উত্তর : ইমামের ছালাত আদায় করার নির্দিষ্ট জায়গাকে ‘মিহরাব’ বলে। তবে মিহরাব অর্থ অস্ত্রাগার, ক্বিবলার দিক-নির্দেশক বর্ধিত কুঠরি, ইবাদতের স্থান, একান্ত কক্ষ ইত্যাদি। সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটির আলেমগণ বলেন, রাসূল (ﷺ) এবং খুলাফায়ে রাশিদীনের যুগে মিহরাবের কোন অস্তিত্ব ছিল না। এমনকি প্রথম হিজরী শতক পর্যন্ত কোন মসজিদে মিহরাব ছিল না। দ্বিতীয় হিজরী শতকের শুরুর দিকে মুসলিম উম্মাহর সার্বিক সুবিধার্থে এবং বিবিধ কল্যাণের কথা বিবেচনা করে মুসলিমরা মসজিদে মিহরাব নির্মাণের প্রচলন শুরু করে। যেমন মসজিদের পরিচিতি, ক্বিবলাহ নির্ধারণ ইত্যাদি (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমা, ৬/২৫২-২৫৩ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৬৮৮২৭)। শায়খ ইবনু উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এ ব্যাপারে আলিমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। তবে প্রসিদ্ধ মতানুযায়ী মসজিদে মিহরাব নির্মাণ করা মুবাহ অর্থাৎ বৈধ, অনুমোদিত, সকলের জন্য উন্মুক্ত। কেননা এর মধ্যে বিবিধ কল্যাণ নিহিত রয়েছে। যেমন অজ্ঞদের জন্য ক্বিবলার নির্ধারণ ইত্যাদি (মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ১২/৩২৬-৩২৭ পৃ.)। আমাদের প্রচলিত ধারণা, ‘ইমামকে মিহরাবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে’, এটা সঠিক নয়। সুতরাং মসজিদের অবস্থান অনুযায়ী মিহরাবের ভিতরে বা বাইরে যে কোন স্থানে ইমাম দাঁড়াতে পারেন। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, পিছনের মুছল্লীগণ যেন ইমামকে দেখতে পায় (মাতালিবু উলিন নূহা, ১/২৯৬, ৬৯৬ পৃ.; আশ-শারহুল মুমতি‘, ২/২৭৫ পৃ.; ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-৩২২৪৪, ২০৩১)। বিশেষ করে মসজিদ যখন প্রশস্ত হবে, তখন ইমাম যেন মিহরাব থেকে এতটা পিছিয়ে দাঁড়ায়, যাতে মুছল্লীরা তাঁকে দেখতে পায় (ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-২০৩১)। যেহেতু মিহরাব মসজিদের মূল কোন অংশ নয় বরং সুবিধার কথা চিন্তা করে মিহরাব তৈরি করা হয়েছে, সেহেতু যদি ইমাম ছাহেব মিহরাবের বাইরে ছালাত আদায় করেন ছওয়াব পাওয়া যাবে। এতে কোন কমতি করা হবে না। আর এভাবে ছালাত আদায় করাতে কোন সমস্যা নেই। আল্লাহ অধিক অবগত।
প্রশ্নকারী : রতন আলী, হরিপুর, ঠাকুরগাঁও।