ইসলামী পুনর্জাগরণের প্রতিবন্ধকতা ও তার সমাধান
- ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
(৪র্থ কিস্তি)
(৪) ইসলামের নামে সামাজিক কুসংস্কারের ব্যাপক প্রচলন
সাধারণ মানুষ সামাজিক কুসংস্কারগুলোকে কল্যাণ ও অকল্যাণের চাবিকাঠি মনে করে থাকে। ফলে কুসংস্কারের উপরই তারা নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। সম্পূর্ণ অন্ধত্বের গোলামিতে আবদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু শিরক ও বিদ‘আতই সমাজে কুসংস্কারের নামে চালু আছে, সে সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষের কোন ধারণা নেই। যখনই আল্লাহ প্রদত্ত বিধানের দিকে মানুষকে আহ্বান করা হয়, তখনই কুসংস্কার বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই কুসংস্কারের পরিণাম সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা অপরিহার্য। ইসলামী পুনর্জাগরণের পথে এটা কঠিন বাধা।
শিরকের পরিচয় ও পরিণাম
‘শিরক’ শব্দের অর্থ অংশীদার স্থাপন করা। আল্লাহর ইবাদতে বা অধিকারে অন্য কোনকিছুকে সংশ্লিষ্ট করাকে ‘শিরক’ বলে। শিরক দু’প্রকার। (ক) শিরকে আকবার বা বড় শিরক, যা মুসলিম ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। তওবা ছাড়া মারা গেলে ঐ ব্যক্তি চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে। (খ) শিরকে আছগার বা ছোট শিরক, যা ব্যভিচার ও মদ পানের চেয়েও জঘন্য পাপ।[১] এ জন্য বান্দার প্রতি আল্লাহর সবচেয়ে বড় অধিকার হল, সে কোনকিছুকে তাঁর সাথে শরীক করবে না। কারণ আল্লাহর অধিকারে একটু ত্রুটি হয়ে গেলে ফলাফল হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।
عَنْ مُعَاذٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنْتُ رِدْفَ النَّبِىِّ ﷺ عَلَى حِمَارٍ يُقَالُ لَهُ عُفَيْرٌ فَقَالَ يَا مُعَاذُ هَلْ تَدْرِىْ حَقَّ اللهِ عَلَى عِبَادِهِ وَمَا حَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللهِ قُلْتُ اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ قَالَ فَإِنَّ حَقَّ اللهِ عَلَى الْعِبَادِ أَنْ يَعْبُدُوْهُ وَلاَ يُشْرِكُوْا بِهِ شَيْئًا وَحَقَّ الْعِبَادِ عَلَى اللهِ أَنْ لاَ يُعَذِّبَ مَنْ لاَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا
‘মু‘আয (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি একদা রাসূল (ﷺ)-এর গাধার পিছনে ছিলাম। তাকে বলা হত ‘উফাইর’। তখন তিনি আমাকে বললেন, হে মু‘আয! তুমি কি জান বান্দার প্রতি আল্লাহর অধিকার কী? আর আল্লাহর প্রতি বান্দার অধিকার কী? আমি বললাম, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই বেশী অবগত। তখন তিনি বললেন, বান্দার প্রতি আল্লাহর অধিকার হল, তারা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কোনকিছুকে শরীক করবে না। আর আল্লাহর প্রতি বান্দার অধিকার হল- যে বান্দা আল্লাহর সাথে শরীক করবে না, তাকে শাস্তি না দেওয়া’।[২]
শিরকের পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। প্রথমতঃ শিরক ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এই পাপ কখনও ক্ষমা হবে না। দ্বিতীয়তঃ সারা জীবনে অর্জিত নেকী ধ্বংস হয়ে যাবে। কারণ শিরক করলে আল্লাহ তা‘আলাকে অপমান করা হয়। শিরকের পরিণাম সম্পর্কে নিম্নে কয়েকটি দলীল পেশ করা হল-
