উত্তর : ছালাত পরিত্যাগকারীর যাকাত, ছিয়াম, হজ্জ কোন আমলই কবুল হবে না। বরং সব আমল বাতিল হবে (ত্বাবারাণী, আল-আওসাত্ব হা/১৮৫৯, সনদ ছহীহ)। বুরাইদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, مَنْ تَرَكَ صَلاَةَ الْعَصْرِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ ‘যে ব্যক্তি আছরের ছালাত পরিত্যাগ করে তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৫৩; মিশকাত, হা/৫৯৫)। ‘তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়’-এর অর্থ হল, তা বাতিল হয়ে যায় এবং তা তার কোন কাজে আসবে না। এ হাদীছ প্রমাণ করে যে, ছালাত পরিত্যাগকারীর কোন আমল আল্লাহ কবুল করেন না এবং ছালাত ত্যাগকারী তার আমল দ্বারা কোনভাবে উপকৃত হবে না। তার কোন আমল আল্লাহর কাছে উত্তোলন করা হবে না (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৪৯৬৯৮)।
শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ)-কে ছালাত পরিত্যাগকারীর ছিয়াম রাখার হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ছালাত পরিত্যাগকারীরা শুদ্ধ নয় এবং তা কবুলযোগ্য নয়। কারণ ছালাত ত্যাগকারী কাফের ও মুরতাদ। তিনি দলীল হিসাবে নিম্নোক্ত আয়াত ও হাদীছগুলো পেশ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
فَاِنۡ تَابُوۡا وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَوُا الزَّکٰوۃَ فَاِخۡوَانُکُمۡ فِی الدِّیۡنِ
‘আর যদি তারা তওবা করে, ছালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় তবে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই’ (সূরা আত-তওবাহ : ১১)। নবী বলেছেন, بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ وَالْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلاةِ ‘কোন ব্যক্তির মাঝে এবং শিরক ও কুফরের মাঝে সংযোগ হচ্ছে ছালাত বর্জন করা’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৮২)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আরো বলেন, ‘আমাদের ও তাদের মধ্যে চুক্তি হলো ছালাতের। সুতরাং যে ব্যক্তি ছালাত ত্যাগ করল, সে কুফরি করল’ (তিরমিযী, হা/২৬২১, সনদ ছহীহ)। ছাহাবীগণও এই অভিমত পোষণ করতেন। প্রসিদ্ধ তাবেয়ী আব্দুল্লাহ ইবনে শাক্বিক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, كَانَ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ ﷺ لَا يَرَوْنَ شَيْئًا مِنَ الْأَعْمَالِ تَرْكَهُ كُفْرٌ غَيْرَ الصَّلَاةِ. ‘নবী করীম (ﷺ)-এর ছাহাবীগণ ছালাত ছাড়া অন্য কোন আমল ত্যাগ করাকে কুফরি মনে করতেন না’ (তিরমিযী, হা/২৬২২; মিশকাত, হা/৫৭৯, সনদ ছহীহ)। উক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায়, যদি কোন ব্যক্তি ছিয়াম রাখে কিন্তু ছালাত না পড়ে তবে তার ছিয়াম প্রত্যাখ্যাত, গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ্র কাছে কোন উপকারে আসবে না (ফাতাওয়াছ ছিয়াম, পৃ. ৮৭)।
প্রশ্নকারী : জাহিদুল ইসলাম, দিনাজপুর।