উত্তর : ‘হস্তমৈথুন’ এক ধরনের নেশা এবং বদ অভ্যাস। অতিসত্বর এই বদ অভ্যাস ত্যাগ করতে না পারলে পরে বিরাট লাঞ্ছনা ভোগ করতে হবে। কারণ যৌবন যুবকের এক অমূল্য সম্পদ। এর ফলে শরীরে বিভিন্ন অসুখ বাসা বাঁধে। যৌন শক্তি নষ্ট হয়ে যায়, স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, অল্প কথায় রাগ ধরে বেশি, ধৈর্যশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে, স্নায়ুবিক দুর্বলতা দেখা দেয়, দেহ-মন থেকে স্ফুর্তি চলে যায়, সুন্দর স্বাস্থ্য ধ্বংস হয়ে যায়, দৃষ্টিশক্তি লোপ পায়, পিঠ কুঁজিয়ে যায়, পিঠে এক প্রকার ব্যথা অনুভূত হয় ইত্যাদি। আল্লাহর ইবাদতে ঔদাস্য সৃষ্টি হয়, ছিয়াম নষ্ট হয়ে যায়।
অথচ কুরআন-সুন্নাহর আলোকে হস্তমৈথুন করা হারাম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মুমিনগণ।... আর যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংরক্ষিত রাখে। তবে নিজেদের স্ত্রী বা অধিকারভুক্ত দাসীগণ ব্যতীত, এতে তারা নিন্দিত হবে না। অতঃপর কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে, তারাই হবে সীমালংঘনকারী’ (সূরা আল-মুমিন : ১-৭)।
ইমাম ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, উপরিউক্ত আয়াতসমূহের ভিত্তিতে ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ) স্বীয় গ্রন্থ ‘আল-উম্ম’-এর মধ্যে বলেছেন, ‘অত্র আয়াত প্রমাণ করে যে, হস্তমৈথুন করা হারাম। কোন মুসলিম নিজের বিবাহিতা স্ত্রী ছাড়া অন্য কারো বা কিছুর মাধ্যমে কাম-তৃষ্ণা নিবারণ করতে পারে না।
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর যাদের বিয়ের সামর্থ্য নেই, আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে’ (সূরা আন-নূর : ৩৩)। এজন্য আল্লাহকে ভয় করে হারাম কাজ বর্জন করা উচিত। সেই সাথে দ্বীনি কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকা। বিভিন্ন প্রকার ইবাদত ও যিকির-আযকারে নিজেকে ও নিজের অন্তরকে ব্যস্ত রাখা। অর্থসহ কুরআন তিলাওয়াত করা, কুরআন অথবা ইসলামী বক্তৃতা শুনা। বৈধ খেলাধূলা বা সমাজ ও জনকল্যাণমূলক কাজ করা (তিরমিযী, হা/৩৩৭৫; ইবনু মাজাহ, হা/৩৭৯৩; ছহীহুল জামি, হা/৭৭০০; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৪৯১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৬৮০, ১৭৬৯৮)।
এছাড়া রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কেননা বিয়ে চক্ষুকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে সংযত করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন ছিয়াম পালন করে। কেননা ছিয়াম প্রবৃত্তিকে ও যৌন উত্তেজনাকে দমন করে’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৯০৫, ৫০৬৫, ৫০৬৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪০০; তিরমিযী, হা/১০৮১; নাসাঈ, হা/৩২০৯; ইবনু মাজাহ, হা/১৮৪৫)। এখানে বিধান প্রণেতা বিবাহে অসমর্থ যুবকদলকে ছিয়াম পালনের মাধ্যমে সংযম অবলম্বন করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রশ্নকারী : নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, নওগাঁ।