মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন

বিদ‘আত পরিচিতি

-মুহাম্মাদ বযলুর রহমান*


(২য় কিস্তি)

৪). ইমাম নববী (৬৩১-৬৭৬ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, اَلْبِدْعَة كُلّ شَيْء عُمِلَ عَلَى غَيْر مِثَال سَابِق ‘কোন পূর্ব নমুনার অনুসরণ করা ছাড়া যে কোন কৃত আমলকেই বিদ‘আত বলা হয়’।[১]

৫). ইমাম ইবনু কাছীর (৭০১-৭৭৪ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, মুজাহিদ ও সুদ্দী বলেন, سميت البدعة بدعة لأنه لا نظير لها فيما سلف বিদ‘আত তথা নব আবিষ্কারকে এজন্য বিদ‘আত নামে নামকরণ করা হয়েছে যে, কেননা এর কোন পূর্ব নমুনা নেই’।[২]

৬). ইবনু হাজার ‘আসক্বালানী (৭৭৩-৮৫২ হি./১৩৭২-১৪৪৯ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, الْبِدْعَةُ أَصْلُهَا مَا أُحْدِثَ عَلَى غَيْرِ مِثَالٍ سَابِقٍ ‘বিদ‘আতের মূল অর্থ হল- কোন পূর্ব নমুনার অনুসরণ ব্যতীত যে কোন নতুন উদ্ভাবিত বিষয়’।[৩]

৭). ‘আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব’ গ্রন্থকার ইবরাহীম মুছত্বফা (১৮৮৮-১৯৬২ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, أنشأه على غير مثال سابق ‘পূর্ব কোন দৃষ্টান্ত ছাড়াই নতুন করে কিছু সৃষ্টি করা’। তিনি আরো বলেন, البدعة ما استحدث في الدين وغيره ‘বিদ‘আত হল- দ্বীন ও অন্য কোন বিষয়ের নতুন সৃষ্ট বিষয়’।[৪]  ইবনু সিক্কীত বলেন, البِدْعَةُ : كُلُّ مُحْدَثَةٍ  ‘বিদ‘আত হল প্রত্যেক নতুন সৃষ্টি’।[৫]

৮). শাইখ মুহাম্মাদ ছালিহ আল-‘উছায়মীন (১৩৪৭-১৪২১ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, الشيء المستحدث ‘নতুন কিছু সৃষ্টি’।[৬]

সুধী পাঠক! বিশ্বের বিখ্যাত সব ‘আরবী অভিধানবিদ ও বিদ্বানগণের নিকটে বিদ‘আতের ভাষাগত অর্থ হল- নতুন কিছু সৃষ্টি, যার কোন পূর্ব দৃষ্টান্ত ছিল না। এই অর্থে প্রত্যেক নতুন সৃষ্টিকে বিদ‘আত বলা যায়। তাই আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির নিত্য-নতুন আবিষ্কার যেমন, বাস, ট্রাক, ট্রেন, বিমান, ঘড়ি, চশমা, মোবাইল, কম্পিউটার ইত্যাদি শাব্দিক অর্থে বিদ‘আত। কেননা এগুলোর উদ্ভাবনের পূর্ব কোন দৃষ্টান্ত ছিল না। কিন্তু ইসলামী শরী‘আতের দৃষ্টিতে এগুলো বিদ‘আত, না-কি বিদ‘আত নয়- এ ব্যাপারে দু’টি মত পরিলক্ষিত হয়। এক দলের মতে, সকল বিদ‘আত মন্দ নয়; বরং কিছু বিদ‘আত ভাল আর কিছু বিদ‘আত মন্দ। এমনকি তারা বিদ‘আতকে ওয়াজিব, মুস্তাহাব, হারাম, মাকরূহ প্রভৃতি ভাগেও বিভক্ত করে থাকে। অপর দলের মতে, বিদ‘আত হল- সুন্নাতের বিপরীত এবং তা কেবল মন্দ বিষয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। তাই বিদ‘আতের মধ্যে ভাল-মন্দের বিভাজন সঠিক নয়, বরং সবটাই ভ্রষ্ট’।[৭] সুতরাং এটি বিশ্লেষণের দাবী রাখে। মূলত বিদ‘আত সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে এটি সমাজে টিকে আছে। বিষয়টি জানতে হলে ‘বিদ‘আত’-এর শারঈ অর্থ জানা আবশ্যক।

বিদ‘আতের শারঈ সংজ্ঞা

বিদ‘আত হল- এমন আমল, যা শরী‘আত মনে করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হয়, যার প্রমাণে রাসূলুল্লাহ  (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে কোন ছহীহ দলীল নেই। নি¤েœ বিদ‘আতের প্রামাণ্য সংজ্ঞা উপস্থাপন করা হল,

১). ইমাম নববী (৬৩১-৬৭৬ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, البِدعة في الشرع هي إحداث ما لم يكن في عهد رسول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.  শরী‘আতের মধ্যে বিদ‘আত এমন নব আবিষ্কার, যা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ছিল না’।[৮]

২). শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া (৬৬১-৭২৮ হি./১২৬৩-১৩২৮ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

اَلْبِدْعَةُ مَا خَالَفَتِ الْكِتَابَ وَالسُّنَّةَ أَوْ إجْمَاعَ سَلَفِ الْأُمَّةِ مِنْ الِاعْتِقَادَاتِ وَالْعِبَادَاتِ كَأَقْوَالِ الْخَوَارِجِ وَالرَّوَافِضِ وَالْقَدَرِيَّةِ وَالْجَهْمِيَّةِ.

‘বিদ‘আত হল- ইবাদত ও আক্বীদার মধ্য থেকে যা কিতাব, সুন্নাহ এবং সালাফদের ইজমার বিপরীত। যেমন খাওয়ারিজ, রাওয়াফিয, ক্বাদারিয়া ও জাহমিয়্যাহদের কথাসমূহ’।[৯] অন্যত্র তিনি বলেন,

إن البدعة ما لم يشرعه الله من الدين فكل من دان بشئ لم يشرعه الله فذاك بدعة وإن كان متأولا فيه.

‘বিদ‘আত হল- আল্লাহ তা‘আলা দ্বীনের মধ্যে যা বিধিবদ্ধ করেননি। সুতরাং যে সকল কাজ আল্লাহ তা‘আলা বিধিবদ্ধ করেননি তার অনুগত হওয়ায় বিদ‘আত। যদিও তা ব্যাখ্যা সাপেক্ষে হয়’।[১০] তিনি আরো বলেন,

أَنَّ الْبِدْعَةَ فِي الدِّينِ هِيَ مَا لَمْ يَشْرَعْهُ اللهُ وَرَسُولُهُ وَهُوَ مَا لَمْ يَأْمُرْ بِهِ أَمْرَ إيجَابٍ وَلَا اسْتِحْبَابٍ.

‘নিশ্চয় বিদ‘আত হল- দ্বীনের মধ্যে এমন কিছুর আবিষ্কার, যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শরী‘আত হিসাবে দেননি এবং যার গ্রহণ ও বৈধতার ব্যাপারে কোন নির্দেশনা প্রদান করেননি’।[১১]

৩). ‘আল-ক্বামূসুল মুহীত্ব’ গ্রন্থ প্রণেতা ফীরূযাবাদী (৭২৯-৮১৭ হি./১৩২৯-১৪১৫ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

الحَدَثُ فِي الدِّيْنِ بَعْدَ الْاِكْمَالِ أَوْ مَا اسْتُحْدِثَ بَعْدَ النَّبيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْأَهْوَاءِ وَالْأَعْمالِ.

‘বিদ‘আত হল- পরিপূর্ণ হওয়ার পর দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু সৃষ্টি করা অথবা নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরবর্তী সময়ে প্রবৃত্তি ও আমলসমূহের মধ্যে যেগুলো নতুন করে প্রবর্তন করা হয়’।[১২]

৪). ‘আত-তা‘রীফাত’ গ্রন্থকার জুরজানী (৭৪০-৮১৬ হি./১৩৩৯-১৪১৩ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

البدعة هي الفعلة المخالفة للسنة سميت البدعة لأن قائلها ابتدعها من غير مقال إمام وهي الأمر المحدث الذي لم يكن عليه الصحابة والتابعون ولم يكن مما اقتضاه الدليل الشرعي.

‘বিদ‘আত সেই কাজকে বলা হয়, যা সুন্নাতের পরিপন্থী। এটাকে বিদ‘আত নামে নামকরণের কারণ হল- যেহেতু পূর্ব নমুনা ছাড়াই এর প্রবর্তক এটা প্রবর্তন করে। তাই এটা নব আবিষ্কার। যার উপর ছাহাবায়ে কেরাম ও তাবেঈগণ ছিলেন না এবং এর পক্ষে শার‘ঈ কোন দলীলও নেই’।[১৩]

৫). হাফিয বদরুদ্দীন আইনী (৭৬২-৮৫৫ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, البدعة فِي الأَصْل أَحْدَاث أَمر لم يكن فِي زمن رَسُول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. ‘বিদ‘আত হল- এমন নতুন কিছু সৃষ্টি করা, যা আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ছিল না’।[১৪]

৬). ইবনু হাজার ‘আসকালানী (৭৭৩-৮৫২ হি./১৩৭২-১৪৪৯ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ما أحدث على خلاف الحق المتلقي عن رسول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. ‘বিদ‘আত হল- রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে পাওয়া সুবিদিত বিষয়দির বিপরীতে নতুনভাবে উদ্ভাবনকৃত বিষয়সমূহের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা’।[১৫]

৭). ইমাম আবূ ইসহাক্ব আশ-শাতিবী (মৃ. ৭৯০ হি./১৩৮৮ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

عبارة عن طريقة في الدين مخترعة تضاهي الشرعية يقصد بالسلوك عليها المبالغة في التعبد لله سبحانه.

‘বিদ‘আত হল- দ্বীন ইসলামের মধ্যে এমন কর্মনীতি চালু করা, যা শরী‘আতের বিপরীত এবং যা করে আল্লাহর ইবাদতের ব্যাপারে আতিশয্য ও বাড়াবাড়ি করা হয়’।[১৬]

অন্যত্র তিনি বলেন,

هي الفِعلة المخالفة للسنة سميت البدعة لأن قائلها ابتدعها من غير مقال إمام وهي الأمر المحدث الذي لم يكن عليه الصحابة والتابعون ولم يكن مما اقتضاه الدليل الشرعي.

‘বিদ‘আত সেই কাজকে বলা হয়, যা সুন্নাতের পরিপন্থী। এটাকে বিদ‘আত নামে নামকরণের কারণ হল- যেহেতু পূর্ব নমুনা ছাড়াই এর প্রবর্তক এটা প্রবর্তন করে। তাই এটা নব আবিষ্কার। যার উপর ছাহাবায়ে কেরাম ও তাবেঈগণ ছিলেন না এবং এর পক্ষে শার‘ঈ কোন দলীলও নেই’।[১৭]

৮). জালালুদ্দীন আস-সুয়ূত্বী (৮৪৯-৯১১ হি./১৪৪৫-১৫০৫ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

البدعة عبارة عن فعلة تصادم الشريعة بالمخالفة أو توجب التعاطي عليها بزيادة أو نقصان.

‘বিদ‘আত এমন কাজকে বলা হয়, যার মাধ্যমে বিরোধিতার দ্বারা শরী‘আতকে আঘাত করা হয়। অথবা শরী‘আতের কমবেশী করার অভ্যাসকে আবশ্যক করে নেয়া হয়’।[১৮]

৯). ‘মিশকাতুল মাছাবীহ’-এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘মির‘আতুল মাফাতীহ’-এর গ্রন্থ প্রণেতা ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (১৩২৭-১৪১৪ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, البدعة ما أحدث في الدين ما لا أصل له في الشريعة يدل عليه ‘বিদ‘আত হল- যা দ্বীনের মধ্যে নতুন আবিষ্কার; শরী‘আতের দলীল হিসাবে যার কোন অস্তিত্ব নেই’।[১৯]

১০). ইবনু রাজব (৭৩৬-৭৯৫ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

مَا أُحْدِثَ مِمَّا لَا أَصْلَ لَهُ فِي الشَّرِيْعَةِ يَدُلُّ عَلَيْهِ وَأَمَّا مَا كَانَ لَهُ أَصْلٌ مِّنَ الشَّرْعِ يَدُلُّ عَلَيْهِ فَلَيْسَ بِبِدْعَةٍ شَرْعًا وَإٍنْ كَانَ بِدْعَةً لُغَةً.

‘বিদ‘আত দ্বারা ঐ সকল নতুন উদ্ভাবিত কাজ উদ্দেশ্য, যে কাজের ইসলামী শরী‘আতে কোন ভিত্তি নেই। তবে যেসব কাজের শরী‘আতে ভিত্তি আছে সেগুলো বিদ‘আতে শার‘ঈ নয়, যদিও শাব্দিক অর্থে এগুলো বিদ‘আত’।[২০]

১১). ইমাম কুরতুবী (৬০০-৬৭১ হি./১২০৪-১২৭৩ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, مَا لَمْ يُوَافِقْ كِتَابًا أَوْ سُنَّةً أَوْ عَمَلَ الصَّحَابَةِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ ‘যা আল্লাহর কিতাব বা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাহ অথবা ছাহাবায়ে কেরামের ‘আমলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’।[২১]

১২). মুহাম্মাদ ইবনু ছালেহ আল-উছায়মীন (১৩৪৭-১৪২১ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

ما أحدث في الدين على خلاف ما كان عليه النبي صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وأصحابه من عقيدة أو عمل.

‘আক্বীদা ও আমলের ক্ষেত্রে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ছাহাবীগণ (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-এর বিপরীতে দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছুর আবিষ্কার করাকে বিদ‘আত বলা হয়’।[২২]

১৩). আধুনিক যুগের প্রখ্যাত অভিধানবিদ ‘মু‘জামু লুগাতিল ফুক্বাহা’-এর গ্রন্থকার ড. মুহাম্মাদ রাওয়াস কিল‘আহজী (১৯৩৪-২০১৪ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

ما لم يرد عن الله سبحانه ولا عن رسوله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ولا عن أحد من فقهاء الصحابة.

