সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন
উত্তর : হজ্জ সফরে গিয়ে একাধিক ওমরা করার কোন দলীল পাওয়া যায় না। তামাত্তু হজ্জ সম্পাদনকারী ব্যক্তি শুরুতে ওমরা করবেন এবং হালাল হয়ে যাবেন। এরপর প্রয়োজনে জেদ্দা, ত্বায়েফ, মদীনা বা অন্য কোন শহরেও যেতে পারেন। মক্কায় ফেরার পথে তাকে আর ইহরাম বাঁধতে হবে না। মীক্বাত অতিক্রম করলেও কোন সমস্যা নেই। মক্কায় পৌঁছে নিজের অবস্থান থেকে হজ্জের ইহরাম বেঁধে মিনায় যাবেন (ফাতাওয়া উছায়মীন, ২১/৩৪৪ পৃ.)। শায়খ উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ)-কে এ মর্মে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 

لَا يَلْزَمُهُ الْإِحْرَامُ، فَإِذَا أَدَّى الْمُتَمَتِّعُ الْعُمْرَةَ وَخَرَجَ مِنْ مَكَّةَ إِلَى الطَّائِفِ، أَوْ إِلَى جِدَّةَ، أَوْ إِلَى الْمَدِيْنَةِ، ثُمَّ رَجَعَ، فَإِنَّهُ لَا يَلْزَمُهُ الْإِحْرَامُ بِالْحَجِّ لِأَنَّهُ رَجَعَ إِلَى مَقَرِّهِ، فَإِنَّهُ لَمَّا جَاءَ حَاجًّا صَارَ مَقَرُّهُ مَكَّةَ، فَإِذَا سَافَرَ إِلَى الْمَدِيْنَةِ ثُمَّ رَجَعَ فَقَدْ رَجَعَ إِلَى مَقَرِّهِ؛ فَيُحْرِمُ بِالْحَجِّ يَوْمَ التَّرْوِيَةِ مِنْ مَكَّةَ

‘তার উপর ইহরাম ওয়াজিব হবে না। যে তামাত্তু হজ্জ করার ইচ্ছা করে ওমরা সম্পাদন করবে এবং মক্কা থেকে ত্বায়েফ, জেদ্দা কিংবা মদীনায় যাবে অতঃপর ফিরে আসবে তার জন্য হজ্জের ইহরাম বাঁধা ওয়াজিব নয়। কারণ তিনি নিজের অবস্থানে ফিরে আসছেন। যখন তিনি হজ্জের জন্য এসেছেন, তখন মক্কা তার অবস্থান করার জায়গা হয়ে গেছে। তিনি যখন মদীনায় সফর করে ফিরে আসবেন তখন তিনি তার অবস্থানের জায়গায় ফিরে আসবেন। অতঃপর ৮ তারিখে মক্কায় তার অবস্থান থেকে হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধবেন’ (ফাতাওয়া উছায়মীন, ২২/৭৮ পৃ.)। শায়খ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, 

وَأَمَّا مَنْ جَاءَ لِلْحَجِّ وَأَدَّى الْعُمْرَةَ ثُمَّ بَقِيَ فِيْ جِدَّةَ أَوِ الطَّائِفِ وَهُوَ لَيْسَ مِنْ أَهْلِهِمَا ثُمَّ أَحْرَمَ بِالْحَجِّ فَهَذَا مُتَمَتِّعٌ فَخُرُوْجُهُ إِلَى الطَّائِفِ أَوْ جِدَّةَ أَوِ الْمَدِيْنَةِ لَا يُخْرِجُهُ عَنْ كَوْنِهِ مُتَمَتِّعًا؛ لِأَنَّهُ جَاءَ لِأَدَائِهِمَا جَمِيْعًا وَإِنَّمَا سَافَرَ إِلَى جِدَّةَ أَوِ الطَّائِفِ لِحَاجَةٍ ، وَكَذَا مَنْ سَافَرَ إِلَى الْمَدِيْنَةِ لِلزِّيَارَةِ كُلُّ ذَلِكَ لَا يُخْرِجُهُ عَنْ كَوْنِهِ مُتَمَتِّعًا فِي الْأَظْهُرِ

‘যে ব্যক্তি হজ্জ করার জন্য আসবে এবং ওমরা আদায় করবে অতঃপর জেদ্দা বা ত্বায়েফ অবস্থান করবে কিন্তু তারা সেখানকার বাসিন্দা নয় তারপর তিনি হজ্জের ইহরাম বাঁধবেন এটাই তামাত্তু হজ্জকারী। জেদ্দা বা ত্বায়েফ যাওয়ার কারণে তিনি তামাত্তু হজ্জকারীর হুকুম থেকে বেরিয়ে যাবেন না। কারণ তিনি হজ্জ ও ওমরা দুইটি এক সঙ্গে করার জন্য এসেছেন। তিনি জেদ্দা ও তায়েফ তার প্রয়োজনে সফর করেছে। অনুরূপ যে ব্যক্তি যিয়ারতের জন্য মদীনায় সফর করেছেন তার হুকুমও একই। মূলত কেউই তামাত্তু হজ্জকারীর হুকুম থেকে বেরিয়ে যাবে না (ফাতাওয়া ইবনে বায, ১৭/৯৬ পৃ.)। শায়খ আলবানী বলেন, ‘হজ্জের পরের হল ঋতুবতী মহিলাদের ওমরা, যারা হায়েযের কারণে হজ্জের ওমরা করতে পারেনি। যেমন আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ঋতুবতী হয়েছিলেন, যা তাঁর ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয়। অনুরূপ অন্যান্য মহিলারাও যদি ওমরা করতে না পারে, তবে তারাও হজ্জের পর তানঈম থেকে ওমরা করতে পারবে। এটা শরী‘আত সম্মত। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ হাজী তারা বোকামি করে যে ওমরা করছে, একে আমরা শরী‘আত সম্মত মনে করি না। কারণ রাসূল (ﷺ)-এর অনেক ছাহাবী তাঁর সাথে হজ্জ করেছেন, কিন্তু কেউই হজ্জের পর ওমরা করেননি। বরং আমি মনে করি এটা মহিলাদের সাথে পুরুষদের সাদৃশ্য। মনে হচ্ছে মহিলাদের মত পুরুষদেরও হায়েয হচ্ছে’ (সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৯৮৪-এর আলোচনা দ্র.)।

