উত্তর : মসজিদকে ‘পাগলা’ নামে সম্বোধন করা উচিত নয়। আর এটি করা হয়েছে কথিত কোন পীরের নামে। শিরকের গন্ধ আছে এমন নামে মসজিদের নামকরণ করা যাবে না। মসজিদের নামকরণের জন্য কয়েকটি শারঈ দিক রয়েছে। যথা : (১) জনপ্রিয়তা, আমিত্ব প্রিয় ও অহংকার বহিঃপ্রকাশের উদ্দেশ্যে নয়, বরং শুধু পার্থক্যকরণের জন্য যে তৈরি করেছেন তাঁর নামে নামকরণ করা। যেমন মসজিদুন নববী। (২) পার্থক্যকরণের জন্য যারা ছালাত আদায় করেন তাদের নামে অথবা এলাকার নামে নামকরণ করা। যেমন মসজিদু ক্বুবা, মসজিদু বানী জুরাইক্ব (ছহীহ বুখারী, হা/৪২০, ইবনু মাজাহ, হা/২৮৭৭)। (৩) পার্থক্যকরণের জন্য বিশেষ কোন গুণ বা বিশেষণ দ্বারা নামকরণ করা। যেমন মসজিদুল হারাম, মসজিদুল আক্বছা (সূরা বানী ইসরাইল : ১; ছহীহ বুখারী, হা/১১৮৯)। (৪) ছাহাবীদের বা তাবিঈদের মত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে নামকরণ করা। যেমন মসজিদু আবী বকর, মসজিদু উমার ইত্যাদি (যাদুল মা‘আদ)। (৫) আল্লাহ্ তাআলার গুণবাচক নাম দ্বারা নামকরণ করা। যেমন মসজিদুর রহমান, মসজিদুস সালাম (সূরা আল-জিন্ন : ১৮; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৫/২৮১-২৮৪ পৃ.; আহকামুল কুরআন, ৪/২৭৭ পৃ.; আল-মাজমূঊ, ২/২০৮ পৃ.)। কোন শিরকী বা বিদ‘আতী নাম রাখা যাবে না (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৭১৩০১)।
উক্ত নামের মধ্যে শিরকের গন্ধ আছে। পাগলা নামের সঙ্গে মাযার পূজারী, ক্ববর পূজারী, পীর পূজারী, দরবেশ পূজারী, হুজুর পূজারী ও বাবা পূজারীদের একটা গভীর সম্পর্ক আছে। এখানে ধর্মব্যবসায়ীদের স্বার্থ লুকিয়ে আছে। সাধারণ মানুষ অতি সহজে পকেটের টাকা বের করতে চায় না, কিন্তু পাগলা বাবা, দাতাবাবা, ভোলাবাবার মত বাবাদের নামে এরা খুব সহজেই বিগলিত হয়ে যায়।
দ্বিতীয়তঃ এখানে দান করলে মনের আশা তাড়াতাড়ি পূর্ণ হয়। এটাও একটি শিরকী ধারণা এবং প্রতারণা। ইসলামে এটা নিষিদ্ধ। নবী করীম (ﷺ) বলেছেন,
لَا تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلَّا إِلَى ثَلَاثَةِ مَسَاجِدَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَمَسْجِدِ الرَّسُوْلِ وَمَسْجِدِ الْأَقْصَى
‘মসজিদুল হারাম (মক্কা), মসজিদুর রাসূল (মদীনা মসজিদে নববী) এবং মসজিদুল আক্বছা (বাইতুল মাক্বদীস) এই তিনটি মাসজিদ ব্যতীত অন্য কোন মাসজিদে যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করা যাবে না’ (ছহীহ বুখারী, হা/১১৮৯)।
প্রশ্নকারী : জুবায়ের আহমাদ, পিরিজপুর, কিশোরগঞ্জ।