ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন
-হাসিবুর রহমান বুখারী*
(১৭তম কিস্তি)
মালহামাহ বা মহাযুদ্ধের সময় মুসলিমদের শিবির কোথায় স্থাপন করা হবে এবং মুসলিম সেনাবাহিনী কোথায় অবস্থান করবেন? কোথায় থেকে মুসলিমদের সেনাপতি নেতৃত্ব দেবেন? এর উত্তর হল: আবূ দারদাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন,
إِنَّ فُسْطَاطَ الْمُسْلِمِيْنَ يَوْمَ الْمَلْحَمَةِ بِالْغُوطَةِ، إِلَى جَانِبِ مَدِيْنَةٍ يُقَالُ لَهَا: دِمَشْقُ، مِنْ خَيْرِ مَدَائِنِ الشَّامِ.
‘যুদ্ধের দিন মুসলিমদের শিবির স্থাপন করা হবে ‘গূত্বাহ্’ নামক শহরে, যা সিরিয়ার সর্বোত্তম শহর দামিশক্বের পাশে অবস্থিত’।[১]
বর্তমানে ‘গূত্বাহ’ দামিশক্বের অতি পরিচিত একটি শহর। আখিরী যামানায় মুসলিম সেনাবাহিনীর শিবির এখানেই স্থাপন করা হবে, যা উপরিউক্ত হাদীছের আলোকে প্রতিভাত হয়। দামিশক্বের পাশে বিস্তৃত তৃণভূমিতে। আর যুদ্ধ সংঘটিত হবে উত্তর সিরিয়ার হালাব বা আলেপ্পো নগরীতে। চারদিন অবিরাম এই যুদ্ধ চলতে থাকবে, সৈনিকদের আরামের জন্য শুধু রাত্রীতে বিরতি নেয়া হবে। এই যুদ্ধে রোমানরা এমন জঘন্যভাবে পরাজিত হবে, যার কদর্যতার বর্ণনা আজ পর্যন্ত কেউ শুনেনি। তাদের বিপুল সংখ্যক মানুষ এই যুদ্ধে মারা যাবে, যত সংখ্যক মানুষ ইতিপূর্বে কোন যুদ্ধে মারা যায়নি। সীমাহীন অত্যাচার, নিদারুণ কষ্ট এবং বালা-মুসীবতের জাঁতাকলে পিষ্ট হওয়ার পর আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদেরকে বিজয়ের স্বাদ আস্বাদন করাবেন। যেদিন আতঙ্কের কালোমেঘ ও বিপদের তীব্রতায় মানুষের অন্তরসমূহ কন্ঠনালী পৌঁছে যাবে, যেদিন এক- তৃতীয়াংশ মুসলিম সেনাবাহিনী পলায়ন করবে, এক- তৃতীয়াংশ শহীদ হবে এবং এক- তৃতীয়াংশ বিজয় লাভ করবে। যখন এই ভয়াবহ যুদ্ধ শেষ হবে তখন মুসলিমরা নিকটস্থ খ্রিস্টানদের সর্বাধিক শক্তিশালী এলাকা ‘কুস্তুন্তুনিয়া বা কনস্টান্টিনোপল’-এর দিকে ধাবিত হবে। মু‘আয ইবনু জাবাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন,
عُمْرَانُ بَيْتِ الْمَقْدِسِ خَرَابُ يَثْرِبَ، وَخَرَابُ يَثْرِبَ خُرُوْجُ الْمَلْحَمَةِ، وَخُرُوْجُ الْمَلْحَمَةِ فَتْحُ قُسْطَنْطِيْنِيَّةَ، وَفَتْحُ الْقُسْطَنْطِيْنِيَّةِ خُرُوْجُ الدَّجَّالِ، ثُمَّ ضَرَبَ بِيَدِهِ عَلَى فَخِذِ الَّذِيْ حَدَّثَهُ، أَوْ مَنْكِبِهِ- ثُمَّ قَالَ: إِنَّ هَذَا لَحَقٌّ كَمَا أَنَّكَ هَاهُنَاগ্ধ، أَوْ كَمَا أَنَّكَ قَاعِدٌ، يَعْنِيْ مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ.
