উত্তর : বৌদ্ধধর্মের মধ্যে কিন্তু সে রকম কোন নির্দিষ্ট মূল গ্রন্থ নেই। আলাদা আলাদা দেশের বৌদ্ধরা ভিন্ন ভিন্ন ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী ধর্মগ্রন্থ রচনা করেছে এবং সেই মোতাবেক ধর্মীয় জীবন-যাপন পালন করছে। এজন্যই বিভিন্ন বৌদ্ধ ঐতিহ্যের মধ্যে কোন ঐকমত্য নেই। প্রতিটি বৌদ্ধ ঐতিহ্যের নিজস্ব গ্রন্থের সংগ্রহ রয়েছে, যার বেশিরভাগই ভারতের প্রাচীন পালি ও সংস্কৃত বৌদ্ধ গ্রন্থের অনুবাদ। উদাহরণ স্বরূপ, চীনা বৌদ্ধ ক্যাননে ৫৫টি খণ্ডে ২১৮৪টি পাঠ রয়েছে, অপরদিকে তিব্বতীয় ক্যাননে ১১০৮টি পাঠ রয়েছে, যার সবগুলোই বুদ্ধ দ্বারা কথিত বলে দাবি করা হয়েছে (তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া)। এই মতপার্থক্যের মূল কারণ হল, এটি একটি মানব রচিত ধর্ম। যার উৎপত্তি হয়েছে, খৃষ্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীতে প্রাচীন ভারতের পূর্বাঞ্চল মগধ রাজ্য (যা বর্তমানে ভারতের বিহার প্রদেশ) থেকে। বৌদ্ধ ধর্মের অস্তিত্ব মূলত সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধের শিক্ষার উপর ভিত্তি করে (তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া)।
দ্বিতীয়তঃ প্রত্যেক ধর্মের মধ্যেই কিছু না কিছু ভালো জিনিস আছে। তেমন বৌদ্ধ ধর্মের মধ্যেও কিছু ভালো জিনিস আছে। এ ধর্মের মূল বাণী হল- মানব সেবা, মানব জাতিকে কষ্ট থেকে মুক্ত করা। যদিও তাদের নীতি ও কর্মের মধ্যে পূর্ব-পশ্চিম পার্থক্য আছে। যা আমরা হামেশাই লক্ষ্য করেছি, সাম্প্রতিক মায়ানমারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর যে নির্মম নির্যাতন ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। আজ চীনের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা উইঘুর মুসলিমদের উপর যে বর্বর নির্যাতন ও অমানবিক অত্যাচারের স্টিমরোলার চালাচ্ছে সে সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত। বাকি পার্থক্য তো অসংখ্য আছে। ইসলাম ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হল- ইসলাম ধর্মের মূলনীতি হচ্ছে এক ইলাহতে বিশ্বাস করা, অপরদিকে বৌদ্ধ ধর্ম অঈশ্বরবাদী। বৌদ্ধ সৃষ্টিতত্ত্ব দেবতা নামক প্রাণীর অস্তিত্বকে স্বীকার করে। এ ধর্ম সৃষ্টিকর্তা বা ঈশ্বরে বিশ্বাস শেখায় না। তাদের মধ্যে অন্য সব পার্থক্য এই থেকেই প্রবাহিত। আমরা এক কথায় বলতে পারি যে, বৌদ্ধরা নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী।
প্রশ্নকারী : যহরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা।