মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২০ অপরাহ্ন
উত্তর : ‘মানহাজ’ (مَنْهَج) অর্থ পথ, পন্থা, পদ্ধতি, প্রশস্ত রাস্তা, প্রোগ্রাম, কার্যক্রম, কারিকুলাম ইত্যাদি (মুসলিম হা/২৪৮৪; ইবনু মাজাহ হা/৩৯২০; মায়েদাহ ৪৮; আহমাদ হা/১৮৪৩০)। ‘একজন মুসলিমের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যে ইসলামী আদর্শ, রীতি-নীতি বা পদ্ধতি অনুসরণ করে চলে, তাকেই ‘মানহাজ’ বলে। আর একজন মুসলিম ব্যক্তির জীবনের সর্বক্ষেত্রেই যথা, আক্বীদা-বিশ্বাস, ইবাদত-বন্দেগী, চাল-চলন, আচার-ব্যবহার এবং লেনদেন সবকিছুতেই সালাফী মানহাজ প্রযোজ্য’ (ড. ছালেহ ইবনু ফাওযান, আল-আজওয়াবাতুল মুফীদাহ ‘আন আসইলাতিল মানাহিজিল জাদীদাহ, প্রশ্ন নং-৪৪)।

আর ‘সালাফী মানহাজ’-এর পরিচয় হল- ‘সালাফ’ শব্দের আভিধানিক অর্থ পূর্ববর্তী, পূর্বসূরি, অগ্রবর্তী, পূর্বপুরুষ ইত্যাদি (সূরা আয-যুখরুফ : ৫৬; সূরা আন-নিসা : ২৩; ছহীহ বুখারী হা/৬২৮৬)। পারিভাষিক অর্থে, ছাহাবী, তাবিঈ ও তাবি‘ তাবিঈগণকে ‘সালাফ’ বলা হয়। আর যারা নিষ্ঠার সাথে তাঁদের অনুসরণ করেন, তাঁদের পথ ও পদ্ধতির উপর অটল থাকেন, তাঁদেরকে ‘সালাফী’ বলা হয়। যেমন রাসুলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

خَيْرُ النَّاسِ قَرْنِيْ ثُمَّ الَّذِيْنَ يَلُوْنَهُمْ ثُمَّ الَّذِيْنَ يَلُوْنَهُمْ

‘আমার যুগের লোকেরাই সর্বোত্তম ব্যক্তি (ছাহাবীরাগণ)। অতঃপর যারা তাঁদের নিকটবর্তী (তাবিঈগণ)। অতঃপর যারা তাঁদের নিকটবর্তী (তাবি‘ তাবিঈগণ).....’ (ছহীহ বুখারী, হা/২৬৫২, ৩৬৫১, ৬৪২৯, ৬৬৫৮; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৩৩)। এ প্রসঙ্গে শায়খুল ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ইমাম আবুল মুযাফফার সাম‘আনী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘আমরা সুন্নাতের অনুসরণ করতে আদিষ্ট হয়েছি এবং বিদ‘আত হতে আমাদেরকে নিষেধ ও তিরস্কার করা হয়েছে। সুতরাং আহলুস সুন্নাহর প্রতীক হল, সালাফে ছালিহীনের অনুসরণ করা এবং প্রত্যেক নব উদ্ভূত ও বিদ‘আতকে বর্জন করা’ (ছাওনুল মানত্বিক, পৃ. ১৫৮)।  

অতএব ‘সালাফী মানহাজ’ বলতে পূর্বসূরীদের তরীকাকে বুঝায়। অর্থাৎ ছাহাবী ও তাবিঈগণ যে পথ, পন্থা, পদ্ধতি ও রীতি-নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন, তাকেই ‘সালাফী মানহাজ’ বলা হয়। আল্লামা সাফ্ফারীনী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘সালাফদের মানহাজ বলতে উদ্দেশ্য হল- যে আদর্শের উপর ছাহাবায়ে কিরামগণ, তাবিঈগণ ও তাবি‘ তাবিঈগণ ছিলেন এবং দ্বীনের সেই ইমামগণ, যাদের ইমাম হওয়ার ব্যাপারে সাক্ষী প্রদান করা হয়েছে, দ্বীনে তাঁদের বিশাল মর্যাদা বিদিত হয়েছে এবং তাঁদের বাণীকে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল যুগের মানুষই সাদরে গ্রহণ করেছে। তারা নয়, যাদেরকে বিদ‘আতী আখ্যায়িত করা হয়েছে অথবা যারা অসন্তোষজনক উপাধি নিয়ে প্রসিদ্ধ হয়েছে। যেমন, খাওয়ারিজ, রাওয়াফিয, ক্বাদারিয়্যাহ, মুরজিয়্যাহ, জাবারিয়্যাহ, জাহমিয়্যাহ, মু‘তাযিলাহ, কারামিয়্যাহ প্রভৃতি সম্প্রদায়’ (লাওয়ামিঊল আনওয়ার, ১ম খণ্ড, পৃ. ২০)।

