উত্তর : ইসলামী শরী‘আতে কিছু কিছু সময় রয়েছে, যখন কাউকে সালাম দেয়া নিষিদ্ধ এবং অপসন্দসীয়। নিষিদ্ধ সময়গুলো হল- (ক) ইহুদী, খ্রিষ্টান ও কোন কাফেরকে প্রথমে সালাম দেয়া। তবে যদি তারা সালাম দেয়, তাদের শুধু وَعَلَيْكُمُ (ওয়া ‘আলাইকুম) অথবা وَعَلَيْكَ (ওয়া ‘আলাইকা) ‘তোমাদের ও তোমার উপর’ বলবে (ছহীহ মুসলিম, হা/২১৬৪, ২১৬৭; মিশকাত, হা/৪৬৩৫; ইবনু মাজাহ, হা/৩৬৯৯, সনদ ছহীহ)। (খ) সালাম দেয়ার সময় عَلَيْكَ السَّلَامُ(‘আলাইকাস সালাম) বলা। আবূ জুরাইয়ি আল-হুজাইমী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললাম, ‘আলাইকাস্ সালামু ইয়া রাসূলুল্লাহ’। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আলাইকাস্ সালাম’ বল না। কারণ এটা মৃত ব্যক্তির প্রতি সালাম’ (আবূ দাঊদ, হা/৫২০৯; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে‘, হা/৭৪০২)। (গ) ইশারা-ইঙ্গিত করে সালাম দেয়া (তিরমিযী, হা/২৬৯৬; মিশকাত, হা/৪৬৪৯; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২১৯৪)। তবে দূরে থাকার কারণে বা অন্য কোন প্রয়োজনের তাকীদে হাত উঠিয়ে ইশারা ইঙ্গিতে সালাম দেয়া যাবে, কিন্তু সালাম মুখে উচ্চারণ করতে হবে (ফাতাওয়াউল ইসলাম সুওয়াল ওয়া জওয়াব, প্রশ্ন নং-৬৬৭০)। (ঙ) পাপ কাজে লিপ্ত ব্যক্তিকে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে পাপ পরিত্যাগ না করে। তবে যদি সালাম দেয়ার কারণে তারা পাপ থেকে ফিরে আসে, তাহলে নছীহত করা উদ্দেশ্যে হয়, তাহলে সালাম দেয়া যাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কা‘ব ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এবং তার সাথীদের সাথে পঞ্চাশ দিন পর্যন্ত সম্পর্ক ছিন্ন রাখেন এবং সালামের উত্তর দেননি। আল্লাহ তাদের তওবাহ কবুল না করা পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সাথে কোন কথা-বার্তা বলেননি (ছহীহ বুখারী, হা/৪৪১৮)। উল্লেখ্য, খাওয়ার সময়, কুরআন তেলাওয়াতের সময়, ছালাতরত ব্যক্তিকে ইত্যাদি সালাম দেয়া যাবে না মর্মে সমাজে যে প্রথা প্রচলিত রয়েছে তা সঠিক নয়।
প্রশ্নকারী : সেলিম মিস্ত্রী, হেদাতীপাড়া, রাজশাহী।