উত্তর :আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি নবী করীম (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যে,
الْفِطْرَةُ خَمْسٌ الْخِتَانُ وَالاِسْتِحْدَادُ وَقَصُّ الشَّارِبِ وَتَقْلِيمُ الأَظْفَارِ وَنَتْفُ الآبَاطِ
‘জন্মগত স্বভাব পাঁচটি। যথা : ১- খাতনা বা মুসলমানি করা, ২- গুপ্তাঙ্গের লোম পরিষ্কার করার লৌহের ক্ষুর ব্যবহার করা, ৩- গোঁফ ছোট করা, ৪- নখ ছেদন করা ও ৫- বগলের লোম উপড়ানো বা সমূলে উৎপাটন করা’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৮৮৯, ৫৮৯০, ৫৮৯১; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৭, ৪৮৫-৪৯৩)। সঙ্গে সঙ্গে এর সময়সীমাও নির্ধারণ করা হয়েছে। যেমন আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,
وُقِّتَ لَنَا فِيْ قَصِّ الشَّارِبِ وَتَقْلِيْمِ الْأَظْفَارِ وَنَتْفِ الإِبْطِ وَحَلْقِ الْعَانَةِ أَنْ لَا نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِيْنَ لَيْلَةً
‘গোঁফ ছাঁটা, নখ কর্তন করা, বোগলের লোম সমূলে নির্মূল করা এবং গুপ্তাঙ্গের পশম মুণ্ডন করার জন্য আমাদেরকে সময়সীমা নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছিল, যেন আমরা তা চল্লিশ দিনের অধিক না রাখি’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৪৮৭, ২৫৭)। লক্ষণীয় বিষয় হল, উপরিউক্ত হাদীছ দু’টিতে গুপ্তাঙ্গের লোম পরিষ্কার করার ধরণ বুঝাতে যে দু’টি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে তা হল- (১) اَلْإِسْتِحْدَادُ ‘লোহার ক্ষুর ব্যবহার করা’। (২) حَلْقٌ ‘মুণ্ডন, ক্ষৌরকর্ম, শেভিং’। পক্ষান্তরে বোগলের লোম পরিষ্কার করার ধরণ বুঝাতে যে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে তা হল, نَتْفٌ ‘উৎপাটন করা, উপড়ানো, তুলে ফেলা’।
তাই সুন্নাত হল, বোগলের লোম উপড়ে ফেলা, আর গুপ্তাঙ্গের লোম ক্ষুর বা ব্লেড দ্বারা অপসারণ করা। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) ও শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘হাদীছের আলোকে সুন্নাতী পদ্ধতি হল গুপ্তাঙ্গের লোম ক্ষুর বা ব্লেড দ্বারা পরিষ্কার করা, আর বোগলের লোম উপড়ে ফেলা বা সমূলে উৎপাটন করা। কিন্তু যদি কারোর পক্ষে এরূপ করা সম্ভবপর না হয়, সেক্ষেত্রে অন্যান্য সুবিধাজনক পদ্ধতি প্রয়োগ করা জায়েয। যেমন বিভিন্ন প্রকারের ক্রিম ব্যবহার করা কিংবা বোগলের লোম উপড়াতে না পারলে ব্লেড ব্যবহার করা। কেননা আদেশের মূল উদ্দেশ্য হল লোম পরিষ্কার করা বা অপসারণ করা। তাই বিশেষ প্রয়োজনে অন্য পদ্ধতিও মূল উদ্দেশ্যের সহায়ক হিসাবে জায়েয হবে ইনশাআল্লাহ’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনু বায, ২৯/৪৯ পৃ; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১১৮৩)।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ রাকিবুল ইসলাম, রংপুর।