বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২০ অপরাহ্ন
ধর্মীয় সংস্কারের স্বরূপ ও প্রকৃতি
ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান*


ইসলামের আলোকে ধর্মীয় সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া চিরন্তন ও চির ভাস্বর। ত্বাগূত্বী শক্তির সম্মিলিত উত্থানও ইসলামের স্বাতন্ত্র্যবোধকে পরাভূত করতে অক্ষম।*কারণ বিরোধী শক্তির সকল অপশক্তির কাছে ইসলাম দুর্বার ও অপ্রতিরোধ্য। বিজাতীয় ষড়যন্ত্র ও বৈরি শক্তি যদি ঐক্যবদ্ধভাবে ইসলামকে ধ্বংস করতে চায়, তবুও ইসলাম বিজয়ী শক্তিরূপে আবির্ভূত হবে।[১] পৃথিবীর বাঁকে বাঁকে যুগের পরম্পরায় অসংখ্যবার বস্তুবাদী প্রেরণা ও দুনিয়াসর্বস্ব চেতনায় মানবতা নিষ্পেষিত হয়েছে। বস্তুবাদী ধর্মনিরপেক্ষ আইনে ইচ্ছা মাফিক শাষিত হয়েছে জনগণ। একটি সময় দুঃশাসন ও কুশাসন সামাজিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিদূরীত করেছিল। বস্তুপূজা ও ব্যক্তিপূজায় গোটা বিশ্ব ভরে গিয়েছিল। অর্থনৈতিক দুরাচার, হত্যা, ধর্ষণ, অত্যাচার, সন্ত্রাস, যুদ্ধ-বিগ্রহ ইত্যাদি সমাজকে অগ্নিগর্ভে পরিণত করেছিল। তবুও সকল দর্শন, মতবাদ, থিওরি ইসলামের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল। জাহিলিয়াতের সকল উৎসমূলে কুঠারাঘাত করে ইসলামই সর্বপ্রথম পৃথিবীকে আলোকজ্জ্বল সমাজ উপহার দিয়েছিল। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এতই সমৃদ্ধ হয়েছিল যে, যাকাত নেয়ার মানুষের সন্ধান পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। যেনা-ব্যভিচারের মত গুরুতর অপরাধ করেও মা‘ইয ও গামিদী নামক মহিলা পরকালে মুক্তির আশায় নিজের অন্যায় অকপটে স্বীকার করেছে।[২] যুদ্ধলব্ধ মূল্যবান সম্পত্তি লাভের পরেও কোন কানাকড়ি না নিয়ে কোষাধ্যক্ষের নিকট জমা দেয়ার মতো সততা ও আমানতদারিতা ছিল বিশ্ব সমাদৃত।[৩]

উক্ত নির্দশন কোন দর্শন, আদর্শ, গোষ্ঠী, থিওরি ও সমাজ আজ পর্যন্ত উপস্থাপন করতে পারেনি। মূলত ধর্মীয় সংস্কারের প্রকৃত স্বরূপ এখানেই প্রস্ফুটিত হয়েছে। কেননা ইসলামের আদর্শগত বৈপ্লবিক জাগরণ ব্যক্তি, সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি সহ সর্বত্র সাধিত হয়েছিল। অথচ ইসলামের সেই গৌরবজ্জ্বল ঐতিহ্য ও বিশ্ব বিজয়ী আদর্শ আজ ভূলুণ্ঠিত। ফলে গোটা পৃথিবী আজ যেমন অন্যায়-অনাচার ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে, অনুরূপভাবে চারিত্রিক সৌন্দর্যতা ও নৈতিকতা মুখ থুবড়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় ইসলামের আলোকে ধর্মীয় সংস্কার অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। আর এই সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আল্লাহ তা‘আলা উম্মাতে মুহাম্মাদীকে নির্ধারণ করেছেন।[৪] আর সমাজ সংস্কারের জন্য প্রত্যেক শতাব্দীর ক্রান্তিকালে আল্লাহ তা‘আলা একজন করে মুজাদ্দিদ বা সংস্কারক প্রেরণ করে থাকেন। যে ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। হাদীছে এসেছে, আবূ হুরায়রা (ﷺ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,

