মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৭:২১ পূর্বাহ্ন

মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ

-আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম*


 (২১তম কিস্তি) 

মৃত ব্যক্তি শ্রবণ করার দলীল ও তার পর্যালোচনা

সালাফে ছলেহীনের বিপরীত অভিমতকারীগণ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং মৃত ব্যক্তির শ্রবণ সংক্রান্ত দলীল পেশ করেছেন। নিম্নে দলীলগুলোর সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা পেশ করা হল।

প্রথম দলীল : তারা দলীল হিসাবে কয়েকটি হাদীছ উপস্থাপন করেছে। নিম্নে হাদীছগুলো পেশ করা হল।

১নং হাদীছ : আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, مَنْ صَلَّى عَلَيَّ عِنْدَ قَبْرِيْ سَمِعْتُهُ وَمَنْ صَلَّى عَلَيَّ نَائِيًا أُبْلِغْتُهُ ‘যে আমার কবরের নিকট আমার উপর দরূদ পাঠ করবে, আমি তা সরাসরি শুনব, আর যে দূর থেকে আমার উপর দরূদ পাঠ করবে, তা আমার নিকট পৌঁছানো হবে’।[১]

জবাব : উপরিউক্ত হাদীছটি জাল।[২] এ হাদীছের সনদে ‘মুহাম্মাদ ইবনু মারওয়ান আস-সুদ্দী’ নামে একজন মিথ্যাবাদী রাবী রয়েছে।[৩] তার পূর্ণাঙ্গ নাম হল ‘মুহাম্মাদ ইবনু মারওয়ান ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু ইসমাঈল ইবনু আব্দুর রহমান আস-সুদ্দী আল-কুফী’। ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, তারা তাকে ছেড়ে দিয়েছে। ইবনু মাঈন (রাহিমাহুল্লাহ) তার সম্পর্কে বলেন, তিনি ছিক্বাহ না। আব্দুল্লাহ ইবনু নুমাইর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, তিনি মিথ্যুক। আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, আমি তাকে বৃদ্ধ অবস্থায় পেলাম, তাই তাকে ছেড়ে দিয়েছি।[৪] ইবনুল ‘ইমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, তিনি মাতরূকুল হাদীছ।[৫] ইবনু হিব্বান (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, তিনি ছিলেন দুষ্ট প্রকৃতির লোক, মুরজিয়া জাহমিয়্যাহ, বিদ‘আতের দিকে আহ্বানকারী। তিনি মদ বিক্রি করতেন এবং তার বৈধতা দিতেন। তিনি ছিলেন ইরাকবাসী। তিনি কালবী ও দাঊদ ইবনু আবূ হিনদ হতে হাদীছ বর্ণনা করতেন। আর তার নিকট হতে ইরাকবাসী হাদীছ বর্ণনা করেছেন। যারা জাল হাদীছ বর্ণনা করতেন তিনি তাদের দলভুক্ত। তার হাদীছ গভীর পর্যালোচনা না করে লেখা জায়েয নয় এবং কোন অবস্থাতেই তা প্রমাণ হিসাবে পেশ করা যাবে না।[৬] ইমাম নাসাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, তিনি মাতরূকুল হাদীছ।[৭] জারীর ইবনু আব্দুল হামীদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, তিনি মিথ্যুক। ছলিহ ইবনু মুহাম্মাদ আল-বাগদাদী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, তিনি যঈফ রাবী। হাদীছ জাল করতেন। আবূ হাতিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, তিনি হাদীছ জাল করতেন, তিনি মাতুরূকুল হাদীছ।[৮] ছলিহ ইবনু আব্দুল্লাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, তিনি ঐ ব্যক্তিকে শাস্তি দিতেন, যে বলত ঈমান হল কথা এবং আমল। এমনকি তিনি আছহাবুল হাদীছের এক ছলিহ বান্দাকে গ্রেফতার করে তার গলায় রশি বেঁধে তার সাথে ঘুরাতেন।[৯]

২নং হাদীছ

عَنْ أَبِىْ سَعِيْدٍ  وَأَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لَقِّنُوْا مَوْتَاكُمْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ

আবূ সাঈদ ও আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের মৃত ব্যক্তিদেরকে ‘লা ইলা-হা ইলাল্লা-হু’ শিক্ষা দিবে।[১০]

জবাব : এখানে মৃত ব্যক্তি বলতে যার মৃত নিকটবর্তী হয়েছে। অর্থাৎ মুমূর্ষু রোগী। যাদের মৃত সন্নিকটে। এ কারণে ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) ছহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যায় অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ‘অসুস্থ ব্যক্তিকে মৃত্যুকালে তালক্বীন দেয়া এবং তার জন্য দু‘আ করার বিষয়ে যা এসেছে’। অতঃপর তিনি বলেন, এর অর্থ যার মৃত্যু উপস্থিত হয়েছে, তাকে তোমরা ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু’ স্মরণ করাও। কেননা যার শেষ বাক্য এটা হবে। যেমনটা হাদীছে এসেছে,مَنْ كَانَ آخِرُ كَلَامِهِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ دَخَلَ الْجَنَّةَ  ‘যার শেষ বাক্য হবে, ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু’ সে জান্নাতে যাবে’।[১১] এছাড়াও হাদীছে আরো এসেছে, ১. যে ব্যক্তি মৃত্যুর সময় এ কালিমা পাঠ করবে তার আমলনামার জন্য তা নূর হবে এবং এর কারণে তার শরীর ও রূহ মৃত্যুর সময় প্রশান্তি লাভ করবে।[১২] অন্য বর্ণনাতে আছে, তা তার চেহারাকে উজ্জ্বল করে এবং আল্লাহ তা‘আলা তার থেকে বিপদাপদ দূর করে দেন।[১৩] ২. যে ব্যক্তি অন্তর থেকে পাঠ করবে এবং এর উপরই মৃত্যুবরণ করবে তার উপর জাহান্নামকে হারাম করা হয়।[১৪] ৩. যার মুত্যুর আগে শেষ কথা হবে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’।[১৫] ৪. যে কোন বান্দা ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ বলবে এবং এ অবস্থার উপরে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।[১৬]

অতএব, হাদীছগুলো থেকে প্রমাণিত যে, মৃত ব্যক্তিদেরকে তালক্বীন দেয়ার অর্থ হল যার মৃত নিকটবর্তী হয়েছে। অর্থাৎ মুমূর্ষু রোগীদের তালক্বীন দেয়া। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন-আমীন!!