‘বিদ‘আত হল- যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার নিকট থেকে, তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট থেকে এবং ছাহাবীগণের মধ্যে ফক্বীহদের কারো নিকট থেকে বর্ণিত হয়নি’।[২৩]

সুধী পাঠক! বিদ‘আতের উল্লেখিত সংজ্ঞাগুলো কোনটা স্পষ্ট আবার কোনটা অস্পষ্ট। সুতরাং সেগুলো বিশ্লেষণের দাবী রাখে।

বিদ‘আতের শার‘ঈ সংজ্ঞা বিশ্লেষণ

উপরিউক্ত বিদ‘আতের সংজ্ঞাসমূহ গভীরভাবে লক্ষ্য করলে স্পষ্ট হবে যে, ঐ জিনিসগুলোকে বিদ‘আত বলা হয়, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), ছাহাবীগণ (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) এবং তাবি‘ঈগণ (রাহিমাহুমুল্লাহ)-এর যুগে যে বিধানগুলোর কোন অস্তিত্ব ছিল না। বর্ণিত বিদ‘আতের সংজ্ঞাসমূহে দেখা যাচ্ছে যে, কেউ বলেছেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে যা ছিল না’, কেউ বলেছেন, ‘ছাহাবী বা ফক্বীহ ছাহাবীগণের যুগে যা ছিল না’, আবার কেউ বলেছেন, ‘তাবি‘ঈগণের যুগে যা ছিল না’। বাহ্যত দৃষ্টিতে সংজ্ঞাগুলোর মাঝে পার্থক্য দৃষ্টিগোচর হলেও প্রকৃতপক্ষে পরস্পরের মাঝে কোন বিরোধ নেই। কেননা-

প্রথম সংজ্ঞায় প্রখ্যাত বিদ্বান ইমাম নববী (৬৩১-৬৭৬ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) শরী‘আতের মধ্যে এমন সব নব আবিষ্কারকে বিদ‘আত বলেছেন, যা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ছিল না। অর্থাৎ তিনি কেবল রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগের সাথে সম্পর্কিত করেছেন, যা তিনি করেননি, করতে নির্দেশ দেননি কিংবা কোন রকম মৌন সম্মতিও দেননি, এমন প্রত্যেক নব আবিষ্কার বিষয়ই হল বিদ‘আত। তিনি দলীল হিসাবে নি¤েœাক্ত হাদীছটি উপস্থাপন করেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

إِنَّ أَصْدَقَ الْحَدِيْثِ كِتَابُ اللهِ وَأَحْسَنَ الْهَدْىِ هَدْىُ مُحَمَّدٍ وَشَرَّ الأُمُوْرِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ وَكُلَّ ضَلَالَةٍ فِى النَّارِ.

‘নিশ্চয় সবচেয়ে সত্য বাণী হল আল্লাহর কিতাব আর সর্বোত্তম হেদায়াত হল মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হেদায়াত। নব আবিষ্কার বিষয় সবই মন্দ। প্রত্যেক নতুন আবিষ্কারই বিদ‘আত। প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্ট এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টই জাহান্নামী’।[২৪] সুতরাং এমন কিছু বিষয়, যা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হয়নি এবং যা তাঁর যুগে ছিল না, তাই-ই বিদ‘আত। যেমন, শবেবরাত, ঈদে মীলাদুন্নবী, শবে মি‘রাজ ইত্যাদি।

দ্বিতীয় সংজ্ঞায় শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া (৬৬১-৭২৮ হি./১২৬৩-১৩২৮ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) কুরআন, সুন্নাহ ও সালাফগণের ইজমা তথা ছাহাবীগণের ইজমার বিপরীতে ‘আক্বীদা ও ‘ইবাদতের মধ্যে নবাবিষ্কৃত প্রত্যেক বিষয়কে বিদ‘আত বলে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন ‘আক্বীদার ক্ষেত্রে খারিজী, রাফিযী, ক্বাদারিয়া এবং জাহমিয়ারা বিভিন্ন ভ্রান্ত বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। অনুরূপভাবে ‘আমলের ক্ষেত্রে ছালাত, ছাওম, হজ্জ ও যাকাত কেন্দ্রিক ‘আমলের বিপর্যয়, যিকির-আযকার, কুরআন তিলাওয়াতে বিদ‘আতের ছড়াছড়ি, মসজিদে নাচ-গানের মাধ্যমে ‘ইবাদত করা, দাড়ি কামানো ইত্যাদি। এগুলো বিদ‘আতের প্রকারসমূহের অন্তর্ভুক্ত। কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধীদের একটি দল এভাবে তাদের ‘ইবাদত করে থাকে’।[২৫] অতএব এখানে তিনি বিদ‘আত বলতে কুরআন ও সুন্নাহ পরিপন্থী বিষয়কে এবং সাথে সাহাবীগণের ইজমার বিপরীত কাজকেও অন্তর্ভুক্ত করেছেন। উল্লেখ্য যে, পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম বিদ‘আত হল খারিজী বিদ‘আত। আর রাফিযী, ক্বাদারিয়া, জাহমিয়া ও শী‘আ সকলেই আহলে বিদ‘আতের অন্তর্ভুক্ত।[২৬]