‘বাইতুল মাক্বদিসে বসতি স্থাপন ইয়াছরিব অর্থাৎ মদীনার বিপর্যয়ের কারণ হবে এবং ইয়াছরিব অর্থাৎ মদীনার বিপর্যয় যুদ্ধ ও সংঘাতের কারণ হবে। যুদ্ধের ফলে ‘কুস্তুন্তুনিয়া বা কনস্টান্টিনোপল’ বিজিত হবে এবং কুস্তুন্তুনিয়া বিজয় দাজ্জালের আবির্ভাবের আলামত। অতঃপর রাসূল (ﷺ) যার নিকট হাদীছ বর্ণনা করেছেন তার ঊরুতে বা কাঁধে নিজের হাত দ্বারা মৃদু আঘাত করে বলেন, এটা নিশ্চিত সত্য, যেমন তুমি এখানে উপস্থিত, যেমন তুমি এখানে বসা আছো। অর্থাৎ তিনি মু‘আয ইবনু জাবাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে লক্ষ্য করে বলেন’।[২]
উল্লেখ্য, সঊদী আরবের বিদ্বেষী কিছু মূর্খের দল বলে থাকে যে, বর্তমানে মক্কা-মদীনার কোন মূল্য নেই। কেননা ইমাম মাহদী মক্কায় নয়, মদীনায় নয় বরং শাম দেশে বসবাস করবেন এবং সেখান থেকেই শাসনকার্য পরিচালনা করবেন। তাই তারা হজ্জ বা উমরাহ করতে গিয়ে মক্কা ও মদীনায় জামা‘আতের সঙ্গে ছালাত পর্যন্ত আদায় করে না। এমনকি জনৈক গণক বক্তা বলেছেন যে, ‘রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘এর বিপরীতে আল্লাহ তা‘আলা একটি শক্তিকে দাঁড় করাবেন, যাদের নেতৃত্ব দিবে ইমামুল মাহদী এবং তাঁর নেতৃত্বে একটা মালহামা হতে যাচ্ছে। রাসূল (ﷺ) হাদীছে বলেছেন, ‘যখন মদীনার গুরুত্ব কমে যাবে, তখন জেরুজালেমের গুরুত্ব বেড়ে যাবে। যেটা এখন হয়েছে। ঠিক তখনই দেখা দেবে মালহামা অর্থাৎ মহাযুদ্ধ। এটা এমন একটা যুদ্ধ, যে বিষয়ে বিশ্ববাসীর কোন কল্পনাই নেই যে, এটা কতবড় যুদ্ধ হতে পারে (তথ্য সূত্র: ইউটিউব)। জনৈক গণক বক্তা আরেক জায়গায় বলেছেন যে, ‘রাসূল (ﷺ) প্রোফিসাইড করেছেন যে, যখন মদীনার গুরুত্ব কমে যাবে। আবূ দাঊদের মধ্যে হাদীছটা আছে। যখন মদীনার গুরুত্ব কমে যাবে। সারা ওয়ার্ল্ডে মদীনার এখন কোন গুরুত্বই নেই। নো রোল। তারা সারা ওয়ার্ল্ডে তারা কোন রোল প্লে করে না। এটা ট্যুরিস্ট জায়গা। মানুষ যায় সেখানে যেয়ারত করতে, পড়াশোনা করতে। সারা ওয়ার্ল্ডের পলিটিক্সের মধ্যে কোন রোল প্লে করে না। তার চেয়ে বেটার রোল মালয়েশিয়া প্লে করে। যখন মদীনার গুরুত্ব কমে যাবে, ঠিক তখনই জেরুজালেমের গুরুত্ব বেড়ে যাবে। সারা ওয়ার্ল্ডের এখন মাথাব্যথার কারণ জেরুজালেম।... ঠিক তখনই শুরু হবে মালহামা (তথ্যসূত্র: ইউটিউব)।