إِنَّ اللهَ يَبْعَثُ لِهَذِهِ الْأُمَّةِ عَلَى رَأْسِ كُلِّ مِائَةِ سَنَةٍ مَنْ يُجَدِّدُ لَهَا دِيْنَهَا

‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা এই উম্মাতের জন্য প্রত্যেক শতাব্দীর ক্রান্তিলগ্নে একজন ব্যক্তিকে প্রেরণ করে থাকেন, যিনি তাঁর দ্বীনকে সংস্কার করেন’।[৫]

উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় সুনানু আবী দাঊদের ভাষ্যকার শাইখ ‘আব্দুল মুহসিন আল-‘আব্বাদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন,

أن الله يهيئ العلماء والولاة الذين يقومون بإظهار الحق ونشره وبيانه، ودحض الباطل والقضاء عليه، والمقصود بذلك تجديد ما اندرس من الدين، وإلا فإن الدين وافٍ وكامل، فالمقصود تجديد ما اندرس منه بسبب ما حصل من فتن وضلالات وانحراف عن الجادة.

‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা (যুগে যুগে) একশ্রেণীর ‘আলিম ও শাসকশ্রেণীর আবির্ভাব ঘটান, যারা হকের প্রকাশ ও প্রসারে অবদান রাখেন এবং বাতিলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে ও ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর হন। মূলত এর দ্বারা দ্বীনের কোন মিটে যাওয়া সুন্নাতের সংস্কার উদ্দেশ্য। যদিও প্রকৃতপক্ষে দ্বীন পরিপূর্ণ। অর্থাৎ ফিতনা, গোমরাহী ও সত্যপথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার দরুন যে দ্বীন মিটে যেতে বসেছে তারই সংস্কার (এর কথা বলা হয়েছে)’।[৬]

বিশ্ববিখ্যাত ভারতীয় মুহাদ্দিছ শায়খ ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রাহিমাহুল্লাহ) (১৩২৭-১৪১৪ হি.) এ প্রসঙ্গে আরো সুস্পষ্ট করে বলেন,

تجديد الدين للأمة إحياء ما اندرس من العمل بالكتاب والسنة والأمر بمقتضاهما وإماتة البدع والمحدثات وكسر أهلها باللسان أو تصنيف الكتب أو التدريس أو غير ذلك. ولا يعلم ذلك المجدد إلا بغلبة الظن ممن عاصره من العلماء بقرائن أحواله والانتفاع بعلمه إذ المجدد للدين لا بد أن يكون عالماً بالعلوم الدينية الظاهرة والباطنة ناصراً للسنة قامعاً للبدعة وأن يعم علمه أهل زمانه وإنما كان التجديد على رأس كل مائة سنة لانخرام العلماء فيه غالباً واندراس السنن وظهور البدع فيحتاج حينئذٍ إلى تجديد.

‘কুরআন-সুন্নাহ ও ইজতিহাদের মাধ্যমে ইস্তিম্বাতকৃত যেসব ‘আমল মিটে গেছে তার পুনর্জাগরণ এবং ইসলামের নামে নব আবিষ্কৃত বিভিন্ন ‘আমল ও বিদ‘আতকে মুছে ফেলা এবং এর অনুসারীদের বক্তব্য, লেখনী ও দারস-তাদরীসের মাধ্যমে প্রতিহত করাই হচ্ছে তাজদীদুদ দ্বীন তথা ধর্মীয় সংস্কার। তবে এই মুজাদ্দিদ বা দ্বীনের সংস্কারককে যুগের ‘উলামার মধ্য হতে তার পারিপার্শিক অবস্থা ও তার ‘ইলম দ্বারা উম্মতের উপকৃত হওয়ার ধরন দেখে অতিরিক্ত ধারণা নির্ধারণ থেকেই কেবল নির্ধারণ করা হয়। একজন দ্বীনের সংস্কারককে অবশ্যই দ্বীনের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল বিষয়ে ‘ইলম রাখতে হবে, তিনি সুন্নাহর সাহায্যকারী এবং বিদ‘আতকে প্রতিহতকারী হবেন। তাঁর ‘ইলম যুগের সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে। আর দ্বীনের এই সংস্কার সংঘটিত হবে তখন, যখন প্রতি একশ’ বছরের মাথায় ‘উলামার মাঝে বিভক্তি দেখা দিবে, সুন্নাত মিটে যাওয়ার উপক্রম হবে ও বিদ‘আতের প্রসারতা বৃদ্ধি পাবে’।[৭]

অন্য একটি হাদীছে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,

يَحْمِلُ هَذَا الْعِلْمَ مِنْ كُلِّ خَلَفٍ عُدُوْلُهُ يَنْفُوْنَ عَنْهُ تَحْرِيْفَ الْغَالِيْنَ وَانْتِحَالَ الْمُبْطِلِيْنَ وَتَأْوِيْلَ الْجَاهِليْنَ.

‘প্রত্যেক পরবর্তী দলের ন্যায়নিষ্ঠ লোকেরা এই ‘ইলমকে বহন করবেন। তারা এটা থেকে সীমালংঘনকারীদের রদবদল, বাতিল লোকদের মিথ্যারোপ ও মূর্খদের তাবীলকে (দূরতম ব্যাখ্যাকে) দূরীভূত করবেন’।[৮]

উক্ত হাদীছকে সামনে রেখে শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভী (১১১৪-১১৭৬ হি./১৭০৩-১৭৬২ খৃ.) বলেন, ‘জেনে রাখুন যে, মানুষেরা যখনই দ্বীনের বিষয় নিয়ে মতানৈক্য করেছে এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে, তখনই রক্ষণশীল দরজায় করাঘাত করেছে। অতঃপর আল্লাহ মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে প্রেরণ করেছেন এবং এর দ্বারা বক্র উম্মাতকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। তারপর যখন নবী কারীম (ﷺ) মৃত্যুবরণ করলেন, তখন এই অনুগ্রহ মুখাপেক্ষী হলো ‘ইলম ও জ্যোতিকে সংরক্ষণ করার। ফলে তাদের মধ্যে আল্লাহর নির্দেশ প্রতিষ্ঠা করার জন্য একটি দল প্রকাশ পাওয়া আবশ্যক হয়ে গেল, যেন মুসলিম উম্মাহ যেন ভ্রষ্টতার উপর একত্রিত না হয় এবং কুরআনকে যেন তাদের মাঝে সংরক্ষণ করা হয়। তাদের আয়োজনের ভিন্নতা আবশ্যক হয়ে গেল। কারণ তাদের কাছে যা ছিল, তা পরিবর্তনসহ পেয়ে গেল। অতঃপর প্রস্তুতকারীদের লক্ষ্যের উত্তরণ ঘটল। তাদের অন্তরে ‘ইলমের ব্যাপারে ভীতি সৃষ্টি হলো ও প্রত্যাখ্যাত হলো। ‘সীমালংঘনকারীদের রদবদল’ দ্বারা এর কঠিন অবস্থা ও গভীরতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ‘বাতিল লোকদের মিথ্যারোপ’ দ্বারা ভাল মনে করে নতুন ‘আমল সৃষ্টি করা এবং এক ধর্মের সাথে অন্য ধর্মের সংমিশ্রণের প্রতি ইশারা করা হয়েছে এবং ‘মূর্খদের তাবীলকে (দূরতম ব্যাখ্যাকে) দূর করবেন’ দ্বারা দুর্বল ব্যাখ্যার মাধ্যমে অবজ্ঞা করা ও নির্দেশিত বিষয়কে প্রত্যাখ্যান করার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে’।[৯] যে কাজ প্রথম শুরু করেছিলেন খালীফাতুল মুসলিমীনদ্বয় অর্থাৎ আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও ‘উমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)।[১০] এ ধরনের সংস্কারকের বৈশিষ্ট্য বর্ণনায় ইবনু হাজার ‘আসক্বালানী (৭৭৩-৮৫২ হি.) চমৎকার মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন,

أَنْ تَكُوْنَ الطَّائِفَةُ جَمَاعَةً مُتَعَدِّدَةً مِنْ أَنْوَاعِ الْمُؤْمِنِيْنَ مَا بَيْنَ شُجَاعٍ وَبَصِيْرٍ بِالْحَرْبِ وَفَقِيْهٍ وَمُحَدِّثٍ وَمُفَسِّرٍ وَقَائِمٍ بِالْأَمْرِ بِالْمَعْرُوْفِ وَالنَّهْيِ عَنِ الْمُنْكَرِ وَزَاهِدٍ وَعَابِدٍ.

