উত্তর : ডাক্তারগণ যখন কোন ব্যক্তি সম্পর্কে এই মর্মে সিদ্ধান্ত দিবেন যে, তিনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে আর ছিয়াম পালন করতে পারবেন না এবং এ রোগ থেকে সুস্থতারও আশা করা যায় না, তখন ফিদইয়া প্রদান করা ওয়াজিব। চির রোগী ও অতি বৃদ্ধ মানুষ তিনি ছিয়াম পালনে অক্ষম, তিনি ফিদইয়া দিবেন। এজন্য প্রতি ছিয়ামের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াতে হবে, যার পরিমাণ হল দেশীয় খাদ্যের অর্ধ ছা‘ বা দেড় কেজি। যেমন চাল, গম, খেজুর। আর যদি এর সাথে কোন তরকারী বা গোশত দেয়া হয়, তবে সেটা আরো উত্তম। অথবা খাবার বানিয়ে মিসকীনদেরকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করা যায় (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৬৬৮৮৬)। কিন্তু টাকা দিয়ে ফিদিয়া দিলে আদায় হবে না’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমা, ১০/১৯৮ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৯৩২৪৩)। ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আর যে বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি ছিয়াম পালনে অক্ষম সে মিসকীন খাওয়াবে। যেমন আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বৃদ্ধ হওয়ার পর ছিয়াম পালনে অক্ষম হয়ে পড়লে তিনি এক বছর অথবা দু’বছর প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন দরিদ্র ব্যক্তিকে রুটি ও গোশত খেতে দিতেন এবং ছিয়াম ত্যাগ করতেন’ (তা‘লীকু ছহীহিল বুখারী, হা/৪৫০৫-এর অধ্যায়; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৪৯৯৪৪)।
উল্লেখ্য যে, সাময়িক অসুস্থতার কারণে ছিয়াম রাখতে না পারলে, পরবর্তীতে সেই ছিয়াম ক্বাযা বা পূরণ করে নিবে (সূরা বাক্বারাহ ১৮৪-১৮৫)। সুস্থ অবস্থায় ফিদইয়া দেয়া যাবে না। শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘সুতরাং স্থায়ী রোগে আক্রান্ত রোগী, অতিশয় বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের মধ্যে যারা ছিয়াম পালনে অক্ষম, তাদের উপর প্রতিদিনের ছিয়ামের পরিবর্তে একজন মিসকীন খাওয়ানো ওয়াজিব। সেটা খাদ্য দ্রব্য দান করার মাধ্যমে হোক অথবা রামাযান মাসের দিনের সমান সংখ্যক মিসকীনকে দাওয়াত করে খাওয়ানোর মাধ্যমে হোক। ঠিক যেমনটি আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বৃদ্ধ হওয়ার পর করেছেন। তিনি ৩০ জন মিসকীনকে একত্রে দাওয়াত করে খাওয়াতেন। এতে তাঁর এক মাসের ছিয়ামের কাফফারা হয়ে যেত (ফাতাওয়াউছ ছিয়াম, পৃ. ১১১)।
প্রশ্নকারী : আব্দুল্লাহ আহমাদ, বরিশাল।