(ক) শিরক সবচেয়ে বড় অপরাধ
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, لَا تُشۡرِکۡ بِاللّٰہِ ؕؔ اِنَّ الشِّرۡکَ لَظُلۡمٌ عَظِیۡمٌ ‘তুমি আল্লাহ সাথে শিরক কর না। নিশ্চয় শিরক মস্ত বড় অপরাধ’ (সূরা লুক্বমান : ১৩)।
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِى بَكْرَةَ عَنْ أَبِيْهِ ﷺ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الْكَبَائِر قُلْنَا بَلَى يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ الْإِشْرَاكُ بِاللهِ وَعُقُوْقُ الْوَالِدَيْنِ وَكَانَ مُتَّكِئًا فَجَلَسَ فَقَالَ أَلاَ وَقَوْلُ الزُّوْرِ وَشَهَادَةُ الزُّوْرِ أَلاَ وَقَوْلُ الزُّوْرِ وَشَهَادَةُ الزُّوْرِ فَمَا زَالَ يَقُوْلُهَا حَتَّى قُلْتُ لاَ يَسْكُتُ
‘আব্দুর রহমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, কাবীরা গোনাহের মধ্যে কোন্টি সর্বাধিক বড়, সে সম্পর্কে আমি কি তোমাদের সংবাদ দিব না? তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! বলুন। তিনি বলেন, আল্লাহর সাথে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্যতা করা। এমতাবস্থায় তিনি ঠেস দিয়ে বসে ছিলেন। অতঃপর সোজা হয়ে বসে বললেন, সাবধান! মিথ্যা কথা বলা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করা। এভাবে তিনি বারবার বলতেই থাকলেন। অবশেষে আমি বললাম, হয়ত তিনি আর থামবেন না’।[৩]
(খ) শিরক ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ
শিরক করে কোন ব্যক্তি মারা গেলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না। তাই কারো দ্বারা এই জঘন্য পাপ সংঘটিত হলে তাকে সাথে সাথে তওবা করতে হবে এবং ঐ কাজ থেকে ফিরে আসতে হবে। আল্লাহ বলেন,
اِنَّ اللّٰہَ لَا یَغۡفِرُ اَنۡ یُّشۡرَکَ بِہٖ وَ یَغۡفِرُ مَا دُوۡنَ ذٰلِکَ لِمَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَ مَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰہِ فَقَدِ افۡتَرٰۤی اِثۡمًا عَظِیۡمًا
‘নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক করবে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না। তবে তিনি চাইলে অন্য পাপ ক্ষমা করতে পারেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে শরীক করবে, সে দূরতম পথভ্রষ্ট হবে’ (সূরা আন-নিসা : ৪৮ ও ১১৬)।
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ قَالَ اللهُ يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ مَا دَعَوْتَنِىْ وَرَجَوْتَنِىْ غَفَرْتُ لَكَ عَلَى مَا كَانَ فِيْكَ وَلاَ أُبَالِىْ يَا ابْنَ آدَمَ لَوْ بَلَغَتْ ذُنُوْبُكَ عَنَانَ السَّمَاءِ ثُمَّ اسْتَغْفَرْتَنِىْ غَفَرْتُ لَكَ وَلاَ أُبَالِىْ يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ لَوْ أَتَيْتَنِى بِقُرَابِ الأَرْضِ خَطَايَا ثُمَّ لَقِيتَنِىْ لاَ تُشْرِكُ بِىْ شَيْئًا لأَتَيْتُكَ بِقُرَابِهَا مَغْفِرَةً
আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি আমার কাছে অঙ্গীকার করেছ এবং আশা দিয়েছ বলে আমি তোমার পাপ ক্ষমা করে দিয়েছি। হে আদম সন্তান! তোমার পাপ যদি আসমান পর্যন্ত পৌঁছে যায়, অতঃপর আমার কাছে ক্ষমা চাও, তবুও তোমার পাপ ক্ষমা করে দিব। এতে আমি কোন পরওয়া করি না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি যমীন সমপরিমাণ পাপ নিয়ে আমার কাছে উপস্থিত হও, আর তাতে যদি শিরক না থাকে, তবে আমি তোমার কাছে এতটুকু সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে উপস্থিত হব।[৪]
(গ) যাবতীয় সৎ আমল বাতিল হয়ে যায়
আল্লাহ বলেন, وَ لَوۡ اَشۡرَکُوۡا لَحَبِطَ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ‘তারা যদি শিরক করে, তাহলে তারা যা আমল করেছে সবই বাতিল হয়ে যাবে’ (সূরা আল-আন‘আম : ৮৮)। মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে হুঁশিয়ার করে দিয়ে আল্লাহ বলেন,
وَ لَقَدۡ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ وَ اِلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکَ ۚ لَئِنۡ اَشۡرَکۡتَ لَیَحۡبَطَنَّ عَمَلُکَ وَ لَتَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ
‘নিশ্চয় আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি অহি নাযিল করা হয়েছে যে, যদি আপনি শিরক করেন, তবে অবশ্যই অবশ্যই আপনার আমল বাতিল হয়ে যাবে। আর আপনি অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন’ (সূরা আয-যুমার : ৬৫)।
(ঘ) শিরককারীর উপর জান্নাত হারাম
শিরক জান্নাত ও জাহান্নামের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। শিরক না করলে জান্নাত, করলে জাহান্নাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
اِنَّہٗ مَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰہِ فَقَدۡ حَرَّمَ اللّٰہُ عَلَیۡہِ الۡجَنَّۃَ وَ مَاۡوٰىہُ النَّارُ ؕ وَ مَا لِلظّٰلِمِیۡنَ مِنۡ اَنۡصَارٍ
‘নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন এবং তার স্থান হবে জাহান্নামে। আর এরূপ অত্যাচারীর জন্য কোন সাহায্যকারী থাকবে না’ (সূরা আল-মায়িদাহ : ৭২)।
عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ ثِنْتَانِ مُوْجِبَتَانِ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا الْمُوْجِبَتَانِ قَالَ مَنْ مَاتَ لاَ يُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ مَاتَ يُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّارَ.
জাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) একদা বলেন, দু’টি বিষয় অপরিহার্য। জনৈক ব্যক্তি প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! উক্ত দু’টি বিষয় কী? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক না করে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি শরীক করে মারা যাবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।[৫]
(ঙ) শিরককারীর জন্য রাসূল (ﷺ) শাফা‘আত করবেন না
আল্লাহ তা‘আলা রাসূল (ﷺ)-কে ক্বিয়ামতের কঠিন দিনে তাঁর উম্মতকে সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিবেন। কিন্তু তিনি শিরককারীর জন্য শাফা‘আত করবেন না। তিনি বলেন, فَاخْتَرْتُ الشَّفَاعَةَ وَهِىَ لِمَنْ مَاتَ لاَ يُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئًا ‘আমি ঐ ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করব, যে আল্লাহর সাথে কোনকিছুকে শরীক না করেই মারা গেছে’।[৬]