নাঊযুবিল্লাহ! মদীনার প্রতি এত বিদ্বেষ! মদীনাহ না-কি শুধু একটি ঞড়ঁৎরংঃ ঢ়ষধপব বা পর্যটক স্থান! আদতে বক্তা হাদীছের মূল বক্তব্য বুঝতে সক্ষম হয়নি। এখানে ‘বাইতুল মাক্বদিসে বসতি স্থাপন ইয়াছরিব অর্থাৎ মদীনার বিপর্যয়ের কারণ হবে’ বলতে মদীনার বাড়ি-ঘর ধ্বংস হওয়া নয় বরং তার বিরান হওয়া বা বসতিশূন্য হওয়াকে বুঝানো হয়েছে। কারণ সেই সময় অধিকাংশ লোক বাইতুল মাক্বদিস অর্থাৎ শাম দেশে বসবাস করতে চাইবে। কেননা তখন শাম দেশ থেকেই মুসলিমরা শাসনকার্য পরিচালনা করবে। খ্রিস্টান, ইয়াহুদী ও দাজ্জালের অভিমুখও শাম দেশের দিকেই হবে। হাদীছটিতে বলা হয়েছে, জেরুজালিমের বাইতুল মাক্বদিসে বসতিস্থাপনই হবে মদীনাহ বিরান হওয়ার কারণ। অর্থাৎ ক্বিয়ামতের প্রাক্কালে জনমানুষ, ঘরবাড়ি ও সম্পদের প্রাচুর্যতায় বাইতুল মাক্বদিস সমৃদ্ধ হবে।[৩] প্রকৃতপক্ষে মদীনা ছেড়ে মানুষজন চলে যাওয়ায় মদীনা বসতিশূন্য বিরান হয়ে যাবে। নবী (ﷺ) বলেছেন,
يَتْرُكُوْنَ الْمَدِيْنَةَ عَلَى خَيْرِ مَا كَانَتْ لَا يَغْشَاهَا إِلَّا الْعَوَافِ يُرِيْدُ عَوَافِيَ السِّبَاعِ وَالطَّيْرِ وَآخِرُ مَنْ يُحْشَرُ رَاعِيَانِ مِنْ مُزَيْنَةَ يُرِيْدَانِ الْمَدِيْنَةَ يَنْعِقَانِ بِغَنَمِهِمَا فَيَجِدَانِهَا وَحْشًا حَتَّى إِذَا بَلَغَا ثَنِيَّةَ الْوَدَاعِ خَرَّا عَلَى وُجُوهِهِمَا.
‘তোমরা উত্তম অবস্থায় মদীনাকে রেখে যাবে। আর জীবিকা অন্বেষণে বিচরণকারী অর্থাৎ পশু-পাখি ছাড়া আর কেউ একে আচ্ছন্ন করে নিতে পারবে না। সবশেষে যাদের মদীনাতে একত্রিত করা হবে তারা হল মুযাইনা গোত্রের দু’জন রাখাল। তারা তাদের বকরীগুলোকে হাঁক-ডাক দিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যেই মদীনাতে আসবে। এসে দেখবে মদীনা বন্য পশুতে ছেয়ে আছে। এরপর তারা সানিয়্যাতুল-বিদা নামক স্থানে পৌঁছতেই মুখ থুবড়ে পড়ে যাবে’।[৪] এছাড়াও আবূ দাঊদের হাদীছটির সাথে আরেক হাদীছের বৈপরীত্য পরিলক্ষিত হয়। আবূ দাঊদের হাদীছটিতে বলা হয়েছে, দাজ্জালের আবির্ভাবের আগেই মদীনা বিরান হয়ে যাবে। অথচ ছহীহুল বুখারীর হাদীছে এসেছে, আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন,
لَيْسَ مِنْ بَلَدٍ إِلَّا سَيَطَؤُهُ الدَّجَّالُ إِلَّا مَكَّةَ وَالْمَدِيْنَةَ لَيْسَ لَهُ مِنْ نِقَابِهَا نَقْبٌ إِلَّا عَلَيْهِ الْمَلَائِكَةُ صَافِّيْنَ يَحْرُسُوْنَهَا ثُمَّ تَرْجُفُ الْمَدِيْنَةُ بِأَهْلِهَا ثَلاََثَ رَجَفَاتٍ فَيُخْرِجُ اللهُ كُلَّ كَافِرٍ وَمُنَافِقٍ.
