উত্তর : যে জিনিসগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হারাম কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, তা তৈরি করা, বিক্রয় করা ও মেরামত করাও হারাম। সেজন্য সকল মুসলিমের উচিত এমন প্রত্যেক জিনিসের বিক্রয় থেকে বিরত থাকা যা ন্যায়ের তুলনায় অন্যায় কাজেই বেশি ব্যবহৃত হয়’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ২৬/২৭৩ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১০১০১, ২৯১১৬৮; ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-২০৩১৬৪, ৩৫৯৯৬৮)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡبِرِّ وَ التَّقۡوٰی، وَ لَا تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡاِثۡمِ وَ الۡعُدۡوَانِ، وَ اتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ
‘তোমরা সৎকর্ম ও তাক্বওয়ায় পরস্পর সহযোগিতা কর। মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে একে অন্যের সহযোগিতা কর না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে অত্যধিক কঠোর’ (সূরা আল-মায়িদাহ : ২)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এখানে আল্লাহ তা‘আলা মুমিন ব্যক্তিদেরকে ভালো কাজে সহযোগিতা করতে আদেশ করেছেন এবং অন্যায়, অসৎ ও হারাম কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন’ (তাফসীর ইবনু কাছীর, ২/১২ পৃ.; তাফসীরে কুরতুবী, ৬/৪৬-৪৭ পৃ.)। সুতরাং সর্বদা হালাল-হারামের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে এবং হারাম ও সন্দেহপূর্ণ বিষয় থেকে দূরে থাতে হবে। ইসলামী শরী‘আতের স্থিরীকৃত নীতিমালাসমূহের মধ্যে রয়েছে যে, إذا اجتَمَع الحلالُ والحرامُ غُلِّبَ الحرامُ ‘যখন কোন বিষয়ে হালাল ও হারামের মাসআলা একত্রিত হয়, তখন হারামের মাসআলা প্রাধান্য পায় অর্থাৎ সেটাকে হারাম বলে গণ্য করতে হবে’।
নবী করীম (ﷺ) বলেন, ‘নিশ্চয় হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট, আর উভয়ের মাঝে রয়েছে সন্দেহজনক বিষয়, অনেক লোকই সেগুলো জানে না। যে ব্যক্তি এসব সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকে সে তার দ্বীন ও মর্যাদাকে নিরাপদে রাখে, আর যে লোক সন্দেহজনক বিষয়ে পতিত হবে সে হারামের মধ্যে লিপ্ত হয়ে পড়বে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫২; ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৯৯)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘যে বিষয়ে তোমার সন্দেহ হয়, তা ছেড়ে দিয়ে যাতে সন্দেহের সম্ভাবনা নেই তা গ্রহণ কর। যেহেতু সত্য হল শান্তি ও স্বস্তি এবং মিথ্যা হল দ্বিধা-সন্দেহ’ (তিরমিযী, হা/২৫১৮, সনদ ছহীহ)। ইসলামের নীতি হল, ‘দুনিয়াবী স্বার্থ হাছিলের আগে ধর্মীয় ক্ষতি থেকে বাঁচতে হবে’।
প্রশ্নকারী : মোবারক, ইন্ডিয়া।