উত্তর : এক্ষেত্রে ইমামের তাকবীর বা আওয়াজ সর্বত্র পৌঁছে দেয়ার জন্য উপস্থিত মুছল্লীদের মধ্য হতে কয়েকজন মুকাব্বির হবে এবং ইমামের তাকবীর মুছল্লী পর্যন্ত পৌঁছে দিবে (ছহীহ বুখারী, হা/৭১২-৭১৩; ছহীহ মুসলিম, হা/৪১৮)।
আর এটা সম্ভব না হলে প্রত্যেক তলায় মুছল্লীদের মধ্য হতে একজন যোগ্য ব্যক্তি নিজ দায়িত্বে মুক্তাদীদের ইমাম হয়ে অবশিষ্ট ছালাত সম্পূর্ণ করবেন। এটিই সর্বাধিক উত্তম পদ্ধতি। যেমন, উমার ফারুক (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে ইমামতি করা অবস্থায় ‘আবূ লুলু’ নামক একটি গোলাম খঞ্জরাঘাত দ্বারা আহত করলে, তিনি আব্দুর রহমান ইবনু আউফ (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর হাত ধরে সামনে এগিয়ে দিলেন। উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর নিকটে যারা ছিলেন শুধু তারাই ব্যাপারটি দেখতে পেলেন। আর মসজিদের শেষে যারা ছিলেন তারা ব্যাপারটি এর অধিক বুঝতে পারলেন না যে, উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর কন্ঠস্বর শুনা যাচ্ছে না। তাই তারা ‘সুবহানাল্লাহ সুবহানাল্লাহ’ বলতে লাগলেন। তখন আব্দুর রহমান ইবনু আউফ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাঁদেরকে নিয়ে সংক্ষেপে অবশিষ্ট ছালাত শেষ করলেন (বুখারী, হা/৩৭০০)। এটাও সম্ভব না হলে মুক্তাদীরা একাকী নিজ নিজ ছালাত সম্পূর্ণ করবেন। যেমনটি মাসবূক্ব তথা ছালাত ছুটে যাওয়া ব্যক্তিগণ ইমামের সালাম ফিরানোর পর একাকী অবশিষ্ট ছালাত আদায় করে থাকেন। যেমন, মু‘আবিয়্যাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে ইমামতি করা অবস্থায় আক্রমণ করা হলে লোকেরা নিজে নিজে ছালাত সম্পূর্ণ করেছিলেন (আশ-শারহুল মুমতি’, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৩৪১-৩৪৩; ফিকহুস সুন্নাহ্ উর্দু, পৃ. ১৫৬)।
তবে জুমু‘আর ছালাতের বিষয়টি একটু স্বতন্ত্র। যদি এক রাক‘আত সম্পূর্ণ হওয়ার পর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়, সেক্ষেত্রে বাকি এক রাক‘আত কোন উপযুক্ত মুক্তাদীর ইমামতিত্বে অথবা একাকী আদায় করে নিলেই হবে। যেমন, মাসবূক্ব বা ছালাত ছুটে যাওয়া ব্যক্তিগণ করে থাকেন। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, مَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنْ الصَّلَاةِ فَقَدْ أَدْرَكَ الصَّلَاةَ ‘যে ব্যক্তি কোন ছালাতের এক রাক‘আত পেল, সে পূর্ণাঙ্গ ছালাত পেয়ে গেল’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৮০; ছহীহ মুসলিম, হা/৬০৭)।
আর যদি প্রথম রাক‘আতেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে তারা জুমু‘আর পরিবর্তে যোহর আদায় করবেন। পক্ষান্তরে যদি ছালাত সমাপ্ত হওয়ার পূর্বেই বিদ্যুৎ চলে আসে বা গোলযোগ ঠিক হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে মুক্তাদীগণ চাইলে নিজের অবস্থাতেই অবশিষ্ট থাকতে পারে আবার চাইলে ইমামের সঙ্গে যুক্ত হতেও পারে (আল-মাজমূঊ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ২০৯; মাজাল্লাতুল বুহুছুল ইসলামিয়্যাহ, ৬১তম খণ্ড, পৃ. ৮৩; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ১২তম খণ্ড, পৃ. ৩৩১-৩৩২; আশ-শারহুল মুমতি‘, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৩৪১-৩৪৩ ও ২য় খণ্ড, পৃ. ৩১৪; লিক্বাউল বাব আল-মাফতূহ্, লিক্বা নং-১৯১; ফিকহুস সুন্নাহ্ উর্দূ, পৃ. ১৫৬; ইসলাম সাওয়াল জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৭১২৩১, ২২৯৯৭৩; ফাতাওয়া আল-লাজনাতুদ্ দায়িমাহ, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৪০-৩৪১)।
প্রশ্নকারী : আবু তাহের, করিমপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।