‘মক্কা ও মদীনা ব্যতীত এমন কোন শহর নেই যেখানে দাজ্জাল পদচারণ করবে না। মক্কা এবং মদীনার প্রত্যেকটি প্রবেশ পথেই ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে পাহারায় নিয়োজিত থাকবে। অতঃপর মদীনা তার অধিবাসীদেরকে নিয়ে তিনবার কেঁপে উঠবে এবং আল্লাহ তা‘আলা সমস্ত কাফির এবং মুনাফিকদেরকে বের করে দিবেন’।[৫] ইমাম ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) এই বৈপরীত্যের সংশয় নিরসন করে বলেছেন,
وليس المراد أن المدينة تخرب بالكلية قبل خروج الدجال ، وإنما ذلك آخر الزمان ، بل تكون عمارة بيت المقدس سببا في خراب المدينة النبوية ، فإنه قد ثبت في الأحاديث الصحيحة أن الدجال لا يقدر على دخولها ، يُمنع من ذلك بما على أبوابها من الملائكة القائمين بأيدهم السيوف المصلتة.
‘এ হাদীছের উদ্দেশ্য এটা নয় যে, দাজ্জালের আগমনের পূর্বে মদীনা সম্পূর্ণরূপে বিরান হয়ে যাবে। বরং এটা শেষ যামানায় হবে। বরং বাইতুল মাক্বদিসে বসতিস্থাপন মদীনা বিরান হওয়ার কারণ হবে। কারণ ছহীহ হাদীছ দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে যে, দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না। কারণ, মদীনার দরজাগুলোতে কোষমুক্ত তরবারি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা ফেরেশতাগণ দ্বারা সে বাধাগ্রস্ত হবে’।[৬]
অতএব বুঝা যাচ্ছে যে, কতটা দ্বীনের জ্ঞানশূন্য এবং কতটা ভ্রান্ত আক্বীদা হলে মানুষ এরূপ মন্তব্য করতে পারে! আসল বিবরণ কী? তা এদের বোধগম্যের বাইরে। প্রকৃত ঘটনা হল, ইমাম মাহদী কিন্তু মক্কাতেই আত্মপ্রকাশ করবেন। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘মাক্বামে ইবরাহীম ও রুকনে ইয়ামীন অর্থাৎ হাজারে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থানে একজন ব্যক্তির হাতে বাই‘আত করা হবে।[৭] অতঃপর তিনি আল্লাহর নির্দেশে শাম দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। কারণ তিনি ঈসা (আলাইহিস সালাম)-কে সাহায্য করবেন দাজ্জালকে হত্যা করার কাজে। আর দাজ্জাল মক্কা ও মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না। যেমন আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘দাজ্জাল পূর্বদিক থেকে আগমন করে মদীনায় প্রবেশ করতে চাইবে। এমনকি সে উহুদ পাহাড়ের পাদদেশ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। এরপর ফেরেশতারা তার চেহারার (গতি) সিরিয়ার দিকে ফিরিয়ে দেবেন এবং সেখানেই সে ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর হাতে ধ্বংস হবে’।[৮] সেই জন্য ইমাম মাহদী আগে থেকেই দাজ্জালকে হত্যা করার জন্য মক্কা-মদীনা থেকে বেরিয়ে আসবেন। একদিন ইমাম মাহদী দামেস্কের মসজিদে ফজরের ছালাতের সময় ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর সাথে সাক্ষাৎ করবেন। অতঃপর তিনি ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর সাথে যোগ দিয়ে দাজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বের হবেন এবং দাজ্জালকে হত্যার কাজে ঈসা (আলাইহিস সালাম)-কে সহায়তা করবেন। অতঃপর তিনি সাত বছর মতান্তরে নয় বছর পৃথিবীতে বসবাস করে মৃত্যুবরণ করবেন।[৯]
হাদীছে বর্ণিত প্রত্যেকটি কথা বাস্তবায়িত হওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আজ না হয় কাল তা ঘটবেই। ছহীহ মুসলিমে বর্ণিত যুদ্ধের হাদীছে রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না রোমীয় (সিরিয়ার অন্তর্গত) সেনাবাহিনী আ‘মাক অথবা দাবিক নহরের কাছে অবতীর্ণ হবে। তখন তাদের মুকাবিলায় মদীনা হতে এ দুনিয়ার সর্বোত্তম মানুষের এক দল সৈন্য বের হবে। তারপর উভয় দল সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান হবার পর রোমীয়গণ বলবে, তোমরা ঐ সমস্ত লোক থেকে পৃথক হয়ে যাও, যারা আমাদের লোকেদেরকে বন্দী করেছে। আমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করব। তখন মুসলিমগণ বলবেন, আল্লাহর শপথ আমরা আমাদের ভাইদের থেকে কখনো সম্পর্কচ্ছেদ করব না।
فَيُقَاتِلُوْنَهُمْ فَيَنْهَزِمُ ثُلُثٌ لَا يَتُوْبُ اللهُ عَلَيْهِمْ أَبَدًا وَيُقْتَلُ ثُلُثُهُمْ أَفْضَلُ الشُّهَدَاءِ عِنْدَ اللهِ وَيَفْتَتِحُ الثُّلُثُ لَا يُفْتَنُوْنَ أَبَدًا فَيَفْتَتِحُوْنَ قُسْطُنْطِيْنِيَّةَ.
