উত্তর : মুসলিম ও কাফেরের মাঝে পার্থক্যকারী ইবাদত হল ছালাত (মুসলিম হা/৮২)। তাই ছাহাবায়ে কেরাম ছালাত পরিত্যাগকারী ব্যক্তিকে কাফের মনে করতেন (তিরমিযী, হা/২৬২২; সনদ ছহীহ)। তাই এদের সাথে সম্পর্ক রাখা উচিত নয়।
ছালাত ত্যাগকারীর বিধান সম্পর্কে আলেমদের মধ্যে সামান্য মতপার্থক্য থাকলেও সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মতানুযায়ী ছালাত ত্যাগকারী নিশ্চিতরূপে কাফির ও মুশরিক। চার মাযহাবের আলেমগণ বিভিন্ন বিষয়ে মতানৈক্য করলেও ছালাত ত্যাগকারীর বিধান সম্পর্কে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। চার মাযহাবের সর্বসম্মতিক্রমে ছালাত ত্যাগকারী কাফির। শাফিঈ ও মালিকী মাযহাবের মতানুযায়ী ছালাত ত্যাগকারীর শাস্তি হত্যা এবং মৃত্যুর পর তাকে গোসল দেয়া যাবে না, তার উপর জানাযার ছালাত আদায় করা যাবে না এবং তাকে মুসলিমদের ক্ববরে দাফন করাও যাবে না। হাম্বালী মাযহাবের মতানুযায়ী ছালাত ত্যাগকারীকে তিনদিন আদেশ দিতে হবে এবং বলতে হবে যে, ছালাত আদায় না করলে তোমাকে হত্যা করা হবে; এর পরেও যদি সে ছালাত আদায় না করে তাহলে তাকে তিনদিন বন্দি করে রাখতে হবে, এর মধ্যে তাওবাহ করলে ভালো নতুবা তাকে মুরতাদ বা স্বধর্মত্যাগী হিসাবে হত্যা করতে হবে। হানাফী মাযহাবের মতানুযায়ীও তাকে স্বধর্মত্যাগী হিসাবে হত্যা করতে হবে’ (ফিক্বহ বিশ্বকোষ, ২৭/৫৩-৫৪ পৃ.; আল-মুগনী, ২/১৫৬ পৃ.)।
‘ইসলাম ওয়েব’-এর আলেমগণ বলেন, ‘অন্যান্য কাফিরের ন্যায় প্রয়োজনে ও ধর্মীয় স্বার্থে ছালাত ত্যাগকারীর বাড়িতে হালাল খাদ্য খাওয়া জায়েয’ (ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-১৩১৬২৯, ১১০৭৯, ২৬৭৮৬, ৩৯১৩৭, ৬৫১৮৮)। আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, একজন ইয়াহুদী রাসূল (ﷺ)-কে দাওয়াত করেছিলেন, যবের রুটি ও পুরাতন চর্বির তেল দ্বারা তৈরিকৃত তরকারী খাওয়ার জন্য। তিনি তার দাওয়াত ক্ববুল করেছিলেন (মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৮৬০; সনদ ছহীহ, ইরওয়াউল গালীল, ১/৭১ পৃ.)। তবে তার যব্হকৃত পশুর গোশত খাওয়া জায়েয নয়। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) ও সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটির আলেমগণ বলেন, সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মতানুযায়ী ছালাত ত্যাগকারী কাফির ও মুরতাদ হওয়ায় তার যব্হকৃত পশুর গোশত খাওয়া জায়েয নয় (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ১০/২৭৪; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ২২/৩৬৯ ও ৪৪৫ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : তারেক, বাঘা, রাজশাহী।