তৃতীয় সংজ্ঞায় ‘আল-ক্বামূসুল মুহীত’ গ্রন্থ প্রণেতা ‘আল্লামা ফীরূযাবাদী (৭২৯-৮১৭ হি./১৩২৯-১৪১৫ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) দ্বীন পরিপূর্ণ হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরবর্তী সময়ে নতুনরূপে প্রবর্তিত সকল বিষয়কে ‘বিদ‘আত’ বলে চিহ্নিত করেছেন। অর্থাৎ তিনি ছাহাবীগণের যুগের শরী‘আত পরিপন্থী বিষয়গুলোকেও বিদ‘আতের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

চতুর্থ সংজ্ঞায় ‘আল্লামা জুরজানী (৭৪০-৮১৬ হি./১৩৩৯-১৪১৩ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) গোটা সুন্নাতের কোন একটির পরিপন্থী বিষয়কে বিদ‘আত বলেছেন। অর্থাৎ তিনি বিদ‘আতকে সুন্নাতের সরাসরি বিপরীত ও তার সাথে সাংঘর্ষিক বলতে চেয়েছেন। অতঃপর বিদ‘আতকে ছাহাবী ও তাবি‘ঈগণের বিপরীত কাজ করা পর্যন্ত সীমায়িত করেছেন। তবে এগারতম সংজ্ঞায় ইমাম কুরতুবী (৬০০-৬৭১ হি./১২০৪-১২৭৩ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) ছাহাবীদের যুগ পর্যন্ত সীমায়িত করেছেন।

পঞ্চম ও নবম সংজ্ঞা প্রথম সংজ্ঞার ন্যায়। অতঃপর ষষ্ঠ সংজ্ঞায় ইবনু হাজার ‘আসকালানী (৭৭৩-৮৫২ হি./১৩৭২-১৪৪৯ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) এমন সব বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস করাকে বিদ‘আত বলেছেন, যা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক নির্দেশিত নয়।

আর সপ্তম সংজ্ঞায় ইমাম শাতিবী (মৃ. ৭৯০ হি./১৩৮৮ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) শরী‘আতের বিপরীতে নতুনরূপে যে সমস্ত কর্মরীতি প্রচলন করা হয়, যেগুলোর মাধ্যমে ‘ইবাদতের ক্ষেত্রে যেভাবে আতিশয্য ও বাড়াবাড়ি করা হয় সেগুলোকে বিদ‘আত বলে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন, ‘ইবাদতের জন্য বিবাহ না করা, সারা বছর ছিয়াম রাখা, রাত্রি বেলায় না ঘুমিয়ে ‘ইবাদত করা, পরিবার-পরিজন বাদ দিয়ে বৈরাগ্য জীবন-যাপন করা ইত্যাদি।

অষ্টম সংজ্ঞায় জালালুদ্দীন আস-সুয়ূত্বী (৮৪৯-৯১১ হি./১৪৪৫-১৫০৫ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) এমন প্রত্যেক কাজকে বিদ‘আত বলেছেন, যেগুলোর মূল উদ্দেশ্য হল ইসলামের বিরোধিতা করা ও শরী‘আতকে আঘাত করা। যেমন কুরআন ও হাদীছের মনগড়া ব্যাখ্যা করা, পীর, বুযুর্গানে দীন, ইমাম, নেতা প্রমুখ কর্তৃক প্রণীত বিভিন্ন বানোয়াট ও ভিত্তিহীন ধর্মাচার ও ‘ইবাদত-বন্দেগী, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ, কটুক্তি ও বেয়াদবী করা, ধর্মের নামে মাযার প্রতিষ্ঠা করা, সেখানে বার্ষিক ওরস করা এবং সেখানে সকলে মিলে গাজা-মদ-ইয়াবায় মত্ত হওয়া ইত্যাদি।

