উত্তর : উক্ত দাবী সঠিক নয়, বরং অজ্ঞতাপ্রসূত দাবী। কারণ ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ‘দাজ্জাল ‘খুরাসানের’ একটি এলাকা থেকে আবির্ভূত হবে, যা বর্তমানে ‘ইরানে’ অবস্থিত। সুনির্দিষ্টভাবে এসেছে যে, খুরাসানের ‘আছবাহান’ নামক এলাকা থেকে বের হবে। এটা ইরানের একটি অঞ্চল, যা তেহরান থেকে দক্ষিণে ৩৪০ কি.মি. দূরে অবস্থিত’ (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৮৮০৬)। আবূ বকর ছিদ্দীক্ব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন,
اَلدَّجَّالُ يَخْرُجُ مِنْ أَرْضٍ بِالْمَشْرِقِ يُقَالُ لَهَا خُرَاسَانُ يَتْبَعُهُ أَقْوَامٌ كَأَنَّ وُجُوْهَهُمْ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ
‘প্রাচ্যের ‘খোরাসান’ অঞ্চল হতে দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। এমন সব জাতি তার অনুসরণ করবে, যাদের মুখাবয়ব হবে স্তরবিশিষ্ট ঢালের মত চ্যাপ্টা ও মাংসল’ (তিরমিযী, হা/২২৩৭, ‘দাজ্জাল কোথায় থেকে আবির্ভূত হবে’ অনুচ্ছেদ; ইবনু মাজাহ, হা/৪০৭২; আহমাদ, হা/১২, ৩৩; সনদ হাসান ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৫৯১)। অন্য হাদীছে রাসূল (ﷺ) বলেন,
يَخْرُجُ الدَّجَّالُ مِنْ يَهُوْدِيَّةِ أَصْبَهَانَ مَعَهُ سَبْعُوْنَ أَلْفًا مِنَ الْيَهُوْدِ
‘দাজ্জাল আছবাহানের ‘ইয়াহূদিয়্যাহ’ নামক অঞ্চল থেকে বের হবে। আর তার সাথে থাকবে সত্তর হাজার ইহুদী’। একই অর্থের হাদীছ আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতেও বর্ণিত হয়েছে (মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৩৪৪, ২৪৪৬৭, সনদ হাসান; ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৪৪; ফাৎহুল বারী, ১৩তম খ-, পৃ. ৩৪০)। তিনি আরেকটি হাদীছে বলেন,
إِنَّهُ خَارِجٌ خَلَّةً بَيْنَ الشَّأْمِ وَالْعِرَاقِ فَعَاثَ يَمِيْنًا وَعَاثَ شِمَالًا يَا عِبَادَ اللهِ فَاثْبُتُوْا
‘সে ইরাক্ব ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী রাস্তা হতে আবির্ভূত হবে। সে ডানে-বামে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। সুতরাং হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা অটল থাকবে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৩৭; তিরমিযী, হা/২২৪০; ইবনু মাজাহ, হা/৪০৭৫)।
খুরাসান শহরের-ই একটি অঞ্চলের নাম আছবাহান। হাফিয ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘সর্বপ্রথম দাজ্জাল আছবাহানের ‘ইয়াহূদিয়্যাহ’ নামক মহল্লা থেকে আবির্ভূত হবে’ (আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ, পৃ. ৫৯)। হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এই অঞ্চলটি ইয়াহুদী প্রধান হওয়ার কারণেই এটির ‘ইয়াহুদিয়্যাহ’ নামকরণ করা হয়েছে’ (ফাৎহুল বারী, ১৩তম খ-, পৃ. ৯২, ৩৪০)। শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘শায়খ মাশহূর হাসান সালমান বলেছেন, ‘অসংখ্য ছহীহ হাদীছ ও আছার থেকে প্রতীয়মাণ হয় যে, দাজ্জাল ‘খুরাসান এবং ‘আছবাহান’ থেকে আবির্ভূত হবে এবং তার অবতরণ হবে ‘খুজ’ এবং ‘কিরমান’ থেকে। আর এ সমস্ত অঞ্চলের সবগুলোই বর্তমানে ইরানে অবস্থিত (বুলদানুল খিলাফাতিশ শারক্বিয়্যাহ, পৃ. ৯৪-৯৫; মু‘জামুল বুলদান, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৩৩; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১২৯১৬৪)।
প্রশ্নকারী : আব্দুল্লাহ তাহসীন, বান্দরবান।