‘নিশ্চয় তারা একটি দল বা জামা‘আত, তারা মুমিনদের মধ্যে কতিপয় মুমিন। যারা উক্ত কাজে হবে অত্যন্ত সাহসী, ধৈর্যশীল, জ্ঞানী, মুহাদ্দিছ, মুফাসসির, সৎকাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধের প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং দুনিয়াবিমুখ ও ইবাদতকারী’।[১১]

এভাবে ধর্মীয় সংস্কারের জন্য প্রতিনিয়ত যুগ পরম্পরায় কোন না কোন মুজাদ্দিদ বা সংস্কারপন্থী কোন গোষ্ঠীকে আল্লাহ তা‘আলা নির্বাচন করেন। যারা আল্লাহর দ্বীনের সংস্কার সাধন করেন। যারা শিরক-বিদ‘আতকে নির্মূল করেন এবং কুরআন ও সুন্নাহ থেকে নিশ্চিহ্ন হওয়া স্বচ্ছ, পরিচ্ছন্ন সুন্নাহকে পুনর্জীবিত করেন। মাযহাবী সংকীর্ণতায় বন্দি সুন্নাতকে পুনরুদ্ধার করেন এবং ইসলামের উপর আরোপিত মিথ্যা সকল অভিযোগের যথোচিত ও মযবুত দলীল উপস্থাপনের মাধ্যমে দৃঢ়ভাবে খণ্ডন করেন। আর এরূপ একটি গোষ্ঠী ক্বিয়ামত অবধি থাকবে বলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। একটি হাদীছে এসেছে,

عَنْ ثَوْبَانَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لَا تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِىْ ظَاهِرِيْنَ عَلَى الْحَقِّ لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ حَتَّى يَأْتِىَ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ كَذَلِكَ.

সাওবান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কিয়ামত পর্যন্ত একটি গোষ্ঠী হকের উপর বিজয়ী থাকবে, বিরোধী পক্ষ তাদেরকে কোন ক্ষতিই করতে পারবে না, এমতাবস্থায় কিয়ামত সংঘটিত হবে; কিন্তু তারা সেই অবস্থায় থাকবে’।[১২] উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) (১৯৪-১৭৫ হি.) বলেন,

هم أهل الْعلم أَي المجتهدون قلا يَخْلُو الزَّمَان من مُجْتَهد حَتَّى تَأتي أَشْرَاط السَّاعَة الْكُبْرَى.

‘তাঁরা হলেন ‘আলিমগণ অর্থাৎ মুজতাহিদ বা সংস্কারকগণ। কিয়ামতের বড় বড় নিদর্শন প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত পৃথিবীতে এই সংস্কারকগণ (গোষ্ঠী) বিদ্যমান থাকবেন’।[১৩]

উপরিউক্ত আলোচনায় স্পষ্ট হয়েছে যে, ধর্মীয় সংস্কারের একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য রয়েছে। মূলত উম্মতের বিপর্যয় রোধ করা, মৃত সুন্নাতকে পুনর্জীবিত করা, শিরকের পঙ্কিলতা ও বিদ‘আতের রাহুগ্রাস থেকে ইসলামকে হেফাযত করা, বাতিলকে বাতিল হিসেবে চিহ্নিত করে সত্যকে সত্য হিসেবে প্রকাশ করা এবং প্রকৃতপক্ষে দ্বীন পরিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও উদ্ভূত ফিতনা, গোমরাহী ও সত্যপথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারণে দ্বীনের যে বিধানগুলো মিটে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে সেগুলোকে পুনরুদ্ধার করা। সর্বোপরি আল-কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর ভিত্তিতে দেশ ও জাতিকে পুনর্গঠন করাই হল ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের মূল লক্ষ্য।

