উত্তর : একজন চাকরিজীবী তার কাজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা বাধ্যতামূলক। কারণ এটি তার বেতন বা উপার্জনের বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ একটি অধিকার (হক্ব)। অলসতা, গাফিলতি, ঘুম বা অপ্রয়োজনীয় কাজ যেমন নেট ব্রাউজিং ইত্যাদি বিষয় কাজের প্রতি অবহেলা হিসাবে বিবেচিত । এটি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে এবং নিয়মিত হয়, তবে তা উচিত নয়। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, وَ لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ ‘তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না....’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ১৮৮)। যদি এই হক্ব নষ্ট করা স্বল্পমাত্রায় ঘটে এবং কাজের প্রকৃত চুক্তি পূরণ হয়, তাহলে পুরো উপার্জন হারাম হবে না। তবে আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। কিন্তু যদি নিয়মিতভাবে অফিসের দায়িত্ব অবহেলা করা হয়, তা হলে এতে উপার্জনে হারামের মিশ্রণ হল বলে গণ্য হবে।
কাফ্ফারা : (ক) তওবা করা: আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমাশীল। আপনার কাজের সময়ের অপব্যবহার এবং হক্ব নষ্ট করার জন্য আন্তরিকভাবে তওবা করুন। আল্লাহ তা‘আলা ঘোষণা করেছেন, ‘তবে যে ব্যক্তি তওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তার পাপগুলোকে পুণ্যে পরিণত করেন’ (সূরা আল-ফুরক্বান: ৭০)।
(খ) ক্ষতিপূরণ দেয়া: সম্ভব হলে অফিসে যে সময় বা কাজের ক্ষতি হয়েছে, তা অতিরিক্ত সময় দিয়ে পূরণ করা। যদি ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব না হয়, তবে কাজের গুণগত মান উন্নত করার মাধ্যমে ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করুন। দায়িত্বশীলের কাছে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি শুধরে নিন। কারণ এটা বান্দার অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে (ছহীহ বুখারী,হা/২৪৪৯)। ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘বান্দার হক বান্দাকে না ফিরিয়ে দিয়ে তওবা করলে তার তওবা বিশুদ্ধ হবে না। স্বয়ং ঐ বস্তু হোক বা তার মত অন্যকিছু। যেকোন ভাবেই হোক মিটাতে হবে’ (আল-জামি‘ লিআহকামিল কুরআন, ১৮/১৯৯ পৃ.)।
(গ) দায়িত্বে মনোযোগী হওয়া: ভবিষ্যতে কাজের সময় সতর্ক থাকা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে গাফিলতি না করা। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকলের উপার্জনকে হালাল করুন এবং সহজ করে দিন।
প্রশ্নকারী: কামরুজ্জামান রনি, গাজীপুর।