উত্তর : বৃষ্টি প্রার্থনা ও বন্ধের জন্য হলে জুমু‘আর খুতবা চলাকালীন হাত তুলে দু‘আ করা শরী‘আতসম্মত। আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যুগে একবার লোকেরা অনাবৃষ্টিতে পতিত হল। সে সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একবার মিম্বারে দাঁড়িয়ে জুমু‘আর খুৎবা দিচ্ছিলেন। তখন এক বেদুঈন দাঁড়িয়ে বলল, ‘হে আল্লাহ রাসূল (ﷺ)! (অনাবৃষ্টিতে) ধন সম্পদ বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পরিবার পরিজন ক্ষুধার্ত। আপনি আল্লাহর কাছে দু‘আ করুন, তিনি যেন আমাদের বৃষ্টি দান করেন। তখন রাসূল (ﷺ) (দু‘আর জন্য) তাঁর দু’হাত তুললেন। সে সময় আকাশে একখণ্ড মেঘও ছিলনা। বর্ণনাকারী বলেন, হঠাৎ পাহাড়ের মত বহু মেঘ একত্রিত হল। রাসূল (ﷺ) মিম্বার থেকে অবতরনের পূর্বে বৃষ্টি শুরু হল। এমনকি আমি দেখলাম, নবী (ﷺ)-এর দাঁড়ি বেয়ে বৃষ্টির পানি ঝরছে। বর্ণনাকারী আরো বলেন সেদিন, তার পরের দিন, তার পরবর্তী দিন এবং পরবর্তী জুমু‘আহ পর্যন্ত বৃষ্টি হল...’ (ছহীহ বুখারী, হা/৯৭৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১৯৫২)।
রাবী বলেন, তখন উক্ত গ্রাম্য ব্যক্তি অথবা অন্য এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললা, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! (বৃষ্টির আধিক্য হেতু) ঘর-বাড়ী তো ধীরে ধীরে বিধবস্ত হয়ে যাচ্ছে এবং গবাদী পশুগুলো ডুবে যাচ্ছে। অতএব আপনি আমাদের জন্য আল্লাহর সমীপে দু‘আ করুন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার হস্তদ্বয় উঠালেন এবং বললেন, হে আল্লাহ! আপনি আমাদের আশে পাশে বৃষ্টি বর্ষণ করুন, আমাদের উপরে নয়। তিনি তার হাত দ্বারা মেঘমালার কোন খণ্ডের দিকে ইশারা করতেই তা এমনভাবে বিক্ষিপ্ত হয়ে গেল যাতে মদীনার (আকাশ) একটি বড় গর্তের মত দেখাচ্ছিল। (অর্থাৎ মদীনার আকাশের চতুষ্পার্শে মেঘমালা এমনভাবে বিস্তৃত হলো যে, মদীনা বরাবর আকাশ একটি গোলাকার গর্তের ন্যায় মেঘমুক্ত হলো এবং মাঠে ময়দানে বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হচ্ছিল আর মদীনার আশ-পাশ থেকে যারাই আসছিল তারাই বৃষ্টির আধিক্যের সংবাদ দিচ্ছিল (ছহীহ বুখারী, হা/৯৯৩; ছহীহ মুসলিম, হা/১৯৫৫)।
প্রশ্নকারী : সুফিয়ান, দিঘড়ী, সামশেরগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ, ভারত।