উত্তর : মালিক ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে অগ্রীম যে সিকিউরিটি নিয়ে থাকে, তা দুই প্রকার। যথা: (১) অগ্রীম ভাড়া হিসাবে ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে এককালীন অ্যাডভান্স সিকিউরিটি মানি গ্রহণ করা। যা পরবর্তীতে প্রতি মাসে কিস্তি পদ্ধতিতে চুক্তির শেষ মেয়াদ পর্যন্ত কিছু কিছু করে ভাড়া হিসাবে কাটা হয়। এতে কোন সমস্যা নেই। মূলত এখানে ভাড়ার কিছু অংশ অগ্রীম নেয়া হয়ে থাকে। যেমন বিলম্ব করে ভাড়া দেয়া জায়েয, ঠিক তেমনি অগ্রীম ভাড়া দেয়াও জায়েয। একই সঙ্গে ৭-৮ বছরের ভাড়া গ্রহণ করা বিশুদ্ধ এবং উভয়ের সম্মতিক্রমে সেটি কিস্তি পদ্ধতিতে পরিশোধ করাও জায়েয (মানারুস সাবীল, ১/৪২৩ পৃ.)।
(২) অগ্রীম ভাড়া হিসাবে গ্রহণ না করা। বরং তা সিকিউরিটি মানি হিসাবে গ্রহণ করা। মালিক যামানত হিসাবে ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে এই শর্তে ঐ টাকা গ্রহণ করে থাকে যে, ভাড়ার চুক্তি শেষে তা আবার ভাড়াটিয়াকে ফেরত দিয়ে দিবে। এক্ষেত্রে যেহেতু টাকাটা মালিকের কাছে আমানতস্বরূপ জমা রাখা হয়। সুতরাং তা নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করা বা খরচ করা বৈধ হবে না। যদি মালিক ঐ টাকা খরচ করে, তাহলে সেটি ঋণের আওতায় চলে আসবে। অথচ শরী‘আতের দৃষ্টিতে ভাড়া ও ঋণকে একত্রিত করা জায়েয নয়। কারণ রাসূল (ﷺ) বলেছেন, لَا يَحِلُّ سَلَفٌ وَبَيْعٌ ‘ঋণ ও বিক্রয় একত্রে জায়েয নয়’ (আবূ দাঊদ, হা/৩৫০৪; তিরমিযী, হা/১২৩৪; নাসাঈ, হা/৪৬১১, সনদ হাসান ছহীহ)। আর ভাড়া এক প্রকারের লাভজনক ব্যবসা। সে জন্য অধিকাংশ আলেম ভাড়ার সঙ্গে বিক্রয়ের চুক্তিকে হারাম ঘোষণা করেছেন। টাকাটা মালিকের কাছে থাকলেও আসলে এর মালিক কিন্তু ভাড়াটিয়া ব্যক্তি। সুতরাং সিকিউরিটি মানির যাকাত ভাড়াটিয়া প্রদান করবে। অন্যদিকে অ্যাডভান্স হিসাবে প্রদানকৃত টাকার মালিকানা ভাড়াটিয়া থেকে ভাড়াদাতার কাছে চলে যায়। তাই এর যাকাত ভাড়াদাতা প্রদান করবে (ক্বারারাত ওয়া তাওছি‘আত মাজমাউল ফিক্বহিল ইসলামী, পৃ. ২৬৫)।
সিকিউরিটি মানির উপর ভিত্তি করে ভাড়া কমবেশি করা জায়েয নয়। অর্থাৎ সিকিউরিটি মানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ভাড়া কমে যাওয়ার যে প্রচলন আমাদের সমাজে রয়েছে, তা জায়েয নয় (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৩৪৩০২৫)। ‘ইসলাম ওয়েব’-এর আলেমগণ বলেন, ‘ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে সিকিউরিটি মানি নেয়া বৈধ, কিন্তু তার দ্বারা লাভবান হওয়া বা উপকৃত হওয়া হারাম’ (ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-২৬১৪৭৫)।
প্রশ্নকারী : সামিঊল ইসলাম, কুলপাড়া, রাজশাহী।