অতঃপর দশম সংজ্ঞায় ইবনু রাজব (৭৩৬-৭৯৫ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) যেমন শরী‘আতের মধ্যকার ভিত্তিহীন বিষয়কে যেমন বিদ‘আত বলেছেন, তেমনি এমন নতুন বিষয়, যার শারঈ ভিত্তি রয়েছে, যদিও তা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-যুগে ছিল না, সেগুলোকে শারঈ বিদ‘আত বলেননি। যেমন, কুরআন সংকলন, কুরআনে হরকত প্রদান, হাদীছ সংকলন, কুরআন-হাদীছের দারস-তাদরীসের পদ্ধতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ইত্যাদি।

আর বারতম সংজ্ঞায় মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছাইমীন (১৩৪৭-১৪২১ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) নবী কারীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ছাহাবীগণের বিপরীতে ‘আক্বীদা ও ‘আমলের ক্ষেত্রে নতুন কোন কিছুকে আবিষ্কার করাকে বিদ‘আত বলে আখ্যায়িত করেছেন। অর্থাৎ তিনি যুগ হিসাবে রাসূলের পরে ছাহাবীদের যুগ এবং উদ্ভাবিত বিষয়গুলোর মধ্যে ‘আক্বীদা ও আমলকে সীমায়িত করেছেন। অন্যদিকে তেরতম সংজ্ঞায় ড. মুহাম্মাদ রাওয়াস কিল‘আহজী (১৯৩৪-২০১৪ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) আল্লাহ তা‘আলা, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পর কেবল ফক্বীহ ছাহাবীগণের নিকট থেকে যা আসেনি তথা বর্ণিত হয়নি তাকে বিদ‘আত বলেছেন। কিন্তু এখানে শুধু ফক্বীহ ছাহাবীদেরকে নির্দিষ্ট করা ঠিক হয়নি। কারণ সকল ছাহাবী ছিলেন ন্যায়ে পরিপূর্ণ ও পূর্ণ আমানতদার।[২৭]

সুধী পাঠক! উক্ত বিশ্লেষণে প্রমাণিত হল যে, বিদ‘আতের উল্লিখিত শারঈ সংজ্ঞায় একটি অপরটির সাথে কোন রকম দ্বন্দ্ব নেই। বরং সবটাই পরস্পর পরিপূরক।

এছাড়া রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে কোন বিধান এবং ‘আমল বা ‘ইবাদত থাকা কিংবা না থাকার উদ্দেশ্য হল- শার‘ঈভাবে থাকা ও না থাকা। বাস্তবে থাকা ও না থাকা এখানে উদ্দেশ্য নয়। আর কোন কিছু শার‘ঈভাবে থাকার উদ্দেশ্য হল সেটা তার বৈধতার প্রমাণ। আর না থাকা অবৈধতার প্রমাণ। অতএব সহজ কথা হল- নবাবিষ্কৃত ধর্মীয় কোন বিধান কিংবা ‘আমল বা ‘ইবাদতের স্বপক্ষে যখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে অর্থাৎ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের কোন প্রমাণ পাওয়া না যায়, তখন সেটাই শারঈ বিদ‘আত হবে। তবে যে সমস্ত বিষয়ের ব্যাপারে কুরআন ও ছহীহ হাদীছে প্রমাণ পাওয়া যাবে, সেগুলো বিদ‘আতে শার‘ঈ তথা ভ্রষ্ট বিদ‘আত নয়। যদিও প্রকৃতপক্ষে সেগুলো রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ছিল না বরং তাঁর পরবর্তী সময়ে অস্তিত্ব লাভ করেছে। যেমন, আবূ বকর ও ‘উছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) কর্তৃক কুরআন একত্রিতকরণ, ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় নীতিমালার প্রয়োজনীয় পদ্ধতির উদ্ভাবন, হাদীছের সংকলন ও লিপিবদ্ধকরণ ইত্যাদি।

(ইনশাআল্লাহ চলবে)  

 

 

 



* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

[১]. আবূ যাকারিয়া মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া ইবনু শারফ আন-নববী, আল-মিনহাজু শারহি ছহীহিল মুসলিম, ৬ষ্ঠ খ- (বৈরূত : দারু ইহইয়াইত তুরাছিল ‘আরাবী, ২য় সংস্করণ, ১৩৯২ হি.), পৃ. ১৫৪। 

[২]. আবুল ফিদা ইসমা‘ঈল ইবনু কাছীর আদ-দিমাস্কী, তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ৩য় খ- (দারু তাইয়েবা, ২য় সংস্করণ, ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.), পৃ. ৩০৮। 

[৩]. আহমাদ ইবনু ‘আলী ইবনু হাজার আল-‘আসকালানী, ফাৎহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ৪র্থ খ- (বৈরূত : দারুল মা‘আরিফাহ, ১৩৭৯ হি.), পৃ. ২৫৩। 