‘পরিশেষে তাঁরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে। এ যুদ্ধে মুসলিমদের এক তৃতীয়াংশ সৈন্য পলায়ন করবে। আল্লাহ তা‘আলা কখনো তাদের তাওবাহ গ্রহণ করবেন না। সৈন্যদের এক তৃতীয়াংশ নিহত হবে এবং তাঁরা হবে আল্লাহর কাছে শহীদদের মাঝে সর্বোত্তম শহীদ। আর সৈন্যদের অপর তৃতীয়াংশ বিজয়ী হবে। জীবনে আর কখনো তাঁরা ফিতনায় আক্রান্ত হবেন না। তাঁরাই কুস্তুন্তুনিয়া বা কনস্টান্টিনোপল বিজয় করবেন...’।[১০]
কিভাবে কুস্তুন্তুনিয়া বিজয় হবে?
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘তোমরা কি ঐ শহরের কথা শুনেছ, যার একদিকে স্থলভাগ এবং একদিকে জলভাগ? (অর্থাৎ কুস্তুন্তুনিয়ার) উত্তরে ছাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! শুনেছি। অতঃপর তিনি বললেন, ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত ইসহাক (আলাইহিস সালাম)-এর সন্তানদের সত্তর হাজার লোক এ শহরের লোকেদের সঙ্গে যুদ্ধ না করবে। তাঁরা শহরের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছবে এবং কোন অস্ত্র দ্বারা যুদ্ধ করবেন না এবং কোন তীরও চালাবেন না, বরং তাঁরা একবার ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ‘ওয়াল্লা-হু আকবার’ বলবেন, সাথে সাথে এর এক প্রান্ত ধসে পড়বে। অতঃপর দ্বিতীয়বার তাঁরা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ‘ওয়াল্লা-হু আকবার’ বলবেন, এতে শহরের অপর প্রান্ত ধসে যাবে। এরপর তাঁরা তৃতীয়বার ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ও ‘ওয়াল্লা-হু আকবার’ বলবেন। তখন তাদের শহরের দ্বার খুলে দেয়া হবে। তাঁরা যখন তাতে প্রবেশ করে গনীমাতের মাল ভাগাভাগিতে ব্যতিব্যস্ত থাকবে, তখন কেউ উচ্চৈঃস্বরে বলে উঠবে, দাজ্জালের আগমন ঘটেছে। এ কথা শুনা মাত্রই তাঁরা ধন-সম্পদ ফেলে দেশে ফিরে যাবে’।[১১] ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘সেই শহরটি হল- ‘কুস্তুন্তুনিয়া’।[১২] এটি রাজা কনস্টানটাইন ত্রিভুজাকার আকৃতিতে তৈরী করেছিলেন। যার এক প্রান্তে সমুদ্র আর অপর প্রান্তে স্থলভাগ।[১৩]
আল্লাহ তা‘আলা কুস্তুন্তুনিয়ার কাফিরদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করে দেবেন। শুধু ‘আল্লাহু আকবর’ ও ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর ধ্বনিতে শহর ধ্বংস হয়ে যাবে। তাঁরা শঙ্কিত অবস্থায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবে এবং মুসলিমদের জন্য শহরের দরজা খুলে দেবে। এর পরপরই মুসলিমরা রোম সাম্রাজ্যের দিকে অগ্রসর হবে। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘তোমরা ‘আরব উপদ্বীপে যুদ্ধ অভিযান চালাবে এবং আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে তাতে বিজয়ী করবেন। অতঃপর পারস্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, তাতেও আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে জয়যুক্ত করবেন। তারপর রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, এটাতেও আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে বিজিত করবেন। অবশেষে তোমরা দাজ্জালের বিরুদ্ধে লড়াই করবে, তাতেও আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে বিজয়ী করবেন। বর্ণনাকারী নাফি‘ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘হে জাবির! আমাদের মনে হয় রোম বিজিতের পর দাজ্জালের আগমন ঘটবে’।[১৪] আর রোম সাম্রাজ্য কখন বিজয় হবে, ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর যুগে, না-কি তাঁর অবতরণের পূর্বে? তা আল্লাহ তা‘আলাই সর্বাধিক ভালো জানেন। সে কথা নির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। কেননা কুস্তুন্তুনিয়া বিজয়ের পরপরই দাজ্জালের আগমন ঘটবে। আর দাজ্জালের আগমনের পরপরই ঈসা (আলাইহিস সালাম) অবতরণ করবেন। ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর যুগে সমস্ত পৃথিবী ইসলাম ধর্মে পরিপূর্ণ হয়ে থাকবে। তবে প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে যে, কুস্তুন্তুনিয়া বিজয়ের পর রোম সাম্রাজ্য বিজিত হবে। কেননা কুস্তুন্তুনিয়া বিজয়ের পর খ্রিস্টানদের জন্য শুধু রোম সাম্রাজ্য-ই অবশিষ্ট থাকবে। আর এটি তাদের সর্বাধিক বৃহৎ ও পবিত্র শহর। সুতরাং তারা সকলেই রোমের দিকে অগ্রসর হবে। এ সময় মুসলিম পৃথিবীর বুকে চরম শক্তিশালী হয়ে উঠবে। সুতরাং মুসলিমরা তাঁদের সর্বস্ব শক্তি দিয়ে খ্রিস্টানদের উপর আক্রমণ করবে এবং তাদের শহর, বন্দর, ধর্মীয় শক্তি ও সামরিক শক্তিকে ধুলিসাৎ করে দেবে।
ইয়াহুদীদের সঙ্গে মালহামাহ বা মহাযুদ্ধ
ক্বিয়ামতের পূর্বমুহূর্তে খ্রিস্টানদের সঙ্গে যে মালহামাহ বা মহাযুদ্ধ সংঘটিত হবে তা দাজ্জাল আগমনের খুবই সন্নিকটে ঘটবে। আর ইয়াহুদীদের সঙ্গে যে মালহামাহ বা মহাযুদ্ধ সংঘটিত হবে তা দাজ্জালের আগমনের পরপরই ঘটবে। আমরা ইতিপূর্বে অবগত হলাম যে, কুস্তুন্তুনিয়া ধ্বংসের পরপরই দাজ্জালের আগমন ঘটবে। দাজ্জালের সঙ্গ দেবে সত্তর হাজার ইয়াহুদী এবং সে নিজেও একজন ইয়াহুদী বংশোদ্ভূত হবে। আর তাছাড়া মুসলিমদের সাথে ইয়াহুদীদের যুদ্ধটা অনেক দিনের পুরাতন, যখন রাসূল (ﷺ) বানু নাযীর, বানু কুরাইযাহ, বানু ক্বাইনুক্বা' এবং খাইবারে অভিমান প্রেরণ করেছিলেন। ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদের আরব উপত্যকা থেকে বিতাড়িত করার জন্য।