৩নং হাদীছ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ قَالَ مَا مِنْ عَبْدٍ يَمُرُّ بِقَبْرِ رَجُلٍ كَانَ يَعْرِفُهُ فِي الدُّنْيَا فَيُسَلِّمُ عَلَيْهِ إِلَّا عَرَفَهُ وَرَدَّ عَلَيْهِ السَّلَامَ

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে কেউ পরিচিত কোন ব্যক্তির কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে। অতঃপর তাকে সালাম দেয়, তাহলে কবরবাসী তাকে চিনতে পারে এবং তার সালামের জবাব দেয়।[১৭]

জবাব : হাদীছটি যঈফ।[১৮]

৪নং হাদীছ

عبيد بن مَرْزُوق قَالَ كَانَت إمرأة بِالْمَدِينَةِ تقم الْمَسْجِد فَمَاتَتْ فَلم يعلم بهَا النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَمر على قبرها فَقَالَ مَا هَذَا الْقَبْر فَقَالُوا أم محجن قَالَ الَّتِي كَانَت تقم الْمَسْجِد قَالُوا نعم فَصف النَّاس فصلى عَلَيْهَا ثمَّ قَالَ أَي الْعَمَل وجدت أفضل قَالُوا يَا رَسُول الله أتسمع قَالَ مَا أَنْتُم بأسمع مِنْهَا فَذكر أَنَّهَا أَجَابَتْهُ قم الْمَسْجِد

উবাইদ ইবনু মারযুক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, মদিনায় এক মহিলা ছিলেন যিনি মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করতেন। অতঃপর তিনি মারা গেলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তা জানতেন না। অতঃপর তিনি তাঁর কবরের পাশ দিয়ে গেলেন এবং বললেন, এটি কার কবর? তাঁরা বলল, ‘উম্মে মিহজান’। তিনি বললেন, যে মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করতেন। তারা বলল, হ্যাঁ। তিনি লোকদের সারিবদ্ধ করলেন এবং তাঁর জন্য দু‘আ করলেন। অতঃপর তিনি বললেন, কোন কাজটি তোমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে? তাঁরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আপনি কি শোনেন? তিনি বললেন, তোমরা আমার চেয়ে বেশি শ্রবণকারী নও। অতঃপর তিনি উল্লেখ করেছেন যে, (ঐ মহিলা) উত্তর দিয়েছেন এবং বলেছেন, আপনি মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করুন।[১৯]

জবাব : হাদীছটি যঈফ মু‘যাল[২০] এবং মুরসাল।[২১] আলবানী এবং সিদ্দীক হাসান খান ভূপালী (রাহিমাহুমাল্লাহ) বলেছেন, হাদীছটি যঈফ।[২২]

৫নং হাদীছ  

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ مَرَّ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ عَلَى مُصْعَبِ بْنِ عُمَيْرٍ، حِيْنَ رَجَعَ مِنْ أُحُدٍ، فَوَقَفَ عَلَيْهِ، وَعَلَى أَصْحَابِهِ فَقَالَ : أَشْهَدُ أنَّكُم أَحْيَاءُ عِنْدَ الله، فَزُوْرُوْهُم وَسَلِّمُوْا عَلَيْهِم، فَوَ الَّذِيْ نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَا يُسَلِّمُ عَلَيْهِم أَحَدٌ إِلَّا رَدَّوْا عَلَيْهِ إِلَى يَوْمِ القِيَامَةِ.

আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উহুদ থেকে ফিরে আসার সময় মুস‘আব ইবনু উমাইরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। অতঃপর তিনি তাঁর সাথীদের সামনে দাঁড়ালেন এবং বললেন, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তোমরা আল্লাহর কাছে জীবিত, তাই তোমরা তাঁদের কাছে এবং তাদেরকে সালাম দাও। সেই সত্তার কসম! যার হাতে মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর প্রাণ, যে কেউ তাদেরকে সালাম দিবে, ক্বিয়ামত পর্যন্ত তারা তার জবাব দিবে’।[২৩]

জবাব : ইমাম হাকিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, শায়খাইনের মতে হাদীছটি ছহীহ।[২৪] প্রকৃতপক্ষে হাদীছটি বাতিল মুনকার এবং জাল। এ হাদীছে ‘আবূ বিলাল’ নামে একজন যঈফ এবং ‘আব্দুল আ‘লা ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু আবূ ফারওয়াতা’ নামে মাতরূক রাবী আছে।[২৫] ইমাম দারাকুত্বনী (রাহিমাহুল্লাহ) তাকে যঈফ বলেছেন।[২৬] লালকাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, এই হাদীছ বাতিল মুনকার।[২৭] ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি মনে করি হাদীছটি জাল।[২৮]  

দ্বিতীয় দলীল : তারা বদরের হাদীছকে দলীল হিসাবে উপস্থাপন করেছে।[২৯]

জবাব : অথচ তা বদরের সাথে খাছ।[৩০] তাছাড়া ঐ বিষয়টি আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর সামনে উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন,

إِنَّمَا قَالَ النَّبِىُّ ﷺ إِنَّهُمُ الآنَ لَيَعْلَمُوْنَ أَنَّ الَّذِىْ كُنْتُ أَقُوْلُ لَهُمْ هُوَ الْحَقُّ. ثُمَّ قَرَأَتْ (اِنَّکَ لَا تُسۡمِعُ الۡمَوۡتٰی) حَتَّى قَرَأَتِ الآيَةَ