এক্ষণে ধর্মীয় সংস্কারের পরিচয়, গুরুত্ব, সংস্কারের ক্ষেত্রসমূহ, মুজাদ্দিদের পরিচয় ও শর্তাবলী এবং ধর্মীয় সংস্কারের ফলাফর সম্পর্কে আলোচনায় প্রবৃত্ত হব ইনশাআল্লাহ।

(ইনশাআল্লাহ চলবে)



* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আল-ইসলামিয়্যাহ, খড়খড়ি, রাজশাহী।

[১]. সূরাহ আত-তাওবাহ : ৩২; সূরাহ আস-সাফ্ : ৮।

[২]. ছহীহ মুসলিম, পৃ. ৫৫৩-৫৫৪, হা/১৬৯৫, ‘দণ্ডবিধি’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫; আল-মু‘জামুল আওসাত, ৫ম খণ্ড, পৃ. ১১৭, হা/৪৮৪৩; সুনানুল বাইহাকী আল-কুবরা, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৮৩, হা/১১২৩১; সুনানুন নাসাঈ আল-কুবরা, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ২৭৬, হা/৭১৬৩; মুসনাদু আবী ‘আওয়ানাহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৩৪-১৩৫, হা/৬২৯২; জামি‘উল উসূল ফী আহাদীসির রাসূল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৫১৭, হা/১৮৩৪; মিশকাতুল মাসাবীহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩১০, হা/৩৫৬২। 

[৩]. আবূ জা‘ফর মুহাম্মাদ ইবনু জারীর আত-তাবারী, তারীখুল উমাম ওয়ার রুসুল ওয়াল মুলক, ২য় খণ্ড (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ১ম সংস্করণ ১৪০৭ হি.), পৃ. ৪৬৫ । 

[৪]. তাকীউদ্দীন আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনু ‘আব্দিল হালীম ইবনু তাইমিয়্যাহ আল-হাররানী, মাজমূ‘ঊল ফাতাওয়া, ১ম খণ্ড (দারুল ওয়াফা, ৩য় সংস্করণ ১৪২৫ হি./২০০৫ খ্রি.), পৃ. ২; মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলী ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলান ইবনু ইবরাহীম আল-বাকরী আস-সিদ্দীকী আশ-শাফিঈ, দালীলুল ফালিহীন লিতুরুকু রিয়াযিস সালিহীন, ৮ম খণ্ড (বৈরূত : দারুল মা‘রিফাহ, ৪র্থ সংস্করণ ১৪২৫ হি./২০০৪ খ্রি.), পৃ. ৬৬১-৬৬২; আবুল ‘আলা মুহাম্মাদ ‘আব্দুর রহমান ইবনু ‘আব্দির রহীম আল-মুবারকপুরী, তুহফাতুল আহওয়াযী বিশারহি জামি‘ঈত তিরমিযী, ৮ম খণ্ড (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, তা. বি.), পৃ. ২৮১ । 

[৫]. সুনানু আবী দাঊদ, পৃ. ৭৬৮, হা/৪২৯১, ‘যুদ্ধবিগ্রহ’ অধ্যায়, ‘এক শতাব্দীকালের বিবরণ’ অনুচ্ছেদ-১; আল-মুসতাদরাকু ‘আলাস সহীহাইন, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৫৬৭, হা/৮৫৯২; আল-মু‘জামুল আওসাত, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩২৪, হা/৬৫২৭; কানযুল ‘উম্মাল ফী সুনালি আকওয়ালি ওয়াল আফ‘আল, ১২তম খণ্ড, পৃ. ১৯৩, হা/৩৪৬২৩; জামি‘উল উসূল ফী আহাদীসির রাসূল, ১১তম খণ্ড, পৃ. ৩১৯, হা/৮৮৮১; মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৩. হা/২৪৭; সনদ সহীহ। মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদীস আস-সহীহাহ ওয়া শাইয়ুন মিন ফিক্বহিহা ওয়া ফাওয়াইদিহা, ২য় খণ্ড (রিয়াদ : মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, ৭ম সংস্করণ ১৪২২ হি./২০০২ খৃ.), পৃ. ১৪৮, হা/৫৯৯।

[৬]. ‘আব্দুল মুহসিন আল-‘আব্বাদ, শারহু সুনানি আবী দাঊদ, ২৫তম খণ্ড (প্রকাশস্থান, প্রকাশক, সংস্করণ, তারিখ বিহীন), পৃ. ৪৮।

[৭]. আবুল হাসান ওবায়দুল্লাহ আর-রহমান আল-মুবারকপুরী, মির‘আতুল মাফাতীহ শারহ মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড (ভারত : ইদারাতুল বুহূসিল ‘ইলমিয়া ওয়াদ দা‘ওয়াতি ওয়াল ইফতা, ৩য় সংস্করণ, ১৪০৪ হি./১৯৮৪ খৃ.), পৃ. ৩৪০।

[৮]. মুসনাদুশ শামি‘ঈন, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৪৪, হাদীছ নং-৫৯৯; মিশকাতুল মাছাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৩, হা/২৪৮; আল-আহকামুশ শারঈইয়াহ আল-কুবরা, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৪২।

[৯]. আল-ইমাম আহমাদ শাহ অলিউল্লাহ ইবনু আব্দুর রহীম আদ-দিহলভী, হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ, ১ম খণ্ড (কায়রো : দারুল কুতুবিল হাদীসিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ৩৬০; মুহাম্মাদ হাস্সানাইন হাসান, হাস্সানাইন, তাজদীদুদ দ্বীন : মাফহূমুহু ওয়া যাওয়াবিতুহু ও আসারুহু (মাক্কাতুল মুকাররামাহ, ১ম সংস্করণ ১৪২৮ হি./ ২০০৭ খ্রি.), পৃ. ২২-২৩।

[১০].  ইমাম আবুল হাসান আল-বালাযুরী, ফুতূহুল বুলদান (বৈরূত : দারুল কুতুবুল ‘ইলমিয়্যাহ, ১৪০৭ হি./১৯৮৩ খ্রি.), পৃ. ১০৩-৪২০; ‘আব্দুল ওয়াহহাব আন-নাজ্জার, আল-খুলাফাউর রাশেদূন (বৈরূত : দারুল আরকাম, তা.বি.), পৃ. ৪৭-১৫৪।

[১১]. আহমাদ ইবনু ‘আলী ইবনি হাজার আবুল ফাযল আল-‘আসকালানী আশ-শাফি‘ঈ, ফাতহুল বারী শারহ ছহীহ বুখারী, ১৩তম খণ্ড (বৈরূত : দারুল মা‘আরিফাহ, ১৩৭৯ হি.), পৃ. ২৯৫; যায়নুদ্দীন মুহাম্মাদ আল-মাদ‘ঊ আব্দুর রঊফ আল-মা‘নবী, ফায়যুল ক্বাদীর শারহ আল-জামি‘ঊস সাগীর, ১ম খণ্ড (মিসর : আল-মাকতাবাতু তিজারিয়াতিল কুবরা, ১ম সংস্করণ ১৩৫৬ হি.), পৃ. ৯ এবং ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৯৬।

[১২]. সহীহ মুসলিম, পৃ. ৬৩০, হা/১৯২০; সুনানুত তিরমিযী, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৫০৪, হা/২২২৯; জামি‘উল উসূল ফী আহাদীসির রাসূল, ৯ম খণ্ড, পৃ. ২০৪, হা/৬৭৭৬।

[১৩]. ‘আব্দুর রহমান ইবনু আবি বাকর জালালুদ্দীন আস-সুয়ূতী, আদ-দীবাযু ‘আলা সহীহ মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ, ৪র্থ খণ্ড (স‘ঊদী ‘আরব : দারু ইবনি ‘আফফান, ১ম সংস্করণ, ১৪১৬ হি./১৯৯৬ খৃ.), পৃ. ৫১১।




প্রসঙ্গসমূহ »: সমাজ-সংস্কার

ফেসবুক পেজ