সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ০১:০০ অপরাহ্ন
উত্তর : প্রথমতঃ কোন মহিলার জন্য শরী‘আত অনুমোদিত কারণ ছাড়া ত্বালাক্ব চাওয়া বা বিবাহ বিচ্ছেদ করা জায়েয নয়। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘যে সমস্ত নারী কোন বিবেচনাযোগ্য কারণ ছাড়াই স্বামীর নিকট হতে খুলা‘ ত্বালাক্ব চায় তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধিও হারাম’ (তিরমিযী, হা/১১৮৬-১১৮৭; আবূ দাঊদ, হা/২২২৬)। এক্ষেত্রে অবশ্যই নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহ তা‘আলার নিকট কঠোরভাবে উত্তমরূপে তাওবাহ করা অপরিহার্য।

দ্বিতীয়তঃ খুলা‘ ত্বালাক্ব বলতে বুঝায়- কোন কিছুর বিনিময়ে স্ত্রীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে স্বামী উক্ত বিনিময় গ্রহণ করে স্ত্রীকে বিদায় করে দেবেন। এ বিনিময়টি স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে প্রদত্ত মোহরানা হোক কিংবা এর চেয়ে বেশি সম্পদ হোক অথবা এর চেয়ে কম হোক (সূরা আল-বাক্বারাহ: ২২৯)। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, ছাবিত ইবনু ক্বায়স (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর স্ত্রী নবী (ﷺ)-এর  কাছে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! চরিত্রগত বা দ্বীনি বিষয়ে ছাবিত ইবনু ক্বায়স-এর উপর আমি দোষারোপ করছি না। তবে আমি ইসলামের ভিতরে থেকে কুফরী করা (অর্থাৎ স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য) পসন্দ করছি না। রাসূল (ﷺ) বললেন, তুমি কি তাঁর বাগানটি ফিরিয়ে দেবে? (যা মোহরানা স্বরূপ দেয়া হয়েছিল) তিনি বললেন, হ্যাঁ। রাসূল (ﷺ) বললেন, তুমি বাগানটি গ্রহণ কর এবং এই মহিলাকে এক ত্বালাক্ব দিয়ে দাও’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫২৭৩, ৫২৭৪, ৫২৭৫, ৫২৭৬, ৫২৭৭)।

উপরিউক্ত বিচার ও সমাধানের আলোকে আলেমগণ বলেন, ‘কোন নারী যদি তার স্বামীর সাথে সহাবস্থান করতে না পারে সেক্ষেত্রে বিচারক স্বামীকে বলবেন তাকে ত্বালাক্ব দিয়ে দিতে, বরং স্বামীকে ত্বালাক্ব দেয়ার নির্দেশ দিবেন। এক্ষেত্রে পদ্ধতি হল- স্বামী বিনিময় গ্রহণ করবেন কিংবা তারা দু’জন এ বিষয়ে একমত হবেন। অতঃপর স্বামী তার স্ত্রীকে বলবেন, ‘আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম অথবা আমি তোমাকে খুলা‘ ত্বালাক্ব দিলাম, অথবা এ জাতীয় অন্য কোন শব্দ।  নবী (ﷺ) বলেন, ‘ত্বালাক্ব তারই অধিকার যার রয়েছে সহবাসের অধিকার’ অর্থাৎ স্বামীর (ইবনু মাজাহ, হা/১৭০৫, ২০৮১; সনদ হাসান, ইরওয়াউল গালীল, হা/২০৪১)। এ জন্যই আলেমগণ বলেন, ‘যে ব্যক্তিকে বলপ্রয়োগ করে ত্বালাক্ব দেয়ার জন্য বাধ্য করা হয়েছে, আর সে ব্যক্তি যদি ঐ পীড়ন থেকে বাঁচার জন্যই ত্বালাক্ব দেয় তাহলে সে ত্বালাক্ব সংঘটিত হবে না’ (আল-মুগনী, ১০/৩৫২ পৃ.)। মানবরচিত আইনের মাধ্যমে স্ত্রী নিজেই নিজেকে ত্বালাক্ব দিতে পারার যে বিষয়টি আপনি উল্লেখ করেছেন, যদি সেটা এমন কোন কারণে হয় যে কারণে মহিলার জন্য ত্বালাক্ব চাওয়া বৈধ, যেমন স্ত্রীর তার স্বামীকে অপসন্দ করা, স্বামীর সাথে একত্রে থাকতে না পারা, কিংবা স্বামীর দ্বীনদারীতে ঘাটতি ও হারামে লিপ্ত হওয়ার স্পর্ধাকে অপসন্দ করা ইত্যাদি, এক্ষেত্রে স্ত্রীর ত্বালাক্ব চাওয়া দোষনীয় নয়।

