উত্তর : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, مَنۡ ذَا الَّذِیۡ یُقۡرِضُ اللّٰہَ قَرۡضًا حَسَنًا فَیُضٰعِفَہٗ لَہٗ وَ لَہٗۤ اَجۡرٌ کَرِیۡمٌ ‘কে আছ যে আল্লাহকে উত্তম ঋণ দিবে? অতঃপর তিনি তার জন্য তা বহুগুণ বৃদ্ধি করে দিবেন? আর তার জন্য রয়েছে উত্তম পুরস্কার’ (সূরা আল-হাদীদ: ১১)। উক্ত আয়াতে বর্ণিত ‘কর্যে হাসানাহ’-এর অর্থ বর্ণনায় ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও অন্য সালাফগণ বলেন, الْإِنْفَاقُ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ ‘আল্লাহর পথে ব্যয় করা’ (ইবনু কাছীর, তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ৮/১৪ পৃ.)। আল্লাহর পথে আর্থিক ব্যয় ছাড়াও সময়, শ্রম ও ইলমের ব্যয় এবং অন্যান্য সকল প্রকার ব্যয়ের পুরস্কার সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘কোন্ সে ব্যক্তি যে আল্লাহকে উত্তম ঋণ দিবে, অতঃপর তিনি তার বিনিময়ে তাকে বহুগুণ বেশী দান করবেন? বস্তুতঃ আল্লাহই রূযী সংকুচিত করেন ও প্রশস্ত করেন। আর তাঁরই দিকে তোমরা ফিরে যাবে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ২৪৫)। দুনিয়াতে আল্লাহ বান্দার রূযী কমবেশী করেন এবং আখেরাতে তার আমল ও তার খুলূছিয়াতের তারতম্যের ভিত্তিতে পুরস্কারে তারতম্য করেন। আয়াতটিতে আল্লাহর পথে সকল প্রকার ব্যয় এবং বিশেষ করে জিহাদের জন্য ব্যয়ে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। কেননা জিহাদ হল ইসলামের চূড়া (ইবনু মাজাহ, হা/৩৯৭৩; তিরমিযী, হা/২৬১৬; আহমাদ, হা/২২০৬৯)। চূড়াবিহীন গৃহের যে অবস্থা, জিহাদবিহীন দ্বীনের সেই অবস্থা।
ইসলামের প্রথম দিকে নাযিল হওয়া সূরা আল-মুযযাম্মিলে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ اَقۡرِضُوا اللّٰہَ قَرۡضًا حَسَنًا ‘তোমরা ছালাত কায়েম কর ও যাকাত আদায় কর এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও’ (সূরা আল-মুযযাম্মিল: ২০)। মাদানী জীবনে একই মর্মে সূরা বাক্বারাহ ২৪৫ আয়াত নাযিল হলে কাফের-মুশরিকরা ঠাট্টা করে বলে, আল্লাহ ফকীর। আমরা ধনী। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ তাদের কথা শুনেছেন, যারা বলে আল্লাহ ফকীর ও আমরা ধনী। তারা যা বলে এবং তারা যে অন্যায়ভাবে নবীদের হত্যা করেছিল, সবই আমরা লিখে রাখব এবং তাদেরকে (ক্বিয়ামতের দিন) বলব, দহনজ্বালাকর শাস্তির স্বাদ আস্বাদন কর’ (সূরা আলে ইমরান: ১৮১)। ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, যখন এই আয়াত নাযিল হয়, তখন আবূ দাহদাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আল্লাহ কি আমাদের নিকট ঋণ চাচ্ছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, আবূ দাহদাহর জন্য জান্নাতে কতই না অধিক খেজুরের ঝুলন্ত কাঁদি রয়েছে!’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৯৬৫)। বর্ণিত আয়াতে মুমিনকে তার জান-মাল আল্লাহর পথে ব্যয়ের মাধ্যমে তাঁকে উত্তম ঋণ দানের আহ্বান জানানো হয়েছে। যার বিনিময়ে আল্লাহ তাকে মহা পুরস্কারে ভূষিত করবেন।
প্রশ্নকারী : আব্দুর রহমান, বরিশাল।