উত্তর : ছিয়াম ভঙ্গকারী কারণগুলো নির্ধারিত। কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহতে স্পষ্টভাবে সেগুলো উদ্ধৃত হয়েছে। আর সেগুলো হল- সহবাস, পানাহার, কিংবা যা কিছু সহবাস বা পানাহারের স্থলাভিষিক্ত হবে। যেমন স্যালাইন ইনজেকশন, হস্তমৈথুন, শিঙ্গা লাগানো, ইচ্ছাকৃত বমি করা ও হায়িয (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৩৮০২৩)। ছিয়াম ভঙ্গ করার ক্ষেত্রে হস্তমৈথুন ও বেপর্দার মধ্যে পার্থক্য হল- হস্তমৈথুন সত্তাগতভাবে ছিয়াম ভঙ্গকারী ও ছিয়ামের সাথে সাংঘর্ষিক। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘ছিয়াম আমারই জন্য। আমিই এর পূর্ণাঙ্গ প্রতিদান দেব। বান্দা আমার জন্য পানাহার ও যৌনসুখ বর্জন করে’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৮৯৪, ৭৪৯২; ছহীহ মুসলিম, হা/১১৫১)। নিঃসন্দেহে হস্তমৈথুন যৌনসুখের অন্তর্ভুক্ত, তাই সেটি সহবাস ও পানাহারের ন্যায় ছিয়াম ভঙ্গকারী। ইবনু হাজার হাইছামী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, الإستمناء مفطر بعينه ‘হস্তমৈথুন নিজেই ছিয়ামভঙ্গকারী’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিক্বহিয়্যাহ আল-কুবরা, ২/৭৩ পৃ.)।
শায়খ মুহাম্মাদ মুখতার আশ-শানক্বিত্বী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যৌনসুখ’ শব্দটিকে আল্লাহ তা‘আলা এখানে ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করেছেন। ফলে মুখ্য যৌনসুখ, যা সহবাসের মাধ্যমে অর্জিত হয় সেটি যেমন এর অন্তর্ভুক্ত, ঠিক তেমনি যে যৌনসুখ হস্তমৈথুনের মাধ্যমে অর্জিত হয় সেটিও এর অন্তর্ভুক্ত। যখন সে বীর্যপাত করে তখন তার যৌনসুখ লাভ হয়। এটিই হচ্ছে প্রধান যৌনসুখ। এ দিক থেকে সে ছিয়াম ভঙ্গকারী হিসাবে গণ্য হয়। কারণ ছিয়াম পালনকারী তার যৌনসুখকে ত্যাগ করে। সুতরাং যে ব্যক্তি হস্তমৈথুন করল সে তো আর যৌনসুখকে ত্যাগ করল না’ (শারহু যাদিল মুস্তাক্বনি‘, ৪/১০৪ পৃ.; ‘আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ, ৪/১০০ পৃ.)। পক্ষান্তরে বেপর্দা হওয়া ছিয়াম ভঙ্গকারী নয়। বরং তা গীবত, মিথ্যা ইত্যাদি গুনাহসমূহের মত একটি গুনাহ। যেগুলোর কারণে ছিয়ামের ছাওয়াব কমে যায়, কিন্তু ছিয়াম ভেঙ্গে যায় না। কখনও কখনও এত বেশি গুনাহ করা হয় যে, ছিয়ামের সম্পূর্ণ ছাওয়াব শেষ হয়ে যায়। কিন্তু ছিয়ামকে নষ্ট করে না। বরং গুনাহ সত্ত্বেও তার ছিয়াম হয়ে যায় এবং ছিয়াম পালনকারী অপরিহার্যের দায়িত্ব থেকে মুক্ত হয়ে যায় এবং তাকে ক্বাযা করতে হবে না (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-২৩২৩৫২)।
প্রশ্নকারী : শিহাব, মাদারীপুর।