উত্তর : আল্লাহ তা‘আলা বালা-মুছীবত ও বিপদ-আপদ নাযিল করে মানুষকে পরীক্ষা করে থাকেন। এর মধ্যে যারা ধৈর্যাধরণ করে তাদের জন্য সুসংবাদও ঘোষণা করেছেন (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৫৫)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে অতিশয় অস্থির চিত্তরূপে। যখন তাকে বিপদ স্পর্শ করে, তখন সে হা-হুতাশ করে’ (সূরা আল-মা‘আরিজ : ১৯-২০)। শায়খ উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, বিপদে আপতিত হওয়ার সময় মানুষ চার স্তরে বিভক্ত হয়ে যায়।
প্রথম স্তর : অসন্তোষ প্রকাশ করা। এটি আবার কয়েক প্রকার।১ম প্রকার : আল্লাহ যে বিষয় নির্ধারণ করেছেন, তার কারণে অন্তর দিয়ে আল্লাহর উপর অসন্তুষ্ট হয়ে যাওয়া। এটা হারাম। কারণ এধরণের অসন্তুষ্টি কখনো কুফরীর দিকে নিয়ে যায় (সূরা আল-হজ্জ : ১১)। ২য় প্রকার : কখনো অসন্তুষ্টি কথার মাধ্যমে হয়ে থাকে। যেমন হতাশা প্রকাশ করা এবং ধ্বংস হয়ে যাওয়ার জন্য দু’আ করা। এটাও হারাম। তৃতীয় প্রকার : কখনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে হয়ে থাকে। যেমন গাল চাপড়ানো, জামা-কাপড় ছেঁড়া, মাথার চুল টেনে ছিঁড়ে ফেলা ইত্যাদি (ছহীহ বুখারী, হা/১২৯৬,১২৯৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৩; মিশকাত, হা/১৭২৫)। উক্ত তিন প্রকার সবই হারাম এবং ধৈর্যধারণের পরিপন্থী।
দ্বিতীয় স্তর : বিপদের সময় ধৈর্যধারণ করা ওয়াজিব। এটা আল্লাহ তা‘আলার আদেশ (সূরা আল-আনফাল : ৪৬)। তৃতীয় স্তর : বিপদ আসার পর সন্তুষ্ট থাকা এবং মুছীবত আসা ও না আসা উভয়কেই সমান মনে করা। এধরণের ধৈর্যধারণ করা মুস্তাহাব। চতুর্থ স্তর : শুকরিয়া আদায় করা। এটা সর্বোচ্চ স্তর। কারণ সে জানে যে, এ সমস্ত বিপদাপদের মাধ্যমে পাপ ক্ষমা হয় এবং ছওয়াব বৃদ্ধি হয় (ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৪০, ৫৬৪১; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৭২; মিশকাত, হা/১৫৩৭; শায়খ উছায়মীন, মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, ২য় খণ্ড, পৃ. ১০৯-১১১, প্রশ্ন নং-২০৯)।
প্রশ্নকারী : আব্দুর রহমান, নরসিংদী।