তবে, এ অবস্থাতে স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে যে মোহরানা গ্রহণ করেছিল তা ফিরিয়ে দিতে হবে। আর যথাযথ কারণ ছাড়া ত্বালাক্ব চাওয়া নাজায়েয। এমতাবস্থায় যদি কোর্ট ত্বালাক্ব কার্যকর করেও ফেলে তবুও কিন্তু সেটা ইসলামী শরী‘আতে ত্বালাক্ব হিসাবে স্বীকার্য বা বিবেচিত হবে না। বরং ঐ মহিলা তার স্বামীর স্ত্রী হিসাবেই বলবৎ থাকবে। এক্ষেত্রে মূল সমস্যাটা হল- যদিও ঐ মহিলা আইনের দৃষ্টিতে ত্বালাক্বপ্রাপ্তা, ইদ্দত শেষ হলে হয়ত সে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে ত্বালাক্বপ্রাপ্তা নয়, বরং সে এখনো তার স্বামীর বিবাহাধীনে রয়েছে (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-২৬২৪৭)।

শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) এই জটিল সমস্যার সমাধান সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা এখন কোর্ট ত্বালাক্ব নামক এক জটিল সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। প্রকৃতপক্ষে এই মহিলা এখনো তার স্বামীর বিবাহাধীনে থাকায় অন্য কোন পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে না। কিন্তু অপরদিকে কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে সে ত্বালাক্বপ্রাপ্তা নারী হিসাবে বিবেচিত। যখনই তার ইদ্দত পূর্ণ হবে তার জন্য অন্য স্বামী গ্রহণ করা অনুমোদিত। এ সমস্যা নিরসনে আমার দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে কিছু দ্বীনদার ও সৎ মানুষকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যাতে করে তারা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে শারঈ মীমাংসা করতে পারে। আর সমঝোতা সম্ভবপর না হলে, স্ত্রী তার স্বামীকে বিনিময় দিয়ে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, যাতে ইসলামী শরী‘আতের দৃষ্টিতে এটি খুলা‘ ত্বালাক্ব হিসাবে গণ্য হয় (লিক্বাউল বাব আল-মাফতূহ, লিক্বা নং-৫৪, ৩/১৭৪ পৃ.)।


প্রশ্নকারী : আফসানা হাসি, টাঙ্গাইল।





প্রশ্ন (১৬) : একজন মহিলা রামাযানের কিছু ছিয়াম রাখতে পারেনি। কিন্তু কয়টা ছিয়াম ছাড়া পড়েছে সে সংখ্যা ভুলে গেছেন। এখন সে কী করবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৮) : কখন ফজর ছালাত আদায় করতে হবে এবং এর সঠিক সময় কোন্টি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৫) : প্রতিবেশী যদি এমন ধরনের উম্মাদ পাগল ও মানসিক ভারসাম্যহীন হয় যে, যেকোন সময় গুরুতর বিপদ ঘটানোর আশঙ্কা থাকে। এমতাবস্থায় ইসলামের বিধান? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩২) : ছুটে যাওয়া বিতর ছালাত সূর্য উঠার পর বা দিনের বেলায় পড়লে কিভাবে পড়তে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : বিতরের ছালাতে দু‘আ কুনূত ব্যতীত অন্য কোন দু‘আ পড়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : দুই ভ্রু এর আকৃতি পরিবর্তন না করে ভ্রু-এর নিচের লোম অপসারণ করা কি জায়েয? এই লোম একেবারে সামান্য এবং ভ্রু থেকে আলাদা। - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১) : এমপিও ভুক্ত বেসরকারী স্কুলের শিক্ষকদের বেতন থেকে প্রতি মাসে ১০% করে টাকা কেটে রাখা হয় এবং চাকুরি শেষে সর্বশেষ বেতন স্কেলের ১০০ মাসের সমপরিমাণ টাকা দেয়া হয়। উক্ত টাকা কি হালাল হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : আহলে কিতাবদের যব্হ করা খাবার খাওয়া কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪০) : প্রচলিত আছে যে, বিলাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আযান সঠিকভাবে দিতে না পারার জন্য তাকে বাদ দিয়ে নতুন মুয়াযিযন নিয়োগ দেয়। তখন বিলাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আল্লাহর কাছে অভিযোগ করে আল্লাহ তুমি আমাকে তোতলা বানিয়েছ। এটার জন্য দায়ী তুমি। আর আমার মুয়াযিযন না থাকার দায়ী তুমি। নতুন মুয়াযিযন ফজরের আযান দিল, তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) এসে বলেন, আজ কি আযান হয়নি? তখন লোকজন বলল, হ্যাঁ, অনেক সুন্দর হয়েছে। তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) বলেন, বিলাল আযান না দিলে সকাল হবে না এবং সূর্যও উঠবে না। প্রশ্ন হল- উক্ত ঘটনার কি কোন দলীল আছে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৭) : জনৈক ব্যক্তি কোল্ড এলার্জির রোগী। শীতের মধ্যে রোগটা বেড়ে যায়। ওযূতে নাকের মধ্যে পানি দিলে হাঁচি হতে হতে অসুস্থ হয়ে যায়? এমতাবস্থায় কী করা উচিত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৫) : করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য তা‘বীয ব্যবহার করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : জনৈক ব্যক্তি মানত করেছিল যে, পুত্র সন্তান হলে একটি ইসলামী জালসা করবে। প্রশ্ন হল- গ্রামের ইসলামী জালসায় টাকা দিয়ে অংশগ্রহণ করলে উক্ত মানত পূর্ণ হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