[১৫] ছহীহ মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, ‘সুতরাং তাঁরাই কুস্তুন্তুনিয়া বা কনস্টান্টিনোপল বিজয় করবেন। অতঃপর তাঁরা নিজেদের তলোয়ার যাইতুন বৃক্ষে লটকিয়ে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ ভাগ করতে থাকবে। এমতাবস্থায় তাঁদের মধ্যে শয়তান উচ্চৈঃস্বরে বলতে থাকবে, দাজ্জাল তোমাদের পেছনে তোমাদের পরিবার-পরিজনের মধ্যে চলে এসেছে। এ কথা শুনে মুসলিমরা সেখান থেকে বের হবে। অথচ এ ছিল মিথ্যা সংবাদ। তাঁরা যখন সিরিয়া পৌঁছবে তখন দাজ্জালের আগমন ঘটবে। যখন মুসলিম বাহিনী দাজ্জালের সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন এবং সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান হতে শুরু করা মাত্রই তৎক্ষণাৎ ছালাতের উদ্দেশ্যে মুয়াযযিন কর্তৃক ইক্বামত দেয়া হবে এবং এ মুহূর্তে ঈসা ইবনু মারইয়াম (আলাইহিস সালাম) আকাশ থেকে দামিশক্বের জুমু‘আহ মসজিদের মিনারায় অবতরণ করবেন এবং মুসলিমদের ইমামতি করে ছালাত আদায় করাবেন। আল্লাহর শত্রু দাজ্জাল তাঁকে দেখা মাত্রই এমনভাবে বিগলিত হয়ে যাবে যেমনভাব লবণ পানিতে মিশে যায়। যদি ঈসা (আলাইহিস সালাম) তাকে এমনিই ছেড়ে দেন তবে সে নিজে নিজেই বিগলিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে। অবশ্য আল্লাহ তা‘আলা ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর হাতে তাকে হত্যা করবেন এবং রক্তমাখা সে বর্শাটি তিনি লোকেদের সকলকেই দেখাবেন’।[১৬]
আমরা ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি যে, আখিরী যামানায় মুসলিমদের সমাবেশস্থল, সেনানিবাস, শিবির অথবা নেতৃত্ব দেয়ার জায়গা হবে দামিশক্বের ‘গূত্বা’ শহর। যখন মুসলিমরা তাদের নিজস্ব এলাকায় ফিরে আসবেন এবং ছালাত আদায় করার জন্য সারিবদ্ধ হবেন। অতঃপর যখন ইক্বামত দেয়া শুরু হবে তখন দু’টি ফিরিশতার ডানায় হাত রেখে পূর্ব দামিশক্বের সাদা, শুভ্র, উজ্জ্বল মিনারায় অবতরণ করবেন। উজ্জ্বল মিনারটি এখন বিদ্যমান, সেটি দামিশক্ব শহরের উমাইয়্যাহ্ মসজিদের কোন একটি মিনার। ঈসা (আলাইহিস সালাম) এসে তাদের ইমামতী করবেন। যখন আল্লাহর শত্রু দাজ্জাল তাঁকে দেখবেন তখন লবণের মত বিগলিত হয়ে যাবে, যখন দাজ্জাল ইসফাহানের সত্তর হাজার ইয়াহুদীকে সঙ্গে নিয়ে আসবে, এটি পারস্যের প্রসিদ্ধ একটি শহর যা বর্তমানে বিদ্যমান। দাজ্জাল এবং তার সঙ্গী ইহুদীরা ঈসা (আলাইহিস সালাম) এবং মুসলিমদেরকে অবরোধ করবে, কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদের সাহায্য করবেন। সুতরাং তারা শহরটি বিজয় করবে এবং দাজ্জাল এবং তার সঙ্গীদের উপর আক্রমণ করবে। ফলস্বরূপ মুসলিম এবং দাজ্জালের সঙ্গী ইয়াহুদীদের মধ্যে মহাযুদ্ধ সংঘটিত হবে। যে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّى يُقَاتِلَ الْمُسْلِمُوْنَ الْيَهُوْدَ فَيَقْتُلُهُمُ الْمُسْلِمُوْنَ حَتَّى يَخْتَبِئَ الْيَهُوْدِيُّ مِنْ وَرَاءِ الْحَجَرِ وَالشَّجَرِ فَيَقُوْلُ الْحَجَرُ أَوِ الشَّجَرُ يَا مُسْلِمُ يَا عَبْدَ اللهِ هَذَا يَهُوْدِيٌّ خَلْفِي فَتَعَالَ فَاقْتُلْهُ. إِلَّا الْغَرْقَدَ فَإِنَّهُ مِنْ شَجَرِ الْيَهُودِ.
‘ততক্ষণ পর্যন্ত ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত মুসলিমদের সঙ্গে ইয়াহুদী সম্প্রদায়ের যুদ্ধ না হবে। মুসলিমগণ তাদেরকে ব্যাপকভাবে হত্যা করবে। ফলে তারা পাথর বা গাছের পিছনে লুকিয়ে থাকবে। তখন পাথর বা গাছ বলবে, হে মুসলিম! হে আল্লাহর বান্দা! এই তো ইয়াহুদী আমার পিছনে লুকিয়ে আছে। এসো, তাকে হত্যা কর। কিন্তু ‘গারক্বাদ’ নামক গাছ দেখিয়ে দিবে না। কারণ এটা হচ্ছে ইয়াহুদীদের সহায়তাকারী গাছ’।[১৭] কাঁটাযুক্ত ‘গারক্বাদ’ বৃক্ষটি বাইতুল মাক্বদিসে খুবই পরিচিত একটি বৃক্ষ। বর্তমানে ফিলিস্তীনে এই বৃক্ষ ব্যাপকহারে রোপণ করা হচ্ছে। উপরউক্ত হাদীছের আলোকে হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ইয়াহুদীদের সঙ্গে মহাযুদ্ধ ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর অবতরণ এবং দাজ্জালের আগমনের পর সংঘটিত হবে।[১৮]
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
* মুর্শিদাবাদ, ভারত।
[১]. আবূ দাঊদ, হা/৪২৯৮; ছহীহুল জামি‘, হা/২১১৬।
[২]. আবূ দাঊদ, হা/৪২৯৪; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামি‘, হা/৪০৯৬।
[৩]. ‘আওনুল মা‘বূদ শারহু সুনানি আবি দাঊদ (ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) কৃত আবূ দাঊদ টীকাসহ), ১১শ খণ্ড, পৃ. ২৭০।
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/১৮৭৪; ছহীহ মুসলিম, হা/১৩৮৯।
[৫]. ছহীহ বুখারী, হা/১৮৮১,৭১২৪, ৭১৩৪, ৭৪৭৩; ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৪৩।
[৬]. আন-নিহায়া ফিল ফিতানি ওয়াল মালাহিম, ১ম খণ্ড, পৃ. ৮৩।
[৭]. আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৫৭৯, ২৭৪৩; শু‘আইব আল-আরনাঊত্ব (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন, তাখরীজুল মুসনাদ, হা/৭৯১০, ৮১১৪, ৮৩৫১, ৮৫১৯; তাখরীজু ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬৮২৭; ছহীহুল মুসনাদ, হা/১৩৪৬; মুসনাদ আহমাদ, ১৫শ খণ্ড, পৃ. ৩৫ ও ২৪৫; ঊমদাতুল ক্বারী, ৯ম খণ্ড, পৃ ৩৩৩।
[৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৩৮০।
[৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৮৯৭; ছহীহুল জামি‘, হা/৭৪৩৩; আল-মুসতাদরাক লিল হাকিম, হা/৮৪৮৬; মিশকাত, হা/৫৪২১; তাহযীবুল কামাল ফী আসমাইর রিজাল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১১৯৪।
[১০]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৮৯৭; ছহীহুল জামি‘, হা/৭৪৩৩; আল-মুসতাদরাক লিল হাকিম, হা/৮৪৮৬; মিশকাত, হা/৫৪২১।
[১১]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯২০; ছহীহুল জামি, হা/৩৬৩৮; আল-মুসতাদরাক লিল হাকিম, হা/৮৪৬৯; মিশকাত, হা/৫৪২৩।
[১২]. শারহুন নববী ‘আলা মুসলিম, ১৮শ খণ্ড, পৃ. ৪৫।
[১৩]. ফাইযুল ক্বাদীর, ৮ম খণ্ড, পৃ. ২২।
[১৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯০০; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫৪১; ছহীহুল জামি‘, হা/২৯৬৯; মিশকাত, হা/৫৪১৯; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬৬৭২; আল-মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্বাবারানী, হা/১৮০১; আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, হা/৩৬৯১।
[১৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৭৬৭; আবূ দাঊদ, হা/৩০৩০; তিরমিযী, হা/১৬০৬, ১৬০৭।
[১৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৮৯৭; ছহীহুল জামি‘, হা/৭৪৩৩; আল-মুসতাদরাক লিল হাকিম, হা/৮৪৮৬, মিশকাত, হা/৫৪২১।
[১৭]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯২২।
[১৮]. ফাৎহুল বারী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৬১০।
প্রসঙ্গসমূহ »:
বিবিধ