এই হাদীছ এবং উপরে বর্ণিত আয়াত প্রমাণ করে যে, কোন ব্যক্তি যদি ‘শিরকে আকবার’ বা বড় শিরক করে এবং তওবা না করে মারা যায়, তবে সে আর কোন দিন জান্নাতে যেতে পারবে না। চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে থাকবে। তবে অন্য পাপ করে তওবা ছাড়া মারা গেলে আল্লাহ চাইলে তাকে ক্ষমা করে জান্নাত দিবেন, অথবা জাহান্নামে দিয়ে পাপের প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করার পর কালেমার বদৌলতে এক সময় জান্নাতে পাঠাবেন। কিন্তু শিরকের ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র ছাড় নেই।[৭] শিরকের উক্ত ভয়াবহ অবস্থার কারণেই রাসূল (ﷺ) অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বলে দিয়েছেন, [৮] لَا تُشْرِكْ بِاللهِ شَيْئًا وَإِنْ قُتِلْتَ وَحُرِّقْتَ ‘তুমি কোনকিছুকে আল্লাহর সাথে শরীক করো না, যদিও তোমাকে হত্যা করা হয় এবং আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়’।
বিদ‘আতের পরিচিতি ও পরিণতি
কোন্টি ভাল কাজ আর কোনটি খারাপ কাজ, তা বাছাই করার দায়িত্ব শরী‘আতের। আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূল (ﷺ) যে আমলকে কল্যাণকর বলে অনুমোদন দিবেন, সেটাই ভাল কাজ। কারণ ভাল-মন্দ নির্ণয়ের ক্ষমতা মানুষের নেই। বিদ‘আত ও কুসংস্কার অত্যন্ত গর্হিত কাজ। তাই রাসূল (ﷺ) তাঁর জীবদ্দশায় যতবার খুৎবা দিয়েছেন, ততবারই বিদ‘আত সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করেছেন।
‘বিদ‘আত’ শব্দটির শাব্দিক ও পারিভাষিক অর্থ দু’টিই কুরআন-হাদীছে ব্যবহৃত হয়েছে।[৯] ‘বিদ‘আত’ শব্দের আভিধানিক অর্থ নতুন সৃষ্টি। পূর্বে যার অস্তিত্ব ছিল না তা-ই বিদ‘আত। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘আপনি বলুন, আমি রাসূলগণের মধ্যে নতুন নই’ (সূরা আল-আহক্বাফ : ৯)। অনুরূপ আল্লাহ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘তিনি আসমান ও যমীনের নতুন স্রষ্টা’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১১৭)। ইমাম শাত্বেবী (রাহিমাহুল্লাহ) উক্ত বিষয়ে আলোচনা পেশ করেছেন।[১০] উক্ত দু’টি আয়াতে বিদ‘আত শব্দটি আভিধানিক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। তাই নতুন আবিষ্কারগুলোকে আভিধানিক অর্থে বিদ‘আত বলা হলেও শারঈ অর্থে বিদ‘আত নয়। যেমন, বাস, ট্রাক, ট্রেন, বিমান, ঘড়ি, চশমা ইত্যাদি। কারণ শরী‘আতের দৃষ্টিতে বিদ‘আত হল, এমন আমল, যা শরী‘আত মনে করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা, যার প্রমাণে রাসূল (ﷺ)-এর পক্ষ থেকে কোন ছহীহ দলীল নেই। যেমন রাসূল (ﷺ) বলেন, مَنْ أَحْدَثَ فِىْ أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيْهِ فَهُوَ رَدٌّ ‘যদি কেউ আমাদের শরী‘আতে এমন নতুন কিছু সৃষ্টি করে, যা তাতে নেই- তবে তা প্রত্যাখ্যাত’।[১১] অন্য বর্ণনায় এসেছে, مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ ‘কেউ যদি এমন কোন আমল করে, যার প্রতি আমাদের নির্দেশ নেই- সেই আমল প্রত্যাখ্যাত’।[১২] ইমাম শাত্বেবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, দ্বীনের মধ্যে এমন প্রথা আবিষ্কার করা, যা শরী‘আত সদৃশ, যা আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে আধিক্য বুঝানোর উদ্দেশ্যে প্রচলন করা হয়।[১৩] মূলকথা নেকীর আশায় শরী‘আত মনে করে এমন আমলের আবিষ্কার করা, শরী‘আতে যার কোন ছহীহ ভিত্তি নেই। অর্থাৎ বানোয়াট, উদ্ভট, ভুয়া, ভিত্তিহীন ও মনগড়া আমলকে বিদ‘আত বলে।