[৪]. ইবরাহীম মুছত্বফা ও তার সাথীবৃন্দ, আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব, ১ম খ- (দারুদ দাওয়াহ, তা.বি.), পৃ. ৪৩। 

[৫]. মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ‘আব্দির রাযযাক আল-হাসীনী, তাজুল ‘ঊরূস মিন জাওয়াহিরিল ক্বামূস, ২০ তম খ- (দারুল হিদায়াহ, তা.বি.), পৃ. ৩০৯। 

[৬]. মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-‘উছাইমীন, মাজমূ‘ঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, তাহক্বীক্ব : ফাহাদ ইবনু নাছির ইবনু ইবরাহীম আস-সুলায়মান, ৫ম খ- (দারুল ওয়াত্বান, শেষ সংস্করণ, ১৪১৩ হি.), পৃ. ২৩। 

[৭]. শাইখ ‘আলী মাহমূয, আল-ইবদা‘ ফী মুযাররিল ইবতিদা‘ (রিয়াদ : মাকতাবাতুর রুশদ, ১ম সংস্করণ ২১৪২১ হি./২০০০ খ্রি.), পৃ. ৪৪-৭২। 

[৮]. আবূ যাকারিয়া মুহিউদ্দীন ইবনু শারফ আন-নববী, তাহযীবুল আসমা ওয়াল লুগাত, ৩য় খ- (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ২২। 

[৯]. আহমাদ ইবনু ‘আব্দুল হালীম ইবনু তাইমিয়্যাহ, মাজমূ‘ঊল ফাতাওয়া, তাহক্বীক্ব : আনওয়ারুল বায ও আমিরুল জাযার, ১৮তম খ- (দারুল ওয়াফা, ৩য় সংস্করণ, ১৪২৬ হি./২০০৫ খ্রি.), পৃ. ৩৪৬। 

[১০]. আহমাদ ইবনু আব্দুল হালীম ইবনু তাইমিয়্যাহ, আল-ইস্তিক্বামাহ, তাহক্বীক্ব : ড. মুহাম্মাদ রাশাদ সালিম, ১ম খ- (মদীনা, সঊদী আরব : জামি‘আতুল ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু সা‘ঊদ, ১ম সংস্করণ, ১৪০৪ হি.), পৃ. ৪২।

[১১]. ইবনু তাইমিয়াহ, মাজমূ‘ঊল ফাতাওয়া, ৪র্থ খ-, পৃ. ১০৭-১০৮। 

[১২]. মুহাম্মাদ ইবনু ই‘য়াকূব আল-ফীরূযাবাদী, আল-ক্বামূসুল মুহীত্ব, পৃ. ৯০৬; তাজুল ঊরূস মিন জাওয়াহিরিল ক্বামূস, ২০ তম খ-, পৃ. ৩০৯। 

[১৩]. ‘আলী ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলী আল-জুরজানী, আত-তা‘রীফাত, ইবরাহীম আল-আবইয়ারী (বৈরূত : দারুল কিতাবিল ‘আরাবী, ১ম সংস্করণ, ১৪০৫ হি.), পৃ. ৬২। 

[১৪]. আবূ মুহাম্মাদ মাহমূদ ইবনু আহমাদ বদরুদ্দীন ‘আইনী, ‘ঊমদাতুল ক্বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ১১ তম খ- (বৈরূত : দারু ইহইয়াইত তুরাছিল ‘আরাবী, তা.বি.), পৃ. ১২৬। 

[১৫]. আব্দুর রঊফ মুহাম্মাদ ওছমান, মুহাব্বাতুর রাসূলি বাইনাল ইত্তিবা‘ ওয়াল ইবতিদা‘ (রিয়াদ : রিয়াসাতু ইদারাতিল বুহূছিল ‘ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা ওয়াদ দা‘ওয়াহ ওয়াল ইরশাদ, ১ম সংস্করণ. ১৪১৪ হি.), পৃ. ২৮৮। 

[১৬]. আবূ ইসহাক্ব আশ-শাতিবী, আল-ই‘তিছাম (মিসর : আল-মাকতাবাতুত তিজারিয়াতিল কুবরা, তা.বি.), পৃ. ৩৭। 

[১৭]. ড. ওয়াসীম ফাৎহুল্লাহ, আল-বিদ‘ঊ ওয়া আছরুহাস সাইয়ি ফিল উম্মাহ, পৃ. ৩; ‘আলী ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলী আল-জুরজানী, আত-তা‘রীফাত (বৈরূত : দারুল কিতাবিল ‘আরাবী, ১ম সংস্করণ ১৪০৫ হি.), পৃ. ৬২। 

