উত্তর : উক্ত ইমামের পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না। তার ইমামতি বৈধ নয়। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, مَنْ أَتَى عَرَّافًا فَسَأَلَهُ عَنْ شَىْءٍ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ أَرْبَعِيْنَ لَيْلَةً ‘যে ব্যক্তি কোন গণকের কাছে আসল, অতঃপর তাকে (ভাগ্য সম্পর্কে) কিছু জিজ্ঞেস করল এবং গণকের কথাকে সত্য বলে বিশ্বাস করল, চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার কোন ছালাত কবুল হবে না’। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ব্যক্তি গণকের কাছে আসল, অতঃপর গণক যা বলল তা সত্য বলে বিশ্বাস করল, সে মূলত মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর উপর যা নাযিল করা হয়েছে তা অস্বীকার করল’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২২৩০; আবূ দাঊদ, হা/৩৯০৪; তিরমিযী, হা/১৩৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৫৩৬)। পক্ষান্তরে যাদু ও তন্ত্রমন্ত্র সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) বলেছেন, সাতটি ধ্বংসাত্মক বিষয় থেকে তোমরা বিরত থাকবে। তার মধ্যে একটি হল যাদু (ছহীহ বুখারী, হা/২৭৬৬, ৬৮৫৭)।
উক্ববাহ ইবনু আমীর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, مَن تَعَلَّقَ تَمِيْمَةً فَلَا أَتَمَّ اللهُ لَهُ وَمَنْ تَعَلَّقَ وَدَعْةً فَلا وَدَّعَ اللهُ لَهُ ‘যে ব্যক্তি তাবীয ঝুলায় (পরিধান করে) আল্লাহ যেন তার আশা পূরণ না করেন। যে ব্যক্তি কড়ি, শঙ্খ বা শামুক ঝুলায় তাকে যেন আল্লাহ রক্ষা না করেন’ (মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৪০৪, সনদ ছহীহ)। অন্যত্র একই রাবী বলেন, ‘একদল মানুষ রাসূল (ﷺ)-এর নিকট আগমন করেন। তিনি তাদের ৯ জনের বাই‘আত গ্রহণ করেন এবং একজনের বাই‘আত গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আপনি ৯ জনের বাই‘আত গ্রহণ করলেন কিন্তু একে পরিত্যাগ করলেন? তিনি বলেন, এর দেহে একটি তাবীয আছে। তখন তিনি তার হাত ঢুকিয়ে তাবীযটি ছিড়ে ফেলেন। অতঃপর তিনি তার বাই‘আত গ্রহণ করেন এবং বলেন, مَنْ عَلَّقَ تَمِيْمَةً فَقَدْ أَشْرَكَ ‘যে তাবীয ঝুলালো সে শিরক করল’ (মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৪২২; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ, ১/৮৮৯)। সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটি আলেমগণ, শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) ও শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘আলেমগণের সর্বসম্মতিক্রমে তাবীয-কবয করা ও লটকানো বা পরিধান করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। এগুলো পূর্ববর্তী মুশরিকদের আমলের ন্যায় (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১/২১২ পৃ.; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায ২৮/২৯২ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১০৪১১১)।
শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) ও শায়খ ছালিহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘যেহেতু তাবীয-কবয করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। তাই ঐ ইমামের পিছনে ছালাত আদায় করা জায়েয নয়’ (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১০৪১১১)। সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটির আলেমগণ বলেন,
فلا يصلى خلف الذي يكتبها ويجب أن يبين له أن هذا شرك والذي يجب عليه البيان هو الذي يعلمها
‘যে তাবীয লেখালেখি করে তার পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না। তাকে বোঝানো অপরিহার্য যে, এটি শিরক। যেই জানে তাকে জানানোটা তার উপরেই অপরিহার্য’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৩/৬৫ পৃ.)। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘তার পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না এবং তার ইমামতি বৈধ নয়’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ৯/২৭৮, ৯/৩৭৩-৩৭৪ ও ১২/১০৮-১০৯ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : সালাফী দাওয়াহ এন্ড ইসলামিক সেন্টার, সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা।