দলীলের ওপর অগ্রাধিকারযোগ্য।
প্রশ্নকারী : আরিফ বিল্লাহ, ময়মনসিংহ।