অতএব যে সমস্ত মহিলা ঋতুবতী হওয়ার কারণে ওমরা করতে পারবে না, তারাই কেবল মাসজিদে আয়েশা বা তানঈম থেকে ইহরাম বেঁধে ক্বাযা ওমরা পূরণ করতে পারবে। এছাড়া অন্য কোন নারী-পুরুষ তানঈম থেকে ইহরাম বাঁধতে পারবে না। মক্কায় বসবাসকারীরাও তানঈম থেকে ওমরা করতে পারবে না। তাদেরকে মীক্বাত থেকে ওমরার ইহরাম বাঁধতে হবে (ছহীহ বুখারী, হা/১৫১৮)।

উল্লেখ্য যে, হজ্জ করতে গিয়ে বিনা প্রয়োজনে হারামের বাইরে গিয়ে ঘুরাঘুরি করা উচিত নয় (ইবনু কুদামা, আল-কাফী ফী ফিক্বহিল ইমাম আহমাদ, ১/৪৮০ পৃ.)। যেহেতু বায়তুল্লাহ দু‘আ কবুলের জায়গা, সেজন্য সেখানে অবস্থান করে বেশি বেশি নফল ছালাত আদায় করবে, কুরআন তেলাওয়াত করবে, দু‘আ করবে, যিকির-আযকার করবে সুযোগ পেলে ত্বাওয়াফ করবে (ফাতাওয়া উছায়মীন, ২২/২৬০ পৃ.)।


প্রশ্নকারী : ইকবাল, আমেরিক প্রবাসী।





প্রশ্ন (২৯) : প্রতি বছর ‘আরাফার দিন (৯ যিলহজ্জ) ছিয়াম রাখা সুন্নাত। কিন্তু বাংলাদেশের হিসাব অনুযায়ী সাধারণত ৮ কিংবা ৭ যিলহজ্জ তারিখে ‘আরাফা হয়। এক্ষণে করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪) : তাবলীগ জামাতের লোকেরা বলে, জীবনে অন্তত তিন চিল্লা দিতে হবে। এ সময় আহাল-পরিবার ছেড়ে যেতে হয়। এভাবে চিল্লা দেয়া কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৫) : সালাফী মানহাজ মতে, আশ‘আরী আক্বীদা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত নয় অর্থাৎ বাতিল আক্বীদা। কিন্তু বাংলা উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে আশ‘আরীর মধ্যে অন্যতম- ইমাম বায়হাক্বী, ইবনু হাজার আসক্বালানী, ইমাম দারাকুৎনী, খত্বীব বাগদাদী, ইমাম নববী, জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী প্রমুখ। তাদের বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে ইলম নেয়ার ক্ষেত্রে সালাফী মানহাজের উছূল কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৩) : ইহরাম অবস্থায় নারীরা কিভাবে পর্দা করবে? নারীরা মুখে নিক্বাব পরতে পারবে না- এরকম কোন শর্ত আছে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯) : অমুসলিম দেশে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়া যাবে কি? এমন দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের হুকুম কী? এ বিষয়ে সৌদি ফাতাওয়া বোর্ডের অভিমত কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭) : ‘চিরস্থায়ী জাহান্নামী’-এর অর্থ কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭) : মূসা (আলাইহিস সালাম) যখন আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাৎ করলেন তখন তিনি প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহ! আমি আপনার যত নিকটবর্তী হয়েছি আর কেউ কি এতো নিকটবর্তী হতে পারবে। আল্লাহ বললেন, মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উম্মত ইফতারের সময় এর চেয়েও বেশী নিকটবর্তী হবে। উক্ত ঘটনা কোন হাদীছ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : মানতের খানা কি সবাই খেতে পারে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১১) : রামাযানের ক্বাযা বা ছুটে যাওয়া ছিয়াম কখন আদায় করতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : ছাগীরা গুনাহের পরিচয় ও পরিণাম কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৮) : আক্বীদা ও মানহাজার মধ্যে পার্থক্য কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : খাৎনা করার সময় মুখে মিষ্টি দেয়া হয়, অনুষ্ঠান করা, গানবাজনা করা এবং গোসল দেয়ার সময় বিভিন্ন নিয়ম পালন করা কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