উত্তর : সত্যের আলোকে হাসি-খুশি ও বৈধ বিনোদন ইসলামের একটি অনুপম নিদর্শন। আল্লাহ তা‘আলা এর বৈধতা দিয়ে বলেন, فَبِذٰلِکَ فَلۡیَفۡرَحُوۡا ‘কাজেই এতে তাদের আনন্দিত হওয়া উচিত’ (সূরা ইউনুস: ৫৮)। নবী (ﷺ) মৃদু হাসতেন। কখনোই অট্টহাসি দিতেন না। তাঁর মুখমণ্ডলের উজ্জ্বল হাসির আভা ছড়িয়ে পড়ত সর্ব কোণে। তিনি সদা প্রফুল্ল থাকতেন। কখনোই গোমড়ামুখো থাকতেন না। তবে দুশ্চিন্তায় পড়লে তার ছাপ চেহারায় পড়ত এবং তখন তিনি ছালাতে রত হতেন (আবূ দাঊদ, হা/১৩১৯; ছহীহুল জামি‘, হা/৪৭০৩)। তিনি সত্যের আলোকে হালকা রসিকতা করতেন। যেমন:
একদিন স্ত্রী আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর নিকটে এসে তার এক বৃদ্ধা খালা রাসূল (ﷺ)-কে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমার জন্য আল্লাহর নিকটে দু‘আ করুন যেন তিনি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। জবাবে রাসূল (ﷺ) বললেন, হে অমুকের মা! কোন বৃদ্ধা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। একথা শুনে উক্ত মহিলা কান্না শুরু করল। তখন আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বললেন, তাদের কী দোষ? জবাবে রাসূল (ﷺ) তাকে সান্ত¦না দিলেন এবং স্বীয় উক্তির অর্থ এই বর্ণনা করলেন যে, বৃদ্ধারা যখন জান্নাতে যাবে, তখন বৃদ্ধা থাকবে না, বরং যুবতী হয়ে প্রবেশ করবে। অতঃপর তিনি নিম্নোক্ত আয়াত পাঠ করে শোনালেন।
اِنَّاۤ اَنۡشَاۡنٰہُنَّ اِنۡشَآءً- فَجَعَلۡنٰہُنَّ اَبۡکَارًا- عُرُبًا اَتۡرَابًا- لِّاَصۡحٰبِ الۡیَمِیۡنِ
আমরা জান্নাতী নারীদের বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তাদের চিরকুমারী করেছি। সদা সোহাগিনী, সমবয়স্কা। ডান সারির লোকদের জন্য’ (সূরা আল-ওয়াক্বি‘আহ: ৩৫-৩৮; ইবনু কাছীর উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা দ্র.)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘জান্নাতবাসী নারী-পুরুষ সবাই ৩০ থেকে ৩৩ বছর বয়সী হবে’ (তিরমিযী, হা/২৫৪৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২২১৫৯; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৯৮৭)।
আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, নবী (ﷺ) আমাদের সাথে উৎফুল্ল মেজাজ ও সম্প্রীতি প্রদর্শন করতেন। এমনকি আমার ছোট ভাই আবূ উমায়ের একটি ‘নুগায়ের’ অর্থাৎ লাল ঠোট ওয়ালা চড়ুই জাতীয় পাখি পুষত। যা নিয়ে সে খেলা করত। রাসূল (ﷺ) যখন এসে তাকে খেলতে দেখতেন, তখন বলতেন, يَا أَبَا عُمَيْرٍ مَا فَعَلَ النُّغَيْرُ ‘হে আবূ উমায়ের! কী করছে তোমার নুগায়ের? ‘উমায়র-এর একটি ছোট্ট বুলবুল পাখি ছিল। সে সেটা নিয়ে খেলা করত। পাখিটি মরে গিয়েছিল’ (ছহীহ বুখারী, হা/৬১২৯, ৬২০৩)।
প্রশ্নকারী : গোলাম রাব্বি, বরিশাল।