‘নবী (ﷺ) যা বলেছেন তার অর্থ হল, তারা এখন জানতে পারছে যে, আমি তাদেরকে যা বলতাম তাই সঠিক ছিল। এরপর তিনি তেলাওয়াত করলেন (اِنَّکَ لَا تُسۡمِعُ الۡمَوۡتٰی) ‘মৃতকে তো আপনি কথা শুনাতে পারবেন না’  এভাবে পুরো আয়তটি তেলাওয়াত করলেন’।[৩১]

তৃতীয় দলীল : তারা মৃত ব্যক্তিকে কবরে রেখে আসার পর সে যে জীবিতদের জুতার শব্দ শুনতে পায়, সেই হাদীছকে দলীল হিসাবে উপস্থাপন করে। হাদীছটি হল, আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, إِنَّ الْمَيِّتَ إِذَا وُضِعَ فِيْ قَبْرِهِ، إِنَّهُ لَيَسْمَعُ خَفْقَ نِعَالِهِمْ إِذَا انْصَرَفُوْا ‘মৃতদেরকে যখন তার কবরে রাখা হয় তখন সে তার সঙ্গী-সাথীদের ফিরে আসার সময় জুতার শব্দ শুনতে পায়’।[৩২]

জবাব : এটা সেই সময়ের জন্য নির্দিষ্ট যখন মৃতকে তার কবরে রাখা হয় এবং যখন দু‘জন ফেরেশতা তাকে জিজ্ঞাসা করার জন্য তার কাছে আসে।[৩৩] তাছাড়া এগুলো অদৃশ্যের সংবাদ। যা বারযাখী জীবনের সাথে সম্পৃক্ত। বারযাখী ও অদৃশ্যের সংবাদ কুরআন-সুন্নাতে যেভাবে এসেছে, সেভাবেই বিশ্বাস করতে হবে।

ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর ‘ছহীহুল বুখারী’-তে ‘জানাযা’ অধ্যায়ে ‘মৃত ব্যক্তি (দাফনকারীদের) জুতার আওয়াজ শুনতে পায়’ নামে অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন। তিনি সেখানে মৃতদের কবরে রাখার পর জীবিতদের জুতার শব্দ শুনতে পাওয়ার হাদীছ নিয়ে এসেছেন। ইবনু বাত্তাল (রাহিমাহুল্লাহ) সেই হাদীছের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘মৃতদের জুতার শব্দ শুনা এবং দু’জন ফেরেশতার সাথে মৃত ব্যক্তির কথা উভয়টাই (মৃত ব্যক্তির সাথে) খাছ’। মুহাল্লাব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখানে কুরআন (মৃতকে তো আপনি কথা শুনাতে পারবেন না) ও হাদীছের (মৃতরা কবর থেকে জুতার শব্দ শুনতে পাওয়া) মধ্যে কোন বৈপরীত্য নেই। শ্রবণ সংক্রান্ত মৃত ব্যক্তির সাথে যা কিছু সম্পৃক্ত করা হয়েছে, যখন মৃতকে কবরে রাখা হয় অথবা মহান আল্লাহ মৃতদের রূহ যখন ফিরে দেয়ার ইচ্ছা করেন (তিনি যা করেন, তৎসম্পর্কে তিনি জিজ্ঞাসিত হবেন না এবং তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে (সূরা আল-আম্বিয়া : ২৩))। অতঃপর তিনি বলেন, তারা (মৃতরা) শুনতে পায় না। যেমনটা মহান আল্লাহ বলেন, ‘মৃতকে তো আপনি কথা শুনাতে পারবেন না’ (সূরা আন-নামল : ৮০)। মহান আল্লাহ আরো বলেন, ‘আপনি শুনাতে সমর্থ হবেন না যারা কবরে রয়েছে তাদেরকে’ (সূরা ফাতির : ২২)।[৩৪]

চতুর্থ দলীল : কবর যিয়ারতের জন্য (اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ) করে যে দু‘আ বর্ণিত হয়েছে, তা প্রমাণ করে যে, কবরবাসী অনুভব করে কবর যিয়ারতকারীকে।

জবাব : এটা (اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ) একটি দু‘আ, যা কবর যিয়ারতের জন্য শরী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত। এ শব্দের দ্বারা কবরবাসীর শ্রবণ অপরিহার্য করে না। যেমন নবী হিজরতের সময় মক্কাকে সম্মোধন করে বলেছিলেন,وَاللهِ إِنَّكِ لَخَيْرُ أَرْضِ اللهِ وَأَحَبُّ أَرْضِ اللهِ إِلَى اللهِ وَلَوْلَا أَنِّىْ أُخْرِجْتُ مِنْكِ مَا خَرَجْتُ ‘আল্লাহর শপথ! তুমি (মক্কা) আল্লাহর গোটা যমীনের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং দুনিয়ার সমস্ত যমীনের মধ্যে তুমি আমার নিকট সর্বাধিক প্রিয়। আল্লাহর শপথ! তোমায় থেকে আমাকে উচ্চেদ না করা হলে আমি (তোমায় ত্যাগ করে) চলে যেতাম না’।[৩৫] অনুরূপভাবে ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ‘হাজারে আসওয়াদ’-কে লক্ষ্য করে বলতেন,

وَإِنِّيْ لَأَعْلَمُ أَنَّكَ حَجَرٌ مَا تَنْفَعُ وَلَا تَضُرُّ وَلَوْلَا أَنِّيْ رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يُقَبِّلُ مَا قَبَّلْتُكَ

‘আমি নিশ্চিতরূপে জানি যে, তুমি একটি পাথর; তুমি কারো উপকার বা ক্ষতি করতে পার না। আমি যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -কে তোমায় চুমা দিতে না দেখতাম তবে আমি কখনও তোমাকে চুমা দিতাম না’।[৩৬]

ছাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জীবিতাবস্থায় ছালাতে তাশাহহুদে বলত (السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ)। এটা তাদের সকল মসজিদেই হত। কিন্তু তিনি তো তাদের এই বাক্য শ্রবণ করেননি এবং তাদেরকে সালামের জবাবও দেননি। বরং এটা একটি ইবাদত। এটার মাধ্যমে মহান আল্লাহর ইবাদত করা হয়। অনুরূপ কবর যিয়ারত করার সময় সালাম ইবাদত হিসাবে সাব্যস্ত। তাছাড়া নবী করীম বলেছেন যিয়ারাতুল কুবূর (زِيَارَةُ القُبُوْرِ) যিয়ারাতুল মাওত (زِيَارَةُ المَوْتَى) নয়। যেমন হাদীছে এসেছে, বুরায়দা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ الْقُبُوْرِ فَزُوْرُوْهَا  ‘আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন তোমরা তা যিয়ারত কর’।[৩৭] নবী করীম (ﷺ) হজ্জে গিয়ে বাইতুল্লাহ যিয়ারত করেছেন। জ্ঞাত বিষয় যে, ‘ত্বাওয়াফে ইফাযাহ’-কে ‘ত্বাওয়াফে যিয়ারাহ’ও বলা হয়। নবী করীম (ﷺ) মদীনায় থাকতে মসজিদে কুবা যিয়ারত করেছেন। কেউ কি বলতে পারবে, বাইতুল্লাহ এবং কুবায় যারা যিয়ারত করেছে, যিয়ারতকারীদেরকে বাইতুল্লাহ ও কুবা অনুভব করেছে? অনুরূপভাবে কবরও তাই। কবর যিয়ারত করা ইসলামের বিধান। এর অর্থ এই নয় যে, যে ব্যক্তিই কবর যিয়ারত করবে, কবরে শায়িত মৃত ব্যক্তি তাকে অনুভব করবে বা জানবে।

অতএব বলা যায় যে, দেওবন্দীরা যে দলীল ও যুক্তি পেশ করেছে শরী‘আতের আলোকে তা গ্রহণযোগ্য নয়। তাছাড়া তাদের আক্বীদা বা বিশ্বাস সালাফে ছলেহীনের বিপরীত। মহান আল্লাহ আমাদেরকে হেফাযত করুন-আমীন!

রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠ দ্বারা উদ্দেশ্য

দেওবন্দীরা ভ্রান্ত বিশ্বাস নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নামে যে সালাম ও দরূদ পেশ করে। এই দরূদ ও সালাম পেশ করার অন্যতম উদ্দেশ্য হল, তাঁর নিকট থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত হওয়া। যেমনটা ‘দালায়েলুল খয়রাত’ গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, ‘(দরূদ পাঠের মাধ্যমে) আমি যেন তাঁহার দরবার হইতে সর্বদা সাহায্যপ্রাপ্ত হই।[৩৮] অথচ এটা একটা শিরকী আক্বীদা। কেউ যদি আল্লাহ ছাড়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কবরকে সাহায্যপ্রাপ্তের মাধ্যম মনে করে, তাহলে তা স্পষ্ট শিরক।

দেওবন্দীরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর দরূদ পেশ করার জন্য দরূদের উপর ‘দালায়েলুল খায়রাত’ নামে একটি বই লিখেছে। এই বইয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর দরূদ ও সালামের ফযীলতের উপর বহু হাদীছ নিয়ে আসা হয়েছে, যার অধিকাংশ হাদীছ যঈফ, জাল এবং বহু হাদীছের অস্তিত্বই নেই। অথচ তা রাসূলের নামে বলে দেয়া হয়েছে। যেমন, ‘দালায়েলুল খায়রাত’ বইয়ের ৩৬ পৃষ্ঠায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে, আর একখানা হাদীসে হযরত রাসূলে পাক (সাঃ) ইরশাদ করিয়াছেন :

مَن صلَّى عليَّ صلاةً تعظيماً لِحَقِّي خلق الله عزَّ وجلَّ من ذلك القول مَلَكاً له جناح بالمشرق والآخر بالمغرب، ورِجلاه مقرورتان في الأرض السابعة السفلى، وعُنُقُه ملتويةٌ تحت العرش يقول الله عزَّ وجلَّ له: صلِّ على عبدي كما صلَّى على نبيِّي، فهو يُصلِّي عليه إلى يوم القيامة

‘সেই ব্যক্তি আমার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনার্থে দুরূদ শরীফ পাঠ করিয়া থাকে, মহান আল্লাহ পাক সেই দুরূদ শরীফ দ্বারা একজন ফেরেশতা তৈরি করিয়া থাকেন, যাহার একটি পাখা থাকিবে পৃথিবীর পূর্বপ্রান্তে আর একটি পাখা থাকিবে পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তে। তাহার পা যুগল জমীনের সপ্তমস্তরে দণ্ডায়মান হইবে। আর তাহার গর্দান আরশের ছায়াতলে পৌঁছাইবে। আল্লাহ পাক সেই ফেরেশতাকে বলিবেন, তুমি আমার বান্দার প্রতি দুরূদ প্রেরণ করিতে থাক, যেমনভাবে সে আমার নবীর প্রতি দুরূদ শরীফ প্রেরণ করিয়া থাকে। অতএব সে ক্বিয়ামত পর্যন্ত ঐ বান্দার উপর দরূদ শরীফ প্রেরণ করিতে থাকিবে’।[৩৯] তাহক্বীক্ব : হাদীছটি জাল এবং মুনকার।[৪০]

শরী‘আতের আলোকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠের উদ্দেশ্য, গুরুত্ব ও ফযীলত