বিদ‘আতের পরিণাম
বিদ‘আতের পরিণাম সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর বক্তব্য এসেছে। কারণ বিদ‘আত করলে রাসূল (ﷺ)-কে অপমান করা হয়। নি¤েœ কয়েকটি শিরোনাম আলোচনা করা হল-
(ক) বিদ‘আত শরী‘আতকে অসম্পূর্ণ প্রমাণ করে
শরী‘আতকে আল্লাহ তা‘আলা পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। এখানে সংযোজন বা বিয়োজনের কোন সুযোগ নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
اَلۡیَوۡمَ اَکۡمَلۡتُ لَکُمۡ دِیۡنَکُمۡ وَ اَتۡمَمۡتُ عَلَیۡکُمۡ نِعۡمَتِیۡ وَ رَضِیۡتُ لَکُمُ الۡاِسۡلَامَ دِیۡنًا
‘আমি আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম, আমার নে‘মতকে তোমাদের জন্য সম্পন্ন করলাম এবং ইসলামকে দ্বীন হিসাবে তোমাদের জন্য মনোনীত করলাম’ (সূরা আল-মায়িদাহ : ৩)। স্বয়ং আল্লাহ তাঁর দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। তাই এর মধ্যে কোন নতুন আমল ও ইবাদত বৃদ্ধি করা যাবে না। যদি কোন স্বার্থান্বেষী মহল ইসলামের সাথে মিথ্যা আমলের জন্ম দেয়, তবে তা হবে আল্লাহ্উরপর মিথ্যা অপবাদ দেয়া, যা হারাম (সূরা আল-আ‘রাফ : ৩৩)। সমাজে অসংখ্য বিদ‘আত সৃষ্টি করে শরী‘আতের উপর মিথ্যারোপ করা হয়েছে। কারণ শরী‘আতে বিদ‘আতের কোন ভিত্তি নেই।
(খ) বিদ‘আত শরী‘আতকে হত্যা করে
যে স্থানে বিদ‘আত চালু হয়, সেখান থেকে সুন্নাত বিদায় নেয়। সমাজ থেকে সুন্নাতকে উৎখাত করার বড় হাতিয়ার হল বিদ‘আত। তাই বিদ‘আতই সুন্নাতের বড় দুশমন।
عَنْ حَسَّانَ قَالَ مَا ابْتَدَعَ قَوْمٌ بِدْعَةً فِىْ دِيْنِهِمْ إِلاَّ نَزَعَ اللهُ مِنْ سُنَّتِهِمْ مِثْلَهَا ثُمَّ لاَ يُعِيْدُهَا إِلَيْهِمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ
হাস্সান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘কোন সম্প্রদায় যখন তাদের দ্বীনের মধ্যে কোন বিদ‘আত আবিষ্কার করে, তখন আল্লাহ তাদের সুন্নাত থেকে সমপরিমাণ সুন্নাত ছিনিয়ে নেন। অতঃপর ক্বিয়ামত পর্যন্ত তাদেরকে তিনি আর সেই সুন্নাতকে ফেরত দেন না’।[১৪] বিদ‘আত কত বড় অন্যায় তা উক্ত বর্ণনা থেকে বুঝা যায়। বিদ‘আতী শুধু পাপকারী নয়, বরং সুন্নাতকেও হত্যাকারী।
(গ) বিদ‘আতীর কোন আমল আল্লাহ কবুল করবেন না
আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত লাভের প্রত্যাশায় মানুষ আমলের জন্য পরিশ্রম করে থাকে। কিন্তু সেই আমলের মধ্যে যদি বিদ‘আতের সংমিশ্রণ থাকে, তবে তা তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
قُلۡ ہَلۡ نُنَبِّئُکُمۡ بِالۡاَخۡسَرِیۡنَ اَعۡمَالًا- اَلَّذِیۡنَ ضَلَّ سَعۡیُہُمۡ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ ہُمۡ یَحۡسَبُوۡنَ اَنَّہُمۡ یُحۡسِنُوۡنَ صُنۡعًا-اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِاٰیٰتِ رَبِّہِمۡ وَ لِقَآئِہٖ فَحَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ فَلَا نُقِیۡمُ لَہُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ وَزۡنًا- ذٰلِکَ جَزَآؤُہُمۡ جَہَنَّمُ بِمَا کَفَرُوۡا وَ اتَّخَذُوۡۤا اٰیٰتِیۡ وَ رُسُلِیۡ ہُزُوًا
‘আপনি বলুন, আমল করার কারণে যারা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত আমি কি তোমাদেরকে তাদের সম্পর্কে সংবাদ দিব? ঐ সমস্ত লোক তারাই, যাদের পরিশ্রম দুনিয়াতেই নষ্ট হয়ে গেছে, যদিও তারা মনে করছে, তারা ভাল আমলই করে যাচ্ছে। তারাই ঐ সমস্ত লোক, যারা তাদের প্রতিপালকের বিধান ও তাঁর সাক্ষাৎকে অস্বীকার করে। এই কারণে তাদের আমলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আমি ক্বিয়ামতের দিন তাদের জন্য প্রমাণ স্থাপন করব না। জাহান্নামই হবে তাদের প্রতিদান, যেমন তারা অস্বীকার করেছে এবং আমার বিধান ও রাসূলগণকে ঠাট্টার পাত্র বানিয়েছে’ (সূরা আল-কাহ্ফ : ১০৩-১০৬)। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন, وَ قَدِمۡنَاۤ اِلٰی مَا عَمِلُوۡا مِنۡ عَمَلٍ فَجَعَلۡنٰہُ ہَبَآءً مَّنۡثُوۡرًا ‘তাদের আমলগুলো দেখার জন্য অগ্রগামী হব। অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব’ (সূরা আল-ফুরক্বান : ২৩)। হাদীছে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ أَحْدَثَ فِيْهَا حَدَثًا فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ لاَ يَقْبَلُ اللهُ مِنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ صَرْفًا وَلاَ عَدْلاً
আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তাতে কোন বিদ‘আত সৃষ্টি করবে, তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতাম-লী এবং সমস্ত মানুষের পক্ষ থেকে অভিশাপ বর্ষণ করা হবে। আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতের দিন তার পক্ষ থেকে কোন নফল ও ফরয ইবাদত কবুল করবেন না’।[১৫] উল্লেখ্য যে, উক্ত হাদীছে মদীনার কথা বর্ণিত হলেও হুকুমটা ব্যাপক।[১৬]
(ঘ) বিদ‘আতী রাসূল (ﷺ)-এর শাফা‘আত পাবে না এবং কাওছারের পানিও পান করতে পারবে না :
বিদ‘আত এতই জঘন্য যে, ক্বিয়ামতের মাঠে বিদ‘আতী ব্যক্তিকে নবী করীম (ﷺ)-এর শাফা‘আত থেকে বঞ্চিত করবে। উম্মতের জন্য রাসূল (ﷺ) যে কাওছারের মালিক হয়েছেন, সেই কাওছারের পানি পান থেকে বিরত রাখবে।
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنِّىْ فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ مَنْ مَرَّ عَلَيَّ شَرِبَ وَمَنْ شَرِبَ لَمْ يَظْمَأْ أَبَدًا لَيَرِدَنَّ عَلَيَّ أَقْوَامٌ أَعْرِفُهُمْ وَيَعْرِفُوْنَنِىْ ثُمَّ يُحَالُ بَيْنِىْ وَبَيْنَهُمْ فَأَقُوْلُ إِنَّهُمْ مِنِّىْ فَيُقَالُ إِنَّكَ لَا تَدْرِىْ مَا أَحْدَثُوْا بَعْدَكَ؟ فَأَقُوْلُ سُحْقًا سُحْقاً لِمَنْ غَيَّرَ بَعْدِىْ
সাহল ইবনু সা‘দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেন, আমি তোমাদেরকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য আগেই হাওযে কাওছারের নিকটে পৌঁছে যাব। যে আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করবে, সে পানি পান করবে। আর যে পানি পান করবে, তার আর কখনো পিপাসা লাগবে না। ইতিমধ্যে অনেকগুলো দল আমার নিকটে আসবে। আমি তাদেরকে চিনতে পারব, তারাও আমাকে চিনতে পারবে। অতঃপর তাদের মাঝে আর আমার মাঝে আড় সৃষ্টি করা হবে। আমি বলব, এরা আমার উম্মত। কিন্তু আমাকে বলা হবে, আপনি জানেন না, আপনার মৃত্যুর পর তারা কত বিদ‘আত সৃষ্টি করেছে। অতঃপর আমি বলব, তারা অভিশপ্ত, তারা অভিশপ্ত, যারা আমার মৃত্যুর পর দ্বীনের পরিবর্তন করেছে’।[১৭]
বিদ‘আতীদের জন্য ক্বিয়ামতের মাঠ যে কত জটিল ও কঠিন হবে, তা উক্ত হাদীছে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। বিশেষ করে ইসলামের নামে যত বাতিল দলের জন্ম হয়েছে, সেগুলোর সাথে যারা জড়িত হবে তারাই বেশী অপমানিত হবে। কারণ উক্ত ভ্রান্ত দলগুলোই শিরক, বিদ‘আত, যা‘ঈফ ও জাল হাদীছের প্রচারক। তাই প্রত্যেক ব্যক্তিকে ভ্রান্ত ফের্কা থেকে দূরে থাকতে হবে।
(ঙ) বিদ‘আতীরা হাশরের মাঠে রাসূল (ﷺ)-এর দলভুক্ত হতে পারবে না :
পৃথিবীতে যে ব্যক্তি যে নেতার আদর্শের অনুসরণ করবে, ক্বিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তি ঐ নেতার সাথে অবস্থান করবে। বিদ‘আত ও কুসংস্কার যেহেতু রাসূল (ﷺ)-এর আদর্শের বিরোধী, তাই কুসংস্কারপন্থীরা তাঁর দলভুক্ত হতে পারবে না।[১৮] আল্লাহ বলেন,
وَ یَوۡمَ یَعَضُّ الظَّالِمُ عَلٰی یَدَیۡہِ یَقُوۡلُ یٰلَیۡتَنِی اتَّخَذۡتُ مَعَ الرَّسُوۡلِ سَبِیۡلًا- یٰوَیۡلَتٰی لَیۡتَنِیۡ لَمۡ اَتَّخِذۡ فُلَانًا خَلِیۡلًا- لَقَدۡ اَضَلَّنِیۡ عَنِ الذِّکۡرِ بَعۡدَ اِذۡ جَآءَنِیۡ ؕ وَ کَانَ الشَّیۡطٰنُ لِلۡاِنۡسَانِ خَذُوۡلًا
‘যালিম ব্যক্তি সেদিন নিজ হাত কামড়াবে আর বলবে, হায়! আমি যদি রাসূলের সাথে পথ চলতাম! হায়! দুর্ভোগ আমার, আমি যদি অমুককে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ না করতাম! আমার নিকট উপদেশ পৌঁছার পর আমাকে সে বিভ্রান্ত করেছিল। আসলে শয়তান মানুষের জন্য বড় প্রতারক’ (সূরা আল-ফুরক্বান : ২৭-২৯)। বিদ‘আতীরা যেহেতু রাসূল (ﷺ)-এর আদর্শের অনুসরণ না করে বিভিন্ন ইমাম, পীর মাশায়েখ ও কথিত দার্শনিকের মিথ্যা আদর্শের অনুসরণ করে থাকে, সেহেতু তারা রাসূল (ﷺ)-এর দলভুক্ত হতে পারবে না। আল্লাহ তা‘আলা তাই প্রত্যেক মানুষকে ক্বিয়ামতের দিন তার নেতাসহ আহ্বান করবেন। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, ‘সেদিন আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তাদের নেতাসহ আহ্বান করব’ (সূরা বানী ইসরাঈল : ৭১)। সেদিন রাসূল (ﷺ)-এর নেতৃত্ব ছাড়া কেউ মুক্তি পাবে না।
অতএব প্রত্যেক ব্যক্তির অপরিহার্য কর্তব্য হল, তার পালনীয় আদর্শগুলো যাচাই করা, তিনি কার আদর্শের অনুকরণ করছেন। প্রতিনিয়ত ভাববেন, ক্বিয়ামতের দিন রাসূল (ﷺ) তার নেতা হবেন কি-না। এ জন্য ছহীহ হাদীছের অনুকরণ করা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই।
(চ) বিদ‘আতী জাহান্নামী
বিদ‘আতী ব্যক্তি আমলের জন্য যতই পরিশ্রম করুক না কেন, তাতে তার কোন লাভ হবে না। কারণ সে অপমানিত হয়ে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ فِىْ خُطْبَتِهِ يَحْمَدُ اللهَ وَيُثْنِىْ عَلَيْهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ يَقُوْلُ مَنْ يَهْدِهِ اللهُ فَلاَ مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْهُ فَلاَ هَادِىَ لَهُ إِنَّ أَصْدَقَ الْحَدِيْثِ كِتَابُ اللهِ وَأَحْسَنَ الْهَدْىِ هَدْىُ مُحَمَّدٍ وَشَرَّ الأُمُوْرِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ وَكُلَّ ضَلاَلَةٍ فِى النَّارِ
জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) খুৎবায় আল্লাহর প্রশংসা করতেন এবং গুণগান করতেন, যেমন তিনি তার অধিকারী। অতঃপর বলতেন, আল্লাহ যাকে হেদায়াত দান করেন, তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না এবং যাকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন, তাকে কেউ পথপ্রদর্শন করতে পারে না। নিশ্চয় সর্বাধিক সত্য হাদীছ হল আল্লাহর কিতাব এবং সর্বোত্তম আদর্শ হল মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর আদর্শ; কাজের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ হল নতুন আমল। আর প্রত্যেক নতুন আমলই বিদ‘আত আর প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম’।[১৯]
সামাজিক কুসংস্কার ও ভালোর নামে ধর্মের আড়ালে যে সমস্ত শিরক ও বিদ‘আতী প্রথা প্রচলিত আছে, সেগুলো বর্জন করতে পারলে মুসলিম সমাজ তাওহীদ ও সুন্নাহ ভিত্তিক গড়ে উঠবে। তখনই ইসলামী পুনর্জাগরণের পথ সুগম হবে ইনশাআল্লাহ।
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
তথ্যসূত্র :
[১]. শারহু কিতাবুত তাওহীদ, ২য় খণ্ড, পৃ. ১০।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/২৮৫৬, ‘জিহাদ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৩; মিশকাত হা/২৮।
[৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৯৭৬, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৬; মিশকাত হা/৫০।
[৪]. তিরমিযী, পৃ. ৮০৪, হা/৩৫৪০, সনদ ছহীহ, ‘দু‘আ সমূহ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১০৯।
[৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/৯৩, ‘ঈমান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪২; মিশকাত হা/৩৮, ‘ঈমান’ অধ্যায়।
[৬]. তিরমিযী, পৃ. ৫৫০, হা/২৪৪১, সনদ ছহীহ।
[৭]. তিরমিযী, পৃ. ৮০৪, হা/৩৫৪০, সনদ ছহীহ, ‘দু‘আ সমূহ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১০৯; মিশকাত হা/২৩৩৬, ‘দু‘আ সমূহ’ অধ্যায়, ‘তওবা ও ইস্তিগফার’ অনুচ্ছেদ।
[৮]. আহমাদ হা/২২১২৮, সনদ ছহীহ; ইরওয়াউল গালীল হা/২০২৬; মিশকাত হা/৬১, ‘কাবীরা গোনাহ ও মুনাফেক্বীর নিদর্শন’ অনুচ্ছেদ।
[৯]. ছহীহ বুখারী, হা/২০১০, ‘তারাবীহর ছালাত’ অধ্যায়।
[১০]. আল্লামা আবূ ইসহাক ইবরাহীম ইবন মূসা আশ-শাত্বিবী, কিতাবুল ই‘তিছাম (ছাপার স্থান ও তারিখ বিহীন), ১ম খণ্ড, পৃ. ১৯-২১।
[১১]. ছহীহ বুখারী, হা/২৬৯৭, ‘সন্ধি’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫; মিশকাত হা/১৪০।
[১২]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৭১৮, ‘বিচার’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৯।
[১৩]. কিতাবুল ই‘তিছাম, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৯-২১।- طريقة في الدين مخترعة تضاهي الشرعية يقصد بالسلوك عليها المبالغة في التعبد لله سبحانه .......... البدعة طريقة في الدين مخترعة تضاهي الشرعية يقصد بالسلوك عليها ما يقصد بالطريقة الشرعية
[১৪]. দারিমী, হা/৯৯।
[১৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৩৭০, ‘হজ্জ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৮৫; ছহীহ বুখারী, পৃ. ৩৩২, হা/১৮৭০।
[১৬]. আবুদাঊদ, হা/৪৫৩০, ‘দিয়াত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১১।
[১৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৭০৫০-৭০৫১, ‘ফিতনা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১।
[১৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৭৪৩৭ ও ৭৪৩৯, ‘তাওহীদ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২৪।
[১৯]. নাসাঈ, হা/১৫৭৮।
প্রসঙ্গসমূহ »:
শিক্ষা-সংস্কৃতি