উত্তর : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اَللّٰهُ یَعۡلَمُ مَا تَحۡمِلُ کُلُّ اُنۡثٰی وَ مَا تَغِیۡضُ الۡاَرۡحَامُ وَ مَا تَزۡدَادُ ؕ وَ کُلُّ شَیۡءٍ عِنۡدَهٗ بِمِقۡدَارٍ ‘প্রত্যেক নারী যা গর্ভে ধারণ করে এবং গর্ভাশয়ে যা কিছু কমে ও বাড়ে আল্লাহ তা জানেন এবং তার নিকট প্রত্যেক বস্তুরই এক নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে’ (সূরা আর-রা‘দ : ৮)। অর্থাৎ মায়ের গর্ভাশয়ে ভ্রƒণের অংগ-প্রত্যঙ্গ, শক্তি-সামর্থ্য, যোগ্যতা ও মানসিক ক্ষমতার যাবতীয় হ্রাস-বৃদ্ধি আল্লাহর সরাসরি তত্ত্বাবধানে সাধিত হয়। অর্থাৎ প্রত্যেক নারী যা গর্ভধারণ করে, তা ছেলে না-কি মেয়ে, সুশ্রী না-কি কুশ্রী, সৎ না-কি অসৎ তা সবই আল্লাহ জানেন এবং নারীদের গর্ভাশয়ে যে হ্রাসবৃদ্ধি হয়ে অর্থাৎ কোন্ সময় এক বা একাধিক সন্তান জন্মগ্রহণ করে, কোন্ সময় দ্রুত কোন্ সময় দেরীতে তাও আল্লাহ তা‘আলা জানেন (আযওয়াউল বায়ান)।
এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলার একটি বিশেষ গুণ বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি আলেমুল গায়েব। সৃষ্টিজগতের প্রতিটি অণু-পরমাণু ও সেসবের পরিবর্তনশীল অবস্থা সম্পর্কে তিনি ওয়াকিফহাল। এর সাথেই মানব সৃষ্টির প্রতিটি স্তর, প্রতিটি পরিবর্তন ও প্রতিটি চিহ্ন সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর সত্যিকার ও নিশ্চিত জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই রাখেন। এ বিষয়টিই অন্য এক আয়াতে বর্ণিত হয়েছে যে, (وَيَعْلَمُ مَا فِي الْأَرْحَامِ) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলাই জানেন যা কিছু গর্ভাশয়ে রয়েছে’ (সূরা লুক্বমান : ৩৪)। আমরা যদি সূরা লুক্বমানের এ আয়াতটির সাথে আলোচ্য সূরার (وَمَا تَغِيضُ الْأَرْحَامُ وَمَا تَزْدَادُ) আয়াতকে একসাথে মিলিয়ে তাফসীর করি তাহলে বর্তমানকালের এ আয়াত সংক্রান্ত অনেক সন্দেহের জবাব দেয়া সহজ হয়ে যাবে। কারণ সূরা লুক্বমানের আয়াতে যা বলা হয়েছে এ আয়াত তার তাফসীর হতে পারে। ফলে গর্ভাশয়ে অবস্থিত সন্তানের অবস্থা বর্তমানে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেলেও তা সূরা লুক্বমান এবং ছহীহ হাদীছে বর্ণিত পাঁচটি গায়েব এর জ্ঞানের দাবী কেউ করতে পারবে না। বিশেষ করে ছহীহ হাদীছে গায়েবের পাঁচটি বস্তু বর্ণনায় যে শব্দ ব্যবহার হয়েছে তাও এ তাফসীর সমর্থন করছে।
হাদীছে এসেছে, ‘পাঁচটি বিষয় হল সমস্ত গায়েবের চাবিকাঠি, আল্লাহ ব্যতীত কেউ তা জানে না... আল্লাহ ব্যতীত কেউ গর্ভাশয়ে যা কিছু হ্রাস হয় তা জানে না’ (ছহীহ বুখারী, হা/৪৬৯৭)। আর এটা সর্বজনবিদিত যে, গর্ভাশয়ে যা কিছু হ্রাস-বৃদ্ধি হয় বা হবে তা কেউ কোন দিন বলে দিতে পারবে না। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তিনি তোমাদের সম্পর্কে সম্যক অবগত যখন তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলেন মাটি হতে এবং যখন তোমরা মাতৃগর্ভে ভ্রƒণরূপে ছিলে’ (সূরা আন-নাজম : ৩২)। আরও বলেন, ‘তিনিই মাতৃগর্ভে যেভাবে ইচ্ছা তোমাদের আকৃতি গঠন করেন’ (সূরা আলে ইমরান : ৬) আয়াতের আরেক অর্থ হচ্ছে, একমাত্র আল্লাহই জানেন কোন্ মহিলা কোন্ ধরনের সন্তান গর্ভে ধারণ করবে। তখন ما টি হবে موصولة’ (আযওয়াউল বায়ান)।
প্রশ্নকারী : যয়নুল আবেদীন, কিশোরগঞ্জ।