উত্তর : ছাদাক্বাহ অর্থ হল, যাকাত, দান, খয়রাত এবং নেকীর কাজ। অন্যের জন্য কল্যাণ, উপকার বা সুবিধা পৌঁছে দেয়াকে ছাদাক্বাহ বলা হয় (ইবনু তায়মিয়াহ, শারহুল আরবাঈন আন-নাবুবিয়্যাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২০৩)। ছাদাক্বাহ শব্দটি ফরয যাকাত এবং সাধারণ ছাদাক্বাহ (দান) দু’টিকেই শামিল করে (আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাতুল কুয়েতিয়্যাহ, ২৬তম খণ্ড, পৃ. ৩২৩)। এ দৃষ্টিকোণ থেকে ছাদাক্বাহ দু’ প্রকার। (১). ফরয ছাদাক্বাহ। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ ‘নিশ্চয় ফকীর ও মিসকীনদের জন্য যাকাতের মাল’ (সুরা আত-তওবা : ৬০)। (২). নফল বা সাধারণ ছাদাক্বাহ। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, مَنْ تَصَدَّقَ بِعَدْلِ تَمْرَةٍ مِنْ كَسْبٍ طَيِّبٍ ‘যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন হতে খেজুর ছাদাক্বাহ করবে’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৪১০)। তবে এ দু’প্রকার ছাদাক্বার মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে। যেমন- ১. যাকাত শব্দটি খাছ আর ছাদাক্বাহ শব্দটি ‘আম (শারহুল আরবাঈন আন-নাবুবিয়্যাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২০৪)। ২. যাকাত শব্দটি শুধুমাত্র নিছাব পরিমাণ সম্পদের সাথে সংশ্লিষ্ট (ছহীহ বুখারী, হা/১৪৮৪; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩১০)। কিন্তু ছাদাক্বাহ শব্দটি সম্পদসহ সকল নেক কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট (ছহীহ বুখারী, হা/৬০২১; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৭৫)। আর ছাদাক্বাহ পাওয়ার হক্বদার হল আট শ্রেনীর মানুষ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡہَا وَ الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُہُمۡ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ
‘ছাদাক্বাহ হল কেবল ফকীর, মিসকীন, যাকাত আদায়কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক্ব এবং তা দাস-মুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে (ব্যয়ের জন্য) আর মুসাফিরের জন্য। এটা আল্লাহ কতৃক নির্ধারিত ফরয। আর আল্লাহ তা‘আলা সর্বজ্ঞ, মহাবিজ্ঞানী’ (সূরা আত-তওবা : ৬০)।
তবে এ ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি যদি নিজে অসহায় হয় তাহলে সে নিজেই ছাদাক্বার বেশি হক্বদার (আবূ দাঊদ, হা/১৬৯১; নাসাঈ, হা/২৫৩৫)। অতঃপর গরীব আত্মীয়-স্বজন (ছহীহ বুখারী, হা/২৭৬৯, ৫৬১১; ছহীহ মুসলিম, হা/৯৯৮) এবং মিসকীন (ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৫৫; নাসাঈ, হা/২৬০৪)।
প্রশ্নকারী : আব্দুল হান্নান, দিনাজপুর।