উত্তর : (১) স্ত্রীকে তার ঋতু থেকে মুক্তির পর পবিত্র অবস্থার শুরুতে মিলন ছাড়াই স্বামী প্রথমে এক ত্বালাক্ব দিবে। অতঃপর সহবাসহীন অবস্থায় তিন ঋতুর ইদ্দত অতিক্রান্ত হওয়ার পূর্বে স্বামী স্ত্রীকে রাজা‘আত করতে পারে। অর্থাৎ ফিরিয়ে নিতে পারে। কিন্তু ইদ্দতকাল শেষ হওয়ার পরে ফেরত নিতে চাইলে তাকে উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে নতুন বিবাহের মাধ্যমে ফেরত নিতে হবে। ইদ্দতকালে স্ত্রী স্বামীগৃহে অবস্থান করবে। অবস্থানকালে স্বামী স্ত্রীকে খোরপোষ দিবে। এটিই হল ত্বালাক্বের সর্বোত্তম পন্থা।
(২) সহবাসহীন তোহরে প্রথম ত্বালাক্ব দিয়ে ইদ্দতের মধ্যে পরবর্তী তোহরে ২য় ত্বালাক্ব দিবে এবং ইদ্দতকাল গণনা করবে। অতঃপর পরবর্তী তোহরের শুরুতে তৃতীয় ত্বালাক্ব দিবে ও ঋতু আসা পর্যন্ত সর্বশেষ ইদ্দত পালন করবে। তৃতীয়বার ত্বালাক্ব উচ্চারণ করলে স্ত্রীকে আর ফেরৎ নেয়া যাবে না। অতএব ২য় তোহরে ২য় ত্বালাক্ব দিলে ৩য় তোহরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। এখানেও পূর্বের ন্যায় যাবতীয় বিধান বহাল থাকবে (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২২৯; সূরা আত-তালাক্ব : ১)।
ইসলামের সোনালী যুগে উক্ত পদ্ধতিই চালু ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে নবী! যদি আপনি স্ত্রীদের ত্বালাক্ব দিতে চান, তাহলে ইদ্দত অনুযায়ী ত্বালাক্ব দিন এবং ইদ্দত গণনা করতে থাকুন। আপনি আপনার প্রভু সম্বন্ধে হুঁশিয়ার থাকুন। সাবধান! ত্বালাক্বের পর স্ত্রীদেরকে গৃহ হতে বিতাড়িত করবেন না, আর তারাও যেন স্বামীগৃহ ছেড়ে বহির্গত না হয়। অবশ্য তারা যদি খোলাখুলিভাবে ফাহেশা কাজে লিপ্ত হয়, তাহলে স্বতন্ত্র কথা। এগুলো আল্লাহকৃত সীমারেখা। যে ব্যক্তি উক্ত সীমারেখা লংঘন করে, সে নিজের উপরে যুলুম করে। কেননা সে জানে না যে, ত্বালাক্বের পরেও আল্লাহ কোন (সমঝোতার) পথ বের করে দিতে পারেন’ (সূরা আত-তালাক্ব : ১)।
উক্ত আয়াতের তাৎপর্য এই যে, ত্বালাক্ব মূলত ইদ্দতের ত্বালাক্ব, আকস্মিক বা যুগপৎ ত্বালাক্ব নয়। স্বামী-স্ত্রীকে অবশ্যই নির্ধারিত ইদ্দত গণনা করতে হবে। এজন্য কমপক্ষে তিন ঋতু মুক্তির তিন মাস স্বামী অবকাশ পাবেন যে, তিনি স্ত্রীকে নিয়ে ঘর করতে পারবেন কি-না। এছাড়াও স্ত্রীকে স্বামীগৃহেই অবস্থান করতে হবে। এর দ্বারা উভয়কে পুনর্মিলনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
প্রশ্নকারী : ওয়ালিদ, গোদাগাড়ী, রাজশাহী।