উত্তর : শরী‘আতে নারীদের প্রতি তাকানোকে হারাম করা হয়েছে। ইচ্ছা করে এই নিষিদ্ধ কাজ করা কাবীরা গোনাহ। জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন,سَأَلْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ عَنْ نَظْرَةِ الْفَجْأَةِ فَأَمَرَنِيْ أَنْ أَصْرِفَ بَصَرِيْ ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে (কারো প্রতি) হঠাৎ দৃষ্টি পড়া বিষয়ে প্রশ্ন করলাম। তিনি আমাকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতে আদেশ করলেন’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২১৫৯)। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে বললেন, لَا تُتْبِعِ النَّظَرَ النَّظَرَ، فَإِنَّ الْأُولَى لَكَ وَلَيْسَتْ لَكَ الْآخِرَةُ ‘কোন অ-মুহরিমা স্ত্রীলোকের প্রতি এক নাগাড়ে তাকিয়ে থাকবে না। প্রথম বারের দৃষ্টি তোমার জন্য বৈধ। তারপরের দৃষ্টি বৈধ নয়’ (আবূ দাউদ, হা/২১৪৯; আহমাদ, হা/১৩৬৯)।
আকস্মিকভাবে কারো প্রতি চোখ পড়ে যাওয়া আর ইচ্ছাকৃত কারো প্রতি তাকানো সমান কথা নয়। প্রথমবার যে চোখ কারো উপর পড়ে গেছে, তার মূলে ব্যক্তির ইচ্ছার বিশেষ কোন যোগ থাকে না; কিন্তু পুনর্বার তাকে দেখা ইচ্ছাক্রমেই হওয়া সম্ভব। এ জন্যই প্রথমবারের দেখায় কোন দোষ হবে না; কিন্তু দ্বিতীয়বার তার দিকে চোখ তুলে তাকানো ক্ষমার অযোগ্য। বিশেষত এ জন্য যে, দ্বিতীয়বারের দৃষ্টির পিছনে মনের কলুষতা ও লালসা থাকাই স্বাভাবিক। আর এ ধরনের দৃষ্টি দিয়ে পরস্ত্রীকে দেখা স্পষ্ট হারাম। উম্মে সালামা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর এক হাদীছের ভিত্তিতে আল্লামা শাওকানী (রাহিমাহুল্লাহ) লিখেছেন, يحرم على المرأة نظر الرجل كما يحرم على الرجل نظر المرأة ‘পুরুষদেরকে দেখা মেয়েদের জন্য হারাম, ঠিক যেমন হারাম পুরুষদের জন্য মেয়েদের দেখা’ (নাইলুল আওত্বার, ৬/১৭৭ পৃ.)। এর কারণ স্বরূপ তিনি লিখেছেন যে,
ولأن النساء أحد نوعي الآدميين فحرم عليهن النظر إلى النوع الآخر قياسا على الرجال ويحققه أن المعنى المحرم للنظر هو خوف الفتنة وهذا في المرأة أبلغ فإنها اشد شهوة وأقل عقلا فتسارع إليها الفتنة أكثر من الرجل
‘কেননা মেয়েলোক মানব জাতিরই অন্তর্ভুক্ত প্রজাতি। এজন্য পুরুষের মতই মেয়েদের জন্য তারই মত অপর প্রজাতি পুরুষদের দেখা হারাম করা হয়েছে। এ কথার যথার্থতা বোঝা যায় এ দিক দিয়েও যে, গায়রে মুহাররমের প্রতি তাকানো হারাম হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে যৌন বিপর্যয়ের ভয়। আর মেয়েদের ব্যাপারে এ ভয় অনেক বেশী। কেননা যৌন উত্তেজনা যেমন মেয়েদের বেশী, সে পরিমাণে বুদ্ধিমত্তা তাদের কম। আর পুরুষদের তুলনায় মেয়েদের কারণেই অধিক যৌন বিপর্যয় ঘটে থাকে’ (নাইলুল আওত্বার, ৬/১৭৭ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : নাহিদ হাসান, বগুড়া।