আল্লাহ তা‘আলা তাঁদেরকেই শ্রেষ্ঠ উম্মত বলেছেন (আলে ইমরান ১১০)। তাই সর্বক্ষেত্রে তাঁদের অনুসরণ করলে আমরা হেদায়াত পাব, অন্যথা পরিণাম জাহান্নাম (বাক্বারাহ ১৩৭; নিসা ১১৫)। এ কারণেই আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে ছিরাতে মুস্তাক্বীম চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন আমরা বলি, اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (৬) صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ ‘আপনি আমাদেরকে সোজা-সরল পথে পরিচালিত করুন, তাঁদের পথে- যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন’ (সূরা ফাতিহা ৬-৭)। আল্লাহ যাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, তাঁরা হলেন, নবীগণ, ছিদ্দীক্বগণ, শহীদগণ এবং সৎ বান্দাগণ। আর তাদের সান্নিধ্য কতই না উত্তম। এই অনুগ্রহ সরাসরি আল্লাহ্র পক্ষ থেকে (সূরা নিসা ৬৯-৭০)। তাই শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, أَمَرَ بِسُؤَالِهِ الْهِدَايَةَ إلَى صِرَاطِهِمْ ‘আল্লাহ তা‘আলা তাঁদের পথের আলোকেই হেদায়াত চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন’ (ফাতাওয়া ইবনে তায়মিয়াহ ২০/৫০০ পৃঃ)।


প্রশ্নকারী : আল-মামুন, কানসাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।





প্রশ্ন (৪) : কুরআন এবং ছহীহ হাদীছে কয়টি আসমান ও কয়টি যমীনের কথা বলা হয়েছে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৫) : ইলিয়াসী তাবলীগের ফাযায়েলে আমল বইয়ে বলা হয়েছে, আদম (আলাইহিস সালাম) হিন্দুস্তান থেকে পায়ে হেঁটে এক হাযার বার হজ্জ করেছেন (ফাজায়েলে হজ্জ, পৃ.দ ৪০)। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১০) : এক রাক‘আত বিতর পড়লে তাহাজ্জুদ ছালাত সর্বনিম্ন কত রাক‘আত পড়া যায়? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১০) : শত্রুতার জের ধরে যদি কোন মানুষকে মেরে ফেলার জন্য কোন পয়জন খাওয়ানো হয়, তাহলে জীবন বাঁচানোর জন্য তাবীয ব্যাবহার করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৭) :  জনৈক ইমাম বলেন, ক্বিয়ামতের দিন পৃথিবীর সকল মুয়াযযিন বেলাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর অনুসরণ করবেন এবং বেলাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। উক্ত বক্তব্যের দলীল আছে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : মসজিদের কাতারের মাঝে পিলার থাকলে ঐ কাতারে ছালাত আদায় করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২১) : জনৈক আলেম বলেন, কুরবানী দিতে অক্ষম ব্যক্তিগণ কুরবানীর খালেছ নিয়তে যিলহজ্জ মাসের চাঁদ ওঠার পর নখ ও চুল না কাটলে সে আল্লাহর নিকটে তা পূর্ণাঙ্গ কুরবানী হিসাবে গৃহীত হবে। তিনি দলীল হিসাবে মিশকাত হা/১৪৭৯ পেশ করেছেন। সেই সাথে এটাও বলেছেন যে, শু‘আইব আরনাঊত্ব (রাহিমাহুল্লাহ) অত্র হাদীছটিকে হাসান বলেছেন। তবে শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) অত্র হাদীছটিকে যঈফ বলেছেন। এখন আমরা দুই শায়খের মধ্যে কার তাহক্বীক্বকে প্রাধান্য দিব? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪২) : রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বশেষ যে খাবার খেয়েছেন, তার মধ্যে পেঁয়াজ ছিল অন্যতম। বর্ণনাটি কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪২) : শরীরের অবয়ব প্রকাশ পায় এমন পাতলা কাপড় পরিধান করে নারী-পুরুষ ছালাত আদায় করলে ছালাত হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৬) : বাবার অনুমতি ব্যতীত ছেলে ও মেয়ে প্রেম করে বিয়ে করে। বিবাহের অনুষ্ঠানে মেয়ের বড় বোন ও বাগিনা উপস্থিত ছিল। এমনকি বিবাহের পর তারা পালিয়েও যায়নি বরং নিজ নিজ বাড়ি চলে যায়। পরবর্তীতে উভয়ের পিতা-মাতার সম্মতি ও আত্মীয়-স্বজন নিয়ে মেয়ের বাড়ি থেকে মেয়েকে অনুষ্ঠান করে আনা হয় এবং পরের দিন ওয়ালীমা করা হয়। প্রশ্ন হল- তাদের এই বিবাহ কি বৈধ হয়েছে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৭) : ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং -এর কাজ করার বিধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯): জনৈক ব্যক্তি পূর্বে হানাফী মাযহাব অনুসরণ করতেন। পরবর্তীতে সালাফী মানহাজের আলোকে চলার চেষ্টা করছেন। প্রশ্ন হল, সালাফী মানহাজের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার জন্য কিভাবে অনুসরণ করা উচিত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