[১৮]. জালালুদ্দীন ‘আব্দুর রহমান আস-সুয়ূত্বী, আল-আমরু বিল ইত্তিবা ওয়ান নাহিউ আনিল ইবতিদা‘ (রিয়াদ : দারু ইবনিল ক্বাইয়িম, ১ম সংস্করণ ১৪১০ হি./১৯৯০ থ্রি.), পৃ. ৮১। 

[১৯]. আবুল হাসান ওবায়দুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ ‘আব্দুস সালাম ইবনু হিসামুদ্দীন আর-রহমানী আল-মুবারকপুরী, মির‘আতুল মাফাতীহ শারহু মিশকাতিল মাছাবীহ, ১ম খ- (বানারস, ভারত : ইদারাতুল বুহূছিল ‘ইলমিয়্যাহ ওয়াদ দা‘ওয়াতি ওয়াল ইফতা, ৩য় সংস্করণ, ১৪০৪ হি./১৯৮৪ খ্রি.), পৃ. ২৬৪। 

[২০]. যাইনুদ্দীন ‘আব্দুর রহমান ইবনু আহমাদ ইবনু রাজব আল-হাম্বলী, জামি‘উল ঊলূম ওয়াল হিকাম, ২য় খ- (বৈরূত : মুওয়াস্সাসাতুর রিসালাহ, ৭ম সংস্করণ ১৪২২ হি./২০০১ খ্রি.), পৃ. ১২৭; মুহাম্মাদ শামসুল হক ‘আযীম আবাদী, ‘আওনুল মা‘বূদ শারহু সুনানি আবী দাঊদ, ১২তম খ- (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ২য় সংস্করণ ১৪১৫ হি.), পৃ. ২৩৫; ‘আব্দুর রহমান ইবনু ‘আব্দির রহীম আল-মুবারকপুরী, তুহফাতুল আহওয়াযী বিশারহি জামি‘ঈত তিরমিযী, ৭ম খ- (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, তা.বি), পৃ. ৩৬৬। 

[২১]. আবূ ‘আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ শামসুদ্দীন আল-কুরতুবী, আল-জামি‘ঊ লি আহকামিল কুরআন, ২য় খ- (রিয়াদ : দারু ‘আলিমিল কুতুব, ১৪২৩ হি./২০০৩ খ্রি.), পৃ. ৮৭। 

[২২]. মুহাম্মাদ ইবনু ছালেহ আল-উছায়মীন, মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, ৫ম খ-, পৃ. ২৪। 

[২৩]. মু‘জামু লুগাতিল ফুক্বাহা, পৃ. ৭৮। 

[২৪]. সুনানুন নাসাঈ, হা/১৫৭৮; আত-ত্বাবারানী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/৮৫২১, সনদ ছহীহ।

[২৫]. ইবনু তাইমিয়াহ, মাজমূ‘ঊল ফাতাওয়া, ১৮তম খ-, পৃ. ৩৪৬। 

[২৬]. শামসুদ্দীন মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ আস-সাফ্ফারীনী, লাওয়ামি‘ঊল আনওয়ারিল বাহিয়্যাহ ওয়া সাওয়াতি‘ঊল আসরারিল আসরিয়্যাহ, ১ম খ- (দামিস্ক : মুওয়াস্সাসাতুল খাফিকীন, ২য় সংস্করণ, ১৪০২ হি./১৯৮২ খ্রি.), পৃ. ৭১। 

[২৭]. আবু শামাহ, আল-বা‘ঈস ‘আলা ইনকারিল বিদ‘ঈ, তাহক্বীক্ব : উছমান আহমাদ আম্বার (কায়রো : দারুল হুদা, ১ম সংস্করণ, ১৩৯৮ হি./১৯৭৮ খ্রি,), পৃ. ৫০। 




বিদ‘আত পরিচিতি (২৮তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
তারুণ্যের উপর সন্ত্রাসবাদের হিংস্র ছোবল : প্রতিকারের উপায় (শেষ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
বাউল মতবাদ (শেষ কিস্তি) - গোলাম রহমান
সালাফী মানহাজের মূলনীতিসমূহ (শেষ কিস্তি) - আব্দুল গাফফার মাদানী
প্রচলিত তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের অবস্থান - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
ফাযায়েলে কুরআন (৬ষ্ঠ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
মূর্তিপূজার ইতিহাস - অধ্যাপক মো. আকবার হোসেন
প্রচলিত তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের অবস্থান (৫ম কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
শবেবরাত - আল-ইখলাছ ডেস্ক
প্রচলিত তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের অবস্থান - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
চোগলখোরী করা ও তার পরিণাম - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
সুন্নাতের আলো বিদ‘আতের অন্ধকার (১০ম কিস্তি) - অনুবাদ : হাফীযুর রহমান বিন দিলজার হোসাইন

ফেসবুক পেজ