মহান আল্লাহ বলেন,اِنَّ اللّٰہَ وَ مَلٰٓئِکَتَہٗ  یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡہِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরূদ প্রেরণ করেন। (অতএব) হে মুমিনগণ! তোমরা তার প্রতি দরূদ ও সালাম প্রেরণ কর’ (সূরা আহযাব : ৫৬)। ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এই আয়াতের উদ্দেশ্য এই যে, যেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কদর, মান-সম্মান ও ইয্যত মানুষের নিকট প্রকাশ পেয়ে যায়। তারা যেন জানতে পারে যে, আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং রাসূল (ﷺ)-এর প্রশংসা করেছেন এবং তাঁর ফেরেশতারা রাসূল (ﷺ)-এর জন্য দু‘আ করে থাকেন। মালায়ে আ‘লার এই খবর দিয়ে জগতবাসীকে আল্লাহ তা‘আলা এই নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তারাও যেন তাঁর উপর দরূদ ও সালাম পাঠাতে থাকে। যাতে আল্লাহর দরবারের ফেরেশতামন্ডলী ও দুনিয়াবাসীর মধ্যে সামঞ্জস্য হয়ে যায়।[৪১]

ছালাত ও সালামের অর্থ

‘ছালাত’ শব্দটি কুরআন ও হাদীছে দু’টি ইবাদতকে বুঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। প্রথমটি হল, ‘ছালাত’। আর দ্বিতীয়টি হল, নবী মুহাম্মদ (ﷺ)-এর প্রতি ‘দরূদ’ পাঠ করা। ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘আল্লাহর পক্ষ থেকে নবী করীম (ﷺ)-এর প্রতি ছালাত হল আল্লাহর রহমত, তাঁর সন্তুষ্টি এবং ফেরেশতাদের সামনে তাঁর প্রশংসা। আর ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে ছালাত হল- নবী করীম (ﷺ)-এর জন্য আল্লাহর নিকট দু‘আ করা এবং তাঁর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা। আর উম্মতদের পক্ষ থেকে ছালাতের অর্থ হল- তাঁর জন্য আল্লাহর কাছে দু‘আ করা, ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং তাঁর ব্যাপারে সম্মান প্রদর্শন করা।[৪২] আর ‘সালাম’ অর্থ শান্তি, নিরাপত্তা, অভিবাদন ইত্যাদি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর প্রতি সালামের অর্থ হল- রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্য আল্লাহর কাছে শান্তি কামনা করা। যেমন প্রত্যেক মুছল্লী ছালাতের ২য় ও শেষ বৈঠকে এই বলে নবী করীম (ﷺ)-কে সালাম প্রদান করেন,اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ  ‘হে নবী (ﷺ)! আপনার উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে শান্তি, রহমত ও বরকত নাযিল হোক’।[৪৩]

মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ﷺ) দরূদ ও সালাম দেয়ার পদ্ধতি আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছাহাবীদেরকে তাশাহহুদ শিক্ষা দিতেন যেভাবে তিনি তাদেরকে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ ছালাতের মধ্যে বসে, তখন সে যেন বলে,

التَّحِيَّاتُ لِلهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِىُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ

‘সমস্ত সম্মান, ইবাদত এবং সমস্ত পবিত্র বিষয় আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার প্রতি আল্লাহর শান্তি অনুগ্রহ ও তাঁর বরকত বর্ষিত হোক এবং আমাদের প্রতি ও আল্লাহর নেক বান্দাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক’।[৪৪]

কা‘ব ইবনু ওজরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমরা আপনার প্রতি ও আপনার পরিবারের প্রতি ছালাত (দরূদ) কিভাবে পাঠ করব? নিশ্চয় আপনার প্রতি সালাম কিভাবে পাঠ করব তা আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি বললেন, তোমরা বল, 

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَّعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ. اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَّعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّك حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ

‘হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর প্রতি এবং তাঁর পরিবারের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন, যেভাবে রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর পরিবারের প্রতি। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! আপনি বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদ (ﷺ) ও তাঁর পরিবারের প্রতি, যেভাবে বকরত নাযিল করেছেন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর পরিবারের প্রতি। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও সম্মামিত’।[৪৫]

মহান আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর শেখানো পদ্ধতিতে দরূদ ও সালাম পেশ না করে দেওবন্দীরা দরূদ ও সালামের উদ্দেশ্যই ভিন্ন করে নিয়েছে। সুন্নাতি দরূদের পরিবর্তে বহু বিদ‘আতী দরূদ তৈরি করেছে। ‘দালায়েলুল খায়রাত’ নামে দরূদের উপর বই লিখে যঈফ, জাল এবং অস্তিত্বহীন বহু হাদীছের সমাহার ঘটিয়েছে; যা বর্জন করা প্রতিটি মুসলিমের উপর অপরিহার্য কর্বত্য। তারা দরূদ ও সালাম কে অনেকটাই মিলাদ, ক্বিয়াম ও রওজার সাথে নির্দিষ্ট করে নিয়েছে।

