উত্তর : এটা শরী‘আত সম্মত নয়। যে কোন চিকিৎসা পদ্ধতি বৈধ হওয়ার জন্য দু’টি শর্ত জরুরী। (১) পদ্ধতিটি শরী‘আতসম্মত তথা কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ মোতাবেক হতে হবে। (২) অথবা বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসাশাস্ত্র দ্বারা প্রমাণিত অর্থাৎ অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের বিবৃতি অনুযায়ী হতে হবে। অথচ আমাদের সমাজে যে পদ্ধতিতে জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীর ঝাড়ফুঁক করা হয়, তা মোটেও ইসলামী পদ্ধতি নয়। এটি কুসংস্কার বা যাদুকর্মের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং এরূপ যাদুবৃত্তি, কবিরাজি ও জ্যোতিষীপনার মাধ্যমে জন্ডিস থেকে আরোগ্য লাভের ধারণা করা কস্মিনকালেও জায়েয নয়। কারণ এই পদ্ধতি সম্পর্কে না ইসলাম বলেছে আর না কোন ডাক্তার বলেছেন। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘গণক, ভবিষ্যদ্বক্তা, যাদুকর, ভেলকিবাজ ও কবিরাজের কাছে যাওয়া জায়েয নয়। বরং তাদের থেকে বিরত থাকা এবং তাদেরকে বিরত রাখা অপরিহার্য। কেননা রাসূল (ﷺ) বলেছেন,
مَنْ أتَى عَرَّافًا فَسَأَلَهُ عَنْ شَيْءٍ، لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ أرْبَعِيْنَ لَيْلَةً
‘যে ব্যক্তি কোন গণকের কাছে আসল, অতঃপর তাকে (ভাগ্য সম্পর্কে) কিছু জিজ্ঞাসা করল এবং গণকের কথাকে সত্য বলে বিশ্বাস করল, চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার কোন ছালাত ক্ববুল হবে না’। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ব্যক্তি গণকের কাছে আসল, অতঃপর গণক যা বলল তা সত্য বলে বিশ্বাস করল, সে মূলত মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর উপর যা নাযিল করা হয়েছে তা অস্বীকার করল’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২২৩০; আবূ দাঊদ, হা/৩৯০৪; তিরমিযী, হা/১৩৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৫৩৬)। তবে প্রয়োজনে দ্বীনদার, সৎ ও শুভাকাক্সক্ষী ব্যক্তির কাছে বৈধ ঝাড়ফুঁক করার জন্য যাওয়া জায়েয (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনু বায, ৮/১৫৮ পৃ.; কিতাবু ফাতাওয়া ফিত-তাওহীদ, পৃ. ৫৪)।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ মনীরুল ইসলাম, যশোর।