অথচ শরী‘আতের আলোকে দরূদ ও সালামের রয়েছে অত্যধিক ফযীলত। যেমন, ১. কেউ যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর প্রতি একবার দরূদ পাঠ করে, আল্লাহ তার প্রতি দশবার রহমত বর্ষণ করেন[৪৬], তার দশটি গুনাহ মাফ করেন এবং দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন ।[৪৭] ২. ক্বিয়ামতের দিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকটতম ব্যক্তি সেই হবে যে তাঁর উপর অধিক দরূদ পাঠ করবে।[৪৮] ৩. ঐ ব্যক্তি লাঞ্ছিত হবে, যার নিকট রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নাম নেয়া হয় অথচ সে তাঁর প্রতি দরূদ পাঠ করে না।[৪৯] ৪. যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর একবার দরূদ পাঠ করবে, মহান আল্লাহ তার উপর দশবার রহমত নাযিল করবেন এবং যে ব্যক্তি তাঁর প্রতি একবার সালাম পাঠ করবে, আল্লাহ তার প্রতি দশবার শান্তি বর্ষণ করবেন।[৫০] ৫. রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর অধিকহারে দরূদ পাঠকারীর গুনাহ মার্জনা করা হবে।[৫১] ৬. মহান আল্লাহর প্রশংসা এবং নবী করীম (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠ করে আল্লাহর নিকট কিছু প্রার্থনা করলে, তা কবুল করা হয়।[৫২] ৭. কৃপণ ঐ ব্যক্তি, যার নিকট রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নাম উচ্চারণ করা হয়, অথচ সে তাঁর উপর দরূদ পাঠ করে না।[৫৩] ৮. নিশ্চয় দু‘আ আসমান ও যমীনের মধ্যে অবস্থান করে। তার কিছুই উপরে উঠে না, যতক্ষণ পর্যন্ত নবী করীম (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠ না করা হয়।[৫৪] ৯. রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠকারীর জন্য ফেরেশতাগণ দু‘আ করেন।[৫৫] ১০. রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠকারী ক্বিয়ামতের দিন শাফা‘আত লাভে ধন্য হবে।[৫৬] ১১. যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠ করতে ভুলে গেল, সে জান্নাতের পথ ভুলে গেল।[৫৭] ১১. যে ব্যক্তির সামনে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নাম উচ্চারিত হল অথচ সে তাঁর উপর দরূদ পাঠ করল না, অতঃপর মারা গেল, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।[৫৮]

মহান আল্লাহ আমাদেরকে দরূদ ও সালামের ব্যাপারে ভ্রান্ত বিশ্বাস থেকে হেফাযত করুন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর সর্বদা বেশি বেশি দরূদ ও সালাম পেশ করার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!!

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র :
[১]. শু‘আবুল ঈমান, হা/১০৮৩, ১৪৮১, ১৫৮৩; মিশকাত, হা/৯৩৪।
[২]. আবূ আব্দুল্লাহ খলীদূন ইবনু মাহমূদ, আত-তাওযীহুর রশীদ ফী শারহিত তাওহীদ, পৃ. ১০৯, ১৮১; নু‘মান ইবনু মাহমূদ আল-আলূসী, আল-আয়াতুল বাইয়্যিনাত ফী আদমি সিমাঈল আমওয়াত, তাহক্বীক্ব : নাছিরুদ্দীন আলবানী (বৈরূত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ৪র্থ সংস্করণ, তা.বি.), পৃ. ৮০; নাছিরুদ্দীন আলবানী, যঈফুল জামে‘ (আল-মাকতাবুল ইসলামী, তা.বি.), হা/৫৬৭০, পৃ. ৮১৭; জামালুদ্দীন যাইলাঈ, তাখরীজুল আহাদীছি ওয়াল আছারিল ওয়াক্বিয়াতি ফী তাফরীরিল কাশ্শাফ, ৩য় খণ্ড (রিয়াদ :  দারু ইবনু খুযায়মাহ, ১৪১৪ হি.), পৃ. ১৩৫; মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ আশ-শাফেঈ, আসনাল মাত্বালিবি ফী আহাদীছি মুখতালিফাতিল মারাতিব (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ১৪১৮ হি.), হা/১৪২০, পৃ. ২৭৪; আব্দুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ, তানবীহুল ক্বারী (দারুল উলইয়ান, ১৪১১ হি.), পৃ. ১৪৮।
[৩]. শামসুদ্দীন আয-যাহাবী, তারীখুল ইসলাম ওয়া ওফাইয়াতুল মাশাহীর ওয়াল আ‘লাম, ১২তম খণ্ড (আল-মাকতাবাতুত তাওফীক্বিয়্যাতু, তা.বি.), পৃ. ২১২; ইবনুল ‘ইমাদ আল-হানবলী, সাযারাদুয যাগাক ফী আখবারি মিন যাহাব, তাহক্বীক্ব : মাহমূদ আরনাঊত্ব, ২য় খণ্ড (বৈরূত : দারু ইবনু কাছীর, ১৪০৬ হি.), পৃ. ৪১৪; মুহাম্মাদ ইবনু হিব্বান, আল-মাজরূহীন মিনাল মুহাদ্দিছীন ওয়াল যু‘আফাউ ওয়াল মাতরূকীন, তাহক্বীক্ব : মাহমূদ ইবরাহীম যাইদ, ২য় খণ্ড (দারুল ও‘ঈ, ১৩৯৬ হি.), পৃ. ২৮৬, হা/৯৮৩; আবূ আহমাদ ইবনু ‘আদী আল-জুরজানী, আল-কামিল ফী যু‘আফাইর রিজাল, তাহক্বীক্ব : ‘আদিল আহমাদ আব্দুল মাওজূদ, ৭ম খণ্ড (বৈরূত : আল-কুতুবুল ‘ইলমিয়্যাহ, ১৪১৮ হি.), পৃ. ৫১২; হাফিজ আল-মিয্যী, তাহযীবুল কামাল ফী আসমাইর রিজাল, তাহক্বীক্ব :  ড. বাশ্শার, ২৬তম খণ্ড (বৈরূত : মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ১৪০০ হি.), পৃ. ৩৯৪।
[৪]. তারীখুল ইসলাম ওয়া ওফাইয়াতুল মাশাহীর ওয়াল আ‘লাম, ১২তম খণ্ড, পৃ. ২১২।
[৫]. সাযারাদুয যাগাক ফী আখবারি মিন যাহাব, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪১৪।
[৬]. আল-মাজরূহীন মিনাল মুহাদ্দিছীন ওয়াল যু‘আফাউ ওয়াল মাতরূকীন, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৭০, হা/৪৯৩; ২য় খণ্ড, পৃ. ২৮৬, হা/৯৮৩।
[৭]. আল-কামিল ফী যু‘আফাইর রিজাল, ৭ম খণ্ড, পৃ. ৫১২।
[৮]. তাহযীবুল কামাল ফী আসমাইর রিজাল, ২৬তম খণ্ড, পৃ. ৩৯৪।
[৯]. শামসুদ্দীন আয-যাহাবী, মীযানুল ই‘তিদাল ফী নাকদির রিজাল, তাহক্বীক্ব : ‘আলী মুহাম্মাদ, ২য় খণ্ড (বৈরূত : দারুল মা‘রিফাহ, ১৩৮২ হি.), পৃ. ৩০১।
[১০]. ছহীহ মুসলিম, হা/৯১৬-৯১৭, ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১।
[১১]. ইমাম নববী, আল-মিনহাজ শারহু ছহীহি মুসলিম, ৬ষ্ঠ খণ্ড (বৈরূত : দারু ইহইয়াইত তুরাছিল ‘আরাবী, ২য় সংস্করণ, ১৩৯২ হি.), ২১৯; আব্দুর রহমান মুবারকপুরী, তুহফাতুল আহওয়াযী, ৪র্থ খণ্ড (বৈরূত :  দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ৪৫; আবূ দাঊদ, হা/৩১১৬, ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২০; আত-তাওযীহুর রশীদ ফী শারহিত তাওহীদ, পৃ. ১০৯।
[১২]. ইবনু মাজাহ, হা/৩৭৯৫; মুসনাদে আবূ ইয়ালা, হা/৬৫২; সনদ ছহীহ।
[১৩]. মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৮৪; আহাদিছুল মুখতারাহ, হা/৮৩৭, সনদ ছহীহ।
[১৪]. ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/২০৪; আহাদিছুল মুখতারাহ, হা/২৫০, সনদ ছহীহ।
[১৫]. আবূ দাউদ, হা/৩১১৬, সনদ ছহীহ।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৮২৭; ছহীহ মুসলিম, হা/৯৪।
[১৭]. আবুল আব্বাস নাইসাবূরী, মাজমূঊ ফীহি মুছান্নাফাতি আবীল ‘আব্বাস (দারুল বাশাইরিল ইসলামিয়্যাহ, ১৪২৫ হি.), পৃ. ১২৭, হা/২১৪; আবুল হাসান আলী ইবনু আহমাদ, হাদিয়্যাতুল আহইয়াই লিল আমওয়াত (আদ-দারুল আছরিয়্যাহ, ১৪৩০ হি.), পৃ. ১৯১, হা/২৫; আত-তাওযীহুর রশীদ ফী শারহিত তাওহীদ, পৃ. ১০৯।
[১৮]. নাছিরুদ্দীন আলবানী, যঈফ তারগীব ওয়া তারহীব, ১ম খণ্ড (রিয়াদ : মাকতাবাতুল মা‘আরিফা, ১৪২১ হি.), পৃ. ১০৪, হা/১৮১; আত-তাওযীহুর রশীদ ফী শারহিত তাওহীদ, পৃ. ১০৯।
[১৯]. জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী, শারহুছ ছদূরি বি শারহি হালিল মাওতা ওয়াল কুবূর (লেবানন : দারুল মা‘রিফাহ, ১৪১৭ হি.), পৃ. ১০১; আত-তাওযীহুর রশীদ ফী শারহিত তাওহীদ, পৃ. ১০৯।
[২০]. যঈফ তারগীব ওয়া তারহীব, ১ম খণ্ড, পৃ. ১০৪, হা/১৮১; আত-তাওযীহুর রশীদ ফী শারহিত তাওহীদ, পৃ. ১০৯।
[২১]. শামসুদ্দীন হাম্বলী, গিযাঊল আলবাব ফী শারহি মানযূমাতিল আদাব, ২য় খণ্ড (মিশর :  মুওয়াসসাতুন কুরতুবাতুন, ২য় সংস্করণ, ১৪১৪ হি.), পৃ. ৩০৭।
[২২]. ফাতাওয়া শাবাকাতুল ইসলামিয়্যাহ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৮৮, ফাতাওয়া নং-৫৭০০৯।
[২৩]. ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, হা/৩৭০০; আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/৮৫০; আত-তাওযীহুর রশীদ ফী শারহিত তাওহীদ, পৃ. ১০৯।
[২৪]. আত-তাওযীহুর রশীদ ফী শারহিত তাওহীদ, পৃ. ১০৯।
[২৫]. আবুল হাসান নূরুদ্দীন আল-হায়ছামী, মাজমাঊল যাওয়াইদ ওয়া মানবাঊল ফাওয়াইদ, তাহক্বীক্ব : হিসাম উদ্দীন, ৩য় খণ্ড, ৬ষ্ঠ খণ্ড (কায়রো : মাকতাবাতুল কুদুসী, ১৪১৪ হি.), পৃ. ৬০, ১২৩, হা/৪৩১৬, ১০১২০; জালালুদ্দীন সয়ূত্বী, জামি‘উল আহাদীছ, ৪র্থ খণ্ড (তা.বি.), পৃ. ৪৪৬, হা/৩৫১৯।
[২৬]. মাজমাঊল যাওয়াইদ ওয়া মানবাঊল ফাওয়াইদ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৬০, হা/৪৩১৬।
[২৭]. আবুল আশবাল হাসান আল-মিছরী, শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ লিল লালকাঈ, ৫৮তম খণ্ড (আশ-শাবাকাতুল ইসলামিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ৭।
[২৮]. আত-তাওযীহুর রশীদ ফী শারহিত তাওহীদ, পৃ. ১০৯।
[২৯]. প্রাগুক্ত, পৃ. ১০৬।
[৩০]. প্রাগুক্ত, পৃ. ১০৬।
[৩১]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৯৮১; নাসাঈ, হা/২০৭৬।
[৩২]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৮৭০; আত-তাওযীহুর রশীদ ফী শারহিত তাওহীদ, পৃ. ১০৭।
[৩৩]. আত-তাওযীহুর রশীদ ফী শারহিত তাওহীদ, পৃ. ১০৭।
[৩৪]. ইবনু বাত্তাল, শারহু ছহীহিল বুখারী, তাহক্বীক্ব : আবূ তামীম ইয়াসির ইবনু ইবরাহীম, ৩য় খণ্ড (রিয়াদ :  মাকতাবাতুর রুশদ, ১৪২৩ হি.), পৃ. ৩২০; আত-তাওযীহুর রশীদ ফী শারহিত তাওহীদ, পৃ. ১০৭।
[৩৫]. তিরমিযী, হা/৩৯২৫; ইবনু মাজাহ, হা/৩১০৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৭৩৭; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৩৭০৮; দারেমী, হা/২৫১০, সনদ ছহীহ।
[৩৬]. ছহীহ বুখারী, হা/১৫৯৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১২৭০।
[৩৭]. ছহীহ মুসলিম, হা/৯৭৭, ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৩৬।
[৩৮]. দালায়েলুল খায়রাত, পৃ. ২৭।
[৩৯]. দালায়েলুল খায়রাত, পৃ. ৩৬; আবূ হাফছ ওমর ইবনু আহমাদ আল-বাগদাদী, আত-তারগীব ফী ফাযাইলিল আ‘মালি ওয়া ছাওয়াবুন যালিকা  (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ১৪২৪ হি.), হা/২০, পৃ. ১৪।
[৪০]. আব্দুল মুহসিন ইবনু হাম্মাদ ইবনু আব্দুল মুহসিন আল-আব্বাদ, আর-রদ্দু ‘আলার রিফা‘ঈ ওয়াল বূত্বী ফী কিযবিহিমা (সঊদী আরব : দারু ইবনিল আছীর, ১৪২১ হি.), পৃ. ১৭; নূরুদ্দীন ‘আলী ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলী ইবনু আব্দুর রহমান, তানযীহুশ শরী‘আতিল মারফূ‘আতি আনিল আখবারিশ শানী‘আতিল মাওযূ‘আতি, ২য় খণ্ড (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১৩৯৯ হি.), পৃ. ৩৩১; মুহাম্মাদ ইবনু খলীল ইবনু ইবরাহীম, আল-লূ’লূল মারছূ‘ঊ ফীমা লা আছলা লাহু আও বিআছলিহি মাওযূ‘ঊন বৈরূত : দারুল বাশাইরিল ইসলামিয়্যাহ, ১৪১৫ হি.), পৃ. ১৮৭।
[৪১]. ইবনু কাছীর, তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, তাহক্বীক্ব : সামী ইবনু মুহাম্মাদ, ৬ষ্ঠ খণ্ড (দারুত তায়্যিবা, ২য় সংস্করণ, ১৪২০ হি.), পৃ. ৪৫৭।
[৪২]. ইমাম কুরতুবী, আল-জামিঊ লি আহকামিল কুরআন, তাহক্বীক্ব : আহমাদ আল-বারদূনী, ১৪তম খণ্ড (কায়রো : দারুল কুতুবিল মিছরিয়্যাহ, ২য় সংস্করণ, ১৩৮৪ হি.), পৃ. ২৩২।
[৪৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৮৩৫, ১২০২; ছহীহ মুসলিম, হা/৪০২; তিরমিযী, হা/২৮৯; আবূ দাঊদ, হা/৯৬৮; ইবনু মাজাহ, হা/৮৯৯।
[৪৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৮৩৫, ৬২৩০; ছহীহ মুসলিম, হা/৪০২, ৪০৩; মিশকাত, হা/৯০৯, ৯১০।
[৪৫]. ছহীহ বুখারী হা/৩৩৭০; ছহীহ মুসলিম হা/৪০৬।
[৪৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/৪০৮; মিশকাত, হা/৯২১।
[৪৭]. নাসাঈ, হা/১২৯৭; মিশকাত, হা/৯২২, সনদ ছহীহ।
[৪৮]. তিরমিযী, হা/৪৮৪।
[৪৯]. তিরমিযী, হা/৩৫৪৫।
[৫০]. নাসাঈ, হা/১২৮৩; দারেমী, হা/২৭৭৩।
[৫১]. তিরমিযী, হা/২৪৫৭, সনদ হাসান।
[৫২]. তিরমিযী, হা/৫৯৩, ৩৪৭৬; আবূ দাঊদ, হা/১৪৮১; নাসাঈ, হা/১২৮৪।
[৫৩]. তিরমিযী, হা/৩৫৪৬, সনদ ছহীহ।
[৫৪]. তিরমিযী, হা/৪৮৬, সনদ হাসান।
[৫৫]. ইবনু মাজাহ, হা/৯০৭; ছহীহুল জামে‘, হা/৫৭৪৪, হাদীছ হাসান।
[৫৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/৩৮৪।
[৫৭]. ইবনু মাজাহ, হা/৯০৮, সনদ হাসান ছহীহ।
[৫৮]. ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৯০৭, সনদ হাসান।






প্রসঙ্গসমূহ »: ভ্রান্ত মতবাদ
তাওহীদ প্রতিষ্ঠার উপায় (শেষ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
ফাযায়েলে কুরআন (শেষ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
শবেবরাত - আল-ইখলাছ ডেস্ক
তারুণ্যের উপর সন্ত্রাসবাদের হিংস্র ছোবল : প্রতিকারের উপায় (শেষ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
শিক্ষাদানে নববী পদ্ধতি ও কৌশল - হাসিবুর রহমান বুখারী
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (২৪তম কিস্তি)   - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
প্রচলিত তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের অবস্থান - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (৫ম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
ফাযায়েলে কুরআন (৭ম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
রামাযান মাসে প্রচলিত বিদ‘আত সমূহ - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
সালাম প্রদানের গুরুত্ব ও মর্যাদা - মুহাম্মাদ আরিফ হুসাইন
সালাফী মানহাজের মূলনীতিসমূহ (২য় কিস্তি) - আব্দুল গাফফার মাদানী